ল্যাপটপ লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
ল্যাপটপ লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

বৃহস্পতিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০১১

ল্যাপটপ কেনার গাইড



বাজার ছেয়ে গেছে ল্যাপটপে। নানান ব্র্যান্ড, মডেল, আকার, ক্ষমতার ল্যাপটপের মেলায় বাজার জমজমাট। কিছুদিন আগে শেষ হয়ে গেল ল্যাপটপ মেলা। মেলাতে ছিল উপচেপড়া ভিড়। সবাই কিনতে চায় প্রযুক্তির কল্যাণে হাতের নাগালে চলে আসা এ কমপিউটারগুলো। একসময় যা কেনার কথা চিন্তা করাটাই ছিল বিলাসিতা, এখন তা নিত্যব্যবহার্যে পরিণত হয়েছে। অফিস-আদালত, স্কুল-কলেজ, ঘরে-বাইরে সবখানেই দেখা যায় মানুষ ল্যাপটপ ব্যবহার করছে। ল্যাপটপের দাম আগের তুলনায় অনেক কমে যাওয়ায় ক্রেতার সংখ্যাও বেড়ে গেছে অস্বাভাবিকভাবে। ল্যাপটপ কেনার সময় যাতে কোনো সমস্যা না হয়, সেজন্য কিছু গাইডলাইন নিয়ে সাজানো হয়েছে এবারের প্রচ্ছদ প্রতিবেদন।

ডেস্কটপ বনাম ল্যাপটপ

কমপিউটার কেনার আগে প্রথমেই দেখতে হবে, কমপিউটারটি কি কাজে ব্যবহার করবেন? শুধু মেইল করা, ইন্টারনেট সার্ফিং এবং চ্যাট করার কাজে তা ব্যবহার করতে চাইলে সাধারণ মানের একটি কমপিউটারই যথেষ্ট। মুভি দেখার ভক্ত হয়ে থাকলে, আপনার চাহিদা মেটানোর জন্য বড় আকারের মনিটরসহ মাঝারি মানের কমপিউটারের প্রয়োজন হবে। গান শোনার নেশা যদি থাকে, তবে ভালোমানের সাউন্ড সিস্টেমের প্রয়োজন পড়বে। নানা ধরনের গান, মুভি, ভিডিও ইত্যাদি জমানোর শখ থাকলে বা ডাউনলোড করার ঝোঁক থাকলে, নিতে হবে বেশি ধারণক্ষমতাযুক্ত হার্ডডিস্ক। আর গেমার হলে কিনতে হবে হাই কনফিগারেশনের পিসি, যা কিনতে বেশ টাকা খসে যাবে। এভাবেই প্রয়োজনমতো বেছে নিতে হবে কোন কমপিউটারটি বা কমপিউটারের যন্ত্রাংশটি আপনার জন্য উপযুক্ত। এ তো গেলো ডেস্কটপ পিসি কেনার কথা।

এবার আসা যাক ল্যাপটপ কেনার কথায়। বেশিরভাগ ইউজারই এখন ল্যাপটপ ব্যবহার করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। কিন্তু ল্যাপটপ কিনবেন না ডেস্কটপ কিনবেন, এটি নিয়ে দ্বিধায় ভোগেন। তাদের জন্য কিছু পরামর্শ থাকছে এ প্রতিবেদনে। কিভাবে বুঝবেন আপনার ল্যাপটপই কেনা উচিত কি না? কমপিউটার কেনার আগে নিজেকে কিছু প্রশ্ন করে নিন। এ প্রশ্নগুলোর ভিত্তিতেই পেয়ে যাবেন কাঙ্ক্ষিত উত্তর।

০১. আপনি কি বেশি ভ্রমণপ্রিয় বা নানা ধরনের কাজে বেশিরভাগ সময় কি বাইরেই কাটান?

০২. ঘরে বেশিক্ষণ কমপিউটারে কাজ করার সময় পান না, তাই বাইরে গিয়েও কমপিউটারে কাজ করা যায় কি না চিন্তা করছেন?

০৩. ঘরে বা অফিসের ডেস্কে জায়গা কম যাতে একটি ডেস্কটপ কমপিউটার বসাতে সমস্যা হয়?

০৪. ইচ্ছেমতো ঘরের যেকোনো স্থানে বসে কমপিউটিং করতে চান?

০৫. শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কমপিউটার ল্যাবের অনুপস্থিতি বা কমপিউটার স্বল্পতা যাতে অ্যাসাইমেন্ট, রিপোর্ট বা প্রেজেন্টেশন এডিট করার সুযোগ পান না?

০৬. এলাকায় বিদ্যুতের সমস্যা চরমে, যার ফলে শান্তিমতো কোনো কাজ করতে পারছেন না?

এসব প্রশ্নের জবাব যদি হ্যাঁ হয়, তবে আপনার জন্য ল্যাপটপ কেনাটাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। প্রথমদিকের ল্যাপটপগুলো ছিল কম ক্ষমতার। কিন্তু নতুন প্রজন্মের কমপিউটারগুলোর ক্ষমতা মাঝারিমানের ডেস্কটপ পিসিগুলোকেও হার মানায়। তাই সহজেই ল্যাপটপ কমপিউটারগুলো ডেস্কটপ পিসির স্থান দখল করে নিচ্ছে।

ল্যাপটপের সুবিধা-অসুবিধা

কোনো কিছু কেনার আগে তা ভালো করে যাচাইবাছাই করে নেয়া উচিত, প্রয়োজনে অভিজ্ঞ কারো সহায়তা নিন। কেননা, সব কিছুরই ভালো ও মন্দ দুটি দিক থাকে। ভালো ও মন্দ দিক বিবেচনার পর সিদ্ধান্ত নেয়াটা সহজ হবে। ল্যাপটপের সুবিধাগুলোর পাশাপাশি বেশ কিছু সমস্যাও রয়েছে। যদি মনে করেন, সেসব সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পারবেন, তবেই কিনুন ল্যাপটপ, তা না হলে ডেস্কটপই আপনার জন্য ভালো হবে। প্রথমে ল্যাপটপের সুবিধাগুলোর দিকে নজর দেয়া যাক :

০১. পোর্টেবিলিটি বা বহনযোগ্যতা :
ল্যাপটপগুলো ডেস্কটপ পিসির মতো শুধু ডেস্কের ওপরেই থাকে না, তা সাথে নিয়ে বাইরে যাওয়া যায় এবং যেকোনো স্থানে বসে সহজেই কাজ করা যায়।

০২. ছোট আকার :
আকারে বেশ ছোট ও হালকা বলে তা বহন করতে কষ্ট হয় না। ভ্রমণের সময় বাস, ট্রেন, কার বা প্লেনে বসে অনায়াসে হাতের কাজ সেরে নেয়া যায়।

০৩. বিদ্যুৎসাশ্রয়ী :
ডেস্কটপ পিসির মতো ৩০০-৪০০ ওয়াট বিদ্যুৎ খরচ করার বদলে তা মডেলভেদে ডেস্কটপের তুলনায় অনেক কম বিদ্যুৎ খরচ করে।

০৪. ব্যাটারির শক্তি :
লোডশেডিংয়ের সময় ডেস্কটপ চালাতে হলে ইউপিএস ব্যবহার করতে হয় এবং তার ব্যাকআপ দেয়ার ক্ষমতা সাধারণত ১৫-৩০ মিনিট হয়ে থাকে। কিন্তু ল্যাপটপের সবচেয়ে বড় সুবিধাটির একটি হচ্ছে বিদ্যুৎ না থাকলেও ল্যাপটপের সাথে সংযুক্ত ব্যাটারির সাহায্যে তা অনেকক্ষণ চালানো যায়।

০৫. একের ভেতর অনেক :
ল্যাপটপের মধ্যে সব কিছু : মনিটর, কীবোর্ড, টাচপ্যাড, ডিস্কড্রাইভ, ওয়েবক্যাম, একসাথে রয়েছে যা আসলেই চমৎকার একটি সুবিধা।

০৬. তথ্য বহন :
গুরুত্বপূর্ণ ডাটা যেকোনো স্থানে প্রয়োজন হলেই দেখে নেয়া যাবে, যদি সাথে ল্যাপটপ থাকে।

ল্যাপটপের যেসব অসুবিধা

০১. স্থায়িত্ব :
ডেস্কটপ এক স্থানে থাকে এবং তেমন একটা নড়াচড়া করা হয় না। তাই তার কোনো অংশ ভেঙ্গে যাওয়ার সম্ভাবনা কম। কিন্তু ল্যাপটপ বহনযোগ্য, তাই তা হাত থেকে পড়ে গিয়ে ভেঙ্গে যেতে পারে। ল্যাপটপের লিড (মনিটর অংশ), অপটিক্যাল ড্রাইভ, কীবোর্ড ইত্যাদি বেশ নমনীয়। তাই তা যত্নের সাথে ব্যবহার না করলে দুর্ঘটনার সম্ভাবনা রয়েছে। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হচ্ছে, ল্যাপটপে সব যন্ত্রাংশ মিলে একটি যন্ত্র। যেমন- ডেস্কটপের ক্ষেত্রে কীবোর্ড নষ্ট হলে সহজেই তা বদল করা যায়, কিন্তু ল্যাপটপের ক্ষেত্রে তা সম্ভব নয়। ল্যাপটপের খুচরা যন্ত্রাংশ পাওয়া যেমন কষ্টকর, তেমন তার দামও তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি।

০২. কার্যক্ষমতা :
সাধারণ মানের ল্যাপটপগুলোর ক্ষমতা তুলনামূলকভাবে ডেস্কটপ পিসিগুলোর চেয়ে কম হয়ে থাকে। তবে ডেস্কটপের সমান ক্ষমতার ল্যাপটপের দাম আকাশছোঁয়া। দামের দিক থেকে তুলনা করলে ল্যাপটপের ক্ষমতা একই দামের ডেস্কটপ পিসির তুলনায় বেশ কম।

০৩. ধারণক্ষমতা :
ল্যাপটপের আকার ছোট তাই স্বাভাবিকভাবে তাতে কোনো যন্ত্রাংশ লাগানোর জন্য জায়গার পরিমাণ সীমিত। ডেস্কটপের ক্যাসিংয়ে আলাদা হার্ডডিস্ক, অপটিক্যাল ড্রাইভ, গ্রাফিক্স কার্ড, কুলিং সিস্টেম ইত্যাদি লাগানোর জন্য বেশ ফাঁকা জায়গা বা সুবিধা থাকে। কিন্তু ল্যাপটপের ক্ষেত্রে তা খুব কমই দেখা যায়। বড় আকারের ল্যাপটপে এরকম কিছু সুবিধা থাকে, তবে মাঝারি ও ছোট আকারের ল্যাপটপে এ ধরনের সুবিধা দেখা যায় না।

