বৃহস্পতিবার, ২৬ নভেম্বর, ২০০৯

পেনড্রাইভের নানা ব্যবহার

পেনড্রাইভ একটি পোর্টেবল ইউএসবি মেমরি ডিভাইস। এটি দিয়ে খুব দ্রুত ফাইল, অডিও, ভিডিও, সফটওয়্যার এক কমপিউটার থেকে অন্য কমপিউটারে ট্রান্সফার করা যায়। এই ডিভাইসটি এতই ছোট যে যেকেউ পকেটে বা ব্যাগে করে সহজে বহন করতে পারেন এবং মূল্যবান তথ্য সবসময় পেনড্রাইভে রেখে ব্যবহার করেন।



পেনড্রাইভ বর্তমানে অনেকেই ব্যবহার করে থাকেন। আর এই পেনড্রাইভ দৈনন্দিন জীবনে একটি বড় অংশ হিসেবে কাজ করছে, যা আমাদেরকে ছোট পোর্টেবল হার্ডডিস্কের সুবিধা দিয়ে থাকে। যারা নিয়মিত কমপিউটার ব্যবহার করে থাকেন বা যাদের দরকারী ফাইল সবসময় প্রয়োজন হয় তাদের অনেকেই পেনড্রাইভ ব্যবহার করে থাকেন। পেনড্রাইভ দিয়ে শুধু তথ্য আদানপ্রদানই নয়, এর বাইরের অনেক কাজেও ব্যবহার করা যায়। তাই এবারের লেখায় পেনড্রাইভের নানাবিধ সুবিধা ও ব্যবহার সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

পোর্টেবল অ্যাপ্লিকেশন

অনেককেই বিভিন্ন কাজে বাইরে ভিন্ন পরিবেশের কমপিউটারে কাজ করতে হয়। সেক্ষেত্রে ভিন্ন পরিবেশের কমপিউটারের অ্যাপ্লিকেশন বা টুলগুলো অনেক অচেনা মনে হতে পারে। সেক্ষেত্রে আপনি পোর্টেবল অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করতে পারেন। বেশ কয়েক সংখ্যা আগে পোর্টেবল অ্যাপ্লিকেশনের ওপর বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছিল। এই পোর্টেবল অ্যাপ্লিকেশনের কাজ হচ্ছে এটি এমন একটি অ্যাপ্লিকেশন, যার ভেতর অনেক ধরনের টুল বিল্টেইন অবস্থায় থাকে। যেমন : এন্টিভাইরাস, ওপেন অফিস, ইনস্ট্যান্ট মেসেঞ্জার, ফায়ারফক্স, গেমস, ভিডিও-অডিও প্লেয়ারসহ বেশ কয়েক ধরনের টুল। এই টুলগুলো আপনার পেনড্রাইভে নিয়ে যেকোনো কমপিউটারে বসে পেনড্রাইভ থেকে ব্যবহার করতে পারেন। এতে আপনাকে পরিবেশ ভিন্ন হওয়ার পরও অ্যাপ্লিকেশনগুলোকে অচেনা মনে হবে না।

পেনড্রাইভ দিয়ে লগইন-লগআউট

ইউজার সিকিউরিটি বর্তমানে একটি প্রধান বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্তমানে অনেকেই কমপিউটারের লগইন পাসওয়ার্ডকে সিকিউর ভাবেন না, কারণ হ্যাকারদের কাছে কমপিউটারের পাসওয়ার্ড বের করা তেমন কষ্টকর নয়। সেক্ষেত্রে পেনড্রাইভ দিয়ে এর সিকিউরিটি দেয়া সম্ভব। বর্তমানে অনেক ফ্ল্যাশড্রাইভ বা পেনড্রাইভের সাথে সফটওয়্যার আসছে, যা দিয়ে লগইন-লগআউট অপশন সেট করা যায়। BlueMicro USB Flash Drive Logon এমন একটি থার্ড পার্টি সফটওয়্যার, যা আপনাকে ওপরের সুবিধাটি দিতে পারে। এই সফটওয়্যারের ব্যবহার দিয়ে আপনার পেনড্রাইভকে কমপিউটারের জন্য একটি চাবি হিসেবে ব্যবহার করতে পারবেন। যেমন ধরুন আপনি কমপিউটারে লগইন করতে চাচ্ছেন সেক্ষেত্রে আপনার নির্দিষ্ট পেনড্রাইভ ইউএসবি পোর্টে সংযোগ এবং কমপিউটারে পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করতে হবে। পেনড্রাইভ ছাড়া কমপিউটারে লগইন করতে পারবেন না। এই পদ্ধতি যেমনি সিকিউরিটি বাড়িয়েছে, তেমনি একটি সমস্যাও রয়েছে। কোনো কারণে পেনড্রাইভটি হারিয়ে গেলে আপনি নিজেই কমপিউটারে লগইন করতে পারবেন না।

ক্যাস বাড়াতে পেনড্রাইভ

কিছু প্লাগইন আপনার কমপিউটারের স্পিড বাড়াতে সক্ষম হবে। Windows ReadyBoost নামে একটি ফিচার রয়েছে যা উইন্ডোজ ভিসতাতে কাজ করে এবং উইন্ডোজ এক্সপির জন্য রয়েছে eBoostrer। অনেক ইউজারের কমপিউটারের র্যাসমের সাইজ কম থাকে। যার ফলে কমপিউটারের স্পিড কমে যায়। কমপিউটারের স্পিড বাড়ানোর জন্য পেনড্রাইভ ব্যবহার করতে পারেন। আপনার পেনড্রাইভটি ইউএসবি পোর্টে যুক্ত করুন। নরমাল কমপিউটারে উইন্ডোজের মেমরির পেজ ফাইল সি ড্রাইভে সেভ হয়ে থাকে। আপনি তা পরিবর্তন করে পেনড্রাইভের লোকেশন দেখিয়ে দিতে পারেন। এতে পেজ ফাইলের স্টোরের সাইজের পরিমাণ বাড়বে।

এনক্রিপ্টেড ডাটা

আপনার ব্যবহারের সব ফাইল, ফোল্ডারকে পেনড্রাইভে নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় যাচ্ছেন এবং ভিন্ন পরিবেশের কমপিউটারে ব্যবহার করছেন। অনেক সময় আপনার খুব পার্সোনাল ফাইল বা পাসওয়ার্ডসমূহের তথ্য পেনড্রাইভে থাকতে পারে। কিন্তু যদি কোনো কারণে পেনড্রাইভটি হারিয়ে যায়, তাহলে আপনার পার্সোনাল তথ্যগুলো অন্যের কাছে চলে যেতে পারে। এক্ষেত্রে আপনি আপনার পার্সোনাল ডাটাগুলোকে এনক্রিপ্টেড করে রাখতে পারেন। এনক্রিপ্টেড করার জন্য TrueCrypt, Dekart Private Disk Light টুলগুলো ব্যবহার করতে পারেন। এনক্রিপ্ট করার আগে এর ব্যবহারবিধি পড়ে নেবেন।

সিস্টেম অ্যাডমিনের ড্রাইভার

অনেক সিস্টেম অ্যাডমিন রয়েছে, যাদের কমপিউটারে নিয়মিত ড্রাইভার আপডেট বা ইনস্টল করতে হয়। সেক্ষেত্রে ড্রাইভারগুলোকে এক্সটারনাল হার্ডডিস্কে সেভ করে নিয়ে কাজ করে থাকেন অথবা সিডি বা ডিভিডিতে রাইট করে নিয়ে ব্যবহার করে থাকেন। কিন্তু ড্রাইভারগুলোকে পেনড্রাইভের একটি নির্দিষ্ট ফোল্ডারে রেখে ব্যবহার করা হয় তাহলে অনেক সুবিধা পাওয়া যাবে। যেমন : পেনড্রাইভ ওজনে হালকা হওয়াতে সবসময় এটি বহন করা যাবে এবং বিভিন্ন ড্রাইভের আপডেট বের হলে তা পেনড্রাইভে খুব সহজে আপডেট এবং ব্যবহার করা যাবে।

পোর্টেবল অপারেটিং সিস্টেম

বর্তমানে পোর্টেবল অ্যাপ্লিকেশনের পাশাপাশি পোর্টেবল অপারেটিং সিস্টেম বের হয়েছে। অনেকেই আছেন, যারা উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমের পাশাপাশি লিনআক্স ব্যবহার করতে চাচ্ছেন, কিন্তু পার্টিশনের ভয়ে লিনআক্স ব্যবহার করতে পারছেন না। সেক্ষেত্রে পেনড্রাইভে পোর্টেবল লিনআক্সকে নিয়ে খুব সহজে ব্যবহার করতে পারেন। আপনার কমপিউটারের প্রয়োজনীয় ফাইলগুলোকে পোর্টেবল অপারেটিং সিস্টেম দিয়ে ব্যবহার করতে পারবেন।

অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় ভিন্ন পরিবেশে কমপিউটার ব্যবহার করতে গেলে কমপিউটারের ব্যবহারবিধির ওপর অনেক রেস্ট্রিকশন থাকে। সেক্ষেত্রে পোর্টেবল অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করতে পারেন। এতে আপনাকে কোনো রেস্ট্রিকশনের ভেতর থাকতে হবে না।

কোনো বন্ধুর কমপিউটার ব্যবহার করতে চাচ্ছেন, কিন্তু তার কমপিউটারটি ভাইরাসে আক্রান্ত, সেক্ষেত্রে পোর্টেবল অপারেটিং সিস্টেম দিয়ে আপনি কমপিউটারটি ব্যবহার করতে পারবেন এবং আপনার বন্ধুর কমপিউটারের ভাইরাসগুলোকে রিমুভ করতে পারবেন। বেশ কিছু পোর্টেবল অপারেটিং সিস্টেম হচ্ছে Knoppix, DamnSmall Linux, Puppy Linux, Linux Mint ইত্যাদি।

রিকোভারি এনভায়রনমেন্ট

উইন্ডোজ এক্সপি অনেকেই ব্যবহার করেন কিন্তু ভাইরাসের কারণে অনেক সময় ফাইল মিসিং হয় এবং ফাইল বা ডিএলএল মিসিংয়ের কারণে অনেক সময় কমপিউটার অন হয় না। সেক্ষেত্রে নতুন করে উইন্ডোজ সেটআপ দিয়ে থাকেন। কিন্তু পেনড্রাইভ দিয়ে আপনি এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন। উইন্ডোজ এক্সপির রিকোভারি করার ফাইলগুলো পেনড্রাইভে নিয়ে খুব সহজে এক্সপি রিকোভারি অপশন থেকে রিকোভার করে নিতে পারেন। Bartpe এমন একটি গ্রাফিক্যাল রিকোভারি টুল।

সূত্র : কমপিউটার জগৎ

কিভাবে সেট করবেন অ্যাড্রেসবার সার্চ ইঞ্জিন

আপনার ওয়েব ব্রাউজারে পছন্দমতো একটি সার্চ ইঞ্জিন সেট করতে পারেন এবং তা ব্যবহার করে দ্রুততার সাথে কোনো তথ্য বা ওয়েবসাইট বের করতে পারেন। সহজে এবং দ্রুততার সাথে তথ্য খোঁজার জন্যই ব্রাউজারের অ্যাড্রেস বারে কার্যকরী সার্চ ইঞ্জিন থাকা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

ব্রাউজারের অ্যাড্রেস বারেই যদি সার্চ ইঞ্জিন পাওয়া যায় তাহলে সময় ক্ষেপণ করে পৃথকভাবে এমএসএন বা গুগল ওয়েবসাইটের সার্চ ইঞ্জিন ব্যবহারের আবশ্যকতা নেই। আপনি পছন্দমতো ওয়েব ব্রাউজারে সার্চ ইঞ্জিন যুক্ত করে নিয়ে তা অনায়াসে ব্যবহার করতে পারেন। এখানে ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার ওয়েব ব্রাউজারে সার্চ ইঞ্জিন যুক্ত করার কৌশল দেখানো হলো।



ইন্টারনেট এক্সপ্লোরারে View > Explorer Bar > Search-এ ক্লিক করুন অথবা টুলবারের “Search”-এ ক্লিক করে সাইড প্যানেল নিয়ে আসতে পারেন। স্ক্রিনে সাইড বার আসলে “Change Preferences” ক্লিক করে এরপর “Change Internet Search Behavior”-এ পুনরায় ক্লিক করুন। এর ফলে আপনার সামনে সার্চ ইঞ্জিনের একটি তালিকা আসবে। তালিকা থেকে আপনার পছন্দীয় সার্চ ইঞ্জিন সিলেক্ট করে ওকে বাটনে ক্লিক করুন। নতুন ডিফল্ট সেটিং কেবল সাইড বারে সম্পাদিত সার্চের জন্য প্রযোজ্য হবে। এ পর্যায়ে আপনি যদি অ্যাড্রেস বারে কোনো শব্দ টাইপ করেন, তাহলে সেটি সেটকৃত সার্চ ইঞ্জিনে চলে যাবে।



অ্যাড্রেস বার সার্চ-এর লুক বা ইন্টারফেস পরিবর্তন করার জন্য “With Classic Internet Search” মার্ক করা রেডিও বাটন সিলেক্ট করে ওকে করুন। এক্সপ্লোরার বন্ধ করে তা পুনরায় ওপেন করুন। আপনি লক্ষ করলেই দেখবেন সাইড বারের লুক-এ পরিবর্তন এসেছে। ইন্টারনেট এক্সপ্লোরারের (IE) পূর্বের ভার্সনের মতো সাদা ব্যাকগ্রাউন্ডে প্লেইন টেক্সট দেখা যাচ্ছে। মেনু বারের ওপরের দিকে একটি বাটন দেখা যাবে যা “Customize” হিসেবে মার্ক করা রয়েছে। এখানে ক্লিক করা মাত্রই “Customize Search Settings” বক্সটি ওপেন হয়ে যাবে। এরপর বাটন সিলেক্ট করলে একটি বক্স আসবে যেখানে আপনি অ্যাড্রেস বারে সার্চ করার জন্য ডিফল্ট সার্চ ইঞ্জিন পরিবর্তন করতে পারেন।



এখান থেকে আপনার পছন্দমতো সার্চ ইঞ্জিনটি সিলেক্ট করে সাইড বারটি বন্ধ করে দিন। এখন আপনি অ্যাড্রেস বারে কেনো ওয়ার্ড টাইপ করলে সার্চ ইঞ্জিন তার নিজস্ব পেজে সার্চ রেজাল্ট প্রদর্শন করবে।

সার্চ রেজাল্ট কোথায় প্রদর্শিত হবে সেটি আপনি নিজের পছন্দমতো সেটিং করে নিতে পারে। উদাহরণস্বরূপ উইন্ডোজ এক্সপ্লোরার ৬-এ সেটিংটি করার জন্য আপনাকে Tools-এর Internet Options সাব-মেনু থেকে Advanced বাটন সিলেক্ট করতে হবে। এখানে আপনি অ্যাড্রেস বার থেকে সার্চ করলে তার রেজাল্ট বিভিন্ন ফরম্যাটে প্রদর্শনের জন্য ৪টি অপশন পাবেন। এ ৪টি অপশন থেকে নিজের পছন্দমতো একটি অপশন বেছে নিন।

তবে ৪টি অপশনের মধ্যে Just go to the most likely site ব্যবহারকারীর জন্য সবচেয়ে সুবিধাজনক। তার কারণ এতে সার্চ রেজাল্ট সার্চ ওয়ার্ডের কাছাকাছি সম্ভাব্য ওয়েবসাইটগুলোর তালিকা লিঙ্কসহ একটি উইন্ডোতে দেখাবে। লিঙ্কে ক্লিক করেই আপনি কাঙ্ক্ষিত ওয়েবসাইটের নাগাল পেয়ে যাবেন।

সূত্র : কম্পিউটার জগৎ

রেজিস্ট্রি এডিটিংয়ের প্রাথমিক ধারণা

রেজিস্ট্রি এডিটিং খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে এ কাজটি সুদক্ষ ও অভিজ্ঞদের জন্য, সাধারণ ব্যবহারকারীর জন্য নয়। কেননা, রেজিস্ট্রি এডিটিংয়ের ক্ষেত্রে সামান্য ভুলের কারণে সিস্টেম ড্যামেজ হয়ে যেতে পারে। যারা দীর্ঘদিন ধরে কমপিউটারে কাজ করছেন এবং রেজিস্ট্রি এডিটিং সম্পর্কে মোটামুটি স্পষ্ট ধারণা রাখেন বা মোটামুটি অভিজ্ঞ, তাদের জন্য এবারের পাঠশালা বিভাগে তুলে ধরা হয়েছে নিরাপদে রেজিস্ট্রি এডিটিংয়ের কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

রেজিস্ট্রি হলো এমন এক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যে সম্পর্কে বিপুলসংখ্যক কমপিউটার ব্যবহারকারী হয় পুরোপুরী অজ্ঞ অথবা সযত্নে তারা এ বিষয়টি এড়িয়ে যান যৌক্তিক কারণে। কেননা, উইন্ডোজ যদি ঠিকমতো কাজ না করে, তাহলে কোনো অবস্থাতেই রেজিস্ট্রি নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করা উচিত হবে না। যদি সিস্টেম যথাযথভাবে কাজ করতে না পারে, তাহলে অদক্ষ বা শিক্ষানবিসদের উচিত হবে না রেজিস্ট্রি নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করা। কিন্তু, রেজিস্ট্রি কী, কখন ঝুঁকি নিয়ে এতে কাজ করা যায় ইত্যাদি প্রশ্ন সঙ্গত কারণে সবার মনে জাগতেই পারে। এ বিষয়গুলো পাঠকদের সামনে তুলে ধরা হয়েছে এবারের পাঠশালা বিভাগে।

রেজিস্ট্রি হলো এক বিশাল ডাটাবেজ, যা উইন্ডোজসংশ্লিষ্ট সেটিং স্টোর করতে ব্যবহার হয়। এর সাথে থাকে কমপিউটারে ইনস্টল করা হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যারের তথ্য, যা উইন্ডোজের অপারেশনের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ। কন্ট্রোল প্যানেল অথবা প্রোগ্রাম অপশন কিংবা প্রেফারেন্স স্ক্রিন ব্যবহার করে সেটিংয়ে কোনো পরিবর্তন করা হলে, সেই পরিবর্তনগুলোও রেজিস্ট্রিতে রেকর্ড হয়ে থাকে। সুতরাং সবসময় রেজিস্ট্রির গভীরে এক্সেসের প্রয়োজন হয় না। কেননা, উইন্ডোজ ব্যবহার করে খুব সহজইে সেটিংগুলোর সমন্বয় করা যায়। তবে রেজিস্ট্রি কিভাবে কাজ করে এ সম্পর্কে জানতে পারলে, আপনি কমপিউটারের ওপর অধিকতর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করতে পারবেন এবং লুকানো সেটিংয়ে এক্সেস করতে পারবেন। এ কাজটি যেভাবে শুরু করতে হবে এবং যেভাবে নিরাপদে সম্পন্ন হবে, তা নিচে ধাপে ধাপে বর্ণিত হলো :

ব্যাকআপ

মনে রাখতে হবে, রেজিস্ট্রি এডিট করা এক মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ কাজ। দুর্ঘটনাক্রমে ভুল সেটিংয়ে পরিবর্তন করা হলে উইন্ডোজ এবং পিসি অপারেশনে অনুপযোগী হয়ে যাবে। এ লেখা পড়ে অনভিজ্ঞ বা অভিজ্ঞ কোনো ব্যক্তি রেজিস্ট্রি এডিট করতে গিয়ে কোনোরূপ ক্ষতির মুখোমুখি হলে তার দায়দায়িত্ব অন্য কেউ বা লেখক কেউ নিতে বাধ্য নন। রেজিস্ট্রি এডিটের উল্লিখিত কাজগুলো করতে চাইলে একান্তই নিজ দায়দায়িত্বে করতে হবে। সুতরাং রেজিস্ট্রি এডিটের কাজ করতে চাইলে প্রথমে এর একটি ব্যাকআপ অবশ্যই তৈরি করতে হবে, যাতে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে আগের স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা যায়। তৈরি করুন সিস্টেম রিস্টোর পয়েন্ট এবং রেজিস্ট্রি এডিটিংয়ের কাজ শুরুর আগে মূল্যবান ডাটার ব্যাকআপ তৈরি করুন। রেজিস্ট্রি এডিটিংয়ের ক্ষেত্রে আরেকটি বিষয় মনে রাখা উচিত, এখানে কোনো আনডু (Undo) ফিচার নেই।

