বৃহস্পতিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০১১

আপনি কি একজন ওয়েব ডেভোলপার? নাকি সাধারণ ইউসার কিন্তু ভাবছেন নিজের একটি ওয়েব সাইট বানাবেন? তাহলে আপনার জন্য এই পোস্ট খুব ই দরকারি। এখানে খুঁজে পাবেন হাজার হাজার ওয়ার্ডপ্রেস এর থিম। একদম ফ্রী ডাউনলোড করতে পারেবন এই ওয়েব সাইট গুলো থেকে। এখানে ৫০টি ওয়েব সাইট আছে। এরা সবার জন্য ফ্রী ওয়ার্ড প্রেস এর থিম ডাউনলোড করার সুবিধা দিয়ে থাকে। এছাড়াও আমাদের টিজে ট্রিপস এস এবং টিজে অনির্বাচিত এর টিউটোরিয়াল আছে ওয়ার্ড প্রেস দিয়ে ব্লগ তৈরি করার এবং টিজে পুদিনা পাতা শেয়ার করেছিলেন ৯০০টির বেশী ওয়ার্ড প্রেস এর থিম। যাই হোক সবাই ভালো থাকুন।

1) wordpress.org

2) woothemes.com

3) wp-mojo.com



4) wordpressthemebase.com

5) web2feel.com

6) leadcamp.com

7) fresheezy.com

8 ) skinpress.com

9) topwpthemes.com

10) wordpresstemplates.name

11) themes-wp.com

12) wpskins.org

13) graphpaperpress.com

14) solostream.com

15) newwpthemes.com

16) freewpthemes.net

17) clone24.com

18) wordpressthemesforfree.com

19) wptemplates.org

20) themes.rock-kitty.net

21) freethemeslayouts.com

22) blogohblog.com

23) themes2wp.com



24) siteground.com

25) wordpresstheme.com

26) wordpress2u.com

27) themelab.com

28) webrevoulutionary.com

29) iwordpressthemes.com

30) jauhari.net

31) templatesbrowser.com

32) wpthemesfree.com

33) wpstart.org

34) Freewordpressthemes4u.com

35) themebase.com

36) blogperfume.com

37) wpsalon.com

38) bestwpthemes.com

39) acosmin.com

40) simplethemes.net

41) greatwordpressthemes.com


42) templates.arcsin.se

43) designdisease.com

44) johntp.com

45) wpcrunchy.com

46) mkels.com

47) newwordpressthemes.com

48) wpthemesnews.com

undefined

49) widgetreadythemes.com

undefined

50) grabatheme.com

undefined



 

UPS কেনার আগে একটু জেনে নিন



আমরা সাধারনত অনেক সময় ধরে যারা Desktop Pc তে কাজ করি তাদের জন্য ইউপিএস অনেক উপকারি জিনিস। এটা যেমন উপকারে আশে তেমনি pc নিয়ে আমাদের অনেক ভোগান্তির মুলে যে এই ইউপিস রয়েছে তা হয়ত আমরা অনেকেই বুজতে পারি না।   আমাদের দেশে বর্তমানে অনেক ইউপিএস পাওয়া যায় বাহারি তাদের Outlook. আর কত রকমের যে সুবিধা যে এতে থাকে মাঝে মধ্যে এগুলো দেখলে মাথা চক্কর দেয়। যাই হোক  যে সমস্ত সস্তা চাইনিজ ইউপিএস বাজারে পাওয়া যায় তা অনেক ক্ষেত্রে কম্পিউটার এর জন্য অত্যান্ত বিপদজনক। আমরা জানি  সাধারনত ইউপিএস তৈরী করা হয় বিদ্যুৎ চলে গেলে ব্যাকআপ দেয়ার জন্য কিন্তু চায়না পণ্ডিত গুলা ব্যাকআপ এর সাথে আরও এক্সট্রা কিছু সুবিধা যোগ করে দেয়। যেগুলো কম্পিউটার এর কোন উপকার করে না বরং আরো ক্ষতি করে।যেমনঃ বর্তমানে অনেক ইউপিস এ স্ট্যবিলাইজিং সুবিধা থাকে এটা কিছু কিছু ক্ষেত্রে অনেক বিপদজনক। শহরের বাড়িতে সাধারনত ২২০ ভোল্ট সবসময় থাকে এখন  এই বাসায় যদি এই সস্তা ইউপিএস ব্যবহার করা হয়ে থাকে তাহলে স্ট্যবিলাইজিং এর কারনে ভোল্টেজ আরও ২২০+(+-২০)=২৪০ ভোল্ট হয়ে যায় কোন কোন ক্ষেত্রে আরও বেশি। এখন একবার চিন্তা করে দেখুন এই ভোল্ট যদি কম্পিউটার এর মধ্যে যায় তাহলে কি অবস্থা হবে। পিসি এর মাদার বোর্ড পুরে যাওয়ার জন্য যা একটা অন্যতম মুল কারন। হয়তা অনেকে ভাবছেন তাহলে স্ট্যবিলাইজার ব্যবহার করলে এই সমস্যা হয় না কেনো (যারা ব্যবহার করেন)। কারন স্ট্যবিলাইজার ভোল্টেজ স্ট্যবিলাইজিং করে আট থেকে দশটি Realy(ম্যগনেটিক সুইচ) এর মাধ্যমে যার ফলে স্ট্যবিলাইজার অনেক ভাল  এবং সূক্ষ্ম ভাবে ভোল্টেজ স্ট্যবিলাইজ করতে পারে, আর ইউপিএস করে এক থেকে দুইটি Realy এর মাধ্যমে যার ফলে সঠিক স্ট্যাবল ভোল্টেজ থাকে না ।
তাই অবশ্যই  টাকা একটু বেশি গেলেও ইউপিস কিনবেন অবশ্যই কোন ভাল ব্র্যান্ড এর । আর সবচাইতে ভাল হয় যদি ইউপিএস ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে পারেন। কারন যত কম্পিউটার নষ্ট হয় তার মুলে থাকে এই ইউপিএস।
তবে যারা ইউপিএস ব্যবহার করেন তাদের কিছু টিপস দিচ্ছি ইউপিএস  বেশি দিন ভালো রাখার জন্য
১। কখনো ইউপিএস এর মেইন পাওয়ার অফ করবেন না।
২। বিদ্যুৎ চলে গেলেও ইউপিএস বন্ধ করবেন না।
৩। প্রতি এক মাস পর পর ইউপিএস পুরপুরি ডিসচার্জ করবেন এবং পুরপুরি ফুল চার্জ করবেন।
৪। সি আর টি মনিটরের ক্ষেত্রে কখনো বিদ্যুৎ চলে গেলে বন্ধ থাকা মনিটর চালু করবেন না এতে ব্যটারির উপর চাপ পরে।
৫। ইউ পিএ এস এ কখনই অনুমদিত লোড এর অতিরিক্ত কোন লোড দিবেন না।
৬। মাঝে মধ্য ইউপিএস এর ব্যটারির কানেক্টর গুলো পরিষ্কার করে দিবেন ( যদি সম্ভব হয়)

আর আরেকটি কথা ইউ পি এস এ সাধারন বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ব্যটারি নষ্ট হয় তাই যাদের নষ্ট ইউপিএস আছে তারা আজই একটি নতুন ব্যটারি লাগিয়ে দেখুন ইউপিএস একদম আগের মত সার্ভিস দিচ্ছে।
আর যাদের ব্যটারি ভাল আছে কিন্তু ইউপিএস ভাল না তাদের কে অন্য কোন একদিন শিখিয়ে দিব কি ভাবে এই ব্যটারি দিয়ে একটি ২/৩ টি এনার্জি লাইট জ্বালানোর মত মিনি আইপিএস বানানো যায়।

মূল লেখা এখানে

ল্যাপটপ কেনার গাইড



বাজার ছেয়ে গেছে ল্যাপটপে। নানান ব্র্যান্ড, মডেল, আকার, ক্ষমতার ল্যাপটপের মেলায় বাজার জমজমাট। কিছুদিন আগে শেষ হয়ে গেল ল্যাপটপ মেলা। মেলাতে ছিল উপচেপড়া ভিড়। সবাই কিনতে চায় প্রযুক্তির কল্যাণে হাতের নাগালে চলে আসা এ কমপিউটারগুলো। একসময় যা কেনার কথা চিন্তা করাটাই ছিল বিলাসিতা, এখন তা নিত্যব্যবহার্যে পরিণত হয়েছে। অফিস-আদালত, স্কুল-কলেজ, ঘরে-বাইরে সবখানেই দেখা যায় মানুষ ল্যাপটপ ব্যবহার করছে। ল্যাপটপের দাম আগের তুলনায় অনেক কমে যাওয়ায় ক্রেতার সংখ্যাও বেড়ে গেছে অস্বাভাবিকভাবে। ল্যাপটপ কেনার সময় যাতে কোনো সমস্যা না হয়, সেজন্য কিছু গাইডলাইন নিয়ে সাজানো হয়েছে এবারের প্রচ্ছদ প্রতিবেদন।