০৪. ব্যাটারি লাইফ :
ল্যাপটপের ব্যাটারিগুলোর ব্যাকআপ দেয়ার ক্ষমতা সীমিত। যত ছোট আকারের ল্যাপটপ বা যত কম ক্ষমতার ল্যাপটপ হবে, তা তত কম বিদ্যুৎ খরচ করবে এবং বেশি ক্ষমতা বা বড় আকারের ল্যাপটপে তার উল্টোটা ঘটবে। তাই কম ক্ষমতার ল্যাপটপে ব্যাটারি ব্যাকআপ বেশি সময় ও বেশি ক্ষমতার ল্যাপটপে কম সময় পাওয়া যাবে। বর্তমানে লোডশেডিংয়ের যে অবস্থা তাতে ব্যাটারি ব্যাকআপ পর্যাপ্ত নয়। তবে এ সমস্যা দূর করার জন্য ল্যাপটপ নির্মাতা কোম্পানিগুলো তাদের ল্যাপটপে পাওয়ার সেভিং টেকনোলজি ব্যবহার করছে।

০৫. কম্প্যাবিলিটি :
মডেল ও নির্মাতা কোম্পানিভেদে ল্যাপটপের যন্ত্রাংশগুলোর মাঝে বেশ তারতম্য দেখা যায়, যেগুলোর একটি আরেকটিকে সাপোর্ট করে না। তাই কোনো যন্ত্রাংশ নষ্ট হলে সেই কোম্পানির একই মডেলের যন্ত্রাংশ জোগাড় করতে হয় যা বেশ সময়সাপেক্ষ ও ব্যয়সাধ্য কাজ। উদাহরণস্বরূপ, এক ব্র্যান্ডের ল্যাপটপের অ্যাডাপ্টারের কানেক্টর অন্য ব্র্যান্ডের চেয়ে ভিন্নতর, তাই তা অদলবদল করে ব্যবহার করা যাবে না।

০৬. চড়া দাম :
ল্যাপটপের দাম তুলনামূলকভাবে ডেস্কটপের চেয়ে বেশি। যে দাম দিয়ে একটি ল্যাপটপ কেনা যায়, সে দামে আরো ভালো কনফিগারেশনের ডেস্কটপ পিসি পাওয়া যায়। তবে পোর্টেবিলিটি, ফ্লেক্সিবিলিটি ও ব্যাটারি পাওয়ারের জন্য দামের ব্যাপারটি তেমন একটা বিবেচনা না করলেও চলে।

০৭. আপগ্রেড :
ডেস্কটপের যন্ত্রাংশ যখন-তখন আপগ্রেড করা যায়, কিন্তু ল্যাপটপের ক্ষেত্রে তা ভীষণ ঝামেলার ব্যাপার। প্রসেসর, মাদারবোর্ড, ডিসপ্লে, গ্রাফিক্স কার্ড ইত্যাদি আপগ্রেড করা সম্ভব নয়। কিছু ল্যাপটপে র‌্যাম, হার্ডডিস্ক ও অপটিক্যাল ড্রাইভ আপগ্রেড করার সুবিধা রয়েছে।

০৮. ডিভাইস কানেক্টর :
ইউএসবি, ফায়ারওয়্যার, সাটা, এইচডিএমআই, ভিজিএ, ডিভিআই ইত্যাদি পোর্টের সংখ্যা ল্যাপটপে বেশ কম। ভিডিও আউটপুটের জন্য দু’য়েকটির বেশি পোর্ট সাধারণত থাকে না।

০৯. নিরাপত্তা :
ল্যাপটপের আরেকটি বড় সমস্যা হচ্ছে ল্যাপটপ চুরি হয়ে যাওয়া। ল্যাপটপ আকারে ছোট, তাই সহজেই তা চুরি যাবার আশঙ্কা রয়েছে। নিজের ঘরে বা অফিসে ল্যাপটপের জন্য সুরক্ষার ব্যবস্থা করা যেতে পারে, কিন্তু সব স্থানে তা করা সম্ভব নাও হতে পারে।

১০. রক্ষণাবেক্ষণ :
ল্যাপটপ বেশ যত্নের সাথে ব্যবহার করতে হয়। ধুলোবালি, পানি, তাপ, চাপ, চুম্বক ইত্যাদির সংস্পর্শ থেকে বাঁচিয়ে রাখতে হয়।

এছাড়া ল্যাপটপের ওয়ারেন্টি শেষ হবার পর তা সার্ভিসিং করানোর জন্য গুনতে হবে বেশ মোটা অঙ্কের টাকা। সাবধানতা ও যত্নের সাথে ব্যবহার করলে ল্যাপটপের কিছু সমস্যা সহজেই কাটিয়ে ওঠা যায়। তাই চিন্তার কোনো কারণ নেই।

ল্যাপটপ বনাম নোটবুক

ডেস্কটপ কিনবেন কি না ল্যাপটপ কিনবেন? এ প্রসঙ্গ শেষ হবার পর আরেকটি ব্যাপার ঝামেলা পাকাতে পারে, তা হচ্ছে-ল্যাপটপ কিনবেন না নোটবুক? অনেকে মনে করতে পারেন, দুটোই তো একই জিনিস। আবার অনেকে মনে করেন ছোট আকারের ল্যাপটপগুলোকেই নোটবুক বলে। তবে ধারণা দুটিই আংশিক সত্য। কারণ, নোটবুককে ল্যাপটপ বলা যায়। তবে ল্যাপটপকে নোটবুক বলাটা ঠিক নয়। নোটবুক ল্যাপটপের ছোট ভার্সন হলেও তাদের মাঝে বেশ কিছু তফাত রয়েছে। সে বিষয়ে ধারণা না থাকলে কমপিউটার কেনার সময় বেশ ঝামেলায় পড়তে হয়। ল্যাপটপ ও নোটবুকের পার্থক্য ভালোভাবে বোঝার জন্য পাঠকদের জন্য ছক আকারে তা তুলে ধরা হলো-

নোটবুকগুলো নেটবুক নামেও পরিচিত। ল্যাপটপের নিচের দিকে লেখা ফিচারগুলো দেখলেই বুঝতে পারবেন তাতে কি আছে আর কি নেই। নেটবুকগুলোর জন্য ইন্টেল শিগগিরই ডুয়াল কোরের প্রসেসর বাজারে আনতে যাচ্ছে, যার ফলে নোটবুক/নেটবুকগুলোও ল্যাপটপের সাথে টেক্কা দিতে পারবে। ল্যাপটপগুলোতে বেশ কিছু বাড়তি সুবিধা দেয়া হয়, যেমন- কার্ড রিডার, টাচ স্ক্রিন, ফিঙ্গারপ্রিন্ট রিকগনিশন, ভালোমানের ওয়েবক্যাম, লাইটযুক্ত কীবোর্ড ইত্যাদি। এসব নোটবুকে খুব একটা দেখা যায় না।

ল্যাপটপের গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়

ল্যাপটপ কেনার আগে বেশ কিছু বিষয় সম্পর্কে জেনে নেয়া উচিত যাতে বাছবিচার করতে কিছুটা সুবিধা হয়। নিচে ল্যাপটপ সম্পর্কিত কিছু বিষয় বিস্তারিত আলোচনা করা হলো-

প্রসেসর :



প্রসেসর হচ্ছে পিসির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ। বাজারে বিদ্যমান ল্যাপটপগুলোর দামের মধ্যে যে তারতম্য দেখা যায়, তা মূলত হয়ে থাকে এই প্রসেসরের ওপর ভিত্তি করে। বেশিরভাগ ক্রেতাই ল্যাপটপ কেনার সময় প্রসেসরের ব্যাপারে তেমন একটা জোর দেন না। তাদের মোবাইল প্রসেসরের ব্যাপারে স্পষ্ট ধারণাও থাকে না। প্রথম দিকের ল্যাপটপগুলোর জন্য পুরোপুরি আলাদা ধাঁচের ও নতুন মডেলের মোবাইল প্রসেসর বানানো হতো। কিন্তু এখন ডেস্কটপ প্রসেসরের আদলেই সেগুলোকে কিছুটা মডিফাই করে বানানো হচ্ছে। বেশ কিছু প্রসেসর রয়েছে, যা ল্যাপটপের মাদারবোর্ডের সাথে একেবারে সংযুক্ত করা থাকে, যা আলাদা করা যায় না। ল্যাপটপ বা মোবাইল প্রসেসরগুলোর বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, এগুলো বেশ বিদ্যুৎ সাশ্রয় করে, কম তাপ উৎপাদন করে, আকারে বেশ ছোট এবং কার্যক্ষমতা ডেস্কটপ প্রসেসরের তুলনায় কিছুটা কম। ল্যাপটপের ব্যবহার করা হয় এমন প্রসেসরগুলো হচ্ছে-ইন্টেলের অ্যাটম, সেলেরন, পেন্টিয়াম, ডুয়াল কোর, কোর টু সলো, কোর টু ডুয়ো, কোর টু এক্সট্রিম, কোর টু কোয়াড, কোর আই থ্রি/ফাইভ/সেভেন ইত্যাদি সিরিজের মোবাইল প্রসেসর এবং এএমডির সেমপ্রন, টুরিয়ন, এথলন এক্স২ ইত্যাদি। ল্যাপটপের প্রসেসর নির্বাচনের সময় ক্লক স্পিড, ক্যাশ মেমরি, কোরের সংখ্যা, থ্রেডের সংখ্যা, বাসস্পিড ইত্যাদি বিষয়গুলোও মাথায় রাখতে হবে।

হার্ডডিস্ক :



ডেস্কটপের জন্য বানানো ৩.৫ ইঞ্চি ফর্ম ফ্যাক্টরের হার্ডডিস্কগুলো ল্যাপটপের স্বল্প পরিসরে বসানোর জন্য ২.৫ ইঞ্চি ফর্ম ফ্যাক্টরের হার্ডডিস্ক ব্যবহার করা হয়। এগুলো আকারে ছোট ও পাতলা এবং কিছুটা কম গতিসম্পন্ন। তবে বর্তমানে নতুন ল্যাপটপগুলোতে হার্ডডিস্কের বদলে সলিড স্টেট ড্রাইভ তথা এসএসডি ব্যবহার করা হচ্ছে। এগুলো হার্ডডিস্ক থেকে অনেক দ্রুত ডাটা ট্রান্সফার করতে পারে। আকারেও অনেক ছোট। সাধারণত ল্যাপটপের হার্ডডিস্কের আরপিএম হয়ে থাকে ৫৪০০-৭২০০ পর্যন্ত। বাজারে ১৬০ গি.বা. থেকে শুরু করে ১ টেরাবাইট ধারণক্ষমতার হার্ডডিস্কসম্পন্ন ল্যাপটপ পাওয়া যায়। যেখানে প্রয়োজনীয় বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন ও ডাটাসহ পছন্দের গান, মুভি, টিভি প্রোগ্রামের রেকর্ড করা ভিডিও, হাই রেজ্যুলেশনের ফটো ইত্যাদিসহ আরো অনেক কিছু রাখা যায়। তাই ল্যাপটপ কেনার সময় ন্যূনতম ৩২০ গিগাবাইট ও নোটবুকের ক্ষেত্রে ১৬০ গিগাবাইট ধারণক্ষমতাসম্পন্ন ল্যাপটপ কেনাটাই হবে যুক্তিযুক্ত।

ব্যাটারি :

ল্যাপটপের ব্যাটারি হিসেবে Ni-Cad অর্থাৎ নিকেল-ক্যাডমিয়াম ব্যবহার করা হতো। কিন্তু এগুলো পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে যখন এগুলো যেখানে-সেখানে ফেলে দেয়া হয়। কারণ, এগুলো খুবই বিষাক্ত। এরপরে NiMH বা নিকেল-মেটাল-হাইড্রাইড ব্যাটারি উদ্ভাবিত হয়। আগের নিকেল-ক্যাডমিয়াম ব্যাটারি থেকে এগুলোর ক্ষমতা অনেক বেশি এবং পারফরমেন্সও ছিল তুলনামূলকভাবে ভালো। তারপরও এধরনের ব্যাটারি পরিবেশবান্ধব নয়। বর্তমানে নতুন ল্যাপটপগুলোতে লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি ব্যবহার করা হচ্ছে, যার আয়ু অনেক বেশি ও কার্যক্ষমতাও খুব ভালো। নতুন ল্যাপটপ কেনার সময় ব্যাটারির সেলের সংখ্যা কতটি, তা দেখে নেয়া জরুরি। ৬ সেলের লিথিয়াম ব্যাটারি হলে এর আয়ু সাধারণ ল্যাপটপের ক্ষেত্রে ৩-৪ ঘণ্টা হয়ে থাকে।

ভিডিও কার্ড :

ল্যাপটপ থেকে প্রজেক্টরের সাহায্যে কোনো বড় পর্দায় ডিসপ্লে করার জন্য ভিডিও কার্ড বা গ্রাফিক্স কার্ড ভালো মানের হতে হবে। সাধারণ ল্যাপটপগুলোর সাথে যে ভিডিও কার্ড দেয়া থাকে তা দিয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন কাজ ও সাধারণ মানের ভিডিও ও মুভি অনায়াসে দেখা যায়। তবে হাই-ডেফিনিশন বা ব্লু-রে প্রযুক্তির মুভি দেখার জন্য ভালো মানের গ্রাফিক্স কার্ডসহ ল্যাপটপ কেনা জরুরি। এছাড়া বিভিন্ন ত্রিমাত্রিক গ্রাফিক্স ডিজাইন ও অ্যানিমেশন সফটওয়্যার চালানোর জন্য ন্যূনতম ২ গিগাবাইট র‌্যামের পাশাপাশি এনভিডিয়া বা এটিআই কোম্পানির ডিরেক্ট এক্স ১০ বা ১১ সাপোর্টেড ডেডিকেটেড ৫১২-১০২৪ মেগাবাইট মেমরির গ্রাফিক্স কার্ড থাকা দরকার। তবে এসব গ্রাফিক্স কার্ড বেশ তাপ উৎপন্ন করে। ছোট আকারের ল্যাপটপে সমন্বিত অবস্থায় নিম্নমানের গ্রাফিক্স কার্ড ব্যবহার করা হয়, যা নামে মাত্র গ্রাফিক্স কার্ড।

ল্যাপটপ ডিসপ্লে :

ল্যাপটপের ডিসপ্লে নানা আকারের হতে পারে। সাধারণত বাজারে এখন ৭ ইঞ্চি থেকে শুরু করে ১৭ ইঞ্চি ডিসপ্লেযুক্ত ল্যাপটপ পাওয়া যায়। ক্রেতা তার চাহিদা অনুযায়ী ডিসপ্লে বাছাই করে নিতে পারবেন। ডিসপ্লের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে এর অ্যাসপেক্ট রেশিও। সাধারণত স্ট্যান্ডার্ড অ্যাসপেক্ট রেশিও হচ্ছে ৪:৩। কিন্তু বর্তমানে ওয়াইড স্ক্রিন ডিসপ্লের ১৬:৯ অ্যাসপেক্ট রেশিওযুক্ত ল্যাপটপের আধিক্য দেখা যাচ্ছে। লেড ব্যাকলিট প্রযুক্তির ডিসপ্লেগুলো বেশি কার্যকর, তাই তা কেনা ভালো। যত বড় আকারের ডিসপ্লে হবে তা তত বেশি বিদ্যুৎ খরচ করবে এবং ল্যাপটপের ব্যাটারি ব্যাকআপ কম পাওয়া যাবে। তাই ছোট ডিসপ্লের ল্যাপটপগুলো ব্যাটারির সাহায্যে ৭-১১ ঘণ্টা চালানো সম্ভব। বাজারে টাচস্ক্রিন ডিসপ্লের মনিটরসহ ল্যাপটপও পাওয়া যাচ্ছে।

র‌্যাম :



ডেস্কটপে আমরা যে র‌্যাম ব্যবহার করে থাকি, ল্যাপটপের র‌্যামগুলো আকারে প্রায় তার অর্ধেক। ছোট আকারের এ র‌্যামগুলোকে SO-DIMM (Small Outline-Dual Inline Memory Module) বলে। SO-DIMM র‌্যামগুলো ৭২, ১০০, ১৪৪, ২০০ বা ২০৪ পিনের হয়ে থাকে। এগুলোর মাঝে ১৪৪, ২০০ ও ২০৪ পিনের র‌্যামগুলো ৬৪-বিট ডাটা ট্রান্সফার সাপোর্ট করে। এখন ডিডিআর২ ও ডিডিআর৩ এ দু-ধরনের র‌্যামের প্রচলন বেশি দেখা যাচ্ছে। ডিডিআর২ র‌্যামযুক্ত ল্যাপটপ কেনার সময় খেয়াল রাখুন, যাতে তা ন্যূনতম ৬৬৭ মেগাহার্টজ বাসস্পিড এবং ডিডিআর৩ র‌্যামের ক্ষেত্রে তা যেনো ১০৬৬ মেগাহার্টজ বাসস্পিড সম্পন্ন হয়।

প্লাটফর্ম :

বাজারে দুই ধরনের প্লাটফর্ম রয়েছে কমপিউটারের ক্ষেত্রে। একটি হচ্ছে উইন্ডোজ বা লিনআক্সভিত্তিক ও আরেকটি হচ্ছে ম্যাক/মেকিন্টোশ/অ্যাপলভিত্তিক। সাধারণ যেসব ল্যাপটপ দেখা যায়, তার সবই উইন্ডোজ ও লিনআক্স অপারেটিং সিস্টেম সাপোর্ট করে, তবে তাতে ম্যাক অপারেটিং সিস্টেম চালানো যায় না। অ্যাপলের বানানো ম্যাকবুক নামের ল্যাপটপগুলোতে ব্যবহার করা হয় ম্যাক ওএস এক্স নামের অপারেটিং সিস্টেম। দেখতে অসাধারণ ও গ্রাফিক্সের মান চমৎকার। তবে অ্যাপলের ল্যাপটপগুলো চেয়ে ভালো কনফিগারেশনের ল্যাপটপও বাজারে রয়েছে।

অপারেটিং সিস্টেম :

অরিজিনাল অপারেটিং সিস্টেমযুক্ত ল্যাপটপগুলোর দাম কিছুটা বেশিই রাখা হয়। ল্যাপটপের দাম কমানোর জন্য ফ্রি অপারেটিং সিস্টেম হিসেবে লিনআক্স দেয়া হচ্ছে। অ্যাপলের ল্যাপটপগুলোতে ম্যাক ওস এক্সের পাশাপাশি উইন্ডোজ ব্যবহার করার সুবিধা রয়েছে। অন্যান্য ল্যাপটপে ম্যাক অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করার সুযোগ নেই। তবে ইন্টেল ও এএমডি’র জন্য আলাদা দু’টি বিশেষ ম্যাক অপারেটিং সিস্টেমের ভার্সন রয়েছে, যা বাজারে সহজলভ্য নয়। কোন অপারেটিং সিস্টেমের ল্যাপটপ কিনবেন, সেটা ভালোভাবে চিন্তা করে নিতে হবে। কম ক্ষমতার নেটবুকগুলোতে উইন্ডোজ ভিসতা বা সেভেন চালাতে গেলে পারফরমেন্স ভালো হবে না, তাই তাতে এক্সপিই ব্যবহার করতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে, উইন্ডোজ সেভেন চালানোর জন্য ন্যূনতম ১ গিগাহার্টজের প্রসেসর ও ১ গিগাবাইট র‌্যামের দরকার হবে। ল্যাপটপের ক্ষমতার কথা বিবেচনা করে তাতে কোন অপারেটিং সিস্টেম ভালো হবে, তা ঠিক করতে হবে।

সাউন্ড কার্ড :

ল্যাপটপে যেসব বিল্ট-ইন বা ইন্টিগ্রেটেড সাউন্ড কার্ড ব্যবহার করা হয়ে থাকে, সেগুলো তেমন একটা শক্তিশালী নয়। তবে হাই-এন্ড ল্যাপটপ বা গেমিং ল্যাপটপগুলোতে বেশ শক্তিশালী ও বেশ কিছু নতুন টেকনোলজিসমৃদ্ধ সাউন্ড কার্ডের উপস্থিতি লক্ষ করা গেছে। যারা ল্যাপটপের সাথে আলাদা বড় আকারের স্পিকার সংযুক্ত করে গান শুনতে চান, তাদের জন্য ল্যাপটপ কেনার সময় সাউন্ড কার্ডের ব্যাপারটা দেখা জরুরি।

স্পিকার :





ল্যাপটপের সাথে সংযুক্ত স্পিকারের শব্দ তেমন একটা জোরালো বা নিখুঁত হয় না। নতুন ল্যাপটপগুলোতে স্টেরিও স্পিকার ব্যবহার করা হচ্ছে, যা দিয়ে কিছুটা হলেও সারাউন্ড সাউন্ড সিস্টেমের মজা উপভোগ করা সম্ভব হচ্ছে। তবে দামী ও ভালোমানের ল্যাপটপের সাউন্ড সিস্টেম বেশ জোরালো শব্দ করতে পারে।

নেটওয়ার্ক :

যারা ল্যাপটপে ইন্টারনেট কানেকশন ও ডাটা ট্রান্সফারের ব্যাপারটি সহজ করে তুলতে চান, তাদের জন্য অনেক সুবিধা দেয়া হচ্ছে ল্যাপটপে। ইন্টারনেট কানেকশনের জন্য এতে থাকতে পারে ১০-১০০০ মেগাবিট/সেকেন্ড গতির ইথারনেট পোর্ট, যা ব্রডব্যান্ড বা ডায়ালআপ ইন্টারনেট কানেকশন পেতে সাহায্য করবে। ওয়্যারলেস বা তারবিহীন ইন্টারনেট সেবা পাওয়ার জন্য এতে থাকতে পারে ওয়াই-ফাই বা ব্লু-টুথ টেকনোলজি। কিছু ল্যাপটপে বিল্ট-ইন মডেমও থাকতে পারে।

কীবোর্ড :

বড় আকারের ল্যাপটপের সাথে ছোট আকারের ল্যাপটপের কীবোর্ডের পার্থক্য হচ্ছে তাতে বেশ কিছু কী কম থাকতে পারে। অল্প জায়গায় ঘন ঘন করে কীগুলো থাকায় টাইপ করতেও বেশ সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। তাই টাইপিংয়ের কাজ প্রাধান্য পেলে বড় আকারের ল্যাপটপ কেনার চেষ্টা করুন, যাতে বেশিসংখ্যক কী রয়েছে এবং তা ব্যবহার করা সুবিধাজনক।

পয়েন্টিং ডিভাইস :

ডেস্কটপের ক্ষেত্রে আমরা পয়েন্টিং ডিভাইস হিসেবে মাউস ব্যবহার করে থাকি। ল্যাপটপের ক্ষেত্রে তা তিন রকমের হয়ে থাকে, যেমন- টাচপ্যাড, ট্র্যাকবল ও ছোট জয়স্টিক। টাচপ্যাডের ব্যবহার ইদানীং বেশি দেখা যাচ্ছে। পয়েন্টিং ডিভাইস হিসেবে ল্যাপটপে নতুন ধারার সৃষ্টি করতে যাচ্ছে হাই টেক মাল্টি টাচপ্যাড। এ প্যাডের সাহায্যে এক বা একাধিক আঙ্গুল ব্যবহার করে অনেক ধরনের কমান্ড দেয়া যায়।

অপটিক্যাল ড্রাইভ :

বর্তমানে মাঝারি থেকে উচ্চক্ষমতার ল্যাপটপেই ডিভিডি-রাইটার দেয়া থাকে। কম বাজেটের ল্যাপটপে ডিভিডি রম থাকে বা অপটিক্যাল ড্রাইভ নাও থাকতে পারে। হাই-এন্ড ল্যাপটপের সাথে ব্লু-রে ড্রাইভ সংযুক্ত থাকে। অপটিক্যাল ড্রাইভের রিড রাইটের স্পিড দেখে নেয়াটা জরুরি। ডিভিডি রাইটারের ক্ষেত্রে তা ৮এক্স ও ব্লু-রে ড্রাইভের ক্ষেত্রে ২এক্স হয়ে থাকে।

অনলাইন শপিং

দেশের বাইরে থেকে ল্যাপটপ আনাতে চাইলে অনলাইনে অর্ডার করতে হবে। বিভিন্ন দেশে পণ্য পৌঁছে দেয়ার জন্য বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এ প্রতিষ্ঠানগুলো অনলাইনে পণ্যের অর্ডার নেয় এবং তা আপনার দেয়া ঠিকানায় পৌঁছে দেয়। ক্রেডিট কার্ডের সাহায্যে দাম পরিশোধ করার ২-৩ সপ্তাহ বা ১ মাসের মধ্যে ল্যাপটপ পেয়ে যাবেন। তবে এক্ষেত্রে কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হবে- শিপমেন্টের অর্থাৎ পণ্যটি পরিবহন করে আপনার কাছে পৌঁছে দেবার জন্য কত খরচ পড়বে, পণ্যটি নতুন নাকি পুরনো, কতদিনের মধ্যে তা আপনার হাতে পৌঁছবে তা উল্লেখ করা আছে কি না, বাংলাদেশের জন্য সাপোর্ট আছে কি না, কোনো বিশেষ ছাড় আছে কি না, অর্ডার দেয়ার সময় নাম, ঠিকানা ও ফোন নাম্বার ঠিকভাবে উল্লেখ করেছেন কি না ইত্যাদি। একই পণ্যের দাম প্রতিষ্ঠানভেদে কিছুটা পার্থক্য থাকতে পারে। তাই শুধু একটি সাইট না দেখে কয়েকটি সাইট পর্যবেক্ষণ করে দেখা ভালো। অনলাইনে পণ্য কেনার সুবিধা দিয়ে থাকে এমন কয়েকটি সাইটের নাম হচ্ছে- www.amazon.com, www.neweeg.com, www.ebay.com, www.buy.com ইত্যাদি। তবে বাইরে থেকে কিছু আনানোর সবচেয়ে বড় সমস্যাটি হচ্ছে ওয়ারেন্টির সুবিধা না পাওয়া। নিজ দেশ থেকে কেনা হলে তাতে কোনো সমস্যা দেখা দিলে তা খুব দ্রুত সারানো সম্ভব। আমাদের দেশীয় অনলাইন শপিং সেবাদানকারী কিছু সাইটের মধ্যে রয়েছে- www.cellbazaar.com, www.clickbd.com, www.deshilisting.com ইত্যাদি।

পুরনো ল্যাপটপ কেনা

আর্থিক বা অন্য বিশেষ কোনো কারণে অনেকেই পুরনো বা সেকেন্ডহ্যান্ড ল্যাপটপ কেনেন। ল্যাপটপ নির্মাতা কোম্পানিগুলো এমনভাবে তাদের মডেলগুলো বের করে, যাতে তা সহজে আপগ্রেড করা না যায়। ফলে বেশিরভাগ মডেলই এখন আগের মতো বেশ কয়েক বছর ধরে চালানোর সুযোগ পাবেন না। এর কারণ হচ্ছে, তা আপগ্রেড করা সম্ভব হবে না তাই নতুন সফটওয়্যার চালাতে সমস্যা হবে, নতুন অপারেটিং সিস্টেমগুলোর রিকোয়ারমেন্ট অনেক বেশি, যা পুরনো ল্যাপটপের জন্য হুমকিস্বরূপ, ড্রাইভার সফটওয়্যার সাপোর্ট না করা বা ড্রাইভার সফটওয়্যারের আপডেট বের না হওয়া ইত্যাদি। কম দামে মানসম্পন্ন একটি ল্যাপটপ কেনার আগে নিচের উল্লিখিত বিষয়গুলো খেয়াল রাখতে হবে :

০১. ল্যাপটপ কেনার সময় দেখতে হবে, তা কতটা পুরনো? বাজেট খুবই কম হলে তবেই শুধু পেন্টিয়াম বা সেলেরন সিরিজের প্রসেসরসহ ল্যাপটপের দিকে হাত বাড়াতে পারেন, তা না হলে নয়। এমন ল্যাপটপ কেনার চেষ্টা করুন, যাতে তা অন্ততপক্ষে কিছুটা যুগোপযোগী হয়। নতুন সফটওয়্যারগুলো এবং অন্তত উইন্ডোজ সেভেন সাপোর্ট করে এমন ল্যাপটপ বাছাই করাটাই ভালো হবে।

০২. পুরনো ল্যাপটপ পাবেন কোথা থেকে? আমাদের দেশের কমপিউটার মার্কেটগুলোতে বেশ কিছু দোকান রয়েছে, যাতে পুরনো কমপিউটার বিক্রি হয়। পরিচিতজনদের কেউ বিক্রি করতে পারে ল্যাপটপ। বিদেশ-ফেরতদের কাছেও পেতে পারেন পুরনো ল্যাপটপ। এছাড়া অনলাইনে কিছু সাইট রয়েছে, যারা পুরনো পণ্য বেচাকেনা করে, সেখানে ঢু মেরে দেখতে পারেন।

০৩. ল্যাপটপের কনফিগারেশনের ওপর চোখ বুলানো শেষ হলে নজর দিতে হবে ল্যাপটপে কোনো দাগ বা ভাঙ্গা অংশ রয়েছে কি না। যদি ভাঙ্গা থাকে এবং তা তেমন একটা সমস্যার সৃষ্টি করবে না বলে মনে হয়, তবে বিক্রেতার কাছ থেকে তার দাম আরো কমানোর ব্যাপারে একটু চাপ প্রয়োগ করে দেখুন।

০৪. ল্যাপটপের ডিসপ্লে রিপ্লেস করাটা বেশ ব্যয়সাধ্য ব্যাপার, তাই দেখতে হবে ডিসপ্লেতে কোনো অংশে কোনো দাগ, রংচটা ভাব, গোলাপি বা বেগুনি রংয়ের আভা রয়েছে কি না। যদি থাকে তবে সে ল্যাপটপটি না কেনাই ভালো।

০৫. ল্যাপটপের প্লাগ, সকেট, ওয়্যারলেস কানেকশন (ব্লু-টুথ, ওয়াই-ফাই) এসব ঠিকমতো কাজ করছে কি না তা দেখতে হবে।

০৬. হার্ডডিস্কে ব্যাড সেক্টর রয়েছে কি না, তা দেখতে হবে। বাকি সব ঠিকই আছে, তবে হার্ডডিস্কে সমস্যা থাকলে তা নিতে পারেন। কারণ, হার্ডডিস্ক অল্প খরচ ও সহজেই পরিবর্তন বা আপগ্রেড করে নেয়া যাবে।