রেজিস্ট্রিতে এক্সেস

রেজিস্ট্রিতে কাজ করতে চাইলে রেজিস্ট্রি এডিটর ওপেন করতে হবে। রেজিস্ট্রি এডিটর কয়েকভাবে ওপেন করা যায়। ভিসতায় রেজিস্ট্রি এডিটর ওপেন করার জন্য Start-এ ক্লিক করে regedit টাইপ করে প্রদর্শিত লিস্ট থেকে এন্ট্রি সিলেক্ট করুন। আর এক্সপির জন্য Start-এ ক্লিক করে সিলেক্ট করুন Run এবং প্রদর্শিত ডায়ালগ বক্সে regedit টাইপ করে OK-তে ক্লিক করুন। বিকল্প হিসেবে regedit টাইপ করে এন্টার চাপার আগে যেকোনো উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমে উইন্ডোজ কী চেপে ধরে সাথে সাথে R চাপুন। আর ভিসতায় User Account Control বক্সে Continue-এ ক্লিক করতে হবে, যদি এটি প্রদর্শিত হয়। রেজিস্ট্রি এডিটর লোড হবার পর স্ক্রিন উইন্ডোজ এক্সপ্লোরারের মতো হবে। রেজিস্ট্রির বিভিন্ন কম্পোনেন্ট প্রদর্শিত হবে বাম প্যানেলে ট্রি স্ট্রাকচারে অনেকটা এক্সপ্লোরারের ফোল্ডার প্রদর্শনের মতো, আর বাড়তি কনটেন্ট প্রদর্শিত হয় ডান প্যানেলে।

রেজিস্ট্রির গভীরে

রেজিস্ট্রি পরিবেষ্টিত পারিভাষিক শব্দাবলী আমাদের অনেককেই বিভ্রান্ত করতে পারে। তাই রেজিস্ট্রি নিয়ে কাজ করার আগে কিছু প্রধান পদবাচ্য বা টার্ম সম্পর্কে আমাদের ধারণা লাভ করা উচিত।


চিত্র-০১

বাম প্যানেলে রয়েছে প্রধান পাঁচটি এন্ট্রি। এগুলো হাইভ (hive) বা তথ্যভান্ডার হিসেবে বিবেচিত এবং এগুলোর প্রতিটি বিভিন্ন ধরনের গুরুত্বপূর্ণ সেটিং স্টোরেজসংশ্লিষ্ট।

HKEY_CLASSES_ROOT হাইভ বা সংগ্রহশালা মূলত ব্যবহার হয় ফাইলসংশ্লিষ্ট তথ্য স্টোর তথা জমা করার কাজে।

HKEY_CURRENT_USER এটি বর্তমানে ব্যবহারকারীর উইন্ডোজে লগ করা সেটিংগুলো ধারণ করে।

HKEY_LOCAL_MACHINE এটি সিস্টেমে ইনস্টল করা হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যারের তথ্য স্টোর করে এবং এই সেটিংগুলো সব ব্যবহারকারীর কাজে প্রয়োগ হয়। পক্ষান্তরে HKEY_USERS ধারণ করে HKEY_CURRENT_USER সেকশনের লিঙ্কগুলো। খুব সীমিতসংখ্যক তথ্য মজুদ হয় HKEY_CURRENT_CONFIG লোকেশনে এবং HKEY_LOCAL_MACHINE লোকেশন থেকে টেনে আনা তথ্যসহ এটি বর্তমানে সিস্টেম কনফিগারেশনসংশ্লিষ্ট তথ্য ধারণ করে।

বাম প্যানেলে প্রদর্শিত মূল এন্ট্রিগুলোর যেকোনো একটির পাশের + চিহ্নে ক্লিক করে তা এক্সপান্ড বা সম্প্রসারণ করলে প্রদর্শিত হবে এক সিরিজ ফোল্ডার, যা কী হিসেবে পরিচিত। এগুলো ধারণ করতে পারে আরো সাব-কী। ডান প্যানেল প্রদর্শিত আইকনগুলো ভ্যালু হিসেবে পরিচিত এবং এগুলো স্ট্রিং, বাইনারি, DWORD এবং এক্সপান্ডেবল স্ট্রিং ইত্যাদিসহ বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে।


চিত্র-০২

ডান প্যানেল তিন কলামে বিভক্ত, যার প্রথমটিকে লেবেল করা হয়েছে Name হিসেবে। প্রকৃত অর্থে ভ্যালু কি তাই এটি নির্দেশ করে। Type কলাম প্রদর্শন করে ভ্যালুতে যে ধরনের কাজ বা দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছে। আর Data কলাম প্রদর্শন করে সেটিং, যা ভ্যালুতে প্রয়োগ করা হয়েছে। ভ্যালুর ধরনের ওপর নির্ভর করে ডাটা কলাম ধারণ করে পাথ, একটি নাম্বার অথবা একটি ওয়ার্ড। ভ্যালুতে কোনো সেটিং নাও থাকতে পারে। এক্ষেত্রে ‘Value not set’ ওয়ার্ড দিয়ে নির্দেশিত হয়।

রেজিস্ট্রি নিয়ে কাজ করা

রেজিস্ট্রি এডিটিং প্রসঙ্গ আসলে নিশ্চিত হওয়া যায় আপনি কিছু পরিবর্তন, যুক্ত বা ডিলিট করতে যাচ্ছেন। রেজিস্ট্রি এডিটিংয়ের কোনো ব্যাপারে যদি নিশ্চিত হতে না পারেন, তাহলে বার বার চেক করুন। যদি সন্দেহ থাকে, তাহলে এড়িয়ে যান। রেজিস্ট্রি এডিটিং এক অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ কাজ এবং কোনো ভুল হলে ব্যবহৃত কমপিউটারকে ব্যবহার অযোগ্য করে ফেলতে পারে মুহূর্তের মধ্যে। সুতরাং, যেকোনো ধরনের পরিবর্তন করার আগে অবশ্যই সবকিছুর ব্যাকআপ তৈরি করা উচিত। অথবা রেজিস্ট্রির প্রয়োজনীয় অংশবিশেষের ব্যাকআপ অবশ্যই করা উচিত, এ কাজটি বেশ কয়েকভাবে করা যায় :

প্রথম অপশন হলো ধারণ করা ডাটার সুরক্ষার জন্য সাব-কী ব্যাকআপ তৈরি করা। এজন্য একটি সাব-কীতে রাইট ক্লিক করে আবির্ভূত মেনু থেকে সিলেক্ট করুন Export অপশন। এবার আবির্ভূত ডায়ালগ বক্সে ব্যাকআপের জন্য একটি অর্থবহ নাম দিন এবং ‘Save as type’ মেনুর ‘Registration Files (*.reg)’ অপশন সিলেক্ট করা আছে কিনা, তা নিশ্চিত করে ওকে করুন। এর ফলে ব্যাকআপ ফাইল তৈরি হবে।


চিত্র-০৩

যদি প্রয়োজন হয়, তাহলে ব্যাকআপ আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে পারেন। এজন্য উপরে উল্লিখিত তৈরি করা .reg ফাইলে ডান ক্লিক করে Merge অপশন সিলেক্ট করতে হবে। রেজিস্ট্রি ব্যাকআপের প্রধান প্রক্রিয়া হিসেবে ব্যবহারের আগে নোট করা দরকার কখন .reg ফাইল রেজিস্ট্রিতে বিপরীতক্রমে মার্জ করবে। কেননা, এটি কী-তে যে পরিবর্তন ঘটানো হয়েছিল তার সবই আনডু করে না। যেকোনো ডাটা মুছে ফেলা বা পরিবর্তন করলে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা যায়, তবে কোনো কিছু যুক্ত করলে তা মোছা যায় না।

আর এ কারণে সম্পূর্ণ হাইভকে ব্যাকআপ করা দরকার। এজন্য যেকোনো কী-তে ডান ক্লিক করে Export অপশন সিলেক্ট করুন আগের বর্ণিত উপায়ে। এসময় লক্ষ রাখতে হবে, Save as type মেনুর Registry Hive Files (*.*) ফাইল যেন সিলেক্ট করা থাকে। যেসব ফাইল সৃষ্টি হয়, সেসব ফাইলে এক্সটেনশন থাকে না। তবে এটি রেজিস্ট্রিতে রি-ইমপোর্ট করা যায় কোনো পরিবর্তনকে আনডু করার জন্য। এটি .reg ফাইলের মতো নয়, যা রেজিস্ট্রির সাথে মার্জ করা যায়। হাইভকে ইমপোর্ট করতে হয় রেজিস্ট্রি এডিটরের মধ্যে। ফাইল মেনুতে ক্লিক করুন এবং ইমপোর্ট অপশন সিলেক্ট করুন। এবার ড্রপ ডাউন মেনু থেকে Registry Hive Files (*.*) সিলেক্ট করুন। এরপর Open-এ ক্লিক করার আগে যে ফাইল তৈরি করেছিলেন তা নেভিগেট করে সিলেক্ট করুন। এই অপশনকে নিশ্চিত করার জন্য Yes-এ ক্লিক করুন এবং OK-তে ক্লিক করে অপারেশন শেষ করুন।

হাইভ ব্যাকআপ করা মানে হলো রেজিস্ট্রি ব্যাকআপ সেকশনের সবচেয়ে নিরাপদ উপায়। কেননা, যখন ব্যাকআপ ইমপোর্ট করা হয়, তখন যেসব পরিবর্তন করা হয়েছিল, সেগুলো বাতিল হয়ে যাবে। কিভাবে রেজিস্ট্রির ব্যাকআপ ও রিস্টোর তৈরি করা যায়, সে সম্পর্কে বাড়তি তথ্য পাওয়া যাবে মাইক্রোসফটের ওয়েব সাইটে http://snipuprl.com.3zyar.

যেভাবে এগিয়ে যাবেন

যখন রেজিস্ট্রিতে নেভিগেট করা হয়, তখন আপনি ঠিক কোথায় আছেন, তা ট্র্যাক করা বা মনে রাখা আপাত দৃষ্টিতে কঠিন মনে হলেও প্রকৃত অর্থে তা বেশ সহজ। আর তা সহজ হয়েছে স্ট্যাটাসবারের সহায়তার কারণে, যা উইন্ডোজ এক্সপ্লোরারের মতো রেজিস্ট্রি এডিটের স্ক্রিনের নিচের দিকে যুক্ত করা হয়েছে। একটি ছোট তথ্য প্যানেল যা ডিসপ্লে করে বর্তমানে সিলেক্ট করা কী-এর অ্যাড্রেস। যদি এটি দেখা না যায়, তাহলে View মেনুতে ক্লিক করে নিশ্চিত করুন যে, Status Bar অপশন টিক করা আছে কিনা।

অনাকাঙ্ক্ষিত কী এবং ভ্যালু ডিলিট করতে চাইলে যথাযথ আইটেমকে ডান ক্লিক করে সিলেক্ট করুন Delete অপশন। লক্ষণীয়, নিরাপত্তার জন্য ডিলিট অ্যাকশন কার্যকর করার আগে সেই আইটেমকে রিনেম করা যেতে পারে। নির্দিষ্ট ভ্যালুতে যুক্ত ডাটা এডিট করতে চাইলে ডবল ক্লিক করুন এবং প্রয়োজনীয় পরিবর্তন সম্পন্ন করে ওকে করুন।

রেজিস্ট্রি টোয়েকের ক্ষেত্রে নতুন কী তৈরির প্রয়োজন হতে পারে। এজন্য সংশ্লিষ্ট কী নেভিগেট করে ওকে করুন, যা কাজ করে প্যারেন্ট হিসেবে। এবার Edit-এ ক্লিক এবং New-তে ক্লিক করার আগে কী-এর নাম দিয়ে এন্টার দিন। এরপর ভ্যালুকে এসাইন করা যেতে পারে ডবল ক্লিকের পর।

শেষ কথা

এখানে মূলত আলোচনা হয়েছে অতি সংক্ষেপে রেজিস্ট্রি নিয়ে কাজ করার প্রাথমিক কিছু ধারণা সম্পর্কে। রেজিস্ট্রি নিয়ে কাজ করতে গেলে রেজিস্ট্রি এডিটের আমরা সাধারণত দেখতে পাই HKEY_CURRENT_USER\Software\Microsoft\Windows\CurrentVersion\Run এবং HKEY_LOCAL_MACHINE\SOFTWARE\Microsoft\/Windows\CurrentVersion\Run। এখানে দেখা যাচ্ছে, বেশ কিছু প্রোগ্রাম কনফিগার করা হয়েছে উইন্ডোজের সাথে স্বয়ংক্রিয়ভাবে রান করার জন্য। এখানের কোনো প্রোগ্রাম যদি দরকার না হয়, তাহলে স্টার্টআপ সময় দ্রুততর করার জন্য সেগুলো ডিলিট করে দিতে পারেন। তবে যাই করেন, প্রথমেই ব্যাকআপ তৈরি করে নিন। যদি কোনো ব্যাপারে সন্দেহ থাকে বা নিশ্চিত হতে না পারেন, তাহলে এডিট না করে এড়িয়ে যান। রেজিস্ট্রি এডিট করতে গিয়ে কোনো ভুলভ্রান্তি হলে বড় ধরনের ক্ষতির মুখোমুখি হতে পারেন।

সূত্র : কমপিউটার জগৎ, সেপ্টেম্বর ২০০৯

রেজিস্ট্রি এডিটিংয়ের প্রাথমিক ধারণা

রেজিস্ট্রি এডিটিং খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে এ কাজটি সুদক্ষ ও অভিজ্ঞদের জন্য, সাধারণ ব্যবহারকারীর জন্য নয়। কেননা, রেজিস্ট্রি এডিটিংয়ের ক্ষেত্রে সামান্য ভুলের কারণে সিস্টেম ড্যামেজ হয়ে যেতে পারে। যারা দীর্ঘদিন ধরে কমপিউটারে কাজ করছেন এবং রেজিস্ট্রি এডিটিং সম্পর্কে মোটামুটি স্পষ্ট ধারণা রাখেন বা মোটামুটি অভিজ্ঞ, তাদের জন্য এবারের পাঠশালা বিভাগে তুলে ধরা হয়েছে নিরাপদে রেজিস্ট্রি এডিটিংয়ের কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

রেজিস্ট্রি হলো এমন এক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যে সম্পর্কে বিপুলসংখ্যক কমপিউটার ব্যবহারকারী হয় পুরোপুরী অজ্ঞ অথবা সযত্নে তারা এ বিষয়টি এড়িয়ে যান যৌক্তিক কারণে। কেননা, উইন্ডোজ যদি ঠিকমতো কাজ না করে, তাহলে কোনো অবস্থাতেই রেজিস্ট্রি নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করা উচিত হবে না। যদি সিস্টেম যথাযথভাবে কাজ করতে না পারে, তাহলে অদক্ষ বা শিক্ষানবিসদের উচিত হবে না রেজিস্ট্রি নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করা। কিন্তু, রেজিস্ট্রি কী, কখন ঝুঁকি নিয়ে এতে কাজ করা যায় ইত্যাদি প্রশ্ন সঙ্গত কারণে সবার মনে জাগতেই পারে। এ বিষয়গুলো পাঠকদের সামনে তুলে ধরা হয়েছে এবারের পাঠশালা বিভাগে।

রেজিস্ট্রি হলো এক বিশাল ডাটাবেজ, যা উইন্ডোজসংশ্লিষ্ট সেটিং স্টোর করতে ব্যবহার হয়। এর সাথে থাকে কমপিউটারে ইনস্টল করা হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যারের তথ্য, যা উইন্ডোজের অপারেশনের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ। কন্ট্রোল প্যানেল অথবা প্রোগ্রাম অপশন কিংবা প্রেফারেন্স স্ক্রিন ব্যবহার করে সেটিংয়ে কোনো পরিবর্তন করা হলে, সেই পরিবর্তনগুলোও রেজিস্ট্রিতে রেকর্ড হয়ে থাকে। সুতরাং সবসময় রেজিস্ট্রির গভীরে এক্সেসের প্রয়োজন হয় না। কেননা, উইন্ডোজ ব্যবহার করে খুব সহজইে সেটিংগুলোর সমন্বয় করা যায়। তবে রেজিস্ট্রি কিভাবে কাজ করে এ সম্পর্কে জানতে পারলে, আপনি কমপিউটারের ওপর অধিকতর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করতে পারবেন এবং লুকানো সেটিংয়ে এক্সেস করতে পারবেন। এ কাজটি যেভাবে শুরু করতে হবে এবং যেভাবে নিরাপদে সম্পন্ন হবে, তা নিচে ধাপে ধাপে বর্ণিত হলো :

ব্যাকআপ

মনে রাখতে হবে, রেজিস্ট্রি এডিট করা এক মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ কাজ। দুর্ঘটনাক্রমে ভুল সেটিংয়ে পরিবর্তন করা হলে উইন্ডোজ এবং পিসি অপারেশনে অনুপযোগী হয়ে যাবে। এ লেখা পড়ে অনভিজ্ঞ বা অভিজ্ঞ কোনো ব্যক্তি রেজিস্ট্রি এডিট করতে গিয়ে কোনোরূপ ক্ষতির মুখোমুখি হলে তার দায়দায়িত্ব অন্য কেউ বা লেখক কেউ নিতে বাধ্য নন। রেজিস্ট্রি এডিটের উল্লিখিত কাজগুলো করতে চাইলে একান্তই নিজ দায়দায়িত্বে করতে হবে। সুতরাং রেজিস্ট্রি এডিটের কাজ করতে চাইলে প্রথমে এর একটি ব্যাকআপ অবশ্যই তৈরি করতে হবে, যাতে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে আগের স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা যায়। তৈরি করুন সিস্টেম রিস্টোর পয়েন্ট এবং রেজিস্ট্রি এডিটিংয়ের কাজ শুরুর আগে মূল্যবান ডাটার ব্যাকআপ তৈরি করুন। রেজিস্ট্রি এডিটিংয়ের ক্ষেত্রে আরেকটি বিষয় মনে রাখা উচিত, এখানে কোনো আনডু (Undo) ফিচার নেই।

রেজিস্ট্রিতে এক্সেস

রেজিস্ট্রিতে কাজ করতে চাইলে রেজিস্ট্রি এডিটর ওপেন করতে হবে। রেজিস্ট্রি এডিটর কয়েকভাবে ওপেন করা যায়। ভিসতায় রেজিস্ট্রি এডিটর ওপেন করার জন্য Start-এ ক্লিক করে regedit টাইপ করে প্রদর্শিত লিস্ট থেকে এন্ট্রি সিলেক্ট করুন। আর এক্সপির জন্য Start-এ ক্লিক করে সিলেক্ট করুন Run এবং প্রদর্শিত ডায়ালগ বক্সে regedit টাইপ করে OK-তে ক্লিক করুন। বিকল্প হিসেবে regedit টাইপ করে এন্টার চাপার আগে যেকোনো উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমে উইন্ডোজ কী চেপে ধরে সাথে সাথে R চাপুন। আর ভিসতায় User Account Control বক্সে Continue-এ ক্লিক করতে হবে, যদি এটি প্রদর্শিত হয়। রেজিস্ট্রি এডিটর লোড হবার পর স্ক্রিন উইন্ডোজ এক্সপ্লোরারের মতো হবে। রেজিস্ট্রির বিভিন্ন কম্পোনেন্ট প্রদর্শিত হবে বাম প্যানেলে ট্রি স্ট্রাকচারে অনেকটা এক্সপ্লোরারের ফোল্ডার প্রদর্শনের মতো, আর বাড়তি কনটেন্ট প্রদর্শিত হয় ডান প্যানেলে।

রেজিস্ট্রির গভীরে

রেজিস্ট্রি পরিবেষ্টিত পারিভাষিক শব্দাবলী আমাদের অনেককেই বিভ্রান্ত করতে পারে। তাই রেজিস্ট্রি নিয়ে কাজ করার আগে কিছু প্রধান পদবাচ্য বা টার্ম সম্পর্কে আমাদের ধারণা লাভ করা উচিত।


চিত্র-০১

বাম প্যানেলে রয়েছে প্রধান পাঁচটি এন্ট্রি। এগুলো হাইভ (hive) বা তথ্যভান্ডার হিসেবে বিবেচিত এবং এগুলোর প্রতিটি বিভিন্ন ধরনের গুরুত্বপূর্ণ সেটিং স্টোরেজসংশ্লিষ্ট।

HKEY_CLASSES_ROOT হাইভ বা সংগ্রহশালা মূলত ব্যবহার হয় ফাইলসংশ্লিষ্ট তথ্য স্টোর তথা জমা করার কাজে।

HKEY_CURRENT_USER এটি বর্তমানে ব্যবহারকারীর উইন্ডোজে লগ করা সেটিংগুলো ধারণ করে।

HKEY_LOCAL_MACHINE এটি সিস্টেমে ইনস্টল করা হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যারের তথ্য স্টোর করে এবং এই সেটিংগুলো সব ব্যবহারকারীর কাজে প্রয়োগ হয়। পক্ষান্তরে HKEY_USERS ধারণ করে HKEY_CURRENT_USER সেকশনের লিঙ্কগুলো। খুব সীমিতসংখ্যক তথ্য মজুদ হয় HKEY_CURRENT_CONFIG লোকেশনে এবং HKEY_LOCAL_MACHINE লোকেশন থেকে টেনে আনা তথ্যসহ এটি বর্তমানে সিস্টেম কনফিগারেশনসংশ্লিষ্ট তথ্য ধারণ করে।

বাম প্যানেলে প্রদর্শিত মূল এন্ট্রিগুলোর যেকোনো একটির পাশের + চিহ্নে ক্লিক করে তা এক্সপান্ড বা সম্প্রসারণ করলে প্রদর্শিত হবে এক সিরিজ ফোল্ডার, যা কী হিসেবে পরিচিত। এগুলো ধারণ করতে পারে আরো সাব-কী। ডান প্যানেল প্রদর্শিত আইকনগুলো ভ্যালু হিসেবে পরিচিত এবং এগুলো স্ট্রিং, বাইনারি, DWORD এবং এক্সপান্ডেবল স্ট্রিং ইত্যাদিসহ বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে।


চিত্র-০২

ডান প্যানেল তিন কলামে বিভক্ত, যার প্রথমটিকে লেবেল করা হয়েছে Name হিসেবে। প্রকৃত অর্থে ভ্যালু কি তাই এটি নির্দেশ করে। Type কলাম প্রদর্শন করে ভ্যালুতে যে ধরনের কাজ বা দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছে। আর Data কলাম প্রদর্শন করে সেটিং, যা ভ্যালুতে প্রয়োগ করা হয়েছে। ভ্যালুর ধরনের ওপর নির্ভর করে ডাটা কলাম ধারণ করে পাথ, একটি নাম্বার অথবা একটি ওয়ার্ড। ভ্যালুতে কোনো সেটিং নাও থাকতে পারে। এক্ষেত্রে ‘Value not set’ ওয়ার্ড দিয়ে নির্দেশিত হয়।

রেজিস্ট্রি নিয়ে কাজ করা

রেজিস্ট্রি এডিটিং প্রসঙ্গ আসলে নিশ্চিত হওয়া যায় আপনি কিছু পরিবর্তন, যুক্ত বা ডিলিট করতে যাচ্ছেন। রেজিস্ট্রি এডিটিংয়ের কোনো ব্যাপারে যদি নিশ্চিত হতে না পারেন, তাহলে বার বার চেক করুন। যদি সন্দেহ থাকে, তাহলে এড়িয়ে যান। রেজিস্ট্রি এডিটিং এক অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ কাজ এবং কোনো ভুল হলে ব্যবহৃত কমপিউটারকে ব্যবহার অযোগ্য করে ফেলতে পারে মুহূর্তের মধ্যে। সুতরাং, যেকোনো ধরনের পরিবর্তন করার আগে অবশ্যই সবকিছুর ব্যাকআপ তৈরি করা উচিত। অথবা রেজিস্ট্রির প্রয়োজনীয় অংশবিশেষের ব্যাকআপ অবশ্যই করা উচিত, এ কাজটি বেশ কয়েকভাবে করা যায় :

প্রথম অপশন হলো ধারণ করা ডাটার সুরক্ষার জন্য সাব-কী ব্যাকআপ তৈরি করা। এজন্য একটি সাব-কীতে রাইট ক্লিক করে আবির্ভূত মেনু থেকে সিলেক্ট করুন Export অপশন। এবার আবির্ভূত ডায়ালগ বক্সে ব্যাকআপের জন্য একটি অর্থবহ নাম দিন এবং ‘Save as type’ মেনুর ‘Registration Files (*.reg)’ অপশন সিলেক্ট করা আছে কিনা, তা নিশ্চিত করে ওকে করুন। এর ফলে ব্যাকআপ ফাইল তৈরি হবে।


চিত্র-০৩

যদি প্রয়োজন হয়, তাহলে ব্যাকআপ আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে পারেন। এজন্য উপরে উল্লিখিত তৈরি করা .reg ফাইলে ডান ক্লিক করে Merge অপশন সিলেক্ট করতে হবে। রেজিস্ট্রি ব্যাকআপের প্রধান প্রক্রিয়া হিসেবে ব্যবহারের আগে নোট করা দরকার কখন .reg ফাইল রেজিস্ট্রিতে বিপরীতক্রমে মার্জ করবে। কেননা, এটি কী-তে যে পরিবর্তন ঘটানো হয়েছিল তার সবই আনডু করে না। যেকোনো ডাটা মুছে ফেলা বা পরিবর্তন করলে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা যায়, তবে কোনো কিছু যুক্ত করলে তা মোছা যায় না।

আর এ কারণে সম্পূর্ণ হাইভকে ব্যাকআপ করা দরকার। এজন্য যেকোনো কী-তে ডান ক্লিক করে Export অপশন সিলেক্ট করুন আগের বর্ণিত উপায়ে। এসময় লক্ষ রাখতে হবে, Save as type মেনুর Registry Hive Files (*.*) ফাইল যেন সিলেক্ট করা থাকে। যেসব ফাইল সৃষ্টি হয়, সেসব ফাইলে এক্সটেনশন থাকে না। তবে এটি রেজিস্ট্রিতে রি-ইমপোর্ট করা যায় কোনো পরিবর্তনকে আনডু করার জন্য। এটি .reg ফাইলের মতো নয়, যা রেজিস্ট্রির সাথে মার্জ করা যায়। হাইভকে ইমপোর্ট করতে হয় রেজিস্ট্রি এডিটরের মধ্যে। ফাইল মেনুতে ক্লিক করুন এবং ইমপোর্ট অপশন সিলেক্ট করুন। এবার ড্রপ ডাউন মেনু থেকে Registry Hive Files (*.*) সিলেক্ট করুন। এরপর Open-এ ক্লিক করার আগে যে ফাইল তৈরি করেছিলেন তা নেভিগেট করে সিলেক্ট করুন। এই অপশনকে নিশ্চিত করার জন্য Yes-এ ক্লিক করুন এবং OK-তে ক্লিক করে অপারেশন শেষ করুন।

হাইভ ব্যাকআপ করা মানে হলো রেজিস্ট্রি ব্যাকআপ সেকশনের সবচেয়ে নিরাপদ উপায়। কেননা, যখন ব্যাকআপ ইমপোর্ট করা হয়, তখন যেসব পরিবর্তন করা হয়েছিল, সেগুলো বাতিল হয়ে যাবে। কিভাবে রেজিস্ট্রির ব্যাকআপ ও রিস্টোর তৈরি করা যায়, সে সম্পর্কে বাড়তি তথ্য পাওয়া যাবে মাইক্রোসফটের ওয়েব সাইটে http://snipuprl.com.3zyar.

যেভাবে এগিয়ে যাবেন

যখন রেজিস্ট্রিতে নেভিগেট করা হয়, তখন আপনি ঠিক কোথায় আছেন, তা ট্র্যাক করা বা মনে রাখা আপাত দৃষ্টিতে কঠিন মনে হলেও প্রকৃত অর্থে তা বেশ সহজ। আর তা সহজ হয়েছে স্ট্যাটাসবারের সহায়তার কারণে, যা উইন্ডোজ এক্সপ্লোরারের মতো রেজিস্ট্রি এডিটের স্ক্রিনের নিচের দিকে যুক্ত করা হয়েছে। একটি ছোট তথ্য প্যানেল যা ডিসপ্লে করে বর্তমানে সিলেক্ট করা কী-এর অ্যাড্রেস। যদি এটি দেখা না যায়, তাহলে View মেনুতে ক্লিক করে নিশ্চিত করুন যে, Status Bar অপশন টিক করা আছে কিনা।

অনাকাঙ্ক্ষিত কী এবং ভ্যালু ডিলিট করতে চাইলে যথাযথ আইটেমকে ডান ক্লিক করে সিলেক্ট করুন Delete অপশন। লক্ষণীয়, নিরাপত্তার জন্য ডিলিট অ্যাকশন কার্যকর করার আগে সেই আইটেমকে রিনেম করা যেতে পারে। নির্দিষ্ট ভ্যালুতে যুক্ত ডাটা এডিট করতে চাইলে ডবল ক্লিক করুন এবং প্রয়োজনীয় পরিবর্তন সম্পন্ন করে ওকে করুন।

রেজিস্ট্রি টোয়েকের ক্ষেত্রে নতুন কী তৈরির প্রয়োজন হতে পারে। এজন্য সংশ্লিষ্ট কী নেভিগেট করে ওকে করুন, যা কাজ করে প্যারেন্ট হিসেবে। এবার Edit-এ ক্লিক এবং New-তে ক্লিক করার আগে কী-এর নাম দিয়ে এন্টার দিন। এরপর ভ্যালুকে এসাইন করা যেতে পারে ডবল ক্লিকের পর।

শেষ কথা

এখানে মূলত আলোচনা হয়েছে অতি সংক্ষেপে রেজিস্ট্রি নিয়ে কাজ করার প্রাথমিক কিছু ধারণা সম্পর্কে। রেজিস্ট্রি নিয়ে কাজ করতে গেলে রেজিস্ট্রি এডিটের আমরা সাধারণত দেখতে পাই HKEY_CURRENT_USER\Software\Microsoft\Windows\CurrentVersion\Run এবং HKEY_LOCAL_MACHINE\SOFTWARE\Microsoft\/Windows\CurrentVersion\Run। এখানে দেখা যাচ্ছে, বেশ কিছু প্রোগ্রাম কনফিগার করা হয়েছে উইন্ডোজের সাথে স্বয়ংক্রিয়ভাবে রান করার জন্য। এখানের কোনো প্রোগ্রাম যদি দরকার না হয়, তাহলে স্টার্টআপ সময় দ্রুততর করার জন্য সেগুলো ডিলিট করে দিতে পারেন। তবে যাই করেন, প্রথমেই ব্যাকআপ তৈরি করে নিন। যদি কোনো ব্যাপারে সন্দেহ থাকে বা নিশ্চিত হতে না পারেন, তাহলে এডিট না করে এড়িয়ে যান। রেজিস্ট্রি এডিট করতে গিয়ে কোনো ভুলভ্রান্তি হলে বড় ধরনের ক্ষতির মুখোমুখি হতে পারেন।

সূত্র : কমপিউটার জগৎ, সেপ্টেম্বর ২০০৯

এক্সপিতে বাংলা লেখা আরো নিখুঁত


উইন্ডোজ এক্সপিতে বাংলা লেখা আরো নিখুঁত দেখতে চাইলে যা করতে হবে:
১. ডেস্কটপে রাইট মাউস ক্লিক করে Properties এ ক্লিক করুন।
২. Display Properties রান হবে। Appearance–>Effects–> এ যান।
৩. Use the following method to smooth edges of screen fonts: এ Clear Type সিলেক্ট করুন।
৪. OK–>Apply–>OK দিন।

এক্সপিতে বাংলা লেখা আরো নিখুঁত

উইন্ডোজ এক্সপিতে বাংলা লেখা আরো নিখুঁত দেখতে চাইলে যা করতে হবে:
১. ডেস্কটপে রাইট মাউস ক্লিক করে Properties এ ক্লিক করুন।
২. Display Properties রান হবে। Appearance–>Effects–> এ যান।
৩. Use the following method to smooth edges of screen fonts: এ Clear Type সিলেক্ট করুন।
৪. OK–>Apply–>OK দিন।

পিসিতে পেন ড্রাইভের ব্যবহার বন্ধ করবেন যেভাবে

বর্তমানে ভাইরাস ছড়ানোর অন্যতম মাধ্যম হল পেন ড্রাইভ। অনেক সময় দেখা যায়, আপনার অনুমতি ছাড়াই কেউ হয়ত আপনার পিসিতে পেন ড্রাইভ লাগিয়েছে এবং এর ফলে আপনার পিসি ভাইরাস আক্রান্ত হয়ে গেছে। তাই অনাক্ষাংকিত কেউ যাতে আপনার পিসিতে পেন ড্রাইভ ব্যবহার করতে না পারে সে জন্য আপনি পিসিতে একটা ছোট কাজ করতে পারেন। এর ফলে আপনার পিসিতে পেন ড্রাইভ লাগালে ও তা শো করবে না। এজন্য যা করতে হবে:
১. প্রথমে Start এ গিয়ে Run এ যান এবং regedit লিখে এন্টার দিন।
২. HKEY_LOCAL_MACHINE → System → Current Control Set → Services → usbstor এ যান
৩. Start ওপেন করে ভ্যালু ৩ থাকলে ৪ করে দিন।
আপনার পেন ড্রাইভ ব্যবহারের প্রয়োজন হলে ভ্যালুটাকে আবার ৩ করে দিলেই হবে।

পিসিতে পেন ড্রাইভের ব্যবহার বন্ধ করবেন যেভাবে

নিজের হাতে সংযোজন করুন কম্পিউটার

নতুন পিসি কেনা কি খুব কঠিন? পিসি কিনতে যাবার সময় পিসি কেনার ব্যাপারে অভিজ্ঞ কোনো লোক খুঁজে পাচ্ছেন না? কোন ধরনের পিসি কিনবেন তা বুঝতে পারছেন না? কোনটি ভালো, কোনটি খারাপ তা নিয়ে দ্বিধা? আসলে পিসি কেনার ব্যাপারটি মোটেও কঠিন কিছু নয়, শুধু পিসির যন্ত্রাংশগুলো সম্পর্কে আপনার কিছু ধারণা থাকা চাই। কারো সাহায্য ছাড়া নিজের পিসি যাতে নিজেই কিনতে পারেন, সেদিকে লক্ষ রেখে এ প্রতিবেদনে পিসির যন্ত্রাংশের পরিচিতি ও তা কেনার ব্যাপারে পরামর্শসহ রো কিছু বিষয়ের বিশদ বিবরণ তুলে ধরা হলো।



এই তো কয়েক বছর আগের কথা। কমপিউটারের দাম ছিলো আকা-ছোঁয়া। মধ্যবিত্তের জন্য তা কেনা ছিলো বিলাসিতা। কিন্তু এখন কমপিউটারের দাম অনেক কমে গেছে, তাই এখন তা কেনা বিলাসিতার পর্যায়ে পড়ে না। এখন কমপিউটার আমাদের দৈনন্দিন কাজে ব্যবহৃত এক যন্ত্র। অফিস-আদালত, ঘরবাড়ি সবখানেই এখন কমপিউটারের ব্যাপক ব্যবহার লক্ষণীয়। কমপিউটার কেনার ব্যাপারে ভালো জ্ঞান না থাকলে তা কেনার সময় নানা ঝক্কি-ঝামেলা পোহাতে হয় এবং ঠকে যাবার সম্ভাবনা থাকে। কমপিউটার কেনার আগে কমপিউটারের কী কী যন্ত্রাংশ থাকে তার সবগুলো সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকা দরকার। যারা বুদ্ধিমান তারা কমপিউটার কেনার আগে পরিচিত বা কোনো আত্মীয়কে সাথে নিয়ে যান যিনি কমপিউটার কেনার ব্যাপারে ভালো জ্ঞান রাখেন। কিন্তু অনেকের ক্ষেত্রে দেখা যায় এমন লোক খুঁজে পাওয়া মুশকিল হয় বা পরিচিতজনের কখন সময় হবে তার সাথে যাবার তার জন্য অপেক্ষা করতে হয়। তাদের কথা লক্ষ রেখে এ প্রতিবেদনে কমপিউটারের কাজ করার ধরন, গঠন, যন্ত্রাংশের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি ও প্রতিটি যন্ত্রাংশ কেনার ব্যাপারে পরামর্শসহ আরো অনেক কিছু আলোচনা করা হবে। আমাদের বিশ্বাস এটি কমপিউটার কেনার সময় একজন গাইডের ভূমিকা পালনে সক্ষম হবে।

কমপিউটার

কমপিউটার একক কোনো যন্ত্র নয়, এটি কিছু যন্ত্রাংশের সমষ্টি। এই যন্ত্রাংশগুলোর পারস্পরিক সম্পর্কের ভিত্তিতে কাজ করতে সক্ষম হয় কমপিউটার। কমপিউটারের প্রতিটি যন্ত্রাংশের রয়েছে আলাদা কাজের ধরন ও তাদের প্রত্যেকের আলাদা গুরুত্ব রয়েছে। হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার এই শব্দ দুটির সাথে সবাই পরিচিত। হার্ডওয়্যার হচ্ছে কমপিউটারের যন্ত্রাংশ যা আমরা হাত দিয়ে স্পর্শ করতে পারি, যেমন- মনিটর, কীবোর্ড, মাউস ইত্যাদি। আর সফটওয়্যার হচ্ছে কমপিউটার চালানোর জন্য যেসব প্রোগ্রাম ব্যবহার করা হয়। মানুষের সাথে কমপিউটারের তুলনা করা হলে এককথায় বলা যায়, আমাদের হাত, পা, মাথা এগুলো হচ্ছে হার্ডওয়্যার আর আমাদের প্রাণ হচ্ছে সফটওয়্যার। সফটওয়্যার দুই ধরনের : একটি সিস্টেম বা অপারেটিং সফটওয়্যার ও অপরটি অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার। অপারেটিং সফটওয়্যারের কাজ হচ্ছে কমপিউটার পরিচালনা করা। কিছু সিস্টেম সফটওয়্যারের মধ্যে রয়েছে ডস, উইন্ডোজ, লিনআক্স, মেকিনটোশ ইত্যাদি অপারেটিং সিস্টেম। অ্যাপ্লিকেশন প্রোগ্রামগুলো হচ্ছে নির্দিষ্ট কিছু কাজের জন্য বানানো প্রোগ্রাম। যেমন- ওয়ার্ড প্রসেসিং বা লেখালেখির কাজের জন্য রয়েছে মাইক্রোসফটের ওয়ার্ড ও ওপেনসোর্সের রয়েছে ওপেন অফিস রাইটার। ছবি সম্পাদনা করার জন্য রয়েছে ফটোশপ, থ্রিডি অ্যানিমেশনের জন্য ব্যবহার করা হয় মায়া বা থ্রিডি স্টুডিও ম্যাক্স, গান শোনা বা মুভি দেখার জন্য রয়েছে অনেক ধরনের মিউজিক বা ভিডিও প্লেয়ার ইত্যাদি।

কমপিউটারের গঠন

একটি কমপিউটার সিস্টেমে মনিটর, ক্যাসিং, কীবোর্ড, মাউস, স্পিকার ও ইউপিএস এই কয়েকটি যন্ত্রাংশই বাহ্যিকভাবে আমাদের চোখে পড়ে। অনেকেই ক্যাসিংটিকে সিপিইউ বলে থাকেন। কিন্তু তা আসলে সঠিক নয়। সিপিইউ বা Central Processing Unit-এর কাজ হচ্ছে ডাটা বা তথ্য প্রক্রিয়াজাত করা। মূলত এই কাজটি করে প্রসেসরের একটি অংশ। কাজের ধরন অনুযায়ী কমপিউটারের অংশগুলোকে চার ভাগে ভাগ করা যায়। প্রথমত, ইনপুট ডিভাইস, যা কমপিউটারকে কোনো নির্দেশ দেয়ার কাজে ব্যবহার করা হয়। মাউস, কীবোর্ড, মাইক্রোফোন, ওয়েবক্যাম, স্ক্যানার, লাইট পেন সিডি বা ডিভিডি রম ইত্যাদি ইনপুট ডিভাইস। দিবতীয়ত, প্রসেসিং ইউনিট, যেখানে ইনপুট ডিভাইসের দেয়া কোনো নির্দেশ কার্যকর করা বা কমপিউটারকে দেয়া কোনো তথ্যের বিশ্লেষণের কাজ হয়ে থাকে। মূলত তথ্য বিশ্লেষণের এই কাজটি করে প্রসেসর। তৃতীয়ত, আউটপুট ডিভাইস দিয়ে কমপিউটারে বিশ্লেষিত তথ্য প্রদর্শন বা ফলাফল পাওয়া যায়। আউটপুট ডিভাইসের মধ্যে রয়েছে- মনিটর, প্রিন্টার, প্লটার, স্পিকার, হেডফোন, সিডি বা ডিভিডি রাইটার ইত্যাদি। সিডি বা ডিভিডি রাইটার, ফ্লপিড্রাইভ, পেনড্রাইভ, টাচস্ক্রিন মনিটর ইত্যাদি যন্ত্র ইনপুট ও আউটপুট উভয় ডিভাইস হিসেবেই কাজ করে। চতুর্থত, মেমরি, যা তথ্য সংরক্ষণের কাজ করে এবং প্রসেসিং ইউনিটের কাজে বেশ সহায়তা করে।

কমপিউটার কেনার আগে করণীয়

হুট করে পিসি কেনা ঠিক নয়। পিসি কেনার আগে যাচাই বাছাইয়ের প্রয়োজন। কারণ, পিসিটি আপনার জন্য উপযুক্ত না হলে তা পরে সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। পিসি কেনার আগে যা যা দেখা উচিত তা হচ্ছে- ১. বাজেট, ২. কি কাজে কমপিউটার ব্যবহার হবে। কমপিউটার কেনার সময় বিক্রেতার কাছে আপনার বাজেট বললেই সে আপনাকে সেই বাজেটের মধ্যে একটি যন্ত্রাংশের তালিকা বা পিসি কনফিগার করে দেবে। কিন্তু তার বানানো তালিকা আপনার পছন্দ নাও হতে পারে। তাতে কিছু পরিবর্তন করতে পারলে ভালো হতো, এমনটি যদি চিন্তা করেন তবে আপনি কি কাজে পিসিটি ব্যবহার করবেন সে অনুযায়ী কিছু যন্ত্রাংশ বদলে নিতে পারেন। অফিসের সাধারণ কাজ বা গান শোনা, মুভি দেখার কাজে ব্যবহার করা হবে এমন কমপিউটার খুব কম মূল্যেই পাবেন। গ্রাফিক্স ডিজাইন বা গেমিংয়ের জন্য পিসি কেনার বাজেট একটু বেশি হতে হবে।

যন্ত্রাংশের তালিকা :