ডেস্কটপ বনাম ল্যাপটপ

কমপিউটার কেনার আগে প্রথমেই দেখতে হবে, কমপিউটারটি কি কাজে ব্যবহার করবেন? শুধু মেইল করা, ইন্টারনেট সার্ফিং এবং চ্যাট করার কাজে তা ব্যবহার করতে চাইলে সাধারণ মানের একটি কমপিউটারই যথেষ্ট। মুভি দেখার ভক্ত হয়ে থাকলে, আপনার চাহিদা মেটানোর জন্য বড় আকারের মনিটরসহ মাঝারি মানের কমপিউটারের প্রয়োজন হবে। গান শোনার নেশা যদি থাকে, তবে ভালোমানের সাউন্ড সিস্টেমের প্রয়োজন পড়বে। নানা ধরনের গান, মুভি, ভিডিও ইত্যাদি জমানোর শখ থাকলে বা ডাউনলোড করার ঝোঁক থাকলে, নিতে হবে বেশি ধারণক্ষমতাযুক্ত হার্ডডিস্ক। আর গেমার হলে কিনতে হবে হাই কনফিগারেশনের পিসি, যা কিনতে বেশ টাকা খসে যাবে। এভাবেই প্রয়োজনমতো বেছে নিতে হবে কোন কমপিউটারটি বা কমপিউটারের যন্ত্রাংশটি আপনার জন্য উপযুক্ত। এ তো গেলো ডেস্কটপ পিসি কেনার কথা।

এবার আসা যাক ল্যাপটপ কেনার কথায়। বেশিরভাগ ইউজারই এখন ল্যাপটপ ব্যবহার করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। কিন্তু ল্যাপটপ কিনবেন না ডেস্কটপ কিনবেন, এটি নিয়ে দ্বিধায় ভোগেন। তাদের জন্য কিছু পরামর্শ থাকছে এ প্রতিবেদনে। কিভাবে বুঝবেন আপনার ল্যাপটপই কেনা উচিত কি না? কমপিউটার কেনার আগে নিজেকে কিছু প্রশ্ন করে নিন। এ প্রশ্নগুলোর ভিত্তিতেই পেয়ে যাবেন কাঙ্ক্ষিত উত্তর।

০১. আপনি কি বেশি ভ্রমণপ্রিয় বা নানা ধরনের কাজে বেশিরভাগ সময় কি বাইরেই কাটান?

০২. ঘরে বেশিক্ষণ কমপিউটারে কাজ করার সময় পান না, তাই বাইরে গিয়েও কমপিউটারে কাজ করা যায় কি না চিন্তা করছেন?

০৩. ঘরে বা অফিসের ডেস্কে জায়গা কম যাতে একটি ডেস্কটপ কমপিউটার বসাতে সমস্যা হয়?

০৪. ইচ্ছেমতো ঘরের যেকোনো স্থানে বসে কমপিউটিং করতে চান?

০৫. শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কমপিউটার ল্যাবের অনুপস্থিতি বা কমপিউটার স্বল্পতা যাতে অ্যাসাইমেন্ট, রিপোর্ট বা প্রেজেন্টেশন এডিট করার সুযোগ পান না?

০৬. এলাকায় বিদ্যুতের সমস্যা চরমে, যার ফলে শান্তিমতো কোনো কাজ করতে পারছেন না?

এসব প্রশ্নের জবাব যদি হ্যাঁ হয়, তবে আপনার জন্য ল্যাপটপ কেনাটাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। প্রথমদিকের ল্যাপটপগুলো ছিল কম ক্ষমতার। কিন্তু নতুন প্রজন্মের কমপিউটারগুলোর ক্ষমতা মাঝারিমানের ডেস্কটপ পিসিগুলোকেও হার মানায়। তাই সহজেই ল্যাপটপ কমপিউটারগুলো ডেস্কটপ পিসির স্থান দখল করে নিচ্ছে।

ল্যাপটপের সুবিধা-অসুবিধা

কোনো কিছু কেনার আগে তা ভালো করে যাচাইবাছাই করে নেয়া উচিত, প্রয়োজনে অভিজ্ঞ কারো সহায়তা নিন। কেননা, সব কিছুরই ভালো ও মন্দ দুটি দিক থাকে। ভালো ও মন্দ দিক বিবেচনার পর সিদ্ধান্ত নেয়াটা সহজ হবে। ল্যাপটপের সুবিধাগুলোর পাশাপাশি বেশ কিছু সমস্যাও রয়েছে। যদি মনে করেন, সেসব সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পারবেন, তবেই কিনুন ল্যাপটপ, তা না হলে ডেস্কটপই আপনার জন্য ভালো হবে। প্রথমে ল্যাপটপের সুবিধাগুলোর দিকে নজর দেয়া যাক :

০১. পোর্টেবিলিটি বা বহনযোগ্যতা :
ল্যাপটপগুলো ডেস্কটপ পিসির মতো শুধু ডেস্কের ওপরেই থাকে না, তা সাথে নিয়ে বাইরে যাওয়া যায় এবং যেকোনো স্থানে বসে সহজেই কাজ করা যায়।

০২. ছোট আকার :
আকারে বেশ ছোট ও হালকা বলে তা বহন করতে কষ্ট হয় না। ভ্রমণের সময় বাস, ট্রেন, কার বা প্লেনে বসে অনায়াসে হাতের কাজ সেরে নেয়া যায়।

০৩. বিদ্যুৎসাশ্রয়ী :
ডেস্কটপ পিসির মতো ৩০০-৪০০ ওয়াট বিদ্যুৎ খরচ করার বদলে তা মডেলভেদে ডেস্কটপের তুলনায় অনেক কম বিদ্যুৎ খরচ করে।

০৪. ব্যাটারির শক্তি :
লোডশেডিংয়ের সময় ডেস্কটপ চালাতে হলে ইউপিএস ব্যবহার করতে হয় এবং তার ব্যাকআপ দেয়ার ক্ষমতা সাধারণত ১৫-৩০ মিনিট হয়ে থাকে। কিন্তু ল্যাপটপের সবচেয়ে বড় সুবিধাটির একটি হচ্ছে বিদ্যুৎ না থাকলেও ল্যাপটপের সাথে সংযুক্ত ব্যাটারির সাহায্যে তা অনেকক্ষণ চালানো যায়।

০৫. একের ভেতর অনেক :
ল্যাপটপের মধ্যে সব কিছু : মনিটর, কীবোর্ড, টাচপ্যাড, ডিস্কড্রাইভ, ওয়েবক্যাম, একসাথে রয়েছে যা আসলেই চমৎকার একটি সুবিধা।

০৬. তথ্য বহন :
গুরুত্বপূর্ণ ডাটা যেকোনো স্থানে প্রয়োজন হলেই দেখে নেয়া যাবে, যদি সাথে ল্যাপটপ থাকে।

ল্যাপটপের যেসব অসুবিধা

০১. স্থায়িত্ব :
ডেস্কটপ এক স্থানে থাকে এবং তেমন একটা নড়াচড়া করা হয় না। তাই তার কোনো অংশ ভেঙ্গে যাওয়ার সম্ভাবনা কম। কিন্তু ল্যাপটপ বহনযোগ্য, তাই তা হাত থেকে পড়ে গিয়ে ভেঙ্গে যেতে পারে। ল্যাপটপের লিড (মনিটর অংশ), অপটিক্যাল ড্রাইভ, কীবোর্ড ইত্যাদি বেশ নমনীয়। তাই তা যত্নের সাথে ব্যবহার না করলে দুর্ঘটনার সম্ভাবনা রয়েছে। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হচ্ছে, ল্যাপটপে সব যন্ত্রাংশ মিলে একটি যন্ত্র। যেমন- ডেস্কটপের ক্ষেত্রে কীবোর্ড নষ্ট হলে সহজেই তা বদল করা যায়, কিন্তু ল্যাপটপের ক্ষেত্রে তা সম্ভব নয়। ল্যাপটপের খুচরা যন্ত্রাংশ পাওয়া যেমন কষ্টকর, তেমন তার দামও তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি।

০২. কার্যক্ষমতা :
সাধারণ মানের ল্যাপটপগুলোর ক্ষমতা তুলনামূলকভাবে ডেস্কটপ পিসিগুলোর চেয়ে কম হয়ে থাকে। তবে ডেস্কটপের সমান ক্ষমতার ল্যাপটপের দাম আকাশছোঁয়া। দামের দিক থেকে তুলনা করলে ল্যাপটপের ক্ষমতা একই দামের ডেস্কটপ পিসির তুলনায় বেশ কম।

০৩. ধারণক্ষমতা :
ল্যাপটপের আকার ছোট তাই স্বাভাবিকভাবে তাতে কোনো যন্ত্রাংশ লাগানোর জন্য জায়গার পরিমাণ সীমিত। ডেস্কটপের ক্যাসিংয়ে আলাদা হার্ডডিস্ক, অপটিক্যাল ড্রাইভ, গ্রাফিক্স কার্ড, কুলিং সিস্টেম ইত্যাদি লাগানোর জন্য বেশ ফাঁকা জায়গা বা সুবিধা থাকে। কিন্তু ল্যাপটপের ক্ষেত্রে তা খুব কমই দেখা যায়। বড় আকারের ল্যাপটপে এরকম কিছু সুবিধা থাকে, তবে মাঝারি ও ছোট আকারের ল্যাপটপে এ ধরনের সুবিধা দেখা যায় না।