০৭. অপটিক্যাল ড্রাইভের বেলায় তা সিডি/ডিভিডি ঠিকমতো চালাতে পারে কি না, তা দেখে নিতে হবে। তবে অপটিক্যাল ড্রাইভগুলোও পরিবর্তন করা সম্ভব বলে এ ব্যাপারে বেশি মাথা না ঘামালেও চলবে।

০৮. ব্যাটারির আয়ু কেমন তা দেখাটা বেশ জরুরি। ল্যাপটপ যত পুরনো হবে, তার ব্যাটারির স্থায়িত্ব তত কমে যাবে। তবে ব্যাটারি রিপ্লেস করা যাবে, কিন্তু একই মডেলের ল্যাপটপের ব্যাটারি বাজারে আছে কি না, সে ব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে নিতে হবে।

০৯. সবশেষে দেখে নিতে হবে পাওয়ার অ্যাডাপ্টার, পাওয়ার ক্যাবল ও ড্রাইভার ডিস্ক ঠিক আছে কি না।

কাজ ও পেশার ধরন অনুযায়ী ল্যাপটপ

সবার চাহিদা এক নয়। তাই বিভিন্ন পেশা ও ব্যবহারের ধরন বুঝে ল্যাপটপগুলোকে বেশ কয়েকটি ভাগে ভাগ করে নেয়া যায়। পাঠকদের সুবিধার্থে ভাগগুলো নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো-

ডেস্কটপের বিকল্প হিসেবে ল্যাপটপ :

যখন ডেস্কটপের বিকল্প হিসেবে ল্যাপটপ কেনা হবে সেক্ষেত্রে খরচের পরিমাণও অনেক বেশি হবে। সাধারণত এ ধরনের ল্যাপটপের ব্যবহার বেশি দেখা যায় মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানির কর্মচারীদের মাঝে। তাদের কাজ বিভিন্ন রকমের ডাটা অ্যানালাইসিস, ডাটাবেজ ম্যানেজমেন্ট, গ্রাফিক্স ডিজাইন, ফটো এডিটিংসহ আরো অনেক কাজ করতে হয়। তাই ডেস্কের ওপরে জায়গা বাঁচানোর জন্য ডেস্কটপের সমকক্ষ ল্যাপটপ তাদের কাজের জন্য আবশ্যক।

ল্যাপটপে যে সুবিধাগুলো প্রয়োজন :

প্রসেসর হিসেবে কোর টু ডুয়ো বা কোর টু কোয়াড; ডিসপ্লে ১৪ ইঞ্চির বেশি না হলেই নয়; নিউমেরিক কী-প্যাডসহ বড় আকারের কী-বোর্ড; হার্ডডিস্কের ধারণক্ষমতা মোটামুটি ২৫০-৩২০ গিগাবাইট হলেই যথেষ্ট; ইন্টিগ্রেটেড গ্রাফিক্সকার্ড অথবা ডিসক্রিট গ্রাফিক্স চিপ এবং তা অবশ্যই ৫১২ মেগাবাইট মেমরি যুক্ত হলে ভালো; ব্যাটারি ব্যাকআপ গুরুত্বপূর্ণ নয় কারণ তা ডেস্কেই থাকবে।



কম দামে বাজেট ল্যাপটপ :

বাজেট ল্যাপটপ বলতে এখানে আসলে কম দামের মধ্যে যতটুকু সম্ভব ভালোমানের ল্যাপটপকে বোঝানো হয়েছে। এ ধরনের ল্যাপটপে ইন্টারনেট ব্রাউজিং, ডাউনলোড, গান শোনা, ওয়ার্ড প্রসেসর সফটওয়্যার চালানো এবং ছোটখাটো গেম খেলা ইত্যাদি অনায়াসে করা সম্ভব। ঘরে সাধারণ কাজে ব্যবহার করার জন্য, ছাত্রদের জন্য এবং ছোটখাটো ব্যবসায়ীদের জন্য এ ধরনের ল্যাপটপ আদর্শ। এ ধরনের ল্যাপটপে কেউ যদি আশা করেন, তা হবে হাল্কা ও আকর্ষণীয় ডিজাইনযুক্ত, তবে তাকে নিরাশ হতে হবে। সাধারণত এ ধরনের ল্যাপটপগুলো ভারি ও মোটা আকৃতির হয়ে থাকে।

ল্যাপটপে যে সুবিধাগুলো প্রয়োজন :

ইন্টেল ডুয়াল কোর প্রসেসর, ১-২ গিগাবাইট ডিডিআর২ র‌্যাম, ১৪ ইঞ্চি ডিসপ্লে, ২৫০ গিগাবাইট হার্ডডিস্ক, ডিভিডি রম/রাইটার এবং ২-৩ ঘণ্টা ব্যাটারি ব্যাকআপ।

ভ্রমণের নিত্যসাথী হিসেবে নোটবুক :

ছোট আকারের, সহজে বহনযোগ্য, বড় আকারের পকেটে কিংবা মহিলাদের ভ্যানিটি ব্যাগে অনায়াসে এঁটে যায় এমন কমপিউটারই হতে পারে ভ্রমণের সাথী। যেখানেই যান সেখানেই তা নিয়ে যাওয়া যাবে। ভ্রমণপ্রিয় ব্যক্তি ও ছাত্রছাত্রীদের হাতে এ ল্যাপটপ ইদানীং বেশি দেখা যাচ্ছে।

ল্যাপটপে যে সুবিধাগুলো প্রয়োজন :

ইন্টেল অ্যাটম, সেলেরন, কোর সলো (লো-ভোল্টেজ) প্রসেসর, ১৩ ইঞ্চির চেয়ে ছোট আকারে ডিসপ্লে, ইন্টিগ্রেটেড গ্রাফিক্স কার্ড যাতে কম তাপ উৎপন্ন হয়, ১.৫ কিলোগ্রামের কম ওজন এবং কার্ড রিডার থাকা ভালো, যেহেতু তাতে অপটিক্যাল ড্রাইভ থাকে না।

গেমিং ল্যাপটপ :

গেম খেলার জন্য ডেস্কটপ পিসির সাথে ল্যাপটপের তুলনা করা চলে না। তবুও গেমিং ল্যাপটপের ক্ষমতা বেশ ভালোই রয়েছে মোটামুটি মানের গেমগুলো চালানোর ক্ষেত্রে। এসব ল্যাপটপের দাম অনেক বেশি এবং আকারে বেশ বড় ও ভারি।

ল্যাপটপে যে সুবিধাগুলো প্রয়োজন :

কোর টু ডুয়ো থেকে কোর আই সেভেন মানের প্রসেসর, এনভিডিয়া বা এটিআই চিপসেটের ৫১২ মেগাবাইট-১ গিগাবাইট ডেডিকেটেড গ্রাফিক্স মেমরি, ২-৪ গিগাবাইট ডিডিআর ৩, ১০৬৬-১৩৩৩ বাস স্পিডসম্পন্ন র‌্যাম এবং ১৫-১৮ ইঞ্চি ডিসপ্লে যা উচ্চ রেজ্যুলেশন সমর্থন করে।

স্টুডেন্ট ল্যাপটপ :

লেখালেখির কাজ, ইন্টারনেট ব্রাউজিং, গান শোনা, গেম খেলা, মুভি দেখা এসব কাজের জন্য শিক্ষার্থীদের প্রয়োজন সহজে বহনযোগ্য, মজবুত, ভালো ব্যাটারি ব্যাকআপ ও মাল্টিমিডিয়া সাপোর্টেড কম দামের একটি ভালো ল্যাপটপ।

ল্যাপটপে যে সুবিধাগুলো প্রয়োজন :

ডুয়াল কোর প্রসেসর, ২ গিগাবাইট র‌্যাম, ১৪-১৫ ইঞ্চি ডিসপ্লে মনিটর, ১৬০-২৫০ গিগাবাইট হার্ডডিস্ক, ওয়েবক্যাম, কার্ড রিডার এবং ৪-৫ ঘণ্টা ব্যাটারি ব্যাকআপ।

সব কাজের কাজী ল্যাপটপ :

সব ধরনের কাজের উপযোগী ল্যাপটপও রয়েছে এবং তা কেনার জন্য মাঝারি মানের বাজেটের প্রয়োজন হবে। ল্যাপটপটি সঠিক কি কাজের জন্য ব্যবহার করা হবে, তা সিদ্ধান্ত নিতে না পারলে, তখন এ ধরনের ল্যাপটপের দিকে নজর দিতে পারেন। একই ঘরের সদস্যদের মাঝে শেয়ারিংয়ের মাধ্যমে এ ধরনের ল্যাপটপের ব্যবহার বেশি দেখা যায়।

ল্যাপটপে যে সুবিধাগুলো প্রয়োজন :

১.৮-২.৬ গিগাহার্টজের কোর টু ডুয়ো প্রসেসর, ২-৩ গিগাবাইট র‌্যাম, ১৩-১৫ ইঞ্চি মনিটর, ২৫০-৫০০ গিগাবাইট হার্ডডিস্ক (৫৪০০-৭২০০ আরপিএমযুক্ত), ডিভিডি রাইটার বা ব্লু-রে ড্রাইভ, ব্লু-টুথ, ওয়্যারলেস কানেক্টিভিটি এবং (ন্যূনতম ৪ ঘণ্টার ব্যাকআপসম্পন্ন) ৬ সেলের ব্যাটারি।

বিজনেস ল্যাপটপ :

ব্যবসায়িক কাজে ব্যবহার করা ল্যাপটপগুলো কিছুটা মজবুত, সুরক্ষিত এবং বিশেষ কিছু সুবিধাসম্বলিত হয়ে থাকে। এসব ল্যাপটপের স্থায়িত্ব বেশ বড় একটি বিষয়, তাই যথাসম্ভব মানসম্পন্ন ও টেকসই ল্যাপটপ কেনার চেষ্টা করতে হবে ব্যবসায়ী, বড় প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী এবং আইটি কাজের সাথে জড়িত কর্মচারীদের।

ল্যাপটপে যে সুবিধাগুলো প্রয়োজন :

কোর টু ডুয়ো বা কোর আই থ্রি প্রসেসর, ২-৩ গিগাবাইট র‌্যাম, ১৩-১৭ ইঞ্চির মনিটর, ফুল ফিচারসহ কীবোর্ড, ভালোমানের পয়েন্টিং ডিভাইস, ৭২০০ আরপিএম’র ২৫০-৩২০ গিগাবাইট হার্ডডিস্ক, ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্ক কানেক্টিভিটি, ফিঙ্গারপ্রিন্ট রিডার, ফেস রিকগনিশন, ট্রাস্টেড প্লাটফর্ম মডিউল সিকিউরিটি এবং এনক্রিপশন সফটওয়্যার।

ল্যাপটপ অ্যাক্সেসরিজ

ক্যারিং ব্যাগ :



যে ব্র্যান্ডের ল্যাপটপ বা নোটবুক কিনবেন সে ব্র্যান্ডের লোগোযুক্ত ব্যাগ দিয়ে দেয়া হবে। ল্যাপটপের সাথে যে ব্রিফকেস আকারের ব্যাগগুলো দেয়া হয় সেগুলো সাধারণত কাপড়ের তৈরি। পিঠে ঝোলানো ব্যাগ চাইলে তাও পেয়ে যাবেন। বাজারে বেলকিন, টারগাস, আইএক্সএ ইত্যাদি ব্র্যান্ডের বেশ কিছু মডেলের ব্যাগ পাওয়া যায়, যা বেশ টেকসই ও সুন্দর।

ল্যাপটপ কুলার :



শখের ল্যাপটপটিকে তাপজনিত সমস্যার হাত থেকে রক্ষা করার লক্ষ্যে কুলার ব্যবহার করা বেশ জরুরি। কুলিং ফ্যানযুক্ত বা লিকুইড ক্রিস্টাল কুলিং প্যাড ব্যবহার করলে ল্যাপটপের আয়ু অনেক বাড়ানো সম্ভব। বাজারে জিনিয়াস, বেলকিন, থার্মালটেক, ভিশনসহ আরো বেশ কিছু চীনা কোম্পানি বিভিন্ন মডেলের কুলিং প্যাড বাজারজাত করছে।

কীবোর্ড :

ল্যাপটপের যে কীবোর্ড দেয়া থাকে, তাতে টাইপ করতে অনেকের সমস্যা হতে পারে। তাই ল্যাপটপের জন্য আলাদা ছোট আকারের ইউএসবি পোর্টযুক্ত কীবোর্ড কিনে নেয়া যেতে পারে। নামপ্যাডসহ কীবোর্ড চাইলে তাও কিনে নিতে পারেন। বাজারে বেশ কিছু ব্র্যান্ডের কীবোর্ড রয়েছে তাই পছন্দসই কিনে নিলেই হলো।

মাউস :

ল্যাপটপের যারা সূক্ষ্ম কাজ করেন, যেমন আঁকাআঁকি, গ্রাফিক্স ডিজাইন, অডিও-ভিডিও এডিটিং, গেমিং তাদের জন্য আলাদা মাউসের দরকার হয়। আবার অনেকে আছেন টাচপ্যাড বা ট্র্যাকবল ব্যবহারের চেয়ে মাউস ব্যবহার করা পছন্দ করেন। তাদের জন্য রয়েছে সুদৃশ্য ছোট আকারের মাউস, যা গুটিয়ে রাখা যায়। প্রয়োজনমতো তার টেনে লম্বা করা যায়।

স্পিকার :

ল্যাপটপের বিল্ট-ইন স্পিকারের শব্দ যদি কম মনে হয়, তবে ল্যাপটপের জন্য বানানো ছোট আকারের মোটামুটি ভালো শব্দযুক্ত বেশ কিছু স্পিকার বাজারে রয়েছে। এদের মধ্যে রয়েছে- সনিক গিয়ার, অ্যালটেক ল্যান্সিং, ইয়ারসন ইত্যাদিসহ আরো অনেক ব্র্যান্ডের নজরকাড়া স্পিকার।

এক্সপানশন ডিভাইস :

গ্রাফিক্স কার্ড বা সাউন্ড কার্ডের ক্ষমতা কম মনে হলে তাতে ইউএসবি গ্রাফিক্স কার্ড বা সাউন্ড কার্ড লাগিয়ে তার ক্ষমতা বাড়িয়ে নেয়া যেতে পারে। ইউএসবি সাউন্ড কার্ড বাজারে রয়েছে, 
 

শুক্রবার, ১৯ মার্চ, ২০১০

ভিস্তার জন্য ডিজাইন করা ল্যাপটপ কম্পিউটারে XP Setup করার পদ্ধতি

Windows Vista বাজারে আসার পর নুতন বেশকিছু ল্যাপটপ কম্পিউটারকে উইন্ডোজ ভিস্তার জন্য ডিজাইন করা হয় । এ সব কম্পিউটারে Windows XP Setup করতে গেলে মেসেজ আসে setup did not find any hard disk. এসব কম্পিউটারে Windows XP setup করতে হলে নতুন করে Windows XP CD তৈরি করে নিতে হয় । নুতন ল্যাপটপ কিনে যারা Windows XP setup করতে পারছেন না তাদের জন্য আজকের এই লেখা। Vista যদি আপনার বিরক্তির কারণ হয় তাহলে এখুনি সেটআপ করে নিতে পারেন Windows XP ।

প্রয়োজনীয় সফ্টওয়ার

এ জন্য আমাদেরকে তিনটি সফ্টওয়্যার সংগ্রহ করতে হবে । এই তিনটি সফ্টওয়্যারের সাথে প্রয়োজন হবে সাটা (SATA) ড্রাইভার । চিন্তার কিছুই নেই সবগুলো সফ্টওয়ার ফ্রি ডাউনলোড করা যাবে । 1. nlite 2. net fremwork 2.0 3. iso buster

কম্পিউটারের প্রতিটি ডিভাইসের জন্য ড্রাইভার প্রয়োজন হয। যেমন – সাউন্ড ড্রাইভার, মাউস ড্রাইভার, হার্ডডিস্ক ড্রাইভার, সিডিরম ড্রাইভার ইত্যাদি । windows xp যখন বাজারে ছাড়া হয় তখন ল্যাপটপ কম্পিউটারগুলোতে সাটা হার্ডডিস্ক ব্যবহার করা হত না । এ কারণে সাটা হার্ডডিস্কের জন্য প্রয়োজনীয় ড্রাইভার windows xp cd –তে দেওয়া হয়নি । বর্তমানে বেশীরভাগ লেপটপ কম্পিউটারেই সাটা হার্ডডিস্ক ব্যবহার করা হচ্ছে । windows xp cd-তে সাটা (SATA) হার্ডডিস্ক ড্রাইভার না থাকায় নতুন ল্যাপটপে xp সেটাপ করতে গেলে মেসেজ আসে setup did not find any hard disk. সাটা (SATA) হার্ডডিস্কের জন্য ড্রাইভার না থাকার কারণে এ মেসেজটি আসে । এখানে আমাদের মূল কাজ হচ্ছে windows xp cd-তে সাটা (SATA) ড্রাইভার এড করা । nlite দিয়ে xp সিডিতে যেকোন ড্রাইভার এড করা য়ায় ।

সাটা ড্রাইভার কোথায় পাবেন

প্রতেকটি ল্যাপটপ কম্পিউটার কোম্পানীর নিজস্ব ওয়েবসাইট আছে । আপনি যে কোম্পানীর কম্পিউটার ব্যবহার করেন সে কোম্পানীর ওয়েবসাইট থেকে সাটা (SATA) ড্রাইভার সংগ্রহ করুন। অথবা গুগল থেকে সার্চ করেও সাটা (SATA) ড্রাইভার সংগ্রহ করতে পারেন । বেশীরভাগ কম্পিউটারেই Toshiba হার্ডডিস্ক ব্যবহার করা হয় । Toshiba সাটা হার্ডডিস্ক ড্রাইভার দিয়ে একটি সিডি বানালে বেশীরভাগ ল্যাপটপে XP setup করা যাবে ।

Dot Netfremwork 2.0 : net framework ছাড়া nlite setup করা যায় না । তাই আগে ডট নেটফ্রেমওয়ার্ক সেটাপ করে নিন, এরপর nlite setup করুন ।

ডাউনলোড লিংক-

আসুন এবারে আমরা উইন্ডোজ এক্সপি সিডিকে নুতন করে তৈরি করে নেই, যা দিয়ে আমরা নতুন ল্যাপটপ কম্পিউটারগোলোতে উইন্ডোজ এক্সপি সেটাপ করতে পারব । প্রথমেই আইএসও বুস্টার সেটাপ করে রান করুন । এবারে উইন্ডোজ এক্সপি সিডিটি (Original XP CD) ড্রাইভে ঢুকিয়ে দিন । সিডিটি চালু করার পর আই এসও বুস্টারের লঞ্চ স্ক্রীণ থেকে bootable disc এ ক্লিক করুন । এরপর Microsoft Corporation.img এ ক্লিক করে Extract Microsoft Corporation.img ক্লিক করুন । এবারে ইমেজটি সেভ করুন । (Windows XP setup করার শুরুতে স্কীনে লেখা আসে press any key to boot from cd … এটি হচ্ছে Microsoft Corporation.img এর কাজ । কোন ফুল্ডারে কপি করা xp cd বার্ন করলে Microsoft Corporation.img টি কাজ করবে না । এজন্য ইমেজটিকে nlite দিয়ে সিডি বার্ন করায় আগে সেট করে দিতে হবে । Microsoft Corporation.img টি গুগল থেকে সার্চ করেও সংগ্রহ করা যাবে ।)

এবারে একটি ফোল্ডার বানিয়ে এক্সপি সিডিটি ফোল্ডারে কপি করুন । একই ফোল্ডারে Microsoft Corporation.img টিকেও কপি করুন । যে কম্পিউটারের জন্য সিডি তৈরি করবেন ঐ কম্পিউটারে সাটা ড্রাইভারগুলো একটি ফ্লপিতে কপি করে নিন । জিপ ফাইলগুলোকে এক্সট্রাক্ট করার পর ফ্লপিতে কোনো ফোল্ডার ছাড়া এক্সট্রাক্ট করা ফাইলগুলো কপি করুন ।

  • এন লাইট রান করন ।
  • নেক্সট এ ক্লিক করুন ।

SATAWIN 002 small ভিস্তার জন্য ডিজাইন করা ল্যাপটপ কম্পিউটারে XP Setup করার পদ্ধতি  Techtunes

SATAWIN 003 small ভিস্তার জন্য ডিজাইন করা ল্যাপটপ কম্পিউটারে XP Setup করার পদ্ধতি  Techtunes

SATAWIN 004 small ভিস্তার জন্য ডিজাইন করা ল্যাপটপ কম্পিউটারে XP Setup করার পদ্ধতি  Techtunes

SATAWIN 005 small ভিস্তার জন্য ডিজাইন করা ল্যাপটপ কম্পিউটারে XP Setup করার পদ্ধতি  Techtunes

SATAWIN 006 small ভিস্তার জন্য ডিজাইন করা ল্যাপটপ কম্পিউটারে XP Setup করার পদ্ধতি  Techtunes

SATAWIN 007 small ভিস্তার জন্য ডিজাইন করা ল্যাপটপ কম্পিউটারে XP Setup করার পদ্ধতি  TechtunesSATAWIN 007 small ভিস্তার জন্য ডিজাইন করা ল্যাপটপ কম্পিউটারে XP Setup করার পদ্ধতি  Techtunes

SATAWIN 008 small ভিস্তার জন্য ডিজাইন করা ল্যাপটপ কম্পিউটারে XP Setup করার পদ্ধতি  Techtunes

SATAWIN 009 small ভিস্তার জন্য ডিজাইন করা ল্যাপটপ কম্পিউটারে XP Setup করার পদ্ধতি  Techtunes

SATAWIN 011 small ভিস্তার জন্য ডিজাইন করা ল্যাপটপ কম্পিউটারে XP Setup করার পদ্ধতি  Techtunes

  • ব্রাউজে ক্লিক করে ফোল্ডারে কপি করা এক্সপি সিডিটি লোড করুন ।
  • কয়েক ধাপ অগ্রসর হয়ে Drivers এন্ড Bootable iso সিলেক্ট করুন ।
  • Insert এ ক্লিক করে ফ্লপি থেকে সাটা ড্রাইভারগুলো এড করুন । এখন nlite দিয়ে সিডি বার্ন করা যাবে । বার্ন করার আগে Microsoft Corporation.img টি এড করে বার্ন কমপ্লিট করুন

  • http://techtunes.com.bd/tutorial/tune-id/2033/

মঙ্গলবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০০৯

ল্যাপটপের সাধারণ যত্ন

# ল্যাপটপ ব্যবহারের সময় সতর্ক থাকতে হবে, যেন কোনোভাবেই এটি হাত থেকে মাটিতে বা শক্ত কোনো স্থানে পড়ে না যায়। কেননা, একটু বাড়তি চাপ লাগলেই ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে ল্যাপটপের এলসিডি মনিটর। আর এ ক্ষেত্রে কোনো রকম বিক্রয়োত্তর সেবাও পাওয়া যাবে না। লক্ষ রাখতে হবে, ল্যাপটপের ওপর ভারী কিছুর চাপ যেন না পড়ে।
# এলসিডি মনিটরে ধুলা জমলে বা ময়লা হলে পাতলা সুতি কাপড় দিয়ে মুছে দিতে পারেন। শক্ত কোনো কাপড় ব্যবহার না করাই ভালো।
# যাঁরা ল্যাপটপে মাউস ব্যবহার করেন, তাঁরা অনেক সময় মনের ভুলে কি-বোর্ডের ওপর মাউস রেখেই ল্যাপটপ বন্ধ করে দিতে যান। এ ক্ষেত্রে ল্যাপটপের পর্দায় চাপ পড়লে তা মুহুর্তেই অকার্যকর হয়ে যেতে পারে।
# ল্যাপটপ ব্যবহারের সময় লক্ষ রাখতে হবে এর পেছনে, ভেতরের গরম বাতাস বের করার জন্য যে পাখাটি কাজ করে, তার সামনে যেন কোনো বাধা না থাকে।
# ল্যাপটপ কেনার পরপরই ব্যবহার করার আগে কমপক্ষে আট ঘণ্টা নিরবচ্ছিন্নভাবে চার্জ দিতে হবে। এর ব্যতিক্রম হলে সাধারণত ব্যাটারি পরে আর কোনো সময়েই তার পূর্ণ ক্ষমতা ব্যবহার করতে পারবে না।
# শুধু ব্যাটারির সাহায্যে (বৈদ্যুতিক সংযোগ না থাকা অবস্থায়) ল্যাপটপ ব্যবহারের সময় পাঁচ থেকে ১০ শতাংশ চার্জ বাকি থাকতেই বন্ধ করা ভালো।
# ল্যাপটপের কি-বোর্ড তরল নিরোধ (স্পিল প্রুফ) না হলে ব্যবহারের সময় যাতে কি-বোর্ডে কোনো তরল পদার্থ না পড়ে, সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে।
# ল্যাপটপে সব সময় অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার ব্যবহার করতে হবে এবং তা নিয়মিত হালনাগাদ করতে হবে।
# পেনড্রাইভ, বহনযোগ্য হার্ডডিস্ক ড্রাইভ, মেমোরি কার্ড ইত্যাদি ব্যবহারের আগে অ্যান্টিভাইরাস দিয়ে পরীক্ষা (স্ক্যান) ও পরিষ্ককার (ক্লিন) করে নিতে হবে।
# ল্যাপটপের সঙ্গে সাধারণত নিবন্ধিত (লাইসেন্স) অপারেটিং সিস্টেম পাওয়া যায়। অপারেটিং সিস্টেমটি মাঝেমধ্যে হালনাগাদ করা উচিত।

তথ্যসূত্র: প্রথম আলো

আপনি কি ল্যাপটপ কিনছেন?


বিশাল বাক্স-পেঁটরা আর ঘর ভরা যন্ত্রপাতি নিয়ে শুরু হয়েছিল কম্পিউটারের পথচলা। ছোট হতে হতে সেই কম্পিউটার এখন আপনার হাতব্যাগে। কোনোটা আবার হাতের মুঠোয়। বহনযোগ্য কম্পিউটার এখন যেমন কাজের, তেমনি এটা হয়ে উঠেছে তারুণ্যের প্রতীক। কোলে রেখেকাজ করা যায় বলে এর নাম ল্যাপটপ কম্পিউটার। আমাদের দেশে করপোরেট কর্মকর্তা, ব্যস্ত নির্বাহীর পাশাপাশি তরুণ প্রজন্েনর হাতে চলে এসেছে ল্যাপটপ কম্পিউটার।আর এ ধারা শুরু হয়েছে বছর তিন-চারেক আগে থেকে । প্রযুক্তিপণ্যের ব্যবসায়ীদের তথ্যমতে, দেশে এখন কম্পিউটার ক্রেতাদের মধ্যে ২০ শতাংশই ল্যাপটপ কিনছে। সারা বিশ্বে এই হার প্রায় ৬০ শতাংশ। ল্যাপটপ বিক্রেতা ও আমদানিকারকদের হিসাবে, আগামী বছর নাগাদ দেশের কম্পিউটার ক্রেতাদের মধ্যে ৪০ শতাংশই ল্যাপটপ কিনবে। কেননা, ডেস্কটপ আর ল্যাপটপের দামের পার্থক্য এখন আর খুব একটা বেশি নয়।

কাদের জন্য ল্যাপটপ
শিক্ষার্থীই হোক বা কর্মজীবী, বাড়িতে বা অফিসে কম্পিউটার তো এখন লাগেই। তবে কথা হলো, কী ধরনের কম্পিউটার আপনার প্রয়োজন−ডেস্কটপ না ল্যাপটপ! নিজের প্রয়োজন না বুঝে হুট করে কম্পিউটার কিনে ফেললে পরে আফসোস হতে পারে। তার চেয়ে আগে থেকে জেনে-বুঝে কম্পিউটার কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়াই ভালো। এমনটাই মনে করেন, রায়ানস আইটি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমেদ হাসান। তিনি আরও জানান, কেবল ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করতে চাইলে কোনো ব্যক্তির প্রথম কম্পিউটারটি ল্যাপটপই হওয়া উচিত। শুধু ছবি দেখা, গান শোনা, কম্পিউটারে লেখালেখি বা ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য হলে, ল্যাপটপই যথেষ্ট। আর যদি আপনার আগ্রহ থাকে গ্রাফিকস ডিজাইন বা গেম খেলার দিকে তবে ডেস্কটপই ভালো। কেননা, ডেস্কটপে আপনি প্রয়োজনমতো যন্ত্রাংশ সংযোজন, বিয়োজন করতে পারবেন। অন্যদিকে ল্যাপটপে শুধু র‌্যাম ও হার্ডডিস্ক ড্রাইভ বাড়ানোর সুযোগ থাকে। প্রায় একই ধরনের পরামর্শ দিলেন বাংলাদেশে এসারের ব্যবসায়িক অংশীদার এক্সিকিউটিভ টেকনোলজিসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোকলেছুর রহমান। সেই সঙ্গে তিনি যোগ করলেন, দেশে চলে এসেছে ওয়াইম্যাক্সের মতো দ্রুতগতির ইন্টারনেট প্রযুক্তি। করপোরেট অফিসের বড় কর্মকর্তা বা সাধারণ শিক্ষার্থী−এখন সবারই প্রয়োজন বিশ্বের সঙ্গে সব সময় যুক্ত থাকা। মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট ব্যবহার করা গেলেও চাহিদার কতটুকুই বা মোবাইল ফোনের ছোট পর্দা পূরণ করতে পারে? আর সে কথা মাথায় রেখেই ল্যাপটপ নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বাজারে ছাড়ছে শুধু ইন্টারনেট ব্যবহারের অপেক্ষাকৃত কম দামের এবং ওজনে হালকা ল্যাপটপ কম্পিউটার। যাকে বলা হচ্ছে নেটবুক। তবে এখন দেশে গ্রাফিকসের মতো বড় বড় কাজের উপযোগী ল্যাপটপও পাওয়া যাচ্ছে বাজারে।
আসুস ও ডেল ল্যাপটপ আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ব্র্যান্ড প্রা. লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল আনোয়ার জানান, ল্যাপটপের এই ছোট্ট সংস্করণকে আমরা বলছি সেকেন্ড পিসি বা দ্বিতীয় কম্পিউটার। ধরুন, আপনার একটি ডেস্কটপ বা ল্যাপটপ কম্পিউটার আছে। অপেক্ষাকৃত ভারী এই কম্পিউটার আপনার সব জায়গায় নিয়ে যাওয়া অনেক সময়ই সম্ভব হয় না। সে ক্ষেত্রে ছোটখাটো কাজ ও যোগাযোগ রক্ষার জন্য আপনার প্রয়োজন নেটবুক বা ছোট্ট ল্যাপটপ।
বর্তমান বাজারে নোটবুক আর নেটবুক এই দুটি নামে বহনযোগ্য কম্পিউটার বা ল্যাপটপ পাওয়া যাচ্ছে। নোটবুক আসলে পূর্ণাঙ্গ ল্যাপটপ কম্পিউটারের নামান্তর মাত্র।

ল্যাপটপ কেনার আগে
আসছে ঈদ। অনেকেই ঈদ বোনাসের টাকা দিয়ে ল্যাপটপ কেনার কথা ভাবছেন। তবে কেনার আগে ভালো করে যাচাই-বাছাই করে নিতে হবে। ল্যাপটপ কেনার আগেই কিছু বিষয়ে লক্ষ রাখলে ভবিষ্যতে নিজের জন্যই ভালো হবে।এ বিষয়ে এইচপি, ফুজিৎসু ইত্যাদি ব্র্যান্ডের ল্যাপটপ কম্পিউটার বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠান কম্পিউটার সোর্সের পরিচালক মুহিবুল হাসান জানান, ল্যাপটপ কেনার আগেই ভালোভাবে আপনার নিজের প্রয়োজনটি বুঝে নেওয়া উচিত। আপনার প্রয়োজন যদি হয় শুধু ইন্টারনেট ব্যবহার, তাহলে ছোট্ট ল্যাপটপ বা নেটবুকই যথেষ্ট।
যে বিষয়গুলোর প্রতি লক্ষ রাখতে হবে
"" যে ব্র্যান্ডের ল্যাপটপ কিনবেন, তার সম্পর্কে খোঁজখবর নিন।
"" আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ল্যাপটপের বিভিন্ন রেটিং হয়, সেদিকেও লক্ষ রাখতে পারেন।
"" বিক্রয়োত্তর সেবা কেমন এবং ল্যাপটপ আমদানিকারকের বিক্রয়োত্তর সেবা দেওয়ার মতো প্রয়োজনীয় অবকাঠামো আছে কি না, খোঁজ নিন।
"" কী কী সমস্যা হলে বিক্রয়োত্তর সেবা পাওয়া যাবে আর কোন কোন সমস্যায় পাওয়া যাবে না, তা আগেই জেনে নিন।
"" অপারেটিং সিস্টেম নিবন্ধিত (লাইসেন্স) কি না, তা জেনে নিন।
"" কেনার আগে ল্যাপটপটির ব্যাটারির মান কেমন, তা জেনে নিন।
"" বিক্রেতার কাছ থেকে জেনে নিন ল্যাপটপের র‌্যাম ও হার্ডডিস্ক ড্রাইভ কতটুকু বাড়ানো যাবে।
"" প্রসেসরের গতির দিকে লক্ষ রাখুন।
"" ইন্টারনেট ব্যবহার ও যোগাযোগপ্রযুক্তির সর্বশেষ সুবিধাগুলো পাওয়া যাবে কি না, সেদিকে লক্ষ রাখুন।
"" ব্যাটারি, অ্যাডাপ্টর, ব্যাগসহ ল্যাপটপটির মোট ওজন কত তা জেনে বুঝে নিন।

বাজার ঘুরে
দেশের বাজারে আসছে নিত্যনতুন মডেলের ল্যাপটপ কম্পিউটার। এর মধ্যে সাত ইঞ্চি মনিটরের ২০ হাজার ৫০০ টাকা দামের আসুসের ই-পিসি যেমন রয়েছে, তেমনি রয়েছে ১৫ ইঞ্চি মনিটরের এক লাখ ৭৫ হাজার টাকা দামের অ্যাপল ম্যাক বুক প্রোর মতো ল্যাপটপ। নিচে বিভিন্ন দামের কিছু ল্যাপটপের খোঁজ দেওয়া হলো।
৪০ হাজার টাকার নিচে
বর্তমান বাজারে ৪০ হাজার টাকার নিচে যেসব ল্যাপটপ পাওয়া যায়, তার মধ্যে বিভিন্ন মান ও আকারের ল্যাপটপ রয়েছে। বিভিন্ন আকারের নেটবুকও পাবেন এই দামে।
এসার ১০.১ ইঞ্চি মনিটরের ছোট্ট নেটবুক ২৯ হাজার ৯৯৯ টাকা; ১১.৬ ইঞ্চির নেটবুক দাম ৩৮ হাজার ৮০০ টাকা; ডেল ২১০০ নেটবুক ৩৫ হাজার টাকা; এইচপি মিনি ১১০১০০৬টিউ ৩৩ হাজার টাকা; লেনোভো আইডিয়া প্যাড এস১০ ৩৫ হাজার ৫০০ টাকা; আসুস: কে৪০ ৩৫ হাজার ৫০০ টাকা; ফুজিৎসু এম১০১০ ৩৫ হাজার টাকা; বেনকিউ ইউ১০১ ৩৩ হাজার টাকা; তোশিবা: এনবি২০০-এ১০১ ৩৫ হাজার ৫০০ টাকা; হ্যাসি এফইউ৪০০ ৩৮ হাজার টাকা; পশবুক ১০২ মডেল ২৭ হাজার টাকা এবং প্রোলিংক ২২ হাজার টাকা।
৪১ থেকে ৫৯ হাজার টাকা
এই দামের মধ্যে ভালো মানের পূর্ণাঙ্গ ল্যাপটপ কম্পিউটার পাওয়া যাবে। এইচপি ৫৪০ ৪৬ হাজার টাকা; কমপ্যাক সিকিউ৪৫ ৪০২টিইউ ৫৬ হাজার ৫০০ টাকা; এসার: অ্যাস্পায়ার ৪৭৩৬জেড ৪৩ হাজার ৮০০ টাকা; ৫৮১০টি ৬৯ হাজার ৮০০ টাকা; তোশিবা স্যাটেলাইট এল৩০০-এস৫০২ ৪৯ হাজার টাকা; এল৩১০-এস৪০৮ ৫৯ হাজার ৯০০ টাকা; লেনোভো ৩০০০জি৪৩০ ৪৫ হাজার ৫০০ টাকা; আইডিয়া প্যাড ওয়াই৩৩০ ৫৮ হাজার ৫০০ টাকা; ফুজিৎসু লাইফবুক এস৭২১১ ৫৫ হাজার টাকা; এল১০১০ ৫৯ হাজার ৯০০ টাকা; ডেল ভস্ট্রো এ৮৬০ ৫৫ হাজার টাকা; ডেল ১৫১০ ৫৯ হাজার টাকা; আসুস: এফ৮২কিউ-টি৪২০০ ৪৩ হাজার ৯০০ টাকা এবং কে৪০আইজে টি৬৫০০ ৫৮ হাজার ৫০০ টাকা।
৬০ থেকে ৯৯ হাজার টাকা
অ্যাপল ম্যাকবুক হোয়াইট ৯০ হাজার টাকা; এ১১৮১ (অ্যালুমিনিয়াম) ৯৯ হাজার টাকা; এইচপি কমপ্যাক প্রোসেরিও সিকিউ২০ ১২২টিইউ ৭২ হাজার টাকা; প্যাভিলিয়ন টিএক্স২ ১০১১এইউ ৯৫ হাজার টাকা; এসার: অ্যাস্পায়ার ২৯৩০ ৬২ হাজার ৮০০ টাকা; ৫৮১০টি ৬৯ হাজার ৮০০ টাকা; আসুস এফ৬এটি৬৫০০ ৬৫ হাজার টাকা; ইউ৬ভিপি৭৩৫০ ৯৮ হাজার টাকা; তোশিবা স্যাটেলাইট এম৩০০পি৪০৬ ৬০ হাজার টাকা; এম১০ এস৪৫০ ৮৫ হাজার টাকা; লেনোভো: ৩০০০ জি২৩০ ৬৩ হাজার টাকা; ফুজিৎসু লাইফবুক এ১১১০ ৬১ হাজার টাকা; এস৬৪২০ ৯৮ হাজার টাকা; ডেল ভস্ট্রো১৫২০ ৬৫ হাজার টাকা এবং ই৬৫০০এন ৯১ হাজার টাকা।
এক লাখ টাকার বেশি
এইচপি কমপ্যাক ২৫১০পি এক লাখ ২০ হাজার টাকা; ফুজিৎসু লাইফবুক ই৮৪২০ এক লাখ ৩০ হাজার টাকা; কিউ২০১০ এক লাখ ৯৯ হাজার টাকা; ডেল ল্যাটিচুড ই৬৪০০ এক লাখ তিন হাজার টাকা এবং ই৪৩০০ এক লাখ ৩২ হাজার টাকা। অ্যাপল ম্যাকবুক দি অ্যালুমিনিয়াম এক লাখ ২০ হাজার টাকা; ম্যাকবুক এয়ার এক লাখ ৫৫ হাজার টাকা; ম্যাকবুক প্রো (১৫ ইঞ্চি) এক লাখ ৭৫ হাজার টাকা।
সনি ভায়ো ভিজিএন-জেড২৫ এক লাখ ১৫ হাজার টাকা; সিএস-৩৬ এক লাখ ১৫ হাজার টাকা এবং জেড-৪৬ এক লাখ ৯০ হাজার টাকা।

ল্যাপটপে যোগাযোগ ও নিরাপত্তা
ল্যাপটপ কম্পিউটারে নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখতে হবে। বিভিন্ন ল্যাপটপে এখন আঙ্গুলের ছাপ শণাক্ত করার প্রযুক্তি দিয়ে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। এতে আপনার কম্পিউটার চালু করতে হলে আপনার আঙুলের ছাপ লাগবে।এ ছাড়াও আছে চেহারা শণাক্ত করার প্রযুক্তি। এই প্রযুক্তিতে ল্যাপটপ চালু করার আগে ওয়েবক্যামের সাহায্যে ল্যাপটপ আপনার ছবি তুলে তা আগে থেকেই সংরক্ষিত ছবির সঙ্গে মিলিয়ে দেখবে। যোগাযোগের জন্য ল্যাপটপের জনপ্রিয় প্রযুক্তিগুলো হলো লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক (ল্যান), ওয়েবক্যাম, ব্লুটুথ, তারহীন ওয়াইফাই ইত্যাদি।

তথ্যসূত্র: প্রথম আলো

 
Design by Free WordPress Themes | Bloggerized by Lasantha - Premium Blogger Themes | Best Buy Coupons