প্রাথমিকভাবে যেসব যন্ত্রাংশের প্রয়োজন হবে সেগুলো হচ্ছে- ভালোমানের পাওয়ার সাপ্লাইসহ একটি ক্যাসিং, কাজের ধরন অনুযায়ী প্রসেসর, প্রসেসর সমর্থিত মাদারবোর্ড, হার্ডডিস্ক ও র্যা ম। মাধ্যমিকভাবে যেসব যন্ত্রাংশ রয়েছে সেগুলো হলো- মনিটর, কীবোর্ড, মাউস, গ্রাফিক্স কার্ড, সাউন্ড কার্ড, স্পিকার, ল্যান কার্ড বা মডেম, সিডি/ডিভিডি রম বা রাইটার, ফ্লপি ড্রাইভ (যদিও এখন তেমন একটা ব্যবহার করা হয় না) ইত্যাদি। এরপরে আরো কিছু আনুষঙ্গিক জিনিসের মধ্যে রয়েছে কমপিউটার টেবিল, ইউপিএস, কুলিং ফ্যান বা হিট সিঙ্ক, প্রিন্টার, স্ক্যানার, পেনড্রাইভ, হেডফোন, মাইক্রোফোন, ওয়েবক্যাম, জয়স্টিক বা গেমপ্যাড ইত্যাদি।

এবার আসুন একটি তালিকা তৈরি করা যাক নতুন পিসির জন্য আমাদের কী কী যন্ত্রাংশের প্রয়োজন হবে।

০১. প্রসেসর, ০২. মাদারবোর্ড, ০৩. চেসিস বা ক্যাসিং, ০৪. মনিটর , ০৫. র্যা ম, ০৬. হার্ডডিস্ক, ০৭. সিডি/ডিভিডি রম বা রাইটার, ০৮. কীবোর্ড, ০৯. মাউস ।

এটি হচ্ছে নতুন পিসি কেনার ন্যূনতম কনফিগারেশন। এখানে গ্রাফিক্স কার্ড, সাউন্ড কার্ড, ল্যান কার্ডের নাম উল্লেখ করা হয়নি, কারণ এখন এই তিনটি যন্ত্রাংশ মাদারবোর্ডেই বিল্ট-ইনভাবে দেয়া থাকে। তবে সেগুলোর ক্ষমতা কিছুটা কম মানের, তাই আপনি পিসির পারফরমেন্স আরো বাড়াতে চাইলে আলাদাভাবে এই যন্ত্রাংশগুলো আপনার তালিকায় যোগ করে নিতে পারেন। আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে যেভাবে লোডশেডিং হয় তাতে করে পিসি নিয়ে অনেক ঝামেলা পোহাতে হয়, যদি না পিসির জন্য ইউপিএস ব্যবহার করা হয়। তাই সম্ভব হলে অবশ্যই আপনার তালিকায় ইউপিএস যুক্ত করে নেবেন।

পিসি কেনার পরামর্শ

এখানে প্রতিটি যন্ত্রাংশ সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত পরিচিতি ও তা কেনার সময় কী কী দেখে নেয়া উচিত, তা আলোচনা করা হলো

প্রসেসর :



আপনি কোন কাজে পিসি ব্যবহার করবেন সে অনুযায়ী পিসি কেনার সময় প্রথমেই আসবে প্রসেসরের নাম। বাজারে দুই ধরনের কোম্পানির প্রসেসর পাওয়া যায়। তার একটি হচ্ছে ইন্টেল ও অপরটি হচ্ছে এএমডি। আমাদের দেশে এএমডির প্রচার ও প্রসার খুবই কম এবং এই প্রসেসর বাজারে খুব একটা দেখাও যায় না। কার্যক্ষমতার ভিত্তিতে ইন্টেলের প্রসেসরগুলো অনেক ধরনের হয়ে থাকে। ইন্টেলের সবচেয়ে কম দামের প্রসেসরের মধ্যে রয়েছে সেলেরন (এএমডির ক্ষেত্রে ডুরন)। এই প্রসেসরগুলো অফিস পিসিতে বা সাধারণ পিসিতে যাতে ওয়ার্ড প্রসেসিং, ই-মেইল করা, ইন্টারনেট ব্রাউজ করা বা গান শোনা ইত্যাদি কাজ করা হবে তার জন্য যথেষ্ট। মুভি দেখা, প্রেজেন্টেশন তৈরি অর্থাৎ ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনার কাজে ব্যবহার করা হবে যে পিসি তার জন্য পেন্টিয়াম ৪ (এখন বাজারে নেই বললেই চলে), পেন্টিয়াম ডি বা ডুয়াল কোর প্রসেসর (এএমডির ক্ষেত্রে অথলন সিরিজের প্রসেসর) ভালো কাজে দেবে। আপনি যদি গ্রাফিক্স ডিজাইন বা থ্রিডি অ্যানিমেশনের কাজ করতে চান বা নতুন নতুন গেম খেলতে চান তবে আপনাকে কিনতে হবে ইন্টেলের কোর টু ডুয়ো (দুই কোরের প্রসেসর) বা কোর টু কোয়াড (চার কোরের প্রসেসর) সিরিজের প্রসেসর (এএমডির ক্ষেত্রে অথলন এক্স ২ বা ফেনম)। হার্ডকোর গেমিং বা উঁচুমানের ভিডিও এডিটিংয়ের কাজ যারা করে থাকেন তাদের জন্য প্রয়োজন প্রচুর শক্তিশালী ও ক্ষমতাবান প্রসেসর। তাই তাদের চাহিদা মেটানোর জন্য বাজারে রয়েছে ইন্টেলের এক্সট্রিম, কোর আই সেভেন ও কোর আই সেভেন এক্সট্রিম প্রসেসর (এএমডির ক্ষেত্রে ফেনম ২)। আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী আপনি প্রথমে প্রসেসর বাছাই করে নিন, তারপরে নজর দিন প্রসেসরের গতি ও তার দামের ওপরে। প্রসেসরের কাজ করার গতি মাপা হয় হার্টজ এককে। একই সিরিজের মধ্যে প্রসেসরের গতির ভিন্নতার কারণে দামের কিছুটা পার্থক্য থাকে। প্রসেসরের গতি যত বেশি হবে তা তত ভালো কাজ করতে পারবে। তাই আপনার প্রয়োজন বুঝে ভালো গতিসম্পন্ন একটি প্রসেসর কিনে নিন। এখনকার প্রসেসরগুলোর গতি অনেক বেশি, তাই এদের গতি মাপা হয় গিগাহার্টজ এককে, যেমন- ২ গিগাহার্টজ বা ৩.০৬ গিগাহার্টজ ইত্যাদি। বেশি কোরের প্রসেসরগুলোতে কাজগুলো কোরে ভাগ হয়ে যায়, তাই কাজের গতি আরো বেড়ে যায়। কিছু প্রসেসরে রয়েছে এইচটি টেকনোলজি বা হাইপার থ্রেডিং টেকনোলজি। এতে প্রসেসরের কাজের গতি আরো বেড়েছে। প্রসেসর কেনার সময় যেসব বিষয় দেখে নেবেন তা হচ্ছে- ০১. প্রসেসরের সাথে যে কুলিং ফ্যান দেয়া আছে তা ঠিক আছে কিনা, ০২. প্যাকেট ঠিকভাবে সিল করা আছে কিনা তা দেখাটা জরুরি। ০৩. প্রসেসরের প্যাকেটের গায়ে ওয়ারেন্টি স্টিকার লাগানো আছে কিনা, ০৪. প্রসেসরটি চলতে কতটুকু বিদ্যুৎ ব্যয় করে, ০৫. প্রসেসরে কানেক্টর সকেট টাইপ ইত্যাদি।



মাদারবোর্ড :

সাধারণত বর্তমানে ইন্টেলের প্রসেসর কিনলে LGA775 সকেটযুক্ত মাদারবোর্ড কিনলেই চলবে (LGA বলতে Land Grid Array বোঝায়), কেননা এই সকেটটি Intel Celeron, Intel Celeron D, Pentium 4, Pentium 4 Extreme, Pentium D, Pentium Dual-Core, Core 2 Duo, Core 2 Quad, Core 2 Extreme সবই সাপোর্ট করবে। এই সকেটের মাদারবোর্ডের সাথে পেন্টিয়াম ডুয়াল কোর প্রসেসর যদি কেনেন এবং পরবর্তীতে আপগ্রেড করতে চান তাহলে শুধু উচ্চক্ষমতার প্রসেসর কিনে নিলেই হবে। তবে বর্তমানের আলোচিত প্রসেসর কোর আই সেভেন ও ইন্টেল জিয়ন (৫০০০ সিরিজ) এই সকেটের মাদারবোর্ডে লাগাতে পারবেন না, কারণ সেটি লাগাতে হলে মাদারবোর্ডে Socket B/LGA 1366 সকেট থাকতে হবে। আর যদি এএমডির প্রসেসর কিনতে আগ্রহী হন, তাহলে AM2 বা AM2+ সকেটের মাদারবোর্ড কিনতে হবে। কারণ, AM2 সকেট K8 Sempron, AMD Athlon 64, Athlon 64 FX, Athlon 64 X2, Mobile Athlon 64 X2, Phenom X3, Phenom X4 এ সবগুলো প্রসেসরই সমর্থন করে। তবে এই সকেট Phenom 2 প্রসেসর সাপোর্ট করবে না, এজন্য AM2+ বা AM3 সকেটের দরকার পড়বে।



মাদারবোর্ড কেনার আগে প্রসেসরের জন্য সকেট, ফর্ম ফ্যাক্টর, ফ্রন্ট সাইড বাস স্পিড, র্যা ম স্লটের সংখ্যা, সাটা ও আইডিই পোর্টের সংখ্যা ও পিসিআই স্লটের সংখ্যা যাচাই করে তারপর কিনতে হবে। এছাড়া যেসব মাদারবোর্ডে ফায়ারওয়্যার পোর্ট, অধিক ইউএসবি পোর্ট সংযোগ, ভালো মানের বিল্ট-ইন গ্রাফিক্স কার্ড ও সাউন্ড কার্ড রয়েছে সেসব মাদারবোর্ড কেনা ভালো। আপনি প্রসেসর কেনার পর ভেন্ডারকে (বিক্রেতা) সেই প্রসেসরের উপযুক্ত ভালো মাদারবোর্ড দিতে বললেই হবে।

ক্যাসিং, পাওয়ার সাপ্লাই :

ক্যাসিং কেনার সময় তার ডিজাইনের ওপর বা তা দেখতে কতটা আকর্ষণীয় তার ওপরে গুরুত্ব দিতে গেলে ঠকে যাবার সম্ভাবনা রয়েছে। আপনার মাদারবোর্ড ও প্রসেসরের ক্ষমতা অনুযায়ী আপনাকে ক্যাসিং নির্বাচন করতে হবে। ফর্ম ফ্যাক্টরের ওপরে ভিত্তি করে ক্যাসিংকে দুইভাগে ভাগ করা যায়- একটি AT ও অপরটি ATX। বর্তমানে বেশিরভাগ মাদারবোর্ডই ATX ক্যাসিং সাপোর্ট করে থাকে। প্রসেসরের ক্ষমতা বা আপনার সিস্টেম যদি বেশি শক্তিশালী হয় তবে তার জন্য ভালো মানের পাওয়ার সাপ্লাইয়ের দরকার হবে, তাই একটু দাম বেশি হলেও ভালোমানের ক্যাসিং কিনুন। স্টিল বা অ্যালুমিনিয়াম দিয়ে তৈরি উভয় ধরনের ক্যাসিং পাওয়া যায়। স্টিলের ক্যাসিংগুলো ভারি এবং কম দামী। কিন্তু অ্যালুমিনিয়ামের ক্যাসিং হাল্কা, দেখতে সুন্দর ও দাম একটু বেশি। আকারে বড় ক্যাসিংগুলো কেনার চেষ্টা করুন। কারণ, এতে ভেতরের যন্ত্রাংশ বেশি গরম হয়ে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা পাবেন। বাজারে ছোট ব্রিফকেসের মতো কিছু ক্যাসিং পাওয়া যায়, ভুলেও তা নিতে যাবেন না। এগুলোর কুলিং সিস্টেম মোটেও সুবিধাজনক নয়। ক্যাসিংয়ের সাথেই পাওয়ার সাপ্লাই ও কুলিং ফ্যান দেয়া থাকে। অনেকের অতিরিক্ত কুলিং ফ্যানের দরকার হতে পারে, সেজন্য ক্যাসিংয়ে আলাদা ফ্যান লাগানোর ব্যবস্থা আছে কি-না, তা দেখে নিন। সাধারণ মানের ক্যাসিংগুলোতে যেসব পাওয়ার সাপ্লাই দেয়া থাকে বা তার গায়ে যত ওয়াট লেখা থাকে আসলে তার পুরোটা থাকে না। তাই আপনি যদি ভালো পাওয়ার সাপ্লাই পেতে চান তবে ভালো ব্র্যান্ডের ক্যাসিং কিনুন। ক্যাসিং আপনার পিসির যন্ত্রাংশের সুরক্ষা দেবে, সেগুলোকে গরম ও ধুলাবালির হাত থেকে রক্ষা করবে এবং পর্যাপ্ত পরিমাণ বিদ্যুৎ যোগান দিয়ে সঠিকভাবে কাজ করার নিশ্চয়তা দেবে, তাই ক্যাসিং কেনার সময় টাকা একটু বেশি খরচ হোক তবুও পিসির সঠিক সুরক্ষা নিশ্চিত করুন।



পিসি কেনার পর আপনার পাওয়ার সাপ্লাই নষ্ট হতে পারে, তখন যদি চান তবে আলাদা পাওয়ার সাপ্লাই কিনে নিতে পারেন, তাতে আপনাকে পুরো ক্যাসিং বদলাতে হবে না। ৪০০-১০০০ ওয়াটের পাওয়ার সাপ্লাই বাজারে আলাদা কিনতে পাওয়া যায়। একটি পাওয়ার সাপ্লাইয়ে ২০ পিন বা ২৪ পিনের পাওয়ার কানেক্টর থাকে মাদারবোর্ডে পাওয়ার দেয়ার জন্য। এই কানেক্টরকে ATX পাওয়ার সাপ্লাই প্লাগ বলা হয়। উচ্চগতিসম্পন্ন প্রসেসরের জন্য আলাদা বিদ্যুতের ব্যবস্থা করতে হয়, তার জন্য রয়েছে আরো দুই ধরনের কানেক্টর, এগুলো হচ্ছে- ATX কানেক্টর ও P6 কানেক্টর। অপটিক্যাল ড্রাইভ বা হার্ডডিস্কের পাওয়ার দেয়ার জন্য চার পিনের কানেক্টর রয়েছে।

পিসির যন্ত্রাংশের কার কতটুকু পাওয়ার লাগে তা জানা দরকার। তাহলে ভবিষ্যতে পিসি আপগ্রেড করার সময় পাওয়ার সাপ্লাইয়ের ওপরে লোড পড়বে না। মাদারবোর্ডগুলো ১৫-৩০, নিম্নমানের প্রসেসর ২০-৫০, মাঝারি থেকে উঁচুমানের প্রসেসর ৪০-১২৫, প্রতিটি র্যা ম স্টিক প্রায় ১০, পিসিআই পোর্টে যুক্ত ল্যান কার্ড, টিভি কার্ড, সাউন্ড কার্ডগুলো ৫-১০, নিম্ন থেকে মাঝারি ক্ষমতার গ্রাফিক্স কার্ড ২০-৬০, উচ্চক্ষমতার গ্রাফিক্স কার্ড ৬০-৩০০, হার্ডডিস্ক ১০-৩০, অপটিক্যাল ড্রাইভগুলোর জন্য ১০-২৫ ওয়াট পাওয়ার দরকার হয়। এখানে যে পরিসংখ্যান দেয়া হলো তা বিভিন্ন যন্ত্রাংশের প্যাকেটের গায়ে লেখা পাওয়ার কনজাম্পশন থেকে নেয়া হয়েছে। কোম্পানিভেদে এর তারতম্য হতে পারে। নতুন কিছু টেকনোলজি ব্যবহার করে যন্ত্রাংশগুলোকে আরো বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী করা হচ্ছে।

গ্রাফিক্স কার্ড :

গ্রাফিক্স কার্ডকে বিভিন্ন নামে ডাকা হয়, যেমন- ভিডিও কার্ড, গ্রাফিক্স এক্সেলারেটর কার্ড, ডিসপ্লে কার্ড ইত্যাদি। গ্রাফিক্স কার্ডের কাজ হচ্ছে ছবি উৎপন্ন করা এবং তা ডিসপ্লেতে প্রদর্শন করা। কিছু গ্রাফিক্স কার্ডে বিশেষ কিছু সুবিধা দেয়া থাকে, তার মধ্যে রয়েছে- ভিডিও ক্যাপচার, টিভি টিউনার অ্যাডাপ্টার, MPEG-2 ও MPEG-4 ডিকোডিং, টিভি আউটপুট এবং অনেকগুলো মনিটর একসাথে সংযোগের ব্যবস্থা ইত্যাদি। গ্রাফিক্স কার্ডকে মাদারবোর্ডের সাথে সংযুক্ত করার জন্য অনেক ধরনের পোর্ট রয়েছে। বাজারে AGP, PCI Express (PCIe), PCIe 2.0, PCIe 3.0 এই কয়েকটি পোর্ট সমর্থিত গ্রাফিক্স কার্ড পাওয়া যায়।
গ্রাফিক্স কার্ডের বাজারে রাজত্ব করে যাচ্ছে দুটি কোম্পানি- এনভিডিয়া ও এটিআই। উভয় কোম্পানির অনেক মডেলের কার্ড বাজারে পাওয়া যায়। এক মডেল থেকে অন্য মডেলের কার্ডকে ভিন্ন করে তুলেছে তাদের চিপসেট, মেমরি টাইপ, মেমরির পরিমাণ, ক্লক স্পিড ইত্যাদি। এনভিডিয়া জিফোর্স সিরিজের গ্রাফিক্স কার্ডগুলো বেশ জনপ্রিয়। এনভিডিয়ার বিপরীতে এটিআই কোম্পানির জনপ্রিয় সিরিজের মধ্যে রয়েছে রাডেওন। গ্রাফিক্স কার্ডের মেমরি বেশি হলে তা গেম খেলার সময় প্রসেসর ও র্যা্মের ওপরে কিছুটা চাপ কমাতে সাহায্য করে বটে কিন্তু তাই বলে ভাববেন না বেশি মেমরিযুক্ত গ্রাফিক্স কার্ড বেশি ভালো। গ্রাফিক্স কার্ডের কার্যক্ষমতা চিপসেট, ক্লক স্পিড, ব্যান্ডউইডথ ইত্যাদির ওপরে নির্ভর করে। যেমন- এনভিডিয়ার ৮৮০০ সিরিজের ১ গিগাবাইট মেমরির কার্ড ৯৮০০ সিরিজের ৫১২ মেগাবাইট মেমরি কার্ডের চেয়ে কম ক্ষমতাবান।



এনভিডিয়ার গ্রাফিক্স কার্ড দিয়ে ২-৩টি একই মডেলের গ্রাফিক্স কার্ড কিনে তাদের মধ্যে যোগসূত্র রচনা করে গ্রাফিক্স কার্ডের ক্ষমতা অনেকাংশে বাড়ানো যায়। একে SLI (Scalable Link Interface) টেকনোলজি বলা হয়। এক্ষেত্রে মাদারবোর্ডে ৩টি পিসিআই এক্সপ্রেস পোর্ট থাকতে হবে এবং পর্যাপ্ত পরিমাণ পাওয়ার সাপ্লাইয়ের ব্যবস্থা থাকতে হবে। কারণ, এনভিডিয়ার ২৯৫ জিটিএক্স গ্রাফিক্স কার্ড একাই ২৮৬ ওয়াট পাওয়ার নষ্ট করে। এটিআই রাডেওন সিরিজের গ্রাফিক্স কার্ড দিয়ে ২-৪টি গ্রাফিক্স কার্ড একই সাথে ব্যবহার করা যায় ক্রসফায়ার টেকনোলজির সাহায্যে। এখন প্রসেসরগুলোর সাথে পাল্লা দিয়ে এগোনোর জন্য গ্রাফিক্স কার্ডের GPU (Graphics Processing Unit) মাল্টিকোরের হতে শুরু করেছে। এনভিডিয়ার ক্ষেত্রে ২০০ সিরিজের গ্রাফিক্স কার্ডগুলো এবং এটিআইর এক্স ২ সিরিজের গ্রাফিক্স কার্ডগুলোতে ডুয়াল জিপিইউর ব্যবহার লক্ষ করা যাচ্ছে।

গ্রাফিক্স কার্ড কেনার সময় যা লক্ষ করা দরকার :

০১. গ্রাফিক্স কার্ডের সাথে ড্রাইভার ডিস্ক দেয়া আছে কি-না
০২. গ্রাফিক্স কার্ডের সাথে কী কী এক্সট্রা ফিচার আছে
০৩. ডিরেক্ট এক্স বা ওপেন জিএলের কোনো ভার্সন সমর্থন করে
০৪. পিক্সেল শ্রেডার কত পর্যন্ত সমর্থন করে
০৫. কোর ক্লক স্পিড, মেমরি ব্যান্ডউইডথ, স্টিম প্রসেসরের সংখ্যা, ট্রানজিস্টরের সংখ্যা ইত্যাদি (যত বেশি তত ভালো)।

র্যা ম:

র্যা ম হচ্ছে কমপিউটারের অস্থায়ী স্মৃতি। র্যাবমের অর্থ হচ্ছে র্যাপনডম অ্যাক্সেস মেমরি। অপারেটিং সিস্টেম রান করার সময় র্যা ম বেশ কিছু প্রোগ্রাম সংরক্ষণ করে অপারেটিং সিস্টেমকে চলতে সাহায্য করে। কিন্তু তথ্য এতে অস্থায়ীভাবে থাকে অর্থাৎ বিদ্যুৎ চলে গেলে বা কমপিউটার বন্ধ করে দিলে র্যাকমে থাকা তথ্য মুছে যায়। র্যাামের পরিমাণ বেশি হলে একইসাথে অনেক কাজ করা যায়, ফলে সিস্টেমের কর্মক্ষমতা বেড়ে যায়। একে কমপিউটারের প্রাইমারি মেমরিও বলা হয়ে থাকে। বাজারে SD, DDR, DDR2 ও DDR3 এই কয়েক ধরনের র্যা মে পাওয়া যায়। SD র্যা মগুলো কম পাওয়া যায় এবং তা ব্যবহার করা হয় পুরনো পেন্টিয়াম ৩ বা ৪ সমর্থিত মাদারবোর্ডে। পেন্টিয়াম ডি-র মাদারবোর্ডে ব্যবহার করা হতো DDR র্যা ম। এখনকার বেশিরভাগ মাদারবোর্ডে ব্যবহার করা হয় DDR2 ও DDR3 র্যা ম। DDR3 র্যা মের কর্মদক্ষতা ও কাজ করার গতি DDR2 র্যা মের তুলনায় বেশি কিন্তু এর দামও বেশি। DDR2 র্যা মের মধ্যে ৫৩৩, ৬৬৭, ৮০০ ও ১০৬৬ মেগাহার্টজ বাস স্পিডের র্যামমে ও DDR3 র্যা মের ক্ষেত্রে বাস স্পিড ৮০০, ১০৬৬, ১৩৩৩ ও ১৬০০ মেগাহার্টজ পর্যন্ত হতে পারে।



র্যা ম কেনার সময় খেয়াল রাখবেন মাদারবোর্ড যতটুকু পর্যন্ত র্যারমের বাস স্পিড সাপোর্ট করতে পারে তা কিনতে। অর্থাৎ আপনার মাদারবোর্ড যদি ডিডিআর২ ১০৬৬ মেগাহার্টজ বাস স্পিডের র্যাবম সাপোর্ট করে তবে তাই কিনুন। এখানে আপনি যদি ৮০০ বাসের র্যাদম কিনে থাকেন তবে তা কাজ করবে ঠিকই, কিন্তু আপনি ভালো ফল পাবেন না। পুরো পারফরমেন্স পাবার জন্য যতটুকু পর্যন্ত সাপোর্ট আছে, ততটুকুই ব্যবহার করার চেষ্টা করুন। ৮০০ বাস স্পিড সাপোর্টযুক্ত মাদারবোর্ডে আপনি ১০৬৬ বাস স্পিডের র্যা ম লাগান, তবে তা কাজ করবে ঠিকই, কিন্তু আপনি কাজের গতি ততটা পাবেন না, যতটা ১০৬৬ বাস স্পিডে পাওয়ার কথা ছিল। তাই অযথা টাকা খরচ হবে, কিন্তু পারফরমেন্স বাড়বে না। আপনার মাদারবোর্ড কতটুকু মেমরি পর্যন্ত সমর্থন করে তা দেখে র্যাতম কিনুন, অযথা বেশি র্যাফম কিনবেন না। নতুন মাদারবোর্ডগুলোর বেশিরভাগই ৪-৮ গিগাবাইট মেমরির র্যা ম সাপোর্ট করে। কম ল্যাটেন্সির র্যাকম কেনার চেষ্টা করুন। কারণ, ল্যাটেন্সি যত কম হবে র্যানমের কাজ করার দ্রুততা তত বেশি হবে। ল্যাটেন্সি হচ্ছে র্যানমে ডাটা এক্সেস করার সময়ের পরিমাণ। ল্যাটেন্সির মান কম হওয়া মানে হচ্ছে তথ্য র্যা মে খুব কম সময় থাকবে, তাই তা খুব দ্রুততার সাথে ট্রান্সফার হবে। ভালো কোম্পানির র্যা মে কিনুন, তাহলে আপনি ভালো পারফরমেন্সের নিশ্চয়তা পাবেন। র্যাতমের ক্ষেত্রে ডুয়াল চ্যানেলের কাজ হচ্ছে একই মানের দুটি র্যা মের মধ্যে যোগসাজশ রক্ষা করে ডাটা ট্রান্সফারের গতি দিবগুণ করে দেয়া। এই কাজ করার জন্য আপনার মাদারবোর্ডে ডুয়াল র্যা ম সাপোর্ট থাকতে হবে এবং দুই স্লটে দুটি একই মানের র্যা ম বসাতে হবে।

হার্ডডিস্ক :

হার্ডডিস্কে আমরা যাবতীয় ফাইল জমা করে রাখি, তাই একে সেকেন্ডারি মেমরি বলা হয়। বর্তমানে সব সফটওয়্যার, গেমস এমনকি অপারেটিং সিস্টেমও হার্ডডিস্কে বিশাল জায়গা দখল করে থাকে, তাই বাজারে বিশাল ধারণক্ষমতার হার্ডডিস্কের বেশ চাহিদা রয়েছে। হার্ডডিস্ক কেনার আগে কোন ইন্টারফেসের ড্রাইভ কিনবেন তা চিন্তা করে নিন। IDE (PATA), SATA, SCSI, SSD, USB, Firewire ইত্যাদি ইন্টারফেসের হার্ডডিস্ক বাজারে রয়েছে। IDE বা PATA হার্ডডিস্কের চেয়ে SATA বেশ ভালোমানের এবং এর ডাটা ট্রান্সফার রেট PATA-এর চেয়ে বেশি। বর্তমানে বাজারে SATA-2 হার্ডডিস্কের কদর বেশি। SCSI হার্ডডিস্ক আরো বেশি ক্ষমতাসম্পন্ন, তবে তা ব্যবহার করা হয় সার্ভারের জন্য, হোম পিসির জন্য তা কেনার প্রয়োজন নেই। SSD হার্ডডিস্কগুলো আকারে অনেক ছোট, হালকা ও সহজে বহনযোগ্য। এতে ঘূর্ণনশীল কোনো অংশ না থাকায় হাত থেকে পড়ে নষ্ট হবার ভয় নেই। এই হার্ডডিস্কগুলো সাধারণত ল্যাপটপে ব্যবহার করা হয়ে থাকে তবে ডেস্কটপে এর ব্যবহার ধীরে ধীরে জনপ্রিয়তা লাভ করছে। USB বা Firewire পোর্টের হার্ডডিস্কগুলো সাধারণ পোর্টেবল এবং অনেক বড় আকারের ডাটা ট্রান্সফারের জন্য প্রয়োজন হয়। ডেস্কটপে এসব পোর্টেবল হার্ডডিস্কের ব্যবহার তেমন একটা দেখা যায় না।



হার্ডডিস্কের তথ্য ধারণক্ষমতার ওপরে ভিত্তি করে বেশ কয়েক রকমের হয়ে থাকে, যেমন- ৬০, ৮০, ১২০, ১৬০, ৩২০, ৫০০ গিগাবাইট এবং ১ টেরাবাইট (১০০০ গিগাবাইট) ইত্যাদি। আপনার প্রয়োজন বুঝে কত ধারণক্ষমতার হার্ডডিস্ক কিনবেন তা নির্ধারণ করুন। এদের দামের পার্থক্য খুব একটা বেশি নয়, তাই বেশি ধারণক্ষমতার ড্রাইভ কিনে নিন। বেশি স্পিন্ডল স্পিডযুক্ত বা বেশি RPM (Rotation Per Minute)-এর হার্ডডিস্ক কিনুন। পুরনো হার্ডডিস্কের আরপিএম ছিল ৫৪০০ এবং নতুন হার্ডড্রাইভগুলোর আরপিএম হচ্ছে ৭২০০। এর অর্থ হচ্ছে হার্ডড্রাইভের ভেতরে সংরক্ষিত ডিস্কগুলো মিনিটে ৭২০০ বার ঘুরে। ডিস্ক যত তাড়াতাড়ি ঘুরবে তত দ্রুত সে ডাটা পড়তে পারবে। বাজারে ১০,০০০ আরপিএমের হার্ডডিস্কও পাওয়া যায়, তবে তার দাম অন্যগুলোর তুলনায় বেশি। হার্ডডিস্ক কেনার সময় আরেকটি ব্যাপার লক্ষ করতে হবে তা হচ্ছে ক্যাশ। সাধারণ হার্ডড্রাইভে ৮-১৬ মেগাবাইট ক্যাশ থাকে, তবে এর চেয়ে বেশি ক্যাশের হার্ডডিস্কও পাওয়া যায়, তবে তার দাম অনেক বেশি। ক্যাশ হচ্ছে স্পেশ্যাল স্টোরেজ এবং তা খুব দ্রুত ডাটা পড়তে পারে। তাই হার্ডডিস্কে ক্যাশ যত বেশি হবে তা তত বেশি কার্যকর হবে।

অপটিক্যাল ড্রাইভ :



অপটিক্যাল ড্রাইভ বলতে আমরা সিডি/ডিভিডি রম বা রাইটারকে বুঝে থাকি। অনেকের মাঝে ভুল ধারণা রয়েছে যে ডিভিডি রাইটার কিনলে হয়তো তা শুধু ডিভিডি রিড ও রাইট করতে পারবে, সিডি পড়তে বা লিখতে পারবে না। আসলে তা নয়, ডিভিডি রাইটার সিডি/ডিভিডি সবই রিড ও রাইট করতে পারে। কম্বো ড্রাইভগুলো সিডি রিড বা রাইট করতে পারে এবং ডিভিডি রিড করতে পারে কিন্তু রাইট করতে পারে না। অপটিক্যাল ড্রাইভগুলোও IDE বা SATA পোর্টে পাওয়া যায়। SATA ও IDE পোর্টের ড্রাইভগুলোর মাঝে দামের কোনো পার্থক্য নেই, তাই SATA কেনাটাই যুক্তিসঙ্গত। মাদারবোর্ডে যে পোর্টটির সংখ্যা বেশি সে অনুযায়ী হার্ডড্রাইভ বা অপটিক্যাল ড্রাইভ কিনুন। নতুন মাদারবোর্ডে IDE পোর্টের সংখ্যা ১-২টি এবং SATA পোর্টের সংখ্যা ৪-৮টি হয়ে থাকে। বাজারে এখন ১৬-২২এক্স স্পিডের ডিভিডি রম পাওয়া যায় এবং সিডি রমের ক্ষেত্রে তা ৫২-৫৬এক্স পর্যন্ত হতে পারে। রাইটার কেনার সময় দেখে নিন এর রিড করা ও রাইট করার গতি কত? সিডি বা ডিভিডি ডিস্কের সারফেসে ছবি লাগানোর জন্য নতুন অপটিক্যাল ড্রাইভগুলোতে রয়েছে লাইটস্ক্রাইব নামের টেকনোলজি। এই কাজ করার জন্য আপনাকে লাইটস্ক্রাইব ডিস্ক কিনতে হবে। তাহলে আপনি পছন্দমতো যেকোনো ইমেজ ডিস্ক সারফেসে ছাপতে পারবেন। কিছু কিছু ড্রাইভে রয়েছে ডুয়েল লেয়ারের ডিস্ক রাইট করার ব্যবস্থা। বাজারে স্থান দখল করতে আসছে ব্লু-রে ড্রাইভ। ব্লু-রে ডিস্কের তথ্য ধারণক্ষমতা সিডি বা ডিভিডির তুলনায় অনেক বেশি। এর দাম বেশি, তাই এখনো তা বাজার দখল করতে পারেনি।

মনিটর :



মনিটর কেনার জন্য আপনার হাতে দুইটি অপশন রয়েছে- এক : বড় আকারের CRT (Cathod Ray Tube) মনিটর, দুই : বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী পাতলা LCD (Liquid Crystal Disply) মনিটর। তবে অনেক গেমার ও গ্রাফিক্স ডিজাইনারদের প্রথম পছন্দ হচ্ছে সিআরটি মনিটর। এগুলো বড় আকারের হলেও বাসায় ব্যবহারের জন্য বেশ উপযোগী। এছাড়া যেসব কারণে সিআরটি মনিটর এলসিডি থেকে ভিন্ন তার মধ্যে মূল কারণগুলো হচ্ছে- কালার ফেডালিটি, ভিউইং অ্যাঙ্গেল ও কন্ট্রাস্ট। যেখানে এলসিডি মনিটর ১৬.৭ মিলিয়ন কালার দেখাতে পারে, সেখানে সিআরটি মনিটরের কালার দেখানোর ক্ষমতা অসীম। যার ফলে বিভিন্ন সূক্ষ্ম গ্রাফিক্স ডিজাইনের কালারের জন্য সিআরটি মনিটরের জুরি নেই। এছাড়া এলসিডি মনিটরের পর্দায় দেখানো ছবি সোজাসুজি না তাকিয়ে ভালো দেখা যায় না, কিন্তু সিআরটি মনিটরের ক্ষেত্রে যেকোনো অ্যাঙ্গেল থেকেই পর্দার ছবি স্পষ্ট দেখা যায়। কিছুদিন আগেও এলসিডি মনিটরের দাম ছিল অনেক বেশি, কিন্তু বর্তমানে বাজারে ক্রেতাদের কাছে এলসিডি মনিটরকে জনপ্রিয় করতে কোম্পানিগুলো বেশ কম দামে মনিটর বাজারজাত করছে, যদিও এখনো এগুলোর দাম সিআরটি মনিটরের দাম থেকে বেশি। এলসিডি মনিটরগুলো বেশ উজ্জ্বল ডিসপ্লের হয়ে থাকে, সেই সাথে সহজেই বহনযোগ্য ও বিদ্যুৎ-সাশ্রয়ী। মনিটর কেনার আগে মনিটরের সর্বোচ্চ রেজ্যুলেশন সাপোর্ট, কালার ডেপথ, রিফ্রেশ রেট, ডিজাইন, ওয়ারেন্টি ইত্যাদি দেখে কিনবেন।

সাউন্ড কার্ড :



সাউন্ড কার্ডকে অডিও কার্ড হিসেবেও অভিহিত করা হয়ে থাকে। সাউন্ড কার্ডের কাজ হচ্ছে অডিও সিগন্যালকে কমপিউটারের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা। গান শোনা, মুভি দেখা, অডিও-ভিডিও এডিটিং, মাল্টিমিডিয়া প্রেজেন্টেশন, গেমিং ইত্যাদি কাজের জন্য সাউন্ড কার্ডের প্রয়োজন হয়। বাজারে সাউন্ড কার্ড প্রস্ত্ততকারক কোম্পানিগুলোর মাঝে রয়েছে- Creative Labs, Realtek, C-Media, M-Audio, Turtle Beach ইত্যাদি। মাদারবোর্ডের সাথে রিয়েলটেক বা সি-মিডিয়া চিপসেটের বিল্ট-ইন সাউন্ড কার্ড দেয়া থাকে। এই বিল্ট-ইন সাউন্ড কার্ডগুলো যথেষ্ট ভালোমানের, তাই সাধারণত আলাদা সাউন্ড কার্ডের প্রয়োজন পড়ে না। কিন্তু আপনি যদি ভালো একটি সাউন্ড সিস্টেম গড়ে তুলতে আগ্রহী হন তবে ভালোমানের স্পিকারের পাশাপাশি ভালো দেখে সাউন্ড কার্ড কিনে নিতে পারেন।

সাউন্ড কার্ড কেনার সময় বেশি বিট রেটযুক্ত বা রেজ্যুলেশনযুক্ত কার্ড কেনার চেষ্টা করুন। এখানে রেজ্যুলেশন এনালগ থেকে ডিজিটাল ও ডিজিটাল থেকে এনালগে পরিণত করার ক্ষমতা পরিমাপ করতে সাহায্য করে। সিডি কোয়ালিটি সাউন্ডের ১৬ বিট, ডিভিডি প্লেব্যাক ও হাই-এন্ড গেমগুলোতে ২০ বিট বা ২৪ বিট কোডের ব্যবহার হয়ে থাকে। তাই ন্যূনতম ২৪ বিটের সাউন্ড কার্ড বেছে নিন। এছাড়াও ৬৪ বিট ও ১২৮ বিটের কার্ডও পাওয়া যায়, তবে দামের পার্থক্যটা একটু বেশিই বলতে হয়। উঁচুমানের স্যাম্পলিং রেটযুক্ত কার্ড নেয়া জরুরি, কারণ এটি হচ্ছে প্রতি সেকেন্ডে সাউন্ড কার্ডের ডাটা প্রসেসের ক্ষমতাকে বোঝায়। এর মান যত বেশি হবে তত বেশি নিখুঁত আওয়াজ পাবেন। এক্ষেত্রে জেনে রাখা ভালো স্যাম্পলিং রেটের সিডি স্ট্যান্ডার্ড হচ্ছে ৪৪.১ কিলোহার্টজ এবং ডিভিডি প্লেব্যাকের জন্য প্রয়োজন ৯৬ কিলোহার্টজ। সাউন্ড কার্ডটি কত চ্যানেলের তা দেখা উচিত। চ্যানেলের নামকরণ দুইভাবে করা হয়। প্রথমত, মোট কতগুলো স্পিকার সিস্টেমের সাথে যুক্ত হবে তার ওপরে ভিত্তি করে (২, ৪ বা ৬) এবং দিবতীয়ত, সারাউন্ড সাউন্ড সংখ্যার ওপরে ভিত্তি করে (৪:১, ৫:১ বা ৭:১)। এখানে ১ বলতে সাব উফার বোঝানো হয়, যা ডিপ নোটে বাজানো শব্দ শোনায় এবং ৪,৫ বা ৭ বলতে সারাউন্ডিং স্পিকারের সংখ্যা উল্লেখ করে।

ভালোমানের সাউন্ড কার্ডে দেয়া বাড়তি কিছু সুবিধার মধ্যে রয়েছে ফুল ডুপ্লেক্স, যার ফলে একই সাথে গান বাজানো ও রেকর্ডিং করা যায়। থ্রিডি এক্সেলারেশন, যা এখনকার গেমগুলোতে সাউন্ড সিস্টেমে বাস্তবতা আনতে ব্যয় হচ্ছে। বর্তমানে তিন ধরনের থ্রিডি এক্সেলারেশনের দেখা পাওয়া যায়। তার মধ্যে রয়েছে মাইক্রোসফটের ডিরেক্ট এক্সের সাথে সংযুক্ত ডিরেক্ট সাউন্ড থ্রিডি, ক্রিয়েটিভ ল্যাবসের ইএএক্স (এনভায়রনমেন্টাল অডিও এক্সটেনশন) এবং আওরিয়েল কোম্পানির এথ্রিডি।

কীবোর্ড ও মাউস :

ইনপুট ডিভাইসগুলোর মাঝে এই দুটি খুবই জনপ্রিয় ডাটা ইনপুট করা মাধ্যম। বাজারে সাধারণ কীবোর্ড এবং মাল্টিমিডিয়া কীবোর্ড পাওয়া যায়। মাল্টিমিডিয়া কীবোর্ডে অতিরিক্ত কিছু বাটন থাকে যার সাহায্যে অনেক কাজ করা যায়, যেমন- মিউজিক প্লেয়ার চালু করা, চলমান গানকে থামানো, গান পরিবর্তন করা, ভলিউম বাড়ানো বা কমানো, ওয়েব ব্রাউজার চালু করা, সরাসরি বাটন চেপে মাই কমপিউটার বা মাই ডকুমেন্টে যাওয়া, সার্চ অপশন আনা, ক্যালকুলেটর ব্যবহার করা ইত্যাদি। বাংলা টাইপ করার জন্য রয়েছে বাটনে বাংলা অক্ষর সাজানো কীবোর্ড। A-আকৃতিতে বাটন সাজানো কীবোর্ডও বাজারে পাওয়া যায়, এর সুবিধা হচ্ছে এতে টাইপ করার সময় হাতের কব্জির ওপরে চাপ কম পড়ে, তাই দীর্ঘক্ষণ টাইপ করলেও তেমন কোনো সমস্যা হয় না। বাজারে নিচে বল লাগানো মাউসের দেখা পাওয়া মুশকিল। সবখানেই ছেয়ে আছে অপটিক্যাল মাউস। নানারঙের বাহারি এই মাউসগুলো ইউএসবি বা পিএস/২ পোর্টের হয়ে থাকে। কিছু পাওয়া যায় তারবিহীন, তবে তার দাম বেশি। বেশি বাটনযুক্ত কিছু মাউস রয়েছে, যা দিয়ে অফিসের কাজে কিছুটা সাহায্য হয় এবং গেম খেলার সময় অনেক কাজ খুব সহজেই করা যায়। গেমিং মাউসগুলোর দাম একটু বেশিই, তাও যারা গেমার তাদের জন্য এই মাউসই উত্তম।

ইউপিএস :

ইউপিএস (UPS-Uninterrupted Power Supply)-এর কাজ হচ্ছে বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার পর কিছু সময়ের জন্য কমপিউটারকে সচল রাখা। আপনার কমপিউটার সিস্টেম যত শক্তিশালী হবে আপনার তত বেশি ওয়াটের ইউপিএস লাগবে। CRT মনিটরগুলো বেশি বিদ্যুৎ অপচয় করে, তাই তার জন্য ন্যূনতম ৬৫০ ওয়াটের ইউপিএস ব্যবহারের চেষ্টা করুন। বাজার যাচাই করে ভালো ব্র্যান্ডের ইউপিএস কিনুন। ভালোমানের জিনিস পেতে টাকা একটু খরচ করতেই হবে। যত বেশি ওয়াটের ইউপিএস হবে তত বেশি সময় আপনি লোডশেডিংয়ের সময় কমপিউটারের জন্য বিদ্যুতের ব্যাকআপ পাবেন।

স্পিকার :



জোরালো প্রাণবন্ত শব্দে গান বাজানোর জন্য চাই ভালোমানের স্পিকার। ডিজিটাল স্পিকারগুলোর শব্দ অনেক নিখুঁত ও জোরালো হয় কিন্তু তাদের দাম বেশি। বাজারে অনেক ডিজাইনের স্পিকার পাওয়া যায়। তাই নিজের পছন্দের মডেলের স্পিকার কিনুন, তবে তা কত ওয়াটের এবং কতটুকু জোরালো শব্দ করতে পারে তা দেখে নিন। বড় হলেই তা বেশি জোরালো হবে তা নয়, ছোট আকারের ভালো কোম্পানির স্পিকারের ক্ষমতাও অনেক বেশি। ওয়াট যত বেশি হবে শব্দের তীব্রতা তত বেশি হবে। বাজারে ২.১, ৪.১, ৫.১, ৭.১ এমনকি ১৬.১ স্পিকারও পাওয়া যায়। হোম থিয়েটারের জন্যও রয়েছে বিশেষ ধরনের কিছু স্পিকার। যারা সাধারণ ব্যবহারকারী তাদের জন্য সাধারণ দুটি স্পিকারের সেট বা ২.১ স্পিকারই ভালো।

আরো কিছু আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি

উপরে আলোচিত হার্ডওয়্যারের বাইরে আপনি যদি প্রিন্টার, স্ক্যানার, পেনড্রাইভ কিনতে চান, তবে তার জন্যও কিছু বলা উচিত। প্রিন্টার কেনার সময় কোন ধরনের কিনবেন তা আগে আপনাকে পছন্দ করতে হবে। বাজারে ডট মেট্রিক্স, ইঙ্কজেট, লেজার, থার্মাল প্রিন্টার পাওয়া যায়। কিন্তু বাসায় ব্যবহারের জন্য ইঙ্কজেট প্রিন্টার খুবই কম দামে পাবেন। এছাড়া কালির খরচও বেশ সাশ্রয়ী। প্রিন্টার কেনার সময় প্রিন্টারের আউটপুট ডিপিআই (ডট পার ইঞ্চি), ফটো প্রিন্টিং অপশন ও মিনিটে কয়টি পেজ প্রিন্ট করতে পারে সেগুলো যাচাই করে তারপর কিনতে হবে। এছাড়া স্ক্যানার কিনতে হলেও এর ডিপিআই ও রেজ্যুলেশন সাপোর্ট দেখে কিনতে হবে। পেনড্রাইভ কিনতে চাইলে মেমরি স্পেস, মডেল, ডাটা ট্রান্সফারের গতি ও ওয়ারেন্টি দেখে কিনতে হবে।

শেষ কথা

পরিশেষে বলা যায়, সব যন্ত্রাংশ কেনার পর দেখে নিতে হবে সব যন্ত্রাংশের ক্রয়রসিদ ঠিকভাবে আছে কিনা। অনেক ক্ষেত্রে রসিদটিই আপনার কেনা পণ্যের ওয়ারেন্টি বহন করবে। হার্ডওয়্যার অ্যাসেম্বলিং নিয়ে চলতি সংখ্যায়ই রয়েছে আরেকটি প্রতিবেদন। সেখানে জানা যাবে নিজে নিজে কমপিউটারের যন্ত্রাংশ সংযোজন করে কিভাবে নিজেই গড়ে তুলতে পারবেন নিজের কমপিউটার । আর হ্যাঁ পিসির যত্নের খাতিরে ভালো স্থানে তা রাখুন এবং পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ পায় এমন ব্যবস্থা করুন। সস্তার দুরবস্থা তাই সস্তা দরের মাল্টিপ্লাগ বা পাওয়ার স্টিকের বদলে ভালো ও দামীগুলো ব্যবহার করুন। এতে আপনার পিসি নষ্ট হবার ঝুঁকি অনেকাংশে কমাতে পারবেন। আশা করি এ প্রতিবেদন আপনাদের নতুন পিসি কেনার ক্ষেত্রে একটি গাইড বই হিসেবে কাজ করতে সক্ষম হবে।

সূত্র : http://www.comjagat.com/home/articles/morearticles/3807

শনিবার, ২১ নভেম্বর, ২০০৯

চেহারা সনাক্তকরণ - বুদ্ধিমত্তার পরিচালক নাকি স্রেফ ধোঁয়াশার খেলা

অ্যাপল আর গুগল বাজারে এনেছে কয়েকটি নতুন ফটো প্রোগ্রাম, যেগুলোতে ব্যবহার করা হয়েছে চেহারা সনাক্তকরণের জন্য রীতিমত বৈপ্লবিক কিছু প্রযুক্তি।

ধরুন, আপনার কম্পিউটারে হাজার পঁচিশেক ডিজিটাল ছবি স্টোর করা আছে। বেশির ভাগই মানুষের। এখন পর্যন্ত এসব ছবি থেকে কাঙিক্ষত ছবি খুঁজে বের করার একমাত্র উপায় হলো হাত এবং চোখ কাজে লাগানো। অর্থাৎ তারিখ, এক্সিফ ডাটা, ট্যাগ অথবা নিতান্তই নিজের ý মৃতিশক্তিকে কাজে লাগিয়ে খুঁজে বের করা। কিন্তু এখন থেকে এই খোঁজাখুঁজির কাজটা কম্পিউটারই করে ফেলতে পারবে। এজন্য অ্যাপল এবং গুগলকে ধন্যবাদ দিতেই হয়, কারণ তারা তাদের ফটো ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের নতুন ভার্সনে চেহারা সনাক্তকরণের নতুন প্রযুক্তিটি সংযুক্ত করেছে।

চেহারা সনাক্তকরণের এই প্রযুক্তিটির জন্ম মূলত ১১ সেপ্টেম্বর প্রেক্ষাপটে। সে সময় সন্ত্রাস প্রতিরোধে জন্ম নেয়া সুচতুর এবং কুশলী প্রযুক্তিগুলোর মধ্যে এটি একটি, যার পেছনে কাজ করেছে সত্যিকারের মেধা। উদ্দেশ্যটা ছিল এমন যে, কোন সন্দেহভাজন সন্ত্রাসী নিরাপত্তা চৌকি পার হবার সময় এই প্রযুক্তির মাধ্যমে তাকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সণাক্ত করা যাবে। যদিও ব্যাপারটি ঠিক সেভাবে কাজ করেনি। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায় টাম্পাতে করা একটি পরীক্ষার কথা; শতকরা ৫৩ ভাগ ক্ষেত্রে এই প্রযুক্তির মাধ্যমে বিমানবন্দনের কর্মচারীদের সনাক্ত করা যায়নি। এছাড়া নাগরিক স্বাধীকারের জন্য কাজ করে এমন কিছু গোষ্ঠী জানিয়েছে, অনেক ক্ষেত্রেই নিরাপরাধ লোকজনকে এই প্রযুক্তির মাধ্যমে সন্ত্রাসী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে এবং তাদেরকে হয়রানি এমনকি গ্রেপ্তার হতে হয়েছে শুধুমাত্র তাদের চেহারার ধরনের কারণে। আর এভাবেই এই প্রযুক্তিটি নিজেকে কার্যকর প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়ে জনগণের দৃষ্টির বাইরে চলে গেছে। আর এভাবেই অকার্যকর যেকোন কিছুকে ছুড়ে ফেলে দেয় হয়।

যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক দেশই তাদের পাসপোর্টের জন্য প্রয়োজনীয় ছবির চাহিদা বদলে দিয়েছে যাতে একে সনাক্তকারী সফটওয়্যারের জন্য আরো সহায়ক করে তোলা যায়। ১৯৯৪ সাল থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ স্ট্যান্ডার্ডস এ্যান্ড টেকনোলজি এই প্রযুক্তিটির পরীক্ষা-নীরিক্ষা চালিয়ে আসছিল। ২০০২ এবং ২০০৬ সালে তারা ব্যাপকভাবে এই পরীক্ষা চালায়। বিশেষ করে একজন মানুষ যখন ভিন্ন ভিন্ন পরিচয় ব্যবহার করে একাধিক ড্রাইভিং লাইসেন্স নিতে চায় তখন। প্রযুক্তিটি ক্রমশ উন্নতি দেখিয়েছে বেশ ভালভাবেই।

একটি কার্যকর চেহারা সনাক্তকারী ব্যবস্খার জন্য প্রথম যেটি প্রয়োজন, সেটি হলো কম্পিউটার যেন একটি ছবি থেকে মানুষের চেহারাকে আলাদাভাবে সনাক্ত করতে পারে। কৌশলগত ভাবে একটি নির্দিষ্ট মানুষকে খুঁজে বের করার চাইতে এটা অনেক সহজ কাজ। ২০০১ সালের ১২ সেপ্টেম্বরের পর এই প্রযুক্তিটিকে প্রায় আদর্শ রূপে এনে দাঁড় করানো হয়েছিল, যার ফলস্বরূপ কয়েক বছরের মধ্যেই ডিজিটাল ক্যামেরা ও ক্যাম কর্ডার গুলোতে চেহারা সনাক্তকরণের প্রযুক্তি চালু হয়ে যায়। এটি মূলত চোখ, নাক এবং চেহারার অন্যান্য অঙ্গের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ আকৃতি খুঁজে বের করার মাধ্যমে কাজ করে। তারা একটি নির্দিষ্ট বক্সের ভেতর চেহারাটি থাকার সম্ভাবনা নির্দিষ্ট করে স্বয়ংক্রিয় ফোকাস করার সিস্টেমটিকে বলে দেয় কোথায় ফোকাস করতে হবে। কাঙিক্ষত কোন মানুষের চেহারা ছবিতে ঝাপসা হয়ে থাক, এটা কেউ চায় না।

আর তাই, চেহারা সনাক্তকরণের কাজটা শুরু হয় চিহ্নিতকরণের মাধ্যমেই। এরপর চেহারার বক্সটিকে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে চোখ দু’টোকে সমান্তরালে আনা হয় এবং একই আকারে নিয়ে আসা হয়। এরপর তিনটি ভিন্ন প্রক্রিয়া কাজ করা শুরু করে। অবশ্য এই প্রত্যেকটি প্রক্রিয়ারই আলাদা আলাদা অনুপ্রক্রিয়া আছে। প্রত্যেকটিরই আছে নিজস্ব পেটেন্ট। একটি প্রক্রিয়ায় পুরো চেহারাটিকে গাণিতিক সংকেত পরিণত করে জমা রাখা হয় যার সাথে তুলনা করে পরে একই চেহারা খুঁজে বের করা যায়। অন্য একটি প্রক্রিয়ায় পুরো চোহারাটিকেই টেমপ্লেটে রূপান্তরিত করে জমা রাখা হয় এবং পরবর্তীতে পুরো চেহারাটিকেই সনাক্তকরণের সময় তুলনা করার জন্য ব্যবহার করা হয়। আর তৃতীয় একটি পদ্ধতিতে চেহারাটির একটি ত্রিমাত্রিক মডেল তৈরি করে পরবর্তীতে এক ধরনের জ্যামিতিক তুলনার মাধ্যমে সনাক্তকরণের কাজে ব্যবহার করা হয়। অভিজ্ঞতা বলছে, অ্যাপলের সফটওয়্যারটি যেখানে যুগান্তকারী প্রক্রিয়ায় কাজ করছে, সেখানে গুগলের সফটওয়্যারটি মূলত ইমেজ ম্যাচিং করছে। তবে এই ধারণা ভুলও হতে পারে। কারণ দু’টি কোম্পানির একটিও প্রকাশ করেনি, তারা আসলে কোন পদ্ধতি ব্যবহার করছে।

অ্যাপলের আই ফটো ০৯’কে পরীক্ষা করা হয়েছিল দু-দফায় ১৭০০০ এবং ১০০০০ ছবি দিয়ে। গুগলের পিকাসা শুধুমাত্র আগেই আপলোড করা ছবির ক্ষেত্রে কাজ করে। যদিও মাত্র ৫০০ ছবি ব্যবহার করেই এই ব্যাপারটা ধরা গেছে। তবে ফলাফল হিসেবে বলা যায়, দুটি সফটওয়্যারই দুর্দান্তভাবে কাজ করে। সেই সাথে এগুলো বেশ চতুরও বটে।

দুটোর মধ্যে আইফটো ’০৯ অবশ্যই তুলনামূলকভাবে ব্যবহারকারী বাব। প্রথমবার আইফটো চালু করার পর এটি নিজে থেকেই কম্পিউটারে থাকা সমস্ত ছবিকে যাচাই করে নেয়। একটি ডুয়েল কোর আই ম্যাকের ক্ষেত্রে এই সময়টা চার ঘন্টা পর্যন্ত হতে পারে। এরপর যখনই পরিচিত কারো মুখের ছবিতে ক্লিক করা হবে। তখনই একটি ডায়লগ বক্স আসবে। সেখানে নামটা লিখে দিলেই হলো, এরপর সফটওয়্যারটি নিজে থেকেই একই ধরনের ছবিগুলো খুঁজে বের করবে। সম্ভবত বক্সের ভেতর অবস্খিত চেহারার দুই পাশ, ভ্রু, চোখ, চিবুক ইত্যাদির মাধ্যমেই সনাক্তকরণ হয়। সব মিলে নাম লেখার পর সেই চেহারার মানুষটির বাদ-বাকী ছবিগুলো খুঁজে বের করার ক্ষেত্রে আইফটো বেশ ভাল কাজ দেয়। কিন্তু এটাও ঠিক যে এই কাজটা করতে গিয়ে অনেক সময় ভিন্ন মানুষের কিছু ছবিও চলে আসে। এ কারণেই পরবর্তীতে আই ফটোকে বলে দিতে হয় কোন ছবিটা ঠিক আর কোন ছবিটা ভুল। এর মাধ্যমে আই ফটো তার গাণিতিক মডেলটি সংশোধন করে নেয় এবং আবার সবগুলো ছবি যাচাই করে। আর বার বার এই প্রক্রিয়া চালাতে থাকলে ক্রমশই গাণিতিক মডেলটি উন্নত হতে থাকে।

সব চাইতে বিýময়কর দক্ষতাটি আই ফটো প্রদর্শন করে শিশুদের ছবি সনাক্ত করার ক্ষেত্রে। এমনকি একই রকম দেখতে জমজ দুই শিশুর ছবিও এটি আলাদা করতে পেরেছে, (বলা বাহুল্য, একটি শিশুর মুখ সরু এবং অন্যটির একটু মোটা গড়নের ছিল)। কিন্তু দু:খজনকভাবে সমান সংখ্যক ছবির ভেতর থেকে এই দুই জমজের একজনকে অন্যজনের তুলনায় বেশি সনাক্ত করেছে আইফটো। এক্ষেত্রে একটি মজার ব্যাপার ধরা পড়ে যেটি আইফটো ধরতে পেরেছিল কিন্তু অন্যরা পারেনি। একটি শিশু সরাসরি ক্যামেরার দিকে তাকায় কিন্তু অন্যজন তাকায় একপাশ থেকে। আর দুই চোখ সমানভাবে দেখা না গেলে আইফটোর পক্ষে চেহারা সনাক্ত করাটা খুবই কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। এছাড়াও এই শিশুদের মুখে রঙ লাগিয়ে অনেক গুলো ছবি তোলা হয়েছে এবং দেখা গেছে সেগুলো আই ফটো সনাক্ত করতে পারছে না। শুধুমাত্র যেসব ক্ষেত্রে কপালের মাঝামাঝি রঙটা সীমাবদ্ধ ছিল সে ক্ষেত্রে এটি সনাক্ত করতে পেরেছে কারণ কপালটা থাকে সনাক্তকারী বাক্সের বাইরে।

আসলে আই ফটো সনাক্তকরণ পদ্ধতি সম্পর্কে এখনো অনেক কিছুই জানার আছে। বেথের ব্যাপারটাই ধরা যাক। যতবারই তার কম্পিউটারে বেথ এর ছবি খুঁজতে দেয়া হয়, ততবারই সাইমনের প্রাক্তন বাবীর ছবি চলে আসে। মনে হয় আই ফটো বুঝতে পারে সাইমন আসলে কাকে পছন্দ করে। ফাঁকিটা হলো, সাইমনের কম্পিউটারে তার প্রাক্তন বাবীর এত বেশি ছবি যে যে কেউ ইচ্ছেমতো কয়েকটা ছবি বেছে নেবে, তাতে ঐ মেয়ের একটা নয়ত একটা ছবি পড়বেই।

বেড়ালের ছবি সনাক্তকরণের ক্ষেত্রে আই ফটো বিûময়কর সাফল্য দেখিয়েছে, বিশেষ করে হলুদ ও সাদা বেড়ালের ক্ষেত্রে। কিন্তু ট্যাবি জাতের ক্ষেত্রে কথাটা প্রযোজ্য নয়, কারণ এগুলো চেহারা বোঝাটা একটু মুশকিল কাজই বটে। এদের চোখের রঙটা মুরগীর বাচ্চার মতই আর আই ফটো তার সনাক্তকরণের কাজটা ছায়াযুক্ত বা অল্প কনট্রাস্ট এর অংশ থেকেই শুরু করে। এর কারণ হলো ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে চেহারাকে আলাদা করার জন্য এটি ভাল কাজ দেয়।

ঘরে আইফটো আসার পর অনেক সময় কম্পিউটারের পাশে পরিবার সদস্যদের আনাগোনা বেড়ে যায়। তারা সময় কাটায় কম্পিউটারকে নিজেদের চেহারাগুলো ভালভাবে চেনানোর কাজে। কম্পিউটারের হিসেব নিকেষটা বোঝার চেষ্টাটাও চলে। কম্পিউটার যখন ভুল ছবি বের করে তখন অনেক সময় হাসাহাসিও হয়। মাঝে মাঝে বেরিয়ে পড়ে ভুলে যাওয়া কোন ছবিও। এ হিসেবে অ্যাপলের তৈরি সবচাইতে আনন্দদায়ক সফটওয়্যারগুলোর মধ্যে নি:সন্দেহে স্খান করে নেবে আই ফটো।

এদিক থেকে গুগলের পিকাসা অনেক বেশি ধোঁয়াশাপূর্ণ। কার মুখটা খোঁজা হচ্ছে সেটা না জেনেই আপলোড করা সমস্ত ছবিকে যাচাই করে একই ধরনের মুখগুলোকে একই গ্রুপে ফেলে আলাদা আলাদা ক্লাস্টার তৈরি করে পিকাসা। অনেক ক্ষেত্রেই একই গ্রুপের সব ছবি একই মানুষেরই হয়। এরপর প্রত্যেক গ্রুপের মানুষটির পরিচয়, নাম, ই-মেইল অ্যাড্রেস এসব লেখার কাজটা ব্যবহারকারীকেই করতে হয়। তবে গুগলের এই ক্লাস্টারিং এর কাজটা আহামরি কিছু হয় না। হরহামেশাই বিভিন্ন ব্যক্তিকে একই ক্লাস্টারে এবং একই ব্যক্তিকে বিভিন্ন ক্লাস্টারে ফেলে দেয় পিকাসা। আই ফটোর মত ছদ্মবেশও ধরা পড়ে না এতে। বরং ছদ্মবেশধারী ব্যক্তিকে ভিন্ন ব্যক্তি বলেই ধরে নেয় এটি। তবে গুগলের ইউজার ইন্টারফেসটি চমৎকার। কিছু বুঝে ওঠার আগেই ক্লাস্টারিং এর কাজটি হয়ে যায় এবং সহজেই পরিচিত সব লোকজনের ছবি তাদের আসল নাম আর ই-মেইল অ্যাড্রেস সহ পাওয়া যায়, এমনকি একই ছবিতে অবস্খানকারী ভিন্ন ভিন্ন ব্যক্তির ক্ষেত্রেও, যা পিকাসার অন্যতম আকর্ষণীয় দিক।

আসল নাম জুড়ে দেয়াটাই গুগলের সফটওয়্যারটিকে রহস্যপূর্ণ করে তুলেছে। কারণ এই ছবিগুলো কারো কম্পিউটারে নয় বরং গুগলের সার্ভারে সংরক্ষিত। এই ছবি, নাম এবং ই-মেইল অ্যাড্রেস ব্যবহার করে গুগল চাইলেই একটি গ্লোবাল ডাটাবেজ তৈরি করতে পারবে এবং এজন্যে তার বিরুদ্ধে শর্তভঙ্গের অভিযোগও আনা যাবে না। কেননা সে এই কাজটি করছে তার সেবার মনোন্নয়নের খাতিরে।

গুগলের যে ব্যাপারটি একেবারেই সমাধানের বাইরে, সেটা হলো, এই সেবার মাধ্যমে তারা একটি ছবিতে অবস্খিত সবার পরিচয় জানতে চায়। এমনকি ছবির পেছনের হেটে যাওয়া পথচারীটিরও। গুগলের কর্পোরেট মিশনের উদ্দেশ্য হলো, ‘বিশ্বের সমস্ত তথ্যকে একীভূত করে সবার হাতে পৌছে দেয়া’। এই সেবার মাধ্যমে হয়ত গুগল তার মিশনটিকে সফল করতে চাইছে। কিন্তু সমস্যা হলো সব মানুষের সব তথ্য সবার কাছে থাকার ব্যাপারটা সবার কাছে সমানভাবে গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। অন্তত একটি ফটো শেয়ারিং ওয়েব সাইটের কাছে তো এটা কাম্য নয়ই।

আই ফটোতে যখন কেউ নিজের একান্ত প্রিয়জনেদের ছবিগুলো নাড়াচাড়া করে, তখন সে যেমন আনন্দ পায় ঠিক তেমনি গুগলের পিকাসাতে অপরিচিত লোকজনের ছবিরও নাম জানতে চাওয়ায় নিজেকে মনে হয় যেন কোন সেচ্ছাচারী এক নায়কের গোয়েন্দা বিভাগের কর্মচারী।

এসব ভোক্তা তাড়িত চেহারা সনাক্তকারী সফটওয়্যার নি:সন্দেহে বায়োমেট্রিক্স ও জনগণের ওপর ভিত্তিও নজরদারি সংক্রান্ত সকল জননীতি বিতর্কের মৌলিক পরিবর্তন ঘটাবে। ১১ সেপ্টেম্বরের পরবর্তী সময়টাতে কেউ জানতো না এই প্রযুক্তি কিভাবে কাজ করে, এর ভেতর কতটুকু ভুল এবং ঠিকইবা কতটুকু। কিন্তু এ বছরের শেষ নাগাদ লক্ষ লক্ষ আমেরিকানের নিজ হাতে সময়কালের সর্বাধিক দ্রুত চেহারা সনাক্তকারী সফটওয়্যার ব্যবহার করার অভিজ্ঞতা থাকবে। শুধুমাত্র পরিবার সদস্যদের ছবি নিয়ে কাজ করার নতুনত্বটা ঝড়ে পড়লেই এর অন্যদিকগুলো সবার চোখের সামনে স্পষ্ট হয়ে উঠবে। তখন জনগণের পক্ষ থেকেই দাবী উঠবে এর গতিবৃদ্ধি করার এবং ব্যবহারবিধিতে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার।

সৌজন্যে : মাসকি ই-বিজ

ছয়টি ব্রেনসমৃদ্ধ প্রসেসর তৈরি করেছে ইন্টেল

বিশ্বখ্যাত কম্পিউটার প্রসেসর চীপ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ইন্টেল কম্পিউটারের কাজের গতি বৃদ্ধিতে ছয়টি ব্রেনসমৃদ্ধ প্রসেসর তৈরি করার ঘোষণা দিয়েছে। ‘জিয়ন ৭৪০০’ সিরিজের এই প্রসেসরটি বর্তমানের যেকোন প্রসেসরের তুলনায় অধিক দ্রুততার সাথে কাজ করতে সক্ষম হবে তুলনামূলক কম জায়গা এবং শক্তি খরচ ব্যতিরেকে। ইন্টেলের একজন মুখপাত্র তাদের নতুন ‘জিয়ন ৭৪০০’ প্রসেসর সম্পর্কে জানান, ‘এই প্রসেসরটির অন্যতম বিশেষত্ব হচ্ছে এতে অনেক কোর-এর সন্নিবেশ করা হয়েছে যার মাধ্যমে কম্পিউটার এর কাজের গতি বহুগুণে বৃদ্ধি করা সম্ভব হবে।’ উল্লেখ্য বর্তমানে ২ কোর এবং ৪ কোর বিশিষ্ট প্রসেসর বাজারে বিদ্যমান। ফলে ইন্টেলের এই ৬ কোর বিশিষ্ট প্রসেসর তাদের প্রসেসরের গতি বৃদ্ধির প্রচেষ্টারই একটি অংশ হিসেবে ধারণা করা হচ্ছে। কেননা, এই ৬কোর বিশিষ্ট প্রসেসরটি বর্তমানের যে কোন প্রসেসরের তুলনায় ৫০ শতাংশ অধিক গতিতে কাজ করতে সক্ষম হবে কিন্তু এনার্জি খরচ কমাবে ১০ শতাংশ। ইন্টেলের ভাইস প্রেসিডেন্ট টম কিলরই তাদের নতুন প্রসেসর সম্বন্ধে জানান, ‘শুধুমাত্র এনার্জি খরচ কম এবং দক্ষতা বৃদ্ধিই নয় বরং আমরা আমাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী পিসি’র গতিবৃদ্ধির পাশাপাশি ভার্চুয়ালাইজিং সক্ষমতা বৃদ্ধির প্রতি নতুন এই চীপ তৈরির ক্ষেত্রে মনোযোগ প্রদান করেছি। আমরা আশা করি, নতুন এই চীপ ব্যক্তিগত কাজের পাশাপাশি ব্যবসায়িক কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।’ আশা করা যাচ্ছে, নতুন এই প্রসেসরের মাধ্যমে সার্ভার ভিত্তিক কর্মকান্ডে নতুন গতি লাভ করতে সক্ষম হবে। সেই সাথে ভিডিও শেয়ারিং পদ্ধতির বর্তমানের যে জটিলতা বিদ্যমান রয়েছে তার অবসান ঘটানো সম্ভব হবে। একই সাথে এই ছয়টি ব্রেনসমৃদ্ধ মাইক্রোপ্রসেসর বিশ্বের কম্পিউটিং শিল্পে নতুন গতিশীলতা আনয়ন করতে সক্ষম হবে।

দ্রুত গতির পাঁচটি সুপারকম্পিউটার

১. ব্লুজিন/এল, লরেন্স লিভারমোর ন্যাশনাল ল্যাবরেটরি, ক্যালিফোর্নিয়া (৪৭৮.২ টেরাফ্লপস; ২১২,৯৯২ প্রসেসর)
২. ব্লুজিন/পি, জার্মানি (১৬৭.৩ টেরাফ্লপস; ৬৫,৫৩৬ প্রসেসর)
৩. এসজিআই অ্যালটিক্স আইস ৮২০০, এসজিআই/নিউ মেক্সিকো কম্পিউটিং অ্যাপলিকেশন সেন্টার, উইসকনসিন, যুক্তরাষ্ট্র (১২৬.৯ টেরাফ্লপস; ১৪,৩৩৬ প্রসেসর)
৪. ইকেএ ক্লাস্টার প্লাটফর্ম ৩০০০ বিএল৪৬০সি, কম্পিউটেশনাল রিসার্চ ল্যাবরেটরিস, পুনা, ভারত (১১৭.৯ টেরাফ্লপস; ১৪,২৪০ প্রসেসর)
৫. ক্লাস্টার প্লাটফর্ম ৩০০০ বিএল৪৬০সি, সুইডেন (১০২.৮ টেরাফ্লপস; ১৩,৭২৮ প্রসেসর)।

ইন্টেলের অ্যাটম প্রসেসর

ইন্টেল করপোরেশন। আজকাল তথ্যপ্রযুক্তির সাথে কোনো না কোনোভাবে জড়িত খুব কম ব্যক্তিই পাওয়া যাবে যে এই নামটির সাথে পরিচিত নন। এটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় সেমিকন্ডাক্টর কোম্পানি। ১৯৬৮ সালে এর যাত্রা শুরু হয়। বর্তমানে বেশিরভাগ পার্সোনাল কমপিউটারে ব্যবহৃত প্রসেসরই ইন্টেলের তৈরি। শুধু প্রসেসরই নয়-মাদারবোর্ড চিপসেট, নেটওয়ার্ক কার্ড ও আইসি, ফ্ল্যাশ মেমরি, গ্রাফিক্স চিপস, এমবেডেড প্রসেসর এবং কমপিউটিং ও কমিউনিকেশন সংক্রান্ত আরও অনেক ডিভাইসের প্রস্তুতকারক এই কোম্পানি। বিশ্বে ডেস্কটপ কমপিউটার, নোটবুক কমপিউটার কিংবা এ জাতীয় আরো কিছু ডিজিটাল ডিভাইসে ব্যবহৃত মাইক্রোপ্রসেসরের বাজারের বেশিরভাগই ইন্টেল দখল করে আছে। সম্প্রতি ইন্টেল এর নতুন বাজারের জন্য অ্যাটম চিপ ডিজাইন করেছে। আমাদের এই লেখা ইন্টেলের তৈরি এ নতুন চিপ নিয়ে।

ইন্টেলের রয়েছে প্রসেসরের বিশাল সমাহার। সেলেরন প্রসেসর থেকে শুরু করে কোয়াড কোর প্রসেসরের সর্বশেষ সংস্করণসহ সবই এখন পাওয়া যাচ্ছে। ইন্টেলের রয়েছে ডেস্কটপ চিপ, সার্ভার চিপ এবং মোবাইল চিপ। আপনি হয়তো ভাবতে পারেন, বিশ্বে চিপের এমন কোনো বাজার নেই যেখানে ইন্টেল প্রবেশ করেনি। কিন্তু প্রযুক্তি দ্রুত পরিবর্তনশীল এবং প্রতিনিয়ত নতুন নতুন ডিভাইস আমাদের সামনে আসছে। বিগত কয়েক বছরে ‘আলট্রা মোবাইল পিসি’ নামে এক ধরনের কমপিউটার আমাদের সামনে এসেছে। ইন্টেল এই নতুন বাজারটি চিনতে পেরেছে এবং এই ‘আলট্রা মোবাইল পিসি’র (ইউএমপিসি) জন্য ইন্টেল অ্যাটম সিপিইউ নামের এ চিপ ডিজাইন করেছে।

এক্সস্কেল :
আপনার যদি পকেট পিসি, পিডিএ, এমপিথ্রি প্লেয়ার, পার্সোনাল ভিডিও প্লেয়ার কিংবা আইপড থেকে থাকে তাহলে আপনি নিশ্চিতভাবে এক্সস্কেল সিপিইউর কথা শুনেছেন। ২০০৬ সাল পর্যন্ত (এক্সস্কেল সিপিইউর ব্যবসায় পুরোপুরি বিক্রি করে দেয়ার সময়) ইন্টেলই এক্সস্কেল সিপিইউ তৈরি করত। কিন্তু প্রশ্ন হলো, মোবাইল ডিভাইসের জন্য ইন্টেলের এই প্রসেসরটি থাকা সত্ত্বেও কেন ইন্টেল এর ব্যবসায় বন্ধ করে দিল এবং কেনই বা মোবাইল ডিভাইসের জন্য অন্য একটি প্রসেসরের ব্যবসায় শুরু করল? এর উত্তর হিসেবে ইন্টেল বলে, তারা এখন এক্সস্কেল সিপিইউ বাদ দিয়ে এক্স৮৬ চিপ, যেমন- ডেস্কটপ, মোবাইল এবং সার্ভার সিপিইউর দিকে নজর দিতে চায়।

এক্সস্কেল এবং অ্যাটমের মধ্যে সবচেয়ে বড় পার্থক্য হলো, এক্সস্কেল সিপিইউ শুধু হ্যান্ডহেল্ড ডিভাইসসমূহের জন্য। কিন্তু অ্যাটম একটি পরিপূর্ণ এক্স৮৬ সিপিইউ, যা একটি সাধারণ পিসিতেও চলতে পারে। একটি এক্সস্কেল সিপিইউ একটি সাধারণ পিসিতে বসালে সেই পিসি কাজ করবে না।

অ্যাটম :
এক্সস্কেল এবং ইউএলভি (আলট্রা ভায়োলেট) সিপিইউগুলো যেখানে খাপ খায় না, সেখানে ইন্টেল অ্যাটম খাপ খায়। এক্সস্কেলের আকার ও কুলিং পাওয়ার এবং ইউএলভির পাওয়ার ও এক্স৮৬ আর্কিটেকচারের চেয়ে অ্যাটমের সংশ্লিষ্ট বৈশিষ্ট্যগুলো অনেক উন্নততর। অ্যাটম শুধু ৩২ বিট অপারেটিং সিস্টেম ও সফটওয়্যারই চালায় না, ৬৪ বিটের অপারেটিং সিস্টেম এবং সফটওয়্যারও চালাতে পারে। যেহেতু অ্যাটম প্রসেসর ইউএমপিসির দিকে ধাবিত, তাই এর আলাদা ইনস্ট্রাকশনগুলো মাল্টিমিডিয়া ও গেমিংয়ের কাজে বেশ সহায়ক।

অ্যাটমের আরেকটি আকর্ষণীয় বিষয় হলো এর আকার। একটি পিসির সম্পূর্ণ গঠনের কথা চিন্তা করলে সাথে সিপিইউকে অন্যান্য অংশের তুলনায় ছোট মনে হয়। কিন্তু অ্যাটম প্রকৃতভাবেই খুব ছোট। ফলে যেকোনো ছোট ডিভাইসের সাথে এর সমন্বয় করা খুব সহজ।

অ্যাটমের সবচেয়ে সুবিধাজনক বিষয় হচ্ছে এ দিয়ে উৎপন্ন তাপ। অ্যাটম ০.০১ ওয়াট থেকে ২.৫ ওয়াট তাপ উৎপন্ন করে, যেখানে একটি ইউএলভি সিপিইউ উৎপন্ন করে ১০ ওয়াট। ফলে অ্যাটম সিপিইউতে হিট সিঙ্কের ব্যবহার মোটামুটি অপ্রয়োজনীয়।

পারফমেন্স :
অ্যাটম সিপিইউ দুটি ভিন্ন ভিন্ন কোড নামে আছে। একটি ইউএমপিসির জন্য এবং অন্যটি ছোট ডেস্কটপ কমপিউটারের জন্য। ইউএমপিসির জন্য অ্যাটমের কোড নাম সিলভারথ্রোন। এটি একটি সিঙ্গেল কোর সিপিইউ। মডেলের ওপর ভিত্তি করে এটি সাধারণত ১.৬ গিগাহার্টজ থেকে ১.৮ গিগাহার্টজ ক্লক স্পিডে চলে। ডেস্কটপ কমপিউটারের জন্য অ্যাটমের কোড নাম ডায়মন্ডভিল। এটি সিঙ্গেল কোর ও ডবল কোর এই দুই মডেলেই বাজারে আসবে। এর ক্লক স্পিড হবে ২.৩ গিগাহার্টজ। এখন প্রশ্ন জাগতে পারে, তুলনামূলকভাবে কোন কোন দিক দিয়ে অ্যাটম সিপিইউ অন্যান্য সিপিইউ থেকে ভালো। এর আকার ও কুলিং পাওয়ার নিয়ে আগে আলোচনা করা হয়েছে। এর গতি হবে পেন্টিয়াম-৩ ১.১ গি. হা. এবং সেলেরন এম ১.৮ গি. হা.-এর মাঝামাঝি কোনো গতি। খুব শিগগিরই অ্যাটম সিপিইউতে কোনোরকম সমস্যা ছাড়াই উইন্ডোজ ভিসতা চলতে পারবে। এছাড়া নিকট ভবিষ্যতে ডিডিআর ২ মেমরি কন্ট্রোলার এবং গ্রাফিক্স কোর সংবলিত অ্যাটম চিপ বাজারে আসবে। এই বৈশিষ্ট্য অবশ্যই মাদারবোর্ডের আকার ছোট করবে। পাইনভিউ কোড নামের এ ভবিষ্যৎ অ্যাটম চিপ সিঙ্গেল কোর ও ডবল কোর- এ দুই ধরনেই আসবে।

অ্যাটম ডিভাইস :
অ্যাটম সিপিইউ সংবলিত নতুন নতুন ডিভাইস যথারীতি আমরা দেখতে শুরু করেছি। জনপ্রিয় ASUS EEE মডেলে ইএমপিসি অ্যাটম সিপিইউ দিয়ে তৈরি। এটা অনেকটা পুরনো-এর মতোই। কিন্তু এখানে সেলেরন এম প্রসেসরের পরিবর্তে অ্যাটম সিপিইউ ব্যবহার করা হয়েছে।

শার্প উইলকম কোম্পানির একটি কমপিউটার রয়েছে, যা অ্যাটম প্রসেসর ব্যবহার করে। এর রয়েছে ১ গি. বা. র‌্যাম, ৪০ গি. বা হার্ডডিস্ক, ১টি ২ মেগাপিক্সেলের ক্যামেরা, ওয়াইফাই এবং ব্লু টুথ সংযোগ। এতে ভিসতা হোম প্রিমিয়াম এসপি ১ এবং মাইক্রোসফট অফিস রান করবে। এ ডিভাইসটি সেলফোন হিসেবেও ব্যবহার করা যাবে।

শেষ কথা :
ইন্টেলের নতুন সিপিইউ ইউএমপিসি বাজারে একটি বিশাল প্রভাব ফেলতে যাচ্ছে। কমপিউটিংয়ের জন্য এটি ইন্টেলের একটি বড় পদক্ষেপ। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এটি একটি বিস্ময়কর সিপিইউ হবে বলে আশা করা যায়।

সৌজন্যে : কম্প্উটার জগৎ ASUS EEE

ফটোশপে লেয়ার স্টাইল নির্ধারণ করা

যে লেয়ারে ইফেক্ট করা হবে সে লেয়ার নির্বাচনে করে লেয়ার স্টাইল নির্দেশ দিলে বিভিন্ন ইফেক্টস মেনু ওপন হবে। এখান থেকে বিভিন্ন অপশন নির্বাচন করে নির্বাচিত লেয়ারের ইমেজে বিভিন্ন ইফেক্টস দেয়া যায়। বিভিন্ন ইফেক্টস দেয়া পরীক্ষা করার জন্য একটি লেয়ার তৈরি করে পরীক্ষা করার জন্য:

১. টুলবক্সের ব্যাকগ্রাউন্ড টুল এ ক্লিক করে হালকা যে কোন রঙ নির্বাচন করুন। কন্ট্রোল+এন কী দ্বয় চেপে প্রদর্শিত নিউ ডায়ালগ বক্সে প্রস্থ: ৩৩১ পিক্সেল. দৈর্ঘ্য: ৩৬৮ পিক্সেল রেজ্যুলেশন: ৯৬.২৮৮ পিক্সেল/ইঞ্চি এবং কনটেন্ট ব্যাকগ্রাউন্ড কালার সিলেক্ট করে ওকে করুন।
২. উইন্ডো-লেয়ার নির্দেশ দিয়ে লেয়ার উইন্ডো প্রদর্শন করুন। শিফট+কন্ট্রোল+এন কী চেপে নতুন লেয়ার তৈরির প্রক্রিয়ায় নেম বক্সে টেস্ট লিখে এন্টার দিন। নতুন একটি লেয়ার তৈরি হবে। টুলবক্সের ফরগ্রাউন্ড টুলে ক্লিক করে কালার ডায়ালগ বক্স থেকে হালকা কালো (ছাই) রঙ নির্ধারণ করুন।
৩. টুলবক্সের পেইন্ট ব্রাশ টুল নির্বাচন করে যে কোন শব্দ লিখুন। এবার ড্রপ শ্যাডো, ইনার শ্যাডো, ইনার গ্লো/ আউটার গ্লো ইত্যাদি লেয়ারের উপর বিভিন্ন ইফেক্টস দেখা যাবে।

সিডি/ডিভিডি রাইট

এখন নিরো ব্যবহার করে কম্পিউটার থেকে সিডি/ভিভিডি’তে বা সিডি থেকে সিডি বা ডিভিডি থেকে ডিভিডি তৈরি করার প্রক্রিয়া দেখা যাক:
কম্পিউটার থেকে সিডি/ডিভিডিতে ডাটা কপি করা-

১. সিডি/ডিভিডি রাইটারে ব্ল্যাঙ্ক সিডি/ ডিভিডি রাখুন।
২.ডেস্কটপ থেকে নিরো চালু করুন। প্রোগ্রাম আসবে।
৩. বাম দিকের স্টার আইকনে কার্সর আনুন এবং মেক ডাটা ডিস্ক অপশনে ক্লিক করুন।
৪. ফাইল সিলেক্ট করার অপশন আসলে এড বাটনে ক্লিক করুন।
৫. এখন নির্দিষ্ট ফোল্ডার থেকে ফাইল সিলেক্ট করে এড বাটনে ক্লিক করুন। সমস্ত ফাইল সিলেক্ট করা হলে ফিনিশড বাটনে ক্লিক করুন।
৬. এড উইন্ডোতে সিলেক্ট করা ফাইলগুলো পাওয়া যাবে। নেক্সট বাটনে ক্লিক করুন।
৭. এখন ডাইসের একটি নাম দিন এবং রাইটিং স্পিড কত হবে সেটি সিলেক্ট করে বার্ন বাটনে ক্লিক করুন। এখন বার্নিং প্রসেস শুরু হবে এবং প্রোগ্রেস বার দেখাবে।
৮. বার্ন প্রসেস শেষ হলে এক্সিট বাটনে ক্লিক করুন।
৯. সিডি বা ডিভিডি কপি করতে হলে প্রথমেই কপি ডিস্ক অপশন সিলেক্ট করুন।
১০. কপির জন্য ইউজার্ড আসবে। বার্ন বাটনে ক্লিক করুন। সিডি/ডিভিডি কপি হতে থাকবে।

ফটোশপে ইমেজ নিয়ন্ত্রণ

ফটোশপে বিভিন্ন ধরনের ইমেজ নিয়ে কাজ করা হয়। ইমেজ সম্পাদনা করে কাংঙ্খিত ইমেজে পরিণত করার জন্য অনেক কমান্ড অপশন ব্যবহার করার মাধ্যমে। ইমেজ মেনুস্থ বিভিন্ন অপশন ব্যবহার করে ইমেজ সংক্রান্ত বিভিন্ন কার্যাবলী সম্পাদন করা হয়। ইমেজ মেন্যুতে ক্লিক করলে অথবা Alt+১ চাপলে পর্দায় ইমেজ মেন্যু আসবে। নিম্নে বিভিন্ন অপশনের ব্যবহার আলোচনা করা হল।

ইমেজের মোড নির্ধারণ : ফটোশপে কাজ করার জন্য বিভিন্ন ধরণে (মোড) থাকে। প্রয়োজনে ইমেজের মোড পরিবর্তন করা যায়। ইমেজ>মোড নির্দেশ দিলে পর্দায় নিম্নের মোড মেন্যু আসে। নিম্নে মোড সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।

বিটম্যাপ মোড : বিভিন্ন রঙে মিশ্রিত কোন ইমেজকে বিটম্যাপ ইমেজে রূপান্তরিত করলে সব রঙ মাত্র দু’টি রঙ সাদা-কালোতে রূপান্তরিত হয়ে ফাইলের সাইজ ছোট করে। ইমেজকে বিটম্যাপ রূপান্তরিত করতে হলে প্রথমে গ্রে-স্কেলে রূপান্তরিত করে নিতে হবে। ইমেজ এডিটিং করার প্রয়োজন থাকলে গ্রে-স্কেলেই করে নেয়া উচিত। বিটম্যাপে এডিটিং এর কম অপশন রয়েছে।

গ্রে-স্কেল মোড : বিটম্যাপের ন্যায় গ্রে-স্কেলেও রঙিন ইমেজ দু’টি রঙ সাদা-কালোতে প্রদর্শিত হয়। কোন ইমেজকে গ্রে-স্কেলে রূপান্তরিত করার জন্য ইমেজটি ওপেন করে ইমেজ>মোড>গ্রে-স্কেল নির্দেশ প্রদান করতে হবে।

কিভাবে কিনবেন এমপি থ্রি প্লেয়ার

বর্তমান তরুণ সমাজের কাছে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে এমপিথ্রি প্লেয়ার, যা বিনোদন মাধ্যমেও অনেক সময় ডাটা ট্রান্সফারের কাজ করছে। দামের সাথে সঙ্গতি রেখে উন্নত মানের এমপিথ্রি প্লেয়ার কেনার জন্য কিছু বিষয় ভালোভাবে জেনে রাখা দরকার। এমপিথ্রি’র বিভিন্নরকম ডিভাইস, ক্যাপাবিলিটি এবং লিমিটেশন থাকে সেগুলোর ওপর ভিত্তি করে এমপিথ্রি কিনতে হয়।

ব্র্যান্ড-এর নাম
বিভিন্ন বিখ্যাত ব্র্যান্ড কোম্পানি এমপিথ্রি তৈরি করে থাকে। বিখ্যাত নামী কোম্পানিগুলোর এমপিথ্রি ভালো ক্ষমতাসম্পন্ন ও আস্থাপূর্ণ হয়। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান বিক্রয়োত্তর সেবাও প্রদান করে। কিছু জনপ্রিয় ব্র্যান্ড হলো- অ্যাপল আইপড, ক্রিয়েটিভ জেন, মাইক্রোসফট জুন, স্যানডিস্ক সেনসা, সনি এবং অ্যারচো।

মিউজিক, মুভি এবং ফটো
আপনি কি ধরনের এমপিথ্রি পছন্দ করবেন? শুধুমাত্র গান, চলচ্চিত্র, নাকি নিজস্ব ডাটা সংগ্রাহক। এগুলোই যদি হয় আপনার চাহিদা তাহলে কিছু কিছু এমপিথ্রি প্লেয়ার আছে যেগুলো আপনার পছন্দ পূরণ করবে। এসব এমপিথ্রি প্লেয়ার দেখতে খুব পাতলা এবং এর ওপর স্ক্রিন থাকতেও পারে নাও পারে। আর আপনি যদি মুভি, ফটো দেখার ক্ষমতা সম্পন্ন এমপিথ্রি প্লেয়ার চান তবে সেগুলোও বাজারে পাওয়া যাবে। এগুলোর স্ক্রিন এলসিডি ডিসপ্লে এবং আয়তনে বড় হয়। আপনি যদি আপনার পছন্দ সম্পর্কে দ্বিধাদ্বন্দ্বে থাকেন তবে এই সব গুণাগুণ সম্পন্ন একটি এমপিথ্রি কিনতে পারেন। তবে ক্ষমতা ও ব্র্যান্ডের ওপর এমপিথ্রি প্লেয়ার এর বাজার মূল্য নির্ধারিত হয়। যেমন- সিএসএম, সনি, এফোরটেক ইত্যাদি।

এমপিথ্রি প্লেয়ারের আকৃতি
এমপিথ্রি-এর আকার ছোট বড় বিভিন্ন রকম হতে পারে। ছোট এমপিথ্রিগুলো গলায় ঝুলিয়ে ব্যায়ামসহ নানা কাজ করা ও বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়ানো যায়। মধ্যম আকারের এমপিথ্রি প্লেয়ারগুলোর আকৃতি ২ ইঞ্চি থেকে ৩.৫ ইঞ্চি স্ক্রিন বিশিষ্ট এবং ওজন ৫ আউন্স এর মধ্যে। যা বিশ্বব্যাপী বেশ জনপ্রিয়। এগুলোতে অডিও ও ভিডিও দু’ধরনের ব্যবস্থা আছে। বড় আকারের এমপিথ্রি প্লেয়ারগুলো ৪ ইঞ্চি অথবা তার থেকে বেশি স্ক্রিন বিশিষ্ট। পুরু ও শক্তিশালী বা গান শোনা ও ভিডিও দেখার জন্য চমকপ্রদ, কিন্তু সেগুলো বেশ ব্যয়বহুল।

দাম ও ধারণ ক্ষমতা
এমপিথ্রি প্লেয়ার-এর ধারণ ক্ষমতা নির্ভর করে হার্ডডিস্ক অথবা মেমোরি চিপ-এর ওপর যেগুলো ফ্ল্যাশ মেমোরি নামে পরিচিত। যে সব এমপিথ্রি-এর হার্ডডিস্ক থাকে সেগুলোর ধারণ ক্ষমতা বেশি। তবে বেশির ভাগের ক্ষেত্রে ফ্ল্যাশ মেমোরি ব্যবহার করা হয়। বাজারে ১২৮এমবি থেকে শুরু করে ২জিবি ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন এমপিথ্রি পাওয়া যায়। কিছু কিছু প্লেয়ার-এ অতিরিক্ত মেমোরি কার্ড সংযুক্ত করা যায় সেক্ষেত্রে ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এমপিথ্রি প্লেয়ারগুলোতে ধারণ ক্ষমতা অনুযায়ী গান বা ভিডিও চিত্র রাখা যায়। ধারণ ক্ষমতা অনুযায়ী এসব প্লেয়ার-এর মূল্য নির্ধারিত হয়। একটি ১জিবি এমপিথ্রি প্লেয়ার-এর মূল্য ১০০০-৩০০০ টাকা পর্যন্ত। যেমন- সনি, এফোরটেক, সনি টেক ইত্যাদি।

ব্যাটারি
বেশিরভাগ এমপিথ্রি প্লেয়ারগুলোই রিচার্জেবল ব্যাটারি দ্বারা চালিত। কিন্তু কিছু এএ বা এএ৪ ব্যাটারি দ্বারা চলে। ব্যাটারি যাই হোক না কেন এক্ষেত্রে আপনার বিবেচ্য ব্যাটারির স্থায়িত্বকাল। নতুন আইপড ক্ল্যাসিক ৪০ ঘন্টার ব্যাটারির চার্জ স্থায়ী। এমপিথ্রি কেনার সময় চার্জার ও অতিরিক্ত ব্যাটারি সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে কেনা উচিত।

কিভাবে গান যুক্ত করবেন
এমপিথ্রি প্লেয়ার-এ গান না থাকা অনেকটা সিএনজি ব্যতিত গাড়ির সমান বা অচল। প্রতিটি এমপিথ্রিতে সফটওয়্যার থাকে মিউজিক শোনার জন্য ও ভিডিও দেখার জন্য। আপনি আপনার টেকনিক্যাল নলেজ ও অভিজ্ঞতার মাধ্যমে গান রাখতে পারেন। আর যদি অনলাইনে গান নিতে চান তবে সেক্ষেত্রে অন্য ব্যবস্থা যেমন- আইপড এ অনলাইন মিউজিক কেনার ব্যবস্থা আছে।

মিউজিক ফরমেট
ডিজিটাল গান শোনার জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় ফরমেট হচ্ছে এমপিথ্রি। সে জন্যে প্রতিটি ডিজিটাল মিডিয়া এমপিথ্রি’কে সহজেই এমপিথ্রি’তে পাঠানো যায়। অন্যান্য জনপ্রিয় ফরমেটগুলোর মধ্যে অন্যতম- ডব্লিউএমএ (উইন্ডোজ মিডিয়া অডিও) ও এএসি (অ্যাডভান্সড অডিও কোডিং)। এছাড়াও কিছু বিশেষ ফরমেট হচ্ছে- এফএলএসি, ওজিজি, ডব্লিউএভি এবং এআইএফএফ।

পিসি বা ম্যাক
কিছু কিছু এমপিথ্রি প্লেয়ার- উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম এর সাথে ভালো কাজ করে। আর কিছু কিছু ম্যাক অপারেটিং সিস্টেম এর সাথে দ্রুত কাজ করে। সে জন্য এমপিথ্রি কেনার সময় এ জিনিস লক্ষ্য রেখে কিনতে হবে।

অতিরিক্ত কার্যক্রম
অনেকেই সাধারণ এমপিথ্রি প্লেয়ার কিনতে আগ্রহী, কারণ এগুলো ব্যবহার করা সহজ। অনেকেই অতিরিক্ত কার্যক্রম বিশিষ্ট এমপিথ্রি ব্যবহারে উৎসাহী। কারণ এর মাধ্যমে সহজেই ভয়েস রেকর্ডিং, এফএম রেডিও টিউন, ওয়্যারলেস ইন্টারনেট সংযুক্তি অথবা সরাসরি ভিডিও করার কাজ করে থাকে।

যন্ত্রপাতি
অরিজিনাল ব্র্যান্ডগুলো তাদের এমপিথ্রি প্লেয়ার এর সাথে অন্যান্য যন্ত্রপাতি ভালো মানের প্রদান করে। যেমন- এমপিথ্রি রক্ষাকারী বক্স, হাতে বাধার ব্যবস্থা, স্পিকার এর সাথে সংযুক্ত করার তার, হেডফোন এবং গাড়িতে সংযুক্ত করার জন্য অ্যাডাপটার।
এমপিথ্রি প্লেয়ার কেনার সাথে আপনি এ বিষয়গুলো ভালোভাবে খেয়াল করে কিনলে ভালো মানের এমপিথ্রি প্লেয়ার কিনতে পারবেন, যা নিশ্চিন্তে কয়েক বছর ব্যবহার করা যাবে।

কিভাবে কিনবেন এমপি থ্রি প্লেয়ার

বর্তমান তরুণ সমাজের কাছে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে এমপিথ্রি প্লেয়ার, যা বিনোদন মাধ্যমেও অনেক সময় ডাটা ট্রান্সফারের কাজ করছে। দামের সাথে সঙ্গতি রেখে উন্নত মানের এমপিথ্রি প্লেয়ার কেনার জন্য কিছু বিষয় ভালোভাবে জেনে রাখা দরকার। এমপিথ্রি’র বিভিন্নরকম ডিভাইস, ক্যাপাবিলিটি এবং লিমিটেশন থাকে সেগুলোর ওপর ভিত্তি করে এমপিথ্রি কিনতে হয়।

ব্র্যান্ড-এর নাম
বিভিন্ন বিখ্যাত ব্র্যান্ড কোম্পানি এমপিথ্রি তৈরি করে থাকে। বিখ্যাত নামী কোম্পানিগুলোর এমপিথ্রি ভালো ক্ষমতাসম্পন্ন ও আস্থাপূর্ণ হয়। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান বিক্রয়োত্তর সেবাও প্রদান করে। কিছু জনপ্রিয় ব্র্যান্ড হলো- অ্যাপল আইপড, ক্রিয়েটিভ জেন, মাইক্রোসফট জুন, স্যানডিস্ক সেনসা, সনি এবং অ্যারচো।

মিউজিক, মুভি এবং ফটো
আপনি কি ধরনের এমপিথ্রি পছন্দ করবেন? শুধুমাত্র গান, চলচ্চিত্র, নাকি নিজস্ব ডাটা সংগ্রাহক। এগুলোই যদি হয় আপনার চাহিদা তাহলে কিছু কিছু এমপিথ্রি প্লেয়ার আছে যেগুলো আপনার পছন্দ পূরণ করবে। এসব এমপিথ্রি প্লেয়ার দেখতে খুব পাতলা এবং এর ওপর স্ক্রিন থাকতেও পারে নাও পারে। আর আপনি যদি মুভি, ফটো দেখার ক্ষমতা সম্পন্ন এমপিথ্রি প্লেয়ার চান তবে সেগুলোও বাজারে পাওয়া যাবে। এগুলোর স্ক্রিন এলসিডি ডিসপ্লে এবং আয়তনে বড় হয়। আপনি যদি আপনার পছন্দ সম্পর্কে দ্বিধাদ্বন্দ্বে থাকেন তবে এই সব গুণাগুণ সম্পন্ন একটি এমপিথ্রি কিনতে পারেন। তবে ক্ষমতা ও ব্র্যান্ডের ওপর এমপিথ্রি প্লেয়ার এর বাজার মূল্য নির্ধারিত হয়। যেমন- সিএসএম, সনি, এফোরটেক ইত্যাদি।


এমপিথ্রি প্লেয়ারের আকৃতি
এমপিথ্রি-এর আকার ছোট বড় বিভিন্ন রকম হতে পারে। ছোট এমপিথ্রিগুলো গলায় ঝুলিয়ে ব্যায়ামসহ নানা কাজ করা ও বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়ানো যায়। মধ্যম আকারের এমপিথ্রি প্লেয়ারগুলোর আকৃতি ২ ইঞ্চি থেকে ৩.৫ ইঞ্চি স্ক্রিন বিশিষ্ট এবং ওজন ৫ আউন্স এর মধ্যে। যা বিশ্বব্যাপী বেশ জনপ্রিয়। এগুলোতে অডিও ও ভিডিও দু’ধরনের ব্যবস্থা আছে। বড় আকারের এমপিথ্রি প্লেয়ারগুলো ৪ ইঞ্চি অথবা তার থেকে বেশি স্ক্রিন বিশিষ্ট। পুরু ও শক্তিশালী বা গান শোনা ও ভিডিও দেখার জন্য চমকপ্রদ, কিন্তু সেগুলো বেশ ব্যয়বহুল।


দাম ও ধারণ ক্ষমতা
এমপিথ্রি প্লেয়ার-এর ধারণ ক্ষমতা নির্ভর করে হার্ডডিস্ক অথবা মেমোরি চিপ-এর ওপর যেগুলো ফ্ল্যাশ মেমোরি নামে পরিচিত। যে সব এমপিথ্রি-এর হার্ডডিস্ক থাকে সেগুলোর ধারণ ক্ষমতা বেশি। তবে বেশির ভাগের ক্ষেত্রে ফ্ল্যাশ মেমোরি ব্যবহার করা হয়। বাজারে ১২৮এমবি থেকে শুরু করে ২জিবি ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন এমপিথ্রি পাওয়া যায়। কিছু কিছু প্লেয়ার-এ অতিরিক্ত মেমোরি কার্ড সংযুক্ত করা যায় সেক্ষেত্রে ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এমপিথ্রি প্লেয়ারগুলোতে ধারণ ক্ষমতা অনুযায়ী গান বা ভিডিও চিত্র রাখা যায়। ধারণ ক্ষমতা অনুযায়ী এসব প্লেয়ার-এর মূল্য নির্ধারিত হয়। একটি ১জিবি এমপিথ্রি প্লেয়ার-এর মূল্য ১০০০-৩০০০ টাকা পর্যন্ত। যেমন- সনি, এফোরটেক, সনি টেক ইত্যাদি।


ব্যাটারি
বেশিরভাগ এমপিথ্রি প্লেয়ারগুলোই রিচার্জেবল ব্যাটারি দ্বারা চালিত। কিন্তু কিছু এএ বা এএ৪ ব্যাটারি দ্বারা চলে। ব্যাটারি যাই হোক না কেন এক্ষেত্রে আপনার বিবেচ্য ব্যাটারির স্থায়িত্বকাল। নতুন আইপড ক্ল্যাসিক ৪০ ঘন্টার ব্যাটারির চার্জ স্থায়ী। এমপিথ্রি কেনার সময় চার্জার ও অতিরিক্ত ব্যাটারি সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে কেনা উচিত।

কিভাবে গান যুক্ত করবেন
এমপিথ্রি প্লেয়ার-এ গান না থাকা অনেকটা সিএনজি ব্যতিত গাড়ির সমান বা অচল। প্রতিটি এমপিথ্রিতে সফটওয়্যার থাকে মিউজিক শোনার জন্য ও ভিডিও দেখার জন্য। আপনি আপনার টেকনিক্যাল নলেজ ও অভিজ্ঞতার মাধ্যমে গান রাখতে পারেন। আর যদি অনলাইনে গান নিতে চান তবে সেক্ষেত্রে অন্য ব্যবস্থা যেমন- আইপড এ অনলাইন মিউজিক কেনার ব্যবস্থা আছে।


মিউজিক ফরমেট
ডিজিটাল গান শোনার জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় ফরমেট হচ্ছে এমপিথ্রি। সে জন্যে প্রতিটি ডিজিটাল মিডিয়া এমপিথ্রি’কে সহজেই এমপিথ্রি’তে পাঠানো যায়। অন্যান্য জনপ্রিয় ফরমেটগুলোর মধ্যে অন্যতম- ডব্লিউএমএ (উইন্ডোজ মিডিয়া অডিও) ও এএসি (অ্যাডভান্সড অডিও কোডিং)। এছাড়াও কিছু বিশেষ ফরমেট হচ্ছে- এফএলএসি, ওজিজি, ডব্লিউএভি এবং এআইএফএফ।


পিসি বা ম্যাক
কিছু কিছু এমপিথ্রি প্লেয়ার- উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম এর সাথে ভালো কাজ করে। আর কিছু কিছু ম্যাক অপারেটিং সিস্টেম এর সাথে দ্রুত কাজ করে। সে জন্য এমপিথ্রি কেনার সময় এ জিনিস লক্ষ্য রেখে কিনতে হবে।


অতিরিক্ত কার্যক্রম
অনেকেই সাধারণ এমপিথ্রি প্লেয়ার কিনতে আগ্রহী, কারণ এগুলো ব্যবহার করা সহজ। অনেকেই অতিরিক্ত কার্যক্রম বিশিষ্ট এমপিথ্রি ব্যবহারে উৎসাহী। কারণ এর মাধ্যমে সহজেই ভয়েস রেকর্ডিং, এফএম রেডিও টিউন, ওয়্যারলেস ইন্টারনেট সংযুক্তি অথবা সরাসরি ভিডিও করার কাজ করে থাকে।

যন্ত্রপাতি
অরিজিনাল ব্র্যান্ডগুলো তাদের এমপিথ্রি প্লেয়ার এর সাথে অন্যান্য যন্ত্রপাতি ভালো মানের প্রদান করে। যেমন- এমপিথ্রি রক্ষাকারী বক্স, হাতে বাধার ব্যবস্থা, স্পিকার এর সাথে সংযুক্ত করার তার, হেডফোন এবং গাড়িতে সংযুক্ত করার জন্য অ্যাডাপটার।
এমপিথ্রি প্লেয়ার কেনার সাথে আপনি এ বিষয়গুলো ভালোভাবে খেয়াল করে কিনলে ভালো মানের এমপিথ্রি প্লেয়ার কিনতে পারবেন, যা নিশ্চিন্তে কয়েক বছর ব্যবহার করা যাবে।

 
Design by Free WordPress Themes | Bloggerized by Lasantha - Premium Blogger Themes | Best Buy Coupons