০৪. ব্যাটারি লাইফ :
ল্যাপটপের ব্যাটারিগুলোর ব্যাকআপ দেয়ার ক্ষমতা সীমিত। যত ছোট আকারের ল্যাপটপ বা যত কম ক্ষমতার ল্যাপটপ হবে, তা তত কম বিদ্যুৎ খরচ করবে এবং বেশি ক্ষমতা বা বড় আকারের ল্যাপটপে তার উল্টোটা ঘটবে। তাই কম ক্ষমতার ল্যাপটপে ব্যাটারি ব্যাকআপ বেশি সময় ও বেশি ক্ষমতার ল্যাপটপে কম সময় পাওয়া যাবে। বর্তমানে লোডশেডিংয়ের যে অবস্থা তাতে ব্যাটারি ব্যাকআপ পর্যাপ্ত নয়। তবে এ সমস্যা দূর করার জন্য ল্যাপটপ নির্মাতা কোম্পানিগুলো তাদের ল্যাপটপে পাওয়ার সেভিং টেকনোলজি ব্যবহার করছে।

০৫. কম্প্যাবিলিটি :
মডেল ও নির্মাতা কোম্পানিভেদে ল্যাপটপের যন্ত্রাংশগুলোর মাঝে বেশ তারতম্য দেখা যায়, যেগুলোর একটি আরেকটিকে সাপোর্ট করে না। তাই কোনো যন্ত্রাংশ নষ্ট হলে সেই কোম্পানির একই মডেলের যন্ত্রাংশ জোগাড় করতে হয় যা বেশ সময়সাপেক্ষ ও ব্যয়সাধ্য কাজ। উদাহরণস্বরূপ, এক ব্র্যান্ডের ল্যাপটপের অ্যাডাপ্টারের কানেক্টর অন্য ব্র্যান্ডের চেয়ে ভিন্নতর, তাই তা অদলবদল করে ব্যবহার করা যাবে না।

০৬. চড়া দাম :
ল্যাপটপের দাম তুলনামূলকভাবে ডেস্কটপের চেয়ে বেশি। যে দাম দিয়ে একটি ল্যাপটপ কেনা যায়, সে দামে আরো ভালো কনফিগারেশনের ডেস্কটপ পিসি পাওয়া যায়। তবে পোর্টেবিলিটি, ফ্লেক্সিবিলিটি ও ব্যাটারি পাওয়ারের জন্য দামের ব্যাপারটি তেমন একটা বিবেচনা না করলেও চলে।

০৭. আপগ্রেড :
ডেস্কটপের যন্ত্রাংশ যখন-তখন আপগ্রেড করা যায়, কিন্তু ল্যাপটপের ক্ষেত্রে তা ভীষণ ঝামেলার ব্যাপার। প্রসেসর, মাদারবোর্ড, ডিসপ্লে, গ্রাফিক্স কার্ড ইত্যাদি আপগ্রেড করা সম্ভব নয়। কিছু ল্যাপটপে র‌্যাম, হার্ডডিস্ক ও অপটিক্যাল ড্রাইভ আপগ্রেড করার সুবিধা রয়েছে।

০৮. ডিভাইস কানেক্টর :
ইউএসবি, ফায়ারওয়্যার, সাটা, এইচডিএমআই, ভিজিএ, ডিভিআই ইত্যাদি পোর্টের সংখ্যা ল্যাপটপে বেশ কম। ভিডিও আউটপুটের জন্য দু’য়েকটির বেশি পোর্ট সাধারণত থাকে না।

০৯. নিরাপত্তা :
ল্যাপটপের আরেকটি বড় সমস্যা হচ্ছে ল্যাপটপ চুরি হয়ে যাওয়া। ল্যাপটপ আকারে ছোট, তাই সহজেই তা চুরি যাবার আশঙ্কা রয়েছে। নিজের ঘরে বা অফিসে ল্যাপটপের জন্য সুরক্ষার ব্যবস্থা করা যেতে পারে, কিন্তু সব স্থানে তা করা সম্ভব নাও হতে পারে।

১০. রক্ষণাবেক্ষণ :
ল্যাপটপ বেশ যত্নের সাথে ব্যবহার করতে হয়। ধুলোবালি, পানি, তাপ, চাপ, চুম্বক ইত্যাদির সংস্পর্শ থেকে বাঁচিয়ে রাখতে হয়।

এছাড়া ল্যাপটপের ওয়ারেন্টি শেষ হবার পর তা সার্ভিসিং করানোর জন্য গুনতে হবে বেশ মোটা অঙ্কের টাকা। সাবধানতা ও যত্নের সাথে ব্যবহার করলে ল্যাপটপের কিছু সমস্যা সহজেই কাটিয়ে ওঠা যায়। তাই চিন্তার কোনো কারণ নেই।

ল্যাপটপ বনাম নোটবুক

ডেস্কটপ কিনবেন কি না ল্যাপটপ কিনবেন? এ প্রসঙ্গ শেষ হবার পর আরেকটি ব্যাপার ঝামেলা পাকাতে পারে, তা হচ্ছে-ল্যাপটপ কিনবেন না নোটবুক? অনেকে মনে করতে পারেন, দুটোই তো একই জিনিস। আবার অনেকে মনে করেন ছোট আকারের ল্যাপটপগুলোকেই নোটবুক বলে। তবে ধারণা দুটিই আংশিক সত্য। কারণ, নোটবুককে ল্যাপটপ বলা যায়। তবে ল্যাপটপকে নোটবুক বলাটা ঠিক নয়। নোটবুক ল্যাপটপের ছোট ভার্সন হলেও তাদের মাঝে বেশ কিছু তফাত রয়েছে। সে বিষয়ে ধারণা না থাকলে কমপিউটার কেনার সময় বেশ ঝামেলায় পড়তে হয়। ল্যাপটপ ও নোটবুকের পার্থক্য ভালোভাবে বোঝার জন্য পাঠকদের জন্য ছক আকারে তা তুলে ধরা হলো-

নোটবুকগুলো নেটবুক নামেও পরিচিত। ল্যাপটপের নিচের দিকে লেখা ফিচারগুলো দেখলেই বুঝতে পারবেন তাতে কি আছে আর কি নেই। নেটবুকগুলোর জন্য ইন্টেল শিগগিরই ডুয়াল কোরের প্রসেসর বাজারে আনতে যাচ্ছে, যার ফলে নোটবুক/নেটবুকগুলোও ল্যাপটপের সাথে টেক্কা দিতে পারবে। ল্যাপটপগুলোতে বেশ কিছু বাড়তি সুবিধা দেয়া হয়, যেমন- কার্ড রিডার, টাচ স্ক্রিন, ফিঙ্গারপ্রিন্ট রিকগনিশন, ভালোমানের ওয়েবক্যাম, লাইটযুক্ত কীবোর্ড ইত্যাদি। এসব নোটবুকে খুব একটা দেখা যায় না।

ল্যাপটপের গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়

ল্যাপটপ কেনার আগে বেশ কিছু বিষয় সম্পর্কে জেনে নেয়া উচিত যাতে বাছবিচার করতে কিছুটা সুবিধা হয়। নিচে ল্যাপটপ সম্পর্কিত কিছু বিষয় বিস্তারিত আলোচনা করা হলো-

প্রসেসর :



প্রসেসর হচ্ছে পিসির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ। বাজারে বিদ্যমান ল্যাপটপগুলোর দামের মধ্যে যে তারতম্য দেখা যায়, তা মূলত হয়ে থাকে এই প্রসেসরের ওপর ভিত্তি করে। বেশিরভাগ ক্রেতাই ল্যাপটপ কেনার সময় প্রসেসরের ব্যাপারে তেমন একটা জোর দেন না। তাদের মোবাইল প্রসেসরের ব্যাপারে স্পষ্ট ধারণাও থাকে না। প্রথম দিকের ল্যাপটপগুলোর জন্য পুরোপুরি আলাদা ধাঁচের ও নতুন মডেলের মোবাইল প্রসেসর বানানো হতো। কিন্তু এখন ডেস্কটপ প্রসেসরের আদলেই সেগুলোকে কিছুটা মডিফাই করে বানানো হচ্ছে। বেশ কিছু প্রসেসর রয়েছে, যা ল্যাপটপের মাদারবোর্ডের সাথে একেবারে সংযুক্ত করা থাকে, যা আলাদা করা যায় না। ল্যাপটপ বা মোবাইল প্রসেসরগুলোর বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, এগুলো বেশ বিদ্যুৎ সাশ্রয় করে, কম তাপ উৎপাদন করে, আকারে বেশ ছোট এবং কার্যক্ষমতা ডেস্কটপ প্রসেসরের তুলনায় কিছুটা কম। ল্যাপটপের ব্যবহার করা হয় এমন প্রসেসরগুলো হচ্ছে-ইন্টেলের অ্যাটম, সেলেরন, পেন্টিয়াম, ডুয়াল কোর, কোর টু সলো, কোর টু ডুয়ো, কোর টু এক্সট্রিম, কোর টু কোয়াড, কোর আই থ্রি/ফাইভ/সেভেন ইত্যাদি সিরিজের মোবাইল প্রসেসর এবং এএমডির সেমপ্রন, টুরিয়ন, এথলন এক্স২ ইত্যাদি। ল্যাপটপের প্রসেসর নির্বাচনের সময় ক্লক স্পিড, ক্যাশ মেমরি, কোরের সংখ্যা, থ্রেডের সংখ্যা, বাসস্পিড ইত্যাদি বিষয়গুলোও মাথায় রাখতে হবে।

হার্ডডিস্ক :



ডেস্কটপের জন্য বানানো ৩.৫ ইঞ্চি ফর্ম ফ্যাক্টরের হার্ডডিস্কগুলো ল্যাপটপের স্বল্প পরিসরে বসানোর জন্য ২.৫ ইঞ্চি ফর্ম ফ্যাক্টরের হার্ডডিস্ক ব্যবহার করা হয়। এগুলো আকারে ছোট ও পাতলা এবং কিছুটা কম গতিসম্পন্ন। তবে বর্তমানে নতুন ল্যাপটপগুলোতে হার্ডডিস্কের বদলে সলিড স্টেট ড্রাইভ তথা এসএসডি ব্যবহার করা হচ্ছে। এগুলো হার্ডডিস্ক থেকে অনেক দ্রুত ডাটা ট্রান্সফার করতে পারে। আকারেও অনেক ছোট। সাধারণত ল্যাপটপের হার্ডডিস্কের আরপিএম হয়ে থাকে ৫৪০০-৭২০০ পর্যন্ত। বাজারে ১৬০ গি.বা. থেকে শুরু করে ১ টেরাবাইট ধারণক্ষমতার হার্ডডিস্কসম্পন্ন ল্যাপটপ পাওয়া যায়। যেখানে প্রয়োজনীয় বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন ও ডাটাসহ পছন্দের গান, মুভি, টিভি প্রোগ্রামের রেকর্ড করা ভিডিও, হাই রেজ্যুলেশনের ফটো ইত্যাদিসহ আরো অনেক কিছু রাখা যায়। তাই ল্যাপটপ কেনার সময় ন্যূনতম ৩২০ গিগাবাইট ও নোটবুকের ক্ষেত্রে ১৬০ গিগাবাইট ধারণক্ষমতাসম্পন্ন ল্যাপটপ কেনাটাই হবে যুক্তিযুক্ত।

ব্যাটারি :

ল্যাপটপের ব্যাটারি হিসেবে Ni-Cad অর্থাৎ নিকেল-ক্যাডমিয়াম ব্যবহার করা হতো। কিন্তু এগুলো পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে যখন এগুলো যেখানে-সেখানে ফেলে দেয়া হয়। কারণ, এগুলো খুবই বিষাক্ত। এরপরে NiMH বা নিকেল-মেটাল-হাইড্রাইড ব্যাটারি উদ্ভাবিত হয়। আগের নিকেল-ক্যাডমিয়াম ব্যাটারি থেকে এগুলোর ক্ষমতা অনেক বেশি এবং পারফরমেন্সও ছিল তুলনামূলকভাবে ভালো। তারপরও এধরনের ব্যাটারি পরিবেশবান্ধব নয়। বর্তমানে নতুন ল্যাপটপগুলোতে লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি ব্যবহার করা হচ্ছে, যার আয়ু অনেক বেশি ও কার্যক্ষমতাও খুব ভালো। নতুন ল্যাপটপ কেনার সময় ব্যাটারির সেলের সংখ্যা কতটি, তা দেখে নেয়া জরুরি। ৬ সেলের লিথিয়াম ব্যাটারি হলে এর আয়ু সাধারণ ল্যাপটপের ক্ষেত্রে ৩-৪ ঘণ্টা হয়ে থাকে।

ভিডিও কার্ড :

ল্যাপটপ থেকে প্রজেক্টরের সাহায্যে কোনো বড় পর্দায় ডিসপ্লে করার জন্য ভিডিও কার্ড বা গ্রাফিক্স কার্ড ভালো মানের হতে হবে। সাধারণ ল্যাপটপগুলোর সাথে যে ভিডিও কার্ড দেয়া থাকে তা দিয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন কাজ ও সাধারণ মানের ভিডিও ও মুভি অনায়াসে দেখা যায়। তবে হাই-ডেফিনিশন বা ব্লু-রে প্রযুক্তির মুভি দেখার জন্য ভালো মানের গ্রাফিক্স কার্ডসহ ল্যাপটপ কেনা জরুরি। এছাড়া বিভিন্ন ত্রিমাত্রিক গ্রাফিক্স ডিজাইন ও অ্যানিমেশন সফটওয়্যার চালানোর জন্য ন্যূনতম ২ গিগাবাইট র‌্যামের পাশাপাশি এনভিডিয়া বা এটিআই কোম্পানির ডিরেক্ট এক্স ১০ বা ১১ সাপোর্টেড ডেডিকেটেড ৫১২-১০২৪ মেগাবাইট মেমরির গ্রাফিক্স কার্ড থাকা দরকার। তবে এসব গ্রাফিক্স কার্ড বেশ তাপ উৎপন্ন করে। ছোট আকারের ল্যাপটপে সমন্বিত অবস্থায় নিম্নমানের গ্রাফিক্স কার্ড ব্যবহার করা হয়, যা নামে মাত্র গ্রাফিক্স কার্ড।

ল্যাপটপ ডিসপ্লে :

ল্যাপটপের ডিসপ্লে নানা আকারের হতে পারে। সাধারণত বাজারে এখন ৭ ইঞ্চি থেকে শুরু করে ১৭ ইঞ্চি ডিসপ্লেযুক্ত ল্যাপটপ পাওয়া যায়। ক্রেতা তার চাহিদা অনুযায়ী ডিসপ্লে বাছাই করে নিতে পারবেন। ডিসপ্লের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে এর অ্যাসপেক্ট রেশিও। সাধারণত স্ট্যান্ডার্ড অ্যাসপেক্ট রেশিও হচ্ছে ৪:৩। কিন্তু বর্তমানে ওয়াইড স্ক্রিন ডিসপ্লের ১৬:৯ অ্যাসপেক্ট রেশিওযুক্ত ল্যাপটপের আধিক্য দেখা যাচ্ছে। লেড ব্যাকলিট প্রযুক্তির ডিসপ্লেগুলো বেশি কার্যকর, তাই তা কেনা ভালো। যত বড় আকারের ডিসপ্লে হবে তা তত বেশি বিদ্যুৎ খরচ করবে এবং ল্যাপটপের ব্যাটারি ব্যাকআপ কম পাওয়া যাবে। তাই ছোট ডিসপ্লের ল্যাপটপগুলো ব্যাটারির সাহায্যে ৭-১১ ঘণ্টা চালানো সম্ভব। বাজারে টাচস্ক্রিন ডিসপ্লের মনিটরসহ ল্যাপটপও পাওয়া যাচ্ছে।

র‌্যাম :



ডেস্কটপে আমরা যে র‌্যাম ব্যবহার করে থাকি, ল্যাপটপের র‌্যামগুলো আকারে প্রায় তার অর্ধেক। ছোট আকারের এ র‌্যামগুলোকে SO-DIMM (Small Outline-Dual Inline Memory Module) বলে। SO-DIMM র‌্যামগুলো ৭২, ১০০, ১৪৪, ২০০ বা ২০৪ পিনের হয়ে থাকে। এগুলোর মাঝে ১৪৪, ২০০ ও ২০৪ পিনের র‌্যামগুলো ৬৪-বিট ডাটা ট্রান্সফার সাপোর্ট করে। এখন ডিডিআর২ ও ডিডিআর৩ এ দু-ধরনের র‌্যামের প্রচলন বেশি দেখা যাচ্ছে। ডিডিআর২ র‌্যামযুক্ত ল্যাপটপ কেনার সময় খেয়াল রাখুন, যাতে তা ন্যূনতম ৬৬৭ মেগাহার্টজ বাসস্পিড এবং ডিডিআর৩ র‌্যামের ক্ষেত্রে তা যেনো ১০৬৬ মেগাহার্টজ বাসস্পিড সম্পন্ন হয়।

প্লাটফর্ম :

বাজারে দুই ধরনের প্লাটফর্ম রয়েছে কমপিউটারের ক্ষেত্রে। একটি হচ্ছে উইন্ডোজ বা লিনআক্সভিত্তিক ও আরেকটি হচ্ছে ম্যাক/মেকিন্টোশ/অ্যাপলভিত্তিক। সাধারণ যেসব ল্যাপটপ দেখা যায়, তার সবই উইন্ডোজ ও লিনআক্স অপারেটিং সিস্টেম সাপোর্ট করে, তবে তাতে ম্যাক অপারেটিং সিস্টেম চালানো যায় না। অ্যাপলের বানানো ম্যাকবুক নামের ল্যাপটপগুলোতে ব্যবহার করা হয় ম্যাক ওএস এক্স নামের অপারেটিং সিস্টেম। দেখতে অসাধারণ ও গ্রাফিক্সের মান চমৎকার। তবে অ্যাপলের ল্যাপটপগুলো চেয়ে ভালো কনফিগারেশনের ল্যাপটপও বাজারে রয়েছে।

অপারেটিং সিস্টেম :

অরিজিনাল অপারেটিং সিস্টেমযুক্ত ল্যাপটপগুলোর দাম কিছুটা বেশিই রাখা হয়। ল্যাপটপের দাম কমানোর জন্য ফ্রি অপারেটিং সিস্টেম হিসেবে লিনআক্স দেয়া হচ্ছে। অ্যাপলের ল্যাপটপগুলোতে ম্যাক ওস এক্সের পাশাপাশি উইন্ডোজ ব্যবহার করার সুবিধা রয়েছে। অন্যান্য ল্যাপটপে ম্যাক অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করার সুযোগ নেই। তবে ইন্টেল ও এএমডি’র জন্য আলাদা দু’টি বিশেষ ম্যাক অপারেটিং সিস্টেমের ভার্সন রয়েছে, যা বাজারে সহজলভ্য নয়। কোন অপারেটিং সিস্টেমের ল্যাপটপ কিনবেন, সেটা ভালোভাবে চিন্তা করে নিতে হবে। কম ক্ষমতার নেটবুকগুলোতে উইন্ডোজ ভিসতা বা সেভেন চালাতে গেলে পারফরমেন্স ভালো হবে না, তাই তাতে এক্সপিই ব্যবহার করতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে, উইন্ডোজ সেভেন চালানোর জন্য ন্যূনতম ১ গিগাহার্টজের প্রসেসর ও ১ গিগাবাইট র‌্যামের দরকার হবে। ল্যাপটপের ক্ষমতার কথা বিবেচনা করে তাতে কোন অপারেটিং সিস্টেম ভালো হবে, তা ঠিক করতে হবে।

সাউন্ড কার্ড :

ল্যাপটপে যেসব বিল্ট-ইন বা ইন্টিগ্রেটেড সাউন্ড কার্ড ব্যবহার করা হয়ে থাকে, সেগুলো তেমন একটা শক্তিশালী নয়। তবে হাই-এন্ড ল্যাপটপ বা গেমিং ল্যাপটপগুলোতে বেশ শক্তিশালী ও বেশ কিছু নতুন টেকনোলজিসমৃদ্ধ সাউন্ড কার্ডের উপস্থিতি লক্ষ করা গেছে। যারা ল্যাপটপের সাথে আলাদা বড় আকারের স্পিকার সংযুক্ত করে গান শুনতে চান, তাদের জন্য ল্যাপটপ কেনার সময় সাউন্ড কার্ডের ব্যাপারটা দেখা জরুরি।

স্পিকার :





ল্যাপটপের সাথে সংযুক্ত স্পিকারের শব্দ তেমন একটা জোরালো বা নিখুঁত হয় না। নতুন ল্যাপটপগুলোতে স্টেরিও স্পিকার ব্যবহার করা হচ্ছে, যা দিয়ে কিছুটা হলেও সারাউন্ড সাউন্ড সিস্টেমের মজা উপভোগ করা সম্ভব হচ্ছে। তবে দামী ও ভালোমানের ল্যাপটপের সাউন্ড সিস্টেম বেশ জোরালো শব্দ করতে পারে।

নেটওয়ার্ক :

যারা ল্যাপটপে ইন্টারনেট কানেকশন ও ডাটা ট্রান্সফারের ব্যাপারটি সহজ করে তুলতে চান, তাদের জন্য অনেক সুবিধা দেয়া হচ্ছে ল্যাপটপে। ইন্টারনেট কানেকশনের জন্য এতে থাকতে পারে ১০-১০০০ মেগাবিট/সেকেন্ড গতির ইথারনেট পোর্ট, যা ব্রডব্যান্ড বা ডায়ালআপ ইন্টারনেট কানেকশন পেতে সাহায্য করবে। ওয়্যারলেস বা তারবিহীন ইন্টারনেট সেবা পাওয়ার জন্য এতে থাকতে পারে ওয়াই-ফাই বা ব্লু-টুথ টেকনোলজি। কিছু ল্যাপটপে বিল্ট-ইন মডেমও থাকতে পারে।

কীবোর্ড :

বড় আকারের ল্যাপটপের সাথে ছোট আকারের ল্যাপটপের কীবোর্ডের পার্থক্য হচ্ছে তাতে বেশ কিছু কী কম থাকতে পারে। অল্প জায়গায় ঘন ঘন করে কীগুলো থাকায় টাইপ করতেও বেশ সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। তাই টাইপিংয়ের কাজ প্রাধান্য পেলে বড় আকারের ল্যাপটপ কেনার চেষ্টা করুন, যাতে বেশিসংখ্যক কী রয়েছে এবং তা ব্যবহার করা সুবিধাজনক।

পয়েন্টিং ডিভাইস :

ডেস্কটপের ক্ষেত্রে আমরা পয়েন্টিং ডিভাইস হিসেবে মাউস ব্যবহার করে থাকি। ল্যাপটপের ক্ষেত্রে তা তিন রকমের হয়ে থাকে, যেমন- টাচপ্যাড, ট্র্যাকবল ও ছোট জয়স্টিক। টাচপ্যাডের ব্যবহার ইদানীং বেশি দেখা যাচ্ছে। পয়েন্টিং ডিভাইস হিসেবে ল্যাপটপে নতুন ধারার সৃষ্টি করতে যাচ্ছে হাই টেক মাল্টি টাচপ্যাড। এ প্যাডের সাহায্যে এক বা একাধিক আঙ্গুল ব্যবহার করে অনেক ধরনের কমান্ড দেয়া যায়।

অপটিক্যাল ড্রাইভ :

বর্তমানে মাঝারি থেকে উচ্চক্ষমতার ল্যাপটপেই ডিভিডি-রাইটার দেয়া থাকে। কম বাজেটের ল্যাপটপে ডিভিডি রম থাকে বা অপটিক্যাল ড্রাইভ নাও থাকতে পারে। হাই-এন্ড ল্যাপটপের সাথে ব্লু-রে ড্রাইভ সংযুক্ত থাকে। অপটিক্যাল ড্রাইভের রিড রাইটের স্পিড দেখে নেয়াটা জরুরি। ডিভিডি রাইটারের ক্ষেত্রে তা ৮এক্স ও ব্লু-রে ড্রাইভের ক্ষেত্রে ২এক্স হয়ে থাকে।

অনলাইন শপিং

দেশের বাইরে থেকে ল্যাপটপ আনাতে চাইলে অনলাইনে অর্ডার করতে হবে। বিভিন্ন দেশে পণ্য পৌঁছে দেয়ার জন্য বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এ প্রতিষ্ঠানগুলো অনলাইনে পণ্যের অর্ডার নেয় এবং তা আপনার দেয়া ঠিকানায় পৌঁছে দেয়। ক্রেডিট কার্ডের সাহায্যে দাম পরিশোধ করার ২-৩ সপ্তাহ বা ১ মাসের মধ্যে ল্যাপটপ পেয়ে যাবেন। তবে এক্ষেত্রে কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হবে- শিপমেন্টের অর্থাৎ পণ্যটি পরিবহন করে আপনার কাছে পৌঁছে দেবার জন্য কত খরচ পড়বে, পণ্যটি নতুন নাকি পুরনো, কতদিনের মধ্যে তা আপনার হাতে পৌঁছবে তা উল্লেখ করা আছে কি না, বাংলাদেশের জন্য সাপোর্ট আছে কি না, কোনো বিশেষ ছাড় আছে কি না, অর্ডার দেয়ার সময় নাম, ঠিকানা ও ফোন নাম্বার ঠিকভাবে উল্লেখ করেছেন কি না ইত্যাদি। একই পণ্যের দাম প্রতিষ্ঠানভেদে কিছুটা পার্থক্য থাকতে পারে। তাই শুধু একটি সাইট না দেখে কয়েকটি সাইট পর্যবেক্ষণ করে দেখা ভালো। অনলাইনে পণ্য কেনার সুবিধা দিয়ে থাকে এমন কয়েকটি সাইটের নাম হচ্ছে- www.amazon.com, www.neweeg.com, www.ebay.com, www.buy.com ইত্যাদি। তবে বাইরে থেকে কিছু আনানোর সবচেয়ে বড় সমস্যাটি হচ্ছে ওয়ারেন্টির সুবিধা না পাওয়া। নিজ দেশ থেকে কেনা হলে তাতে কোনো সমস্যা দেখা দিলে তা খুব দ্রুত সারানো সম্ভব। আমাদের দেশীয় অনলাইন শপিং সেবাদানকারী কিছু সাইটের মধ্যে রয়েছে- www.cellbazaar.com, www.clickbd.com, www.deshilisting.com ইত্যাদি।

পুরনো ল্যাপটপ কেনা

আর্থিক বা অন্য বিশেষ কোনো কারণে অনেকেই পুরনো বা সেকেন্ডহ্যান্ড ল্যাপটপ কেনেন। ল্যাপটপ নির্মাতা কোম্পানিগুলো এমনভাবে তাদের মডেলগুলো বের করে, যাতে তা সহজে আপগ্রেড করা না যায়। ফলে বেশিরভাগ মডেলই এখন আগের মতো বেশ কয়েক বছর ধরে চালানোর সুযোগ পাবেন না। এর কারণ হচ্ছে, তা আপগ্রেড করা সম্ভব হবে না তাই নতুন সফটওয়্যার চালাতে সমস্যা হবে, নতুন অপারেটিং সিস্টেমগুলোর রিকোয়ারমেন্ট অনেক বেশি, যা পুরনো ল্যাপটপের জন্য হুমকিস্বরূপ, ড্রাইভার সফটওয়্যার সাপোর্ট না করা বা ড্রাইভার সফটওয়্যারের আপডেট বের না হওয়া ইত্যাদি। কম দামে মানসম্পন্ন একটি ল্যাপটপ কেনার আগে নিচের উল্লিখিত বিষয়গুলো খেয়াল রাখতে হবে :

০১. ল্যাপটপ কেনার সময় দেখতে হবে, তা কতটা পুরনো? বাজেট খুবই কম হলে তবেই শুধু পেন্টিয়াম বা সেলেরন সিরিজের প্রসেসরসহ ল্যাপটপের দিকে হাত বাড়াতে পারেন, তা না হলে নয়। এমন ল্যাপটপ কেনার চেষ্টা করুন, যাতে তা অন্ততপক্ষে কিছুটা যুগোপযোগী হয়। নতুন সফটওয়্যারগুলো এবং অন্তত উইন্ডোজ সেভেন সাপোর্ট করে এমন ল্যাপটপ বাছাই করাটাই ভালো হবে।

০২. পুরনো ল্যাপটপ পাবেন কোথা থেকে? আমাদের দেশের কমপিউটার মার্কেটগুলোতে বেশ কিছু দোকান রয়েছে, যাতে পুরনো কমপিউটার বিক্রি হয়। পরিচিতজনদের কেউ বিক্রি করতে পারে ল্যাপটপ। বিদেশ-ফেরতদের কাছেও পেতে পারেন পুরনো ল্যাপটপ। এছাড়া অনলাইনে কিছু সাইট রয়েছে, যারা পুরনো পণ্য বেচাকেনা করে, সেখানে ঢু মেরে দেখতে পারেন।

০৩. ল্যাপটপের কনফিগারেশনের ওপর চোখ বুলানো শেষ হলে নজর দিতে হবে ল্যাপটপে কোনো দাগ বা ভাঙ্গা অংশ রয়েছে কি না। যদি ভাঙ্গা থাকে এবং তা তেমন একটা সমস্যার সৃষ্টি করবে না বলে মনে হয়, তবে বিক্রেতার কাছ থেকে তার দাম আরো কমানোর ব্যাপারে একটু চাপ প্রয়োগ করে দেখুন।

০৪. ল্যাপটপের ডিসপ্লে রিপ্লেস করাটা বেশ ব্যয়সাধ্য ব্যাপার, তাই দেখতে হবে ডিসপ্লেতে কোনো অংশে কোনো দাগ, রংচটা ভাব, গোলাপি বা বেগুনি রংয়ের আভা রয়েছে কি না। যদি থাকে তবে সে ল্যাপটপটি না কেনাই ভালো।

০৫. ল্যাপটপের প্লাগ, সকেট, ওয়্যারলেস কানেকশন (ব্লু-টুথ, ওয়াই-ফাই) এসব ঠিকমতো কাজ করছে কি না তা দেখতে হবে।

০৬. হার্ডডিস্কে ব্যাড সেক্টর রয়েছে কি না, তা দেখতে হবে। বাকি সব ঠিকই আছে, তবে হার্ডডিস্কে সমস্যা থাকলে তা নিতে পারেন। কারণ, হার্ডডিস্ক অল্প খরচ ও সহজেই পরিবর্তন বা আপগ্রেড করে নেয়া যাবে।

০৭. অপটিক্যাল ড্রাইভের বেলায় তা সিডি/ডিভিডি ঠিকমতো চালাতে পারে কি না, তা দেখে নিতে হবে। তবে অপটিক্যাল ড্রাইভগুলোও পরিবর্তন করা সম্ভব বলে এ ব্যাপারে বেশি মাথা না ঘামালেও চলবে।

০৮. ব্যাটারির আয়ু কেমন তা দেখাটা বেশ জরুরি। ল্যাপটপ যত পুরনো হবে, তার ব্যাটারির স্থায়িত্ব তত কমে যাবে। তবে ব্যাটারি রিপ্লেস করা যাবে, কিন্তু একই মডেলের ল্যাপটপের ব্যাটারি বাজারে আছে কি না, সে ব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে নিতে হবে।

০৯. সবশেষে দেখে নিতে হবে পাওয়ার অ্যাডাপ্টার, পাওয়ার ক্যাবল ও ড্রাইভার ডিস্ক ঠিক আছে কি না।

কাজ ও পেশার ধরন অনুযায়ী ল্যাপটপ

সবার চাহিদা এক নয়। তাই বিভিন্ন পেশা ও ব্যবহারের ধরন বুঝে ল্যাপটপগুলোকে বেশ কয়েকটি ভাগে ভাগ করে নেয়া যায়। পাঠকদের সুবিধার্থে ভাগগুলো নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো-

ডেস্কটপের বিকল্প হিসেবে ল্যাপটপ :

যখন ডেস্কটপের বিকল্প হিসেবে ল্যাপটপ কেনা হবে সেক্ষেত্রে খরচের পরিমাণও অনেক বেশি হবে। সাধারণত এ ধরনের ল্যাপটপের ব্যবহার বেশি দেখা যায় মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানির কর্মচারীদের মাঝে। তাদের কাজ বিভিন্ন রকমের ডাটা অ্যানালাইসিস, ডাটাবেজ ম্যানেজমেন্ট, গ্রাফিক্স ডিজাইন, ফটো এডিটিংসহ আরো অনেক কাজ করতে হয়। তাই ডেস্কের ওপরে জায়গা বাঁচানোর জন্য ডেস্কটপের সমকক্ষ ল্যাপটপ তাদের কাজের জন্য আবশ্যক।

ল্যাপটপে যে সুবিধাগুলো প্রয়োজন :

প্রসেসর হিসেবে কোর টু ডুয়ো বা কোর টু কোয়াড; ডিসপ্লে ১৪ ইঞ্চির বেশি না হলেই নয়; নিউমেরিক কী-প্যাডসহ বড় আকারের কী-বোর্ড; হার্ডডিস্কের ধারণক্ষমতা মোটামুটি ২৫০-৩২০ গিগাবাইট হলেই যথেষ্ট; ইন্টিগ্রেটেড গ্রাফিক্সকার্ড অথবা ডিসক্রিট গ্রাফিক্স চিপ এবং তা অবশ্যই ৫১২ মেগাবাইট মেমরি যুক্ত হলে ভালো; ব্যাটারি ব্যাকআপ গুরুত্বপূর্ণ নয় কারণ তা ডেস্কেই থাকবে।



কম দামে বাজেট ল্যাপটপ :

বাজেট ল্যাপটপ বলতে এখানে আসলে কম দামের মধ্যে যতটুকু সম্ভব ভালোমানের ল্যাপটপকে বোঝানো হয়েছে। এ ধরনের ল্যাপটপে ইন্টারনেট ব্রাউজিং, ডাউনলোড, গান শোনা, ওয়ার্ড প্রসেসর সফটওয়্যার চালানো এবং ছোটখাটো গেম খেলা ইত্যাদি অনায়াসে করা সম্ভব। ঘরে সাধারণ কাজে ব্যবহার করার জন্য, ছাত্রদের জন্য এবং ছোটখাটো ব্যবসায়ীদের জন্য এ ধরনের ল্যাপটপ আদর্শ। এ ধরনের ল্যাপটপে কেউ যদি আশা করেন, তা হবে হাল্কা ও আকর্ষণীয় ডিজাইনযুক্ত, তবে তাকে নিরাশ হতে হবে। সাধারণত এ ধরনের ল্যাপটপগুলো ভারি ও মোটা আকৃতির হয়ে থাকে।

ল্যাপটপে যে সুবিধাগুলো প্রয়োজন :

ইন্টেল ডুয়াল কোর প্রসেসর, ১-২ গিগাবাইট ডিডিআর২ র‌্যাম, ১৪ ইঞ্চি ডিসপ্লে, ২৫০ গিগাবাইট হার্ডডিস্ক, ডিভিডি রম/রাইটার এবং ২-৩ ঘণ্টা ব্যাটারি ব্যাকআপ।

ভ্রমণের নিত্যসাথী হিসেবে নোটবুক :

ছোট আকারের, সহজে বহনযোগ্য, বড় আকারের পকেটে কিংবা মহিলাদের ভ্যানিটি ব্যাগে অনায়াসে এঁটে যায় এমন কমপিউটারই হতে পারে ভ্রমণের সাথী। যেখানেই যান সেখানেই তা নিয়ে যাওয়া যাবে। ভ্রমণপ্রিয় ব্যক্তি ও ছাত্রছাত্রীদের হাতে এ ল্যাপটপ ইদানীং বেশি দেখা যাচ্ছে।

ল্যাপটপে যে সুবিধাগুলো প্রয়োজন :

ইন্টেল অ্যাটম, সেলেরন, কোর সলো (লো-ভোল্টেজ) প্রসেসর, ১৩ ইঞ্চির চেয়ে ছোট আকারে ডিসপ্লে, ইন্টিগ্রেটেড গ্রাফিক্স কার্ড যাতে কম তাপ উৎপন্ন হয়, ১.৫ কিলোগ্রামের কম ওজন এবং কার্ড রিডার থাকা ভালো, যেহেতু তাতে অপটিক্যাল ড্রাইভ থাকে না।

গেমিং ল্যাপটপ :

গেম খেলার জন্য ডেস্কটপ পিসির সাথে ল্যাপটপের তুলনা করা চলে না। তবুও গেমিং ল্যাপটপের ক্ষমতা বেশ ভালোই রয়েছে মোটামুটি মানের গেমগুলো চালানোর ক্ষেত্রে। এসব ল্যাপটপের দাম অনেক বেশি এবং আকারে বেশ বড় ও ভারি।

ল্যাপটপে যে সুবিধাগুলো প্রয়োজন :

কোর টু ডুয়ো থেকে কোর আই সেভেন মানের প্রসেসর, এনভিডিয়া বা এটিআই চিপসেটের ৫১২ মেগাবাইট-১ গিগাবাইট ডেডিকেটেড গ্রাফিক্স মেমরি, ২-৪ গিগাবাইট ডিডিআর ৩, ১০৬৬-১৩৩৩ বাস স্পিডসম্পন্ন র‌্যাম এবং ১৫-১৮ ইঞ্চি ডিসপ্লে যা উচ্চ রেজ্যুলেশন সমর্থন করে।

স্টুডেন্ট ল্যাপটপ :

লেখালেখির কাজ, ইন্টারনেট ব্রাউজিং, গান শোনা, গেম খেলা, মুভি দেখা এসব কাজের জন্য শিক্ষার্থীদের প্রয়োজন সহজে বহনযোগ্য, মজবুত, ভালো ব্যাটারি ব্যাকআপ ও মাল্টিমিডিয়া সাপোর্টেড কম দামের একটি ভালো ল্যাপটপ।

ল্যাপটপে যে সুবিধাগুলো প্রয়োজন :

ডুয়াল কোর প্রসেসর, ২ গিগাবাইট র‌্যাম, ১৪-১৫ ইঞ্চি ডিসপ্লে মনিটর, ১৬০-২৫০ গিগাবাইট হার্ডডিস্ক, ওয়েবক্যাম, কার্ড রিডার এবং ৪-৫ ঘণ্টা ব্যাটারি ব্যাকআপ।

সব কাজের কাজী ল্যাপটপ :

সব ধরনের কাজের উপযোগী ল্যাপটপও রয়েছে এবং তা কেনার জন্য মাঝারি মানের বাজেটের প্রয়োজন হবে। ল্যাপটপটি সঠিক কি কাজের জন্য ব্যবহার করা হবে, তা সিদ্ধান্ত নিতে না পারলে, তখন এ ধরনের ল্যাপটপের দিকে নজর দিতে পারেন। একই ঘরের সদস্যদের মাঝে শেয়ারিংয়ের মাধ্যমে এ ধরনের ল্যাপটপের ব্যবহার বেশি দেখা যায়।

ল্যাপটপে যে সুবিধাগুলো প্রয়োজন :

১.৮-২.৬ গিগাহার্টজের কোর টু ডুয়ো প্রসেসর, ২-৩ গিগাবাইট র‌্যাম, ১৩-১৫ ইঞ্চি মনিটর, ২৫০-৫০০ গিগাবাইট হার্ডডিস্ক (৫৪০০-৭২০০ আরপিএমযুক্ত), ডিভিডি রাইটার বা ব্লু-রে ড্রাইভ, ব্লু-টুথ, ওয়্যারলেস কানেক্টিভিটি এবং (ন্যূনতম ৪ ঘণ্টার ব্যাকআপসম্পন্ন) ৬ সেলের ব্যাটারি।

বিজনেস ল্যাপটপ :

ব্যবসায়িক কাজে ব্যবহার করা ল্যাপটপগুলো কিছুটা মজবুত, সুরক্ষিত এবং বিশেষ কিছু সুবিধাসম্বলিত হয়ে থাকে। এসব ল্যাপটপের স্থায়িত্ব বেশ বড় একটি বিষয়, তাই যথাসম্ভব মানসম্পন্ন ও টেকসই ল্যাপটপ কেনার চেষ্টা করতে হবে ব্যবসায়ী, বড় প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী এবং আইটি কাজের সাথে জড়িত কর্মচারীদের।

ল্যাপটপে যে সুবিধাগুলো প্রয়োজন :

কোর টু ডুয়ো বা কোর আই থ্রি প্রসেসর, ২-৩ গিগাবাইট র‌্যাম, ১৩-১৭ ইঞ্চির মনিটর, ফুল ফিচারসহ কীবোর্ড, ভালোমানের পয়েন্টিং ডিভাইস, ৭২০০ আরপিএম’র ২৫০-৩২০ গিগাবাইট হার্ডডিস্ক, ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্ক কানেক্টিভিটি, ফিঙ্গারপ্রিন্ট রিডার, ফেস রিকগনিশন, ট্রাস্টেড প্লাটফর্ম মডিউল সিকিউরিটি এবং এনক্রিপশন সফটওয়্যার।

ল্যাপটপ অ্যাক্সেসরিজ

ক্যারিং ব্যাগ :



যে ব্র্যান্ডের ল্যাপটপ বা নোটবুক কিনবেন সে ব্র্যান্ডের লোগোযুক্ত ব্যাগ দিয়ে দেয়া হবে। ল্যাপটপের সাথে যে ব্রিফকেস আকারের ব্যাগগুলো দেয়া হয় সেগুলো সাধারণত কাপড়ের তৈরি। পিঠে ঝোলানো ব্যাগ চাইলে তাও পেয়ে যাবেন। বাজারে বেলকিন, টারগাস, আইএক্সএ ইত্যাদি ব্র্যান্ডের বেশ কিছু মডেলের ব্যাগ পাওয়া যায়, যা বেশ টেকসই ও সুন্দর।

ল্যাপটপ কুলার :



শখের ল্যাপটপটিকে তাপজনিত সমস্যার হাত থেকে রক্ষা করার লক্ষ্যে কুলার ব্যবহার করা বেশ জরুরি। কুলিং ফ্যানযুক্ত বা লিকুইড ক্রিস্টাল কুলিং প্যাড ব্যবহার করলে ল্যাপটপের আয়ু অনেক বাড়ানো সম্ভব। বাজারে জিনিয়াস, বেলকিন, থার্মালটেক, ভিশনসহ আরো বেশ কিছু চীনা কোম্পানি বিভিন্ন মডেলের কুলিং প্যাড বাজারজাত করছে।

কীবোর্ড :

ল্যাপটপের যে কীবোর্ড দেয়া থাকে, তাতে টাইপ করতে অনেকের সমস্যা হতে পারে। তাই ল্যাপটপের জন্য আলাদা ছোট আকারের ইউএসবি পোর্টযুক্ত কীবোর্ড কিনে নেয়া যেতে পারে। নামপ্যাডসহ কীবোর্ড চাইলে তাও কিনে নিতে পারেন। বাজারে বেশ কিছু ব্র্যান্ডের কীবোর্ড রয়েছে তাই পছন্দসই কিনে নিলেই হলো।

মাউস :

ল্যাপটপের যারা সূক্ষ্ম কাজ করেন, যেমন আঁকাআঁকি, গ্রাফিক্স ডিজাইন, অডিও-ভিডিও এডিটিং, গেমিং তাদের জন্য আলাদা মাউসের দরকার হয়। আবার অনেকে আছেন টাচপ্যাড বা ট্র্যাকবল ব্যবহারের চেয়ে মাউস ব্যবহার করা পছন্দ করেন। তাদের জন্য রয়েছে সুদৃশ্য ছোট আকারের মাউস, যা গুটিয়ে রাখা যায়। প্রয়োজনমতো তার টেনে লম্বা করা যায়।

স্পিকার :

ল্যাপটপের বিল্ট-ইন স্পিকারের শব্দ যদি কম মনে হয়, তবে ল্যাপটপের জন্য বানানো ছোট আকারের মোটামুটি ভালো শব্দযুক্ত বেশ কিছু স্পিকার বাজারে রয়েছে। এদের মধ্যে রয়েছে- সনিক গিয়ার, অ্যালটেক ল্যান্সিং, ইয়ারসন ইত্যাদিসহ আরো অনেক ব্র্যান্ডের নজরকাড়া স্পিকার।

এক্সপানশন ডিভাইস :

গ্রাফিক্স কার্ড বা সাউন্ড কার্ডের ক্ষমতা কম মনে হলে তাতে ইউএসবি গ্রাফিক্স কার্ড বা সাউন্ড কার্ড লাগিয়ে তার ক্ষমতা বাড়িয়ে নেয়া যেতে পারে। ইউএসবি সাউন্ড কার্ড বাজারে রয়েছে, 
 

সোমবার, ৬ জুন, ২০১১

নিজেই করুন এসইও

এই ফিচারটির মূল লেখক : মো: জাকারিয়া চৌধুরী


সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন বা এসইও হচ্ছে ধারাবাহিক পরিবর্তনের মাধ্যমে একটি ওয়েবসাইটের উন্নতি সাধন করা। এই পরিবর্তনগুলো হয়ত আলাদাভাবে চোখে পড়বে না, কিন্তু সামগ্রিকভাবে এর মাধ্যমে একটি সাইটের ব্রাউজিংয়ের স্বাচ্ছন্দ্যবোধ অনেকাংশে বেড়ে যায় এবং অর্গানিক বা স্বাভাবিক সার্চ রেজাল্টে সাইটকে শীর্ষ অবস্থানের দিকে নিয়ে যায়। গত পর্বে এসইও’র বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করা হয়েছিল। এ পর্বে অন-পেজ এসইও (On-page SEO) নিয়ে আলোকপাত করা হলো। এই লেখাটি গুগলের প্রকাশিত ‘এসইও স্টার্টার গাইড’-এর ওপর ভিত্তি করে সাজানো হয়েছে।



০১. প্রাথমিক এসইও টাইটেল ট্যাগের ব্যবহার :
একটি এইচটিএমএল পৃষ্ঠার টাইটেল ট্যাগ থেকে সে পৃষ্ঠার বিষয়বস্তু সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা পাওয়া যায়। একজন ব্যবহারকারী এবং সার্চ ইঞ্জিনের কাছে তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এইচটিএমএল ডকুমেন্টের ট্যাগের মধ্যে < title > ট্যাগ লেখা হয়। টাইটেল ট্যাগটি ওয়েব ব্রাউজারের টাইটেলবারে এবং সার্চের সময় প্রথমেই দৃশ্যমান হয়। টাইটেল ট্যাগের মধ্যে সাধারণত সাইটের নাম এবং পৃষ্ঠার বিষয়বস্ত্ত যুক্ত করা হয়। একটি সাইটের প্রতিটি পৃষ্ঠার জন্য আলাদা আলাদা টাইটেল ট্যাগ থাকা প্রয়োজন। এতে সাইটের পৃষ্ঠাগুলোকে গুগল আলাদাভাবে শনাক্ত করতে পারে। পৃষ্ঠার বিষযবস্তুর সাথে সম্পৃক্ত নয় এমন শিরোনাম না দেয়াই ভালো। টাইটেল ট্যাগে অপ্রয়োজনীয় ও অপ্রাসঙ্গিক কিওয়ার্ড যুক্ত না করাই ভালো। টাইটেল ট্যাগ হওয়া চাই বর্ণনামূলক অথচ সংক্ষিপ্ত। অনেক লম্বা টাইটেল ট্যাগ ব্যবহার করলে সার্চের ক্ষেত্রে গুগল শুধু এর অংশবিশেষ প্রদর্শন করে।

ডেসক্রিপশন মেটা ট্যাগ

একটি এইচটিএমএল ডকুমেন্টের ডেসক্রিপশন মেটা ট্যাগের মধ্যে ওই পৃষ্ঠা সারসংক্ষেপ যুক্ত করা হয়, যা গুগল এবং অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিনকে সাইটের পৃষ্ঠাটি সম্পর্কে ভালো ধারণা দেয়। যেখানে টাইটেল ট্যাগ কয়েকটি শব্দের সমন্বয়ে গঠিত, সেখানে ডেসক্রিপশন মেটা ট্যাগের মধ্যে এক বা একাধিক লাইনের একটি প্যারাগ্রাফ দিতে হয়। টাইটেল ট্যাগের মতো এটিও ট্যাগের মধ্যে এর মাধ্যমে যুক্ত করতে হয়। সাইটের প্রত্যেকটি পৃষ্ঠায় ভিন্ন ভিন্ন এবং সঠিক ডেসক্রিপশন যুক্ত করা প্রয়োজন, কারণ সার্চের ফলাফলে প্রায় সময় এটি প্রদর্শিত হয়। শুধু কিওয়ার্ড দিয়ে ডেসক্রিপশন মেটা ট্যাগটি তৈরি করা উচিত নয়। অনেকে আবার পৃষ্ঠার মূল লেখাকে সরাসরি এই ট্যাগে লিখে ফেলেন যা মোটেও ঠিক নয়।

০২. সাইটের কাঠামো ইউআরএল পুনর্গঠন :
সহজবোধ্য ও বর্ণনামূলক ইউআরএল (URL) সার্চ ইঞ্জিন এবং ব্যবহারকারীদের কাছে সমান গুরুত্বপূর্ণ। সাইটের প্রত্যেকটি পৃষ্ঠার ইউআরএল যাতে সেই পৃষ্ঠার বিষয়বস্তুর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। আইডি বা ব্যবহারকারীদের কাছে অর্থহীন বিভিন্ন প্যারামিটার ব্যবহার না করে অর্থবোধক শব্দ ব্যবহার করা উচিত। উদাহরণস্বরূপ http:// yoursite.com?category_id=1&product_id=2-এর পরিবর্তে http://yoursite.com/books/ book-title এভাবে ইউআরএল লিখলে সার্চ ইঞ্জিন এবং ব্যবহারকারীদের কাছে পৃষ্ঠার বিষয়বস্ত্ত স্পষ্ট হয়ে যায়। ইউআরএলে যাতে অত্যধিক কিওয়ার্ড না থাকে, সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।



সহজ নেভিগেশন

সাইটের নেভিগেশন অর্থাৎ এক পৃষ্ঠা থেকে অন্য পৃষ্ঠায় যাওয়া যাতে সহজ হয়, তা বিবেচনায় রাখতে হবে। সহজ নেভিগেশন একদিকে ব্যবহারকারীদেরকে যেমন সাইটের তথ্য সহজেই খুঁজে পেতে সাহায্য করে অন্যদিকে সাইটের গুরুত্বপূর্ণ পৃষ্ঠাগুলোকে সার্চ ইঞ্জিন সহজেই খুঁজে পায়। সাইটের প্রথম পৃষ্ঠা বা হোমপেজ থেকে অন্যান্য সব পৃষ্ঠায় কিভাবে যাওয়া যাবে, তা প্রথমেই প্ল্যান করা উচিত। সাইটে অসংখ্য পৃষ্ঠা থাকলে সেগুলোকে বিভাগ এবং উপ-বিভাগে ভাগ করে রাখা প্রয়োজন। প্রত্যেকটি পৃষ্ঠায় breadcrumb লিস্ট যুক্ত করা ভালো। এর মাধ্যমে ব্যবহারকারী কত ধাপ ভেতরের পৃষ্ঠায় রয়েছে, তা জানতে পারে এবং চাইলে লিঙ্কে ক্লিক করে আগের পৃষ্ঠায় যেতে পারে। এই লিস্ট দেখতে সাধারণত এরকম হয়ে থাকে- Home > Products > Books।

সাইট ম্যাপের ব্যবহার

সাইট ম্যাপ দুই ধরনের হয়ে থাকে। প্রথমটি একটি সাধারণ এইচএমএলটি পৃষ্ঠা, যেখানে সাইটের সব পৃষ্ঠার লিঙ্ক যুক্ত করা হয়। মূলত কোনো পৃষ্ঠা খুঁজে পেতে অসুবিধা হলে ব্যবহারকারীরা এই সাইট ম্যাপের সহায়তা নেয়। সার্চ ইঞ্জিনও এই সাইট ম্যাপ থেকে সাইটের সব পৃষ্ঠার লিঙ্ক পেয়ে থাকে। দ্বিতীয় সাইটম্যাপ হচ্ছে একটি এক্সএমএল ফাইল, যা ‘গুগল ওয়েবমাস্টার টুলস’ নামে গুগলের একটি সাইটে সাবমিট করা হয়। সাইটের ঠিকানা http://www.google.com/webmasters/tools। এ ফাইলের মাধ্যমে সাইটের সব পৃষ্ঠা সম্পর্কে গুগল ভালোভাবে অবগত হতে পারে। এই সাইটম্যাপ ফাইল তৈরি করতে গুগল একটি ওপেনসোর্স স্ক্রিপ্ট দেয়, যা এই লিঙ্ক থেকে পাওয়া যাবে- http://code.google.com/p/googlesitemapgenerator

৪০৪ পেজের গুরুত্ব

ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা ব্রাউজ করার সময় প্রায় সময় ৪০৪ নামের একটি পৃষ্ঠা দেখতে পান। সাইটের লিঙ্ক ভুল থাকলে কিংবা কাঙ্ক্ষিত পৃষ্ঠাটি না পাওয়া গেলে এটি যেকোনো সাইটেই দৃশ্যমান হয় এবং এক্ষেত্রে সাধারণত ‘404 File Not Found’ লেখাটি দেখা যায়। তবে এর সাথে অন্যান্য সাহায্যকারী তথ্য বা সাইটের অন্যান্য পৃষ্ঠার লিঙ্ক যুক্ত করতে পারলে ব্যবহারকারীদের জন্য অনেক সুবিধা হয়।



০৩. কন্টেন্ট অপ্টিমাইজেশন, মানসম্মত তথ্য এবং সার্ভিস :
মানসম্মত ও স্বতন্ত্র কন্টেন্ট বা তথ্য হচ্ছে একটি ওয়েবসাইট জনপ্রিয় করার মূল হাতিয়ার। এটি একদিকে যেমন ব্যবহারকারীদেরকে সাইটে নিয়মিত আসতে প্রভাবিত করে, তেমনি গুগলের কাছেও সাইটের গুরুত্ব বেড়ে যায়। ওয়েবসাইটে লেখা সংযোজন করার আগে কিওয়ার্ড নিয়ে গবেষণা এবং লেখায় এর প্রতিফলন থাকা প্রয়োজন। গুগলের ‘অ্যাডওয়ার্ডস’ সাইটে এজন্য একটি টুল রয়েছে, যা একটি কিওয়ার্ড কতটা জনপ্রিয় তা যাচাই করতে সাহায্য করে। পাশাপাশি এই টুলের মাধ্যমে নতুন নতুন কিওয়ার্ড সম্পর্কে জানা যায়। সাইটটির ঠিকানা হচ্ছে- https://adwords.google.com/select/KeywordToolExternal। তাছাড়া গুগলের ‘ওয়েবমাস্টার টুলস’ সাইটে শীর্ষ কিওয়ার্ডের একটি লিস্ট পাওয়া যায়। এ থেকে ব্যবহারকারীরা সাইটে ভিজিট করার আগে গুগলে কোন কিওয়ার্ড ব্যবহার করে আসে, তা জানা যায়। ওয়েবসাইটের কন্টেন্ট তৈরি করার সময় বানান এবং ব্যাকরণের দিকে খেয়াল রাখা উচিত। লেখায় একাধিক বিষয়বস্তু থাকলে সেটিকে কয়েকটি প্যারাগ্রাফে ভাগ করে এবং শিরোনাম সহকারে লