সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন বা এসইও হচ্ছে ধারাবাহিক পরিবর্তনের মাধ্যমে একটি ওয়েবসাইটের উন্নতি সাধন করা। এই পরিবর্তনগুলো হয়ত আলাদাভাবে চোখে পড়বে না, কিন্তু সামগ্রিকভাবে এর মাধ্যমে একটি সাইটের ব্রাউজিংয়ের স্বাচ্ছন্দ্যবোধ অনেকাংশে বেড়ে যায় এবং অর্গানিক বা স্বাভাবিক সার্চ রেজাল্টে সাইটকে শীর্ষ অবস্থানের দিকে নিয়ে যায়। গত পর্বে এসইও’র বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করা হয়েছিল। এ পর্বে অন-পেজ এসইও (On-page SEO) নিয়ে আলোকপাত করা হলো। এই লেখাটি গুগলের প্রকাশিত ‘এসইও স্টার্টার গাইড’-এর ওপর ভিত্তি করে সাজানো হয়েছে।
০১. প্রাথমিক এসইও টাইটেল ট্যাগের ব্যবহার :
একটি এইচটিএমএল পৃষ্ঠার টাইটেল ট্যাগ থেকে সে পৃষ্ঠার বিষয়বস্তু সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা পাওয়া যায়। একজন ব্যবহারকারী এবং সার্চ ইঞ্জিনের কাছে তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এইচটিএমএল ডকুমেন্টের ট্যাগের মধ্যে
একটি এইচটিএমএল ডকুমেন্টের ডেসক্রিপশন মেটা ট্যাগের মধ্যে ওই পৃষ্ঠা সারসংক্ষেপ যুক্ত করা হয়, যা গুগল এবং অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিনকে সাইটের পৃষ্ঠাটি সম্পর্কে ভালো ধারণা দেয়। যেখানে টাইটেল ট্যাগ কয়েকটি শব্দের সমন্বয়ে গঠিত, সেখানে ডেসক্রিপশন মেটা ট্যাগের মধ্যে এক বা একাধিক লাইনের একটি প্যারাগ্রাফ দিতে হয়। টাইটেল ট্যাগের মতো এটিও ট্যাগের মধ্যে এর মাধ্যমে যুক্ত করতে হয়। সাইটের প্রত্যেকটি পৃষ্ঠায় ভিন্ন ভিন্ন এবং সঠিক ডেসক্রিপশন যুক্ত করা প্রয়োজন, কারণ সার্চের ফলাফলে প্রায় সময় এটি প্রদর্শিত হয়। শুধু কিওয়ার্ড দিয়ে ডেসক্রিপশন মেটা ট্যাগটি তৈরি করা উচিত নয়। অনেকে আবার পৃষ্ঠার মূল লেখাকে সরাসরি এই ট্যাগে লিখে ফেলেন যা মোটেও ঠিক নয়।
০২. সাইটের কাঠামো ইউআরএল পুনর্গঠন :
সহজবোধ্য ও বর্ণনামূলক ইউআরএল (URL) সার্চ ইঞ্জিন এবং ব্যবহারকারীদের কাছে সমান গুরুত্বপূর্ণ। সাইটের প্রত্যেকটি পৃষ্ঠার ইউআরএল যাতে সেই পৃষ্ঠার বিষয়বস্তুর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। আইডি বা ব্যবহারকারীদের কাছে অর্থহীন বিভিন্ন প্যারামিটার ব্যবহার না করে অর্থবোধক শব্দ ব্যবহার করা উচিত। উদাহরণস্বরূপ http:// yoursite.com?category_id=1&product_id=2-এর পরিবর্তে http://yoursite.com/books/ book-title এভাবে ইউআরএল লিখলে সার্চ ইঞ্জিন এবং ব্যবহারকারীদের কাছে পৃষ্ঠার বিষয়বস্ত্ত স্পষ্ট হয়ে যায়। ইউআরএলে যাতে অত্যধিক কিওয়ার্ড না থাকে, সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।
সহজ নেভিগেশন
সাইটের নেভিগেশন অর্থাৎ এক পৃষ্ঠা থেকে অন্য পৃষ্ঠায় যাওয়া যাতে সহজ হয়, তা বিবেচনায় রাখতে হবে। সহজ নেভিগেশন একদিকে ব্যবহারকারীদেরকে যেমন সাইটের তথ্য সহজেই খুঁজে পেতে সাহায্য করে অন্যদিকে সাইটের গুরুত্বপূর্ণ পৃষ্ঠাগুলোকে সার্চ ইঞ্জিন সহজেই খুঁজে পায়। সাইটের প্রথম পৃষ্ঠা বা হোমপেজ থেকে অন্যান্য সব পৃষ্ঠায় কিভাবে যাওয়া যাবে, তা প্রথমেই প্ল্যান করা উচিত। সাইটে অসংখ্য পৃষ্ঠা থাকলে সেগুলোকে বিভাগ এবং উপ-বিভাগে ভাগ করে রাখা প্রয়োজন। প্রত্যেকটি পৃষ্ঠায় breadcrumb লিস্ট যুক্ত করা ভালো। এর মাধ্যমে ব্যবহারকারী কত ধাপ ভেতরের পৃষ্ঠায় রয়েছে, তা জানতে পারে এবং চাইলে লিঙ্কে ক্লিক করে আগের পৃষ্ঠায় যেতে পারে। এই লিস্ট দেখতে সাধারণত এরকম হয়ে থাকে- Home > Products > Books।
সাইট ম্যাপের ব্যবহার
সাইট ম্যাপ দুই ধরনের হয়ে থাকে। প্রথমটি একটি সাধারণ এইচএমএলটি পৃষ্ঠা, যেখানে সাইটের সব পৃষ্ঠার লিঙ্ক যুক্ত করা হয়। মূলত কোনো পৃষ্ঠা খুঁজে পেতে অসুবিধা হলে ব্যবহারকারীরা এই সাইট ম্যাপের সহায়তা নেয়। সার্চ ইঞ্জিনও এই সাইট ম্যাপ থেকে সাইটের সব পৃষ্ঠার লিঙ্ক পেয়ে থাকে। দ্বিতীয় সাইটম্যাপ হচ্ছে একটি এক্সএমএল ফাইল, যা ‘গুগল ওয়েবমাস্টার টুলস’ নামে গুগলের একটি সাইটে সাবমিট করা হয়। সাইটের ঠিকানা http://www.google.com/webmasters/tools। এ ফাইলের মাধ্যমে সাইটের সব পৃষ্ঠা সম্পর্কে গুগল ভালোভাবে অবগত হতে পারে। এই সাইটম্যাপ ফাইল তৈরি করতে গুগল একটি ওপেনসোর্স স্ক্রিপ্ট দেয়, যা এই লিঙ্ক থেকে পাওয়া যাবে- http://code.google.com/p/googlesitemapgenerator
৪০৪ পেজের গুরুত্ব
ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা ব্রাউজ করার সময় প্রায় সময় ৪০৪ নামের একটি পৃষ্ঠা দেখতে পান। সাইটের লিঙ্ক ভুল থাকলে কিংবা কাঙ্ক্ষিত পৃষ্ঠাটি না পাওয়া গেলে এটি যেকোনো সাইটেই দৃশ্যমান হয় এবং এক্ষেত্রে সাধারণত ‘404 File Not Found’ লেখাটি দেখা যায়। তবে এর সাথে অন্যান্য সাহায্যকারী তথ্য বা সাইটের অন্যান্য পৃষ্ঠার লিঙ্ক যুক্ত করতে পারলে ব্যবহারকারীদের জন্য অনেক সুবিধা হয়।
০৩. কন্টেন্ট অপ্টিমাইজেশন, মানসম্মত তথ্য এবং সার্ভিস :
মানসম্মত ও স্বতন্ত্র কন্টেন্ট বা তথ্য হচ্ছে একটি ওয়েবসাইট জনপ্রিয় করার মূল হাতিয়ার। এটি একদিকে যেমন ব্যবহারকারীদেরকে সাইটে নিয়মিত আসতে প্রভাবিত করে, তেমনি গুগলের কাছেও সাইটের গুরুত্ব বেড়ে যায়। ওয়েবসাইটে লেখা সংযোজন করার আগে কিওয়ার্ড নিয়ে গবেষণা এবং লেখায় এর প্রতিফলন থাকা প্রয়োজন। গুগলের ‘অ্যাডওয়ার্ডস’ সাইটে এজন্য একটি টুল রয়েছে, যা একটি কিওয়ার্ড কতটা জনপ্রিয় তা যাচাই করতে সাহায্য করে। পাশাপাশি এই টুলের মাধ্যমে নতুন নতুন কিওয়ার্ড সম্পর্কে জানা যায়। সাইটটির ঠিকানা হচ্ছে- https://adwords.google.com/select/KeywordToolExternal। তাছাড়া গুগলের ‘ওয়েবমাস্টার টুলস’ সাইটে শীর্ষ কিওয়ার্ডের একটি লিস্ট পাওয়া যায়। এ থেকে ব্যবহারকারীরা সাইটে ভিজিট করার আগে গুগলে কোন কিওয়ার্ড ব্যবহার করে আসে, তা জানা যায়। ওয়েবসাইটের কন্টেন্ট তৈরি করার সময় বানান এবং ব্যাকরণের দিকে খেয়াল রাখা উচিত। লেখায় একাধিক বিষয়বস্তু থাকলে সেটিকে কয়েকটি প্যারাগ্রাফে ভাগ করে এবং শিরোনাম সহকারে লেখা উচিত।
GsKi টেক্সটের যথাযথ ব্যবহার
GsKi টেক্সট (Anchor Text) হচ্ছে HTML এর বা GsKi ট্যাগের ভেতরের শব্দগুচ্ছ যাতে ক্লিক করে অন্য কোনো পৃষ্ঠা বা সাইটে যাওয়া যায়। এই টেক্সটি গুগল এবং ব্যবহারকারীদেরকে লিঙ্ক সম্পর্কে পূর্ব ধারণা দেয়। এই লিঙ্কটি একই সাইটের অন্য কোনো পৃষ্ঠার সাথে হতে পারে অথবা ভিন্ন কোনো সাইটের সাথে সংযুক্ত হতে পারে। GsKi টেক্সটে ‘Click here’, ‘Page’ বা ‘Article’ এই জাতীয় সাধারণ শব্দ ব্যবহার না করে লিঙ্ক করা পৃষ্ঠার বর্ণনামূলক হওয়া উচিত। GsKi টেক্সটটি যাতে অল্প কয়েকটি শব্দের সমন্বয়ে হয় সেদিকে খেয়াল রাখা চাই। সম্পূর্ণ একটি বাক্যকে GsKi টেক্সট হিসেবে ব্যবহার করা ঠিক নয়। একটি সাধারণ লেখা থেকে লিঙ্ককে যাতে আলাদাভাবে চেনা যায় সেজন্য GsKi টেক্সটে ভিন্ন রং, আন্ডারলাইন ইত্যাদি CSS স্টাইল ব্যবহার করা যেতে পারে।
ছবির ব্যবহার
ওয়েবসাইটে ছবি বা ইমেজ যুক্ত করার সময় এইচটিএমএলের ট্যাগের মধ্যকার alt এট্রিবিউটে ছবির বর্ণনা যুক্ত করা উচিত। এর ফলে কোনো ব্রাউজারে যদি ছবিটি না আসে তাহলে এই এট্রিবিউটের লেখাটি দৃশ্যমান হবে। একটি ছবিকে লিঙ্ক হিসেবে ব্যবহার করার সময় এটি GsKi টেক্সটেরও কাজ করে। অন্যদিকে এর মাধ্যমে গুগলের ইমেজ সার্চের সাহায্যে ব্যবহারকারীরা ছবিটি খুঁজে পাবে। ছবির বর্ণনার পাশাপাশি ছবির ফাইলে নামও বর্ণনামূলক ও সংক্ষিপ্ত হওয়া প্রয়োজন। সাইটের সাইটম্যাপ ফাইলের মতো ছবির জন্যও একটি এক্সএমএল সাইটম্যাপ তৈরি করা যায়, যা গুগলকে ওয়েবসাইটের সব ছবি সম্পর্কে ভালো ধারণা দেয়।
হেডিং ট্যাগ
HTML G [h1] থেকে শুরু করে [h6] পর্যন্ত ৬টি হেডিং ট্যাগ রয়েছে, যার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শিরোনামকে [h1] ট্যাগের মধ্যে এবং কম গুরুত্বপূর্ণ তথ্যকে পর্যায়ক্রমে অন্যান্য হেডিং ট্যাগের মধ্যে লেখা হয়। হেডিং ট্যাগের লেখা যেহেতু পৃষ্ঠার অন্যান্য লেখা থেকে আকারে বড় হয়ে থাকে, তাই এটি ব্যবহারকারীদের দৃষ্টি সহজেই আকৃষ্ট করতে সক্ষম হয় এবং লেখার বিষয়বস্তু সম্পর্কে অবহিত করতে ব্যবহারকারী ও গুগলকে সহায়তা করে। তবে একটি পৃষ্ঠায় মাত্রাধিক হেডিং ট্যাগ যাতে ব্যবহার না হয় তা মাথায় রাখতে হবে।
০৪. ক্রাউলার উপযোগী এসইও robots.txt ফাইলের ব্যবহার :
ক্রাউলার (Crawler) হচ্ছে এক ধরনের কমপিউটার প্রোগ্রাম, যা স্বয়ংক্রিয়ভাবে ইন্টারনেট ব্রাউজ করে এবং নতুন নতুন তথ্য তার ডাটাবেজে সংরক্ষণ (বা ক্রাউলিং) এবং সাজিয়ে (বা ইন্ডেক্সিং) রাখে। ক্রাউলার প্রোগ্রামকে প্রায় সময় ইন্ডেক্সার, বট, ওয়েব স্পাইডার, ওয়েব রোবট ইত্যাদি নামে ডাকা হয়। গুগলের ক্রাউলারটি ‘গুগলবট’ নামে পরিচিত। গুগলবট নিরবচ্ছিন্নভাবে ইন্টারনেটে বিচরণ করে বেড়ায় এবং যখনই নতুন কোনো ওয়েবসাইট বা নতুন কোনো তথ্যের সন্ধান পায়, এটি গুগলের সার্ভারে সংরক্ষণ করে রাখে। robots.txt হচ্ছে এমন একটি ফাইল যার মাধ্যমে একটি সাইটের নির্দিষ্ট কোনো অংশকে ইন্ডেক্সিং করা থেকে সার্চ ইঞ্জিন তথা ক্রাউলারকে বিরত রাখা যায়। এই ফাইলটিকে সার্ভারের মূল ফোল্ডারের মধ্যে রাখতে হয়। একটি সাইটে এমন অনেক পৃষ্ঠা থাকতে পারে, যা ব্যবহারকারী ও সার্চ ইঞ্জিন উভয়ের কাছে অপ্রয়োজনীয়, সেক্ষেত্রে এই ফাইলটি হচ্ছে একটি কার্যকরী সমাধান। গুগলের ওয়েবমাস্টার টুলস সাইট থেকে এই ফাইল তৈরি করা যায়।
nofollow wjsK সম্পর্কে সতর্কতা
গুগলবট একটি সাইটকে যখন ক্রাউলিং করতে থাকে, তখন সে সাইটে অন্য সাইটের লিঙ্ক পেলে সেখানে ভিজিট করে এবং সেই সাইটকেও ক্রাউলিং করে। এক্ষেত্রে একটি সাইটের পেজরেঙ্ক (পিআর)-এর ওপর অন্য সাইটের পেজরেঙ্কের প্রভাব পড়ে। এইচটিএমএল ট্যাগের ট্যাগের মধ্যে ‘rel’ এট্রিবিউটে ‘nofollow’ দিয়ে রাখলে গুগল সেই লিঙ্কে ভিজিট করা থেকে বিরত থাকে। nofollow লেখার নিয়ম হচ্ছে- Site Name। এটি মূলত বিভিন্ন ব্লগিং সাইটে পাঠকদের মন্তব্যে অবস্থিত লিঙ্কে ব্যবহার হয়, যা স্প্যামার বা অনাকাঙ্ক্ষিত ভিজিটরদেরকে তাদের সাইটের পেজরেঙ্ক বাড়ানো প্রতিরোধ করে। এটি অযাচিত মন্তব্য দিতে স্প্যামারদেরকে নিরুৎসাহিত করে। তবে যেসব ক্ষেত্রে স্প্যাম প্রতিরোধের ব্যবস্থা রয়েছে, সেখানে nofollow ব্যবহার না করাই ভালো। এতে পাঠকরা মন্তব্য দিতে উৎসাহিত হবে এবং সাইটের সাথে তাদের যোগাযোগ আরও বেশি হবে।
০৫. সঠিক পদ্ধতিতে ওয়েবসাইটের প্রচারণা এবং বিশ্লেষণ :
একটি সাইটকে যখন অপর একটি সাইট লিঙ্কের মাধ্যমে সংযুক্ত করে তখন একে বলা হয় ব্যাকলিঙ্ক। একটি সাইটের ব্যাকলিঙ্ক যত বেশি হবে, গুগলের কাছে সেই সাইটের গুরুত্বও তত বাড়তে থাকবে এবং এর পেজরেঙ্কও বাড়তে থাকবে। ফলস্বরূপ সার্চের মাধ্যমে আরো বেশিসংখ্যক ব্যবহারকারী সাইটে আসবে। বেশি করে ব্যাকলিঙ্ক পাবার জন্য ওয়েবসাইটে মানসম্মত তথ্য থাকা এবং এর সঠিক প্রচারণা প্রয়োজন। একটি সাইটে ভালো তথ্য থাকলে ব্যবহারকারীরা তাদের ওয়েবসাইটে স্বেচ্ছায় ব্যাকলিঙ্ক সংযুক্ত করবে। একটি ওয়েবসাইটের প্রচারণা দুই ধরনের হতে পারে- অনলাইন এবং অফলাইন। অনলাইন প্রচারণার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ব্লগিং। ওয়েবসাইটের সাথে একটি ব্লগ সংযুক্ত থাকলে এর মাধ্যমে ওয়েবসাইটের নতুন নতুন সার্ভিস বা পণ্যের সাথে ব্যবহারকারীদেরকে সহজেই পরিচয় করিয়ে দেয়া যায়। অনলাইন প্রচারণার মধ্যে আরেকটি পদ্ধতি হচ্ছে বিভিন্ন সামাজিক নেটওয়ার্কিং ও কমিউনিটি সাইটে প্রচারণা। তবে এসব সাইটে প্রচারণার ক্ষেত্রে একটু সংযমী হওয়া প্রয়োজন। ওয়েবসাইটের প্রত্যেকটি নতুন তথ্য বা যে কোনো ছোটখাটো পরিবর্তন শেয়ার না করে বেছে বেছে ভালো তথ্যগুলো সবাইকে জানানো উচিত। অন্যথায় এটি অন্যদের বিরক্তির উদ্রেক করে। নিজের সাইটের সমজাতীয় কমিউনিটি সাইট বা বিভিন্ন ফোরামে প্রচারণা করা ভালো, তবে সেসব সাইটে অযথা পোস্ট দেয়া বা স্প্যামিং যাতে না হয়। অফলাইন প্রচারণার মধ্যে রয়েছে সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন, বিজনেস কার্ড তৈরি, পোস্টার, লিফলেট, নিউজলেটার প্রকাশ ইত্যাদি।
ফ্রি ওয়েবমাস্টার টুলের ব্যবহার
গুগলসহ অন্যান্য জনপ্রিয় সার্চ ইঞ্জিনগুলো ওয়েবমাস্টারদের জন্য এসইও সহায়ক বিভিন্ন ফ্রি টুল দেয়। গুগলের ওয়েবমাস্টার টুলস সাইটের মাধ্যমে একজন ওয়েবমাস্টার তার সাইট সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেতে পারে, যা গুগলের সার্চ রেজাল্টে আরো ভালোভাবে ওয়েবসাইটটি উপস্থিত হতে সহায়তা করে। এই সাইট থেকে যেসব সার্ভিস বিনামূল্যে পাওয়া যায় সেগুলো হলো-
* গুগলবট একটি সাইটের কোনো অংশ ক্রাউলিং করতে না পারলে তা যায়।
* গুগলে একটি XML সাইটম্যাপ সাবমিট করা যায়।
* robots.txt ফাইল তৈরি করা যায়।
* title এবং description মেটা ট্যাগে কোনো সমস্যা থাকলে তা শনাক্ত করা যায়।
* যেসব সার্চ কিওয়ার্ডের ব্যবহারকারীরা ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে সেগুলো সম্পর্কে জানা যায়।
* অন্য কোন কোন সাইট ব্যাকলিঙ্ক করেছে, তা জানা যায়।
* আরো নানা ধরনের বিশ্লেষণধর্মী টুল।
এখানে যদিও ‘সার্চ ইঞ্জিন’ সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে, তথাপি একটি ওয়েবসাইটকে অপটিমাইজ বা উন্নত করার ক্ষেত্রে সাইটের ভিজিটরদের সুবিধার কথাই প্রথমে চিন্তা করা উচিত। কারণ, ভিজিটররাই হচ্ছে একটি সাইটের মূল ভোক্তা, কোন সার্চ ইঞ্জিন নয় আর তারা সাইটকে খুঁজে পেতে সার্চ ইঞ্জিনকে একটি মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করে মাত্র। এসইও একটি সময়সাপেক্ষ ব্যাপার এবং একটি চলমান প্রক্রিয়া। রাতারাতি একটি ওয়েবসাইটকে সার্চ ইঞ্জিনের প্রথম পাতায় নিয়ে আসা যায় না। তবে নিয়মিত উন্নয়ন করতে থাকলে এর ফলাফল অনেক সুদূরপ্রসারী।
0 টি মন্তব্য:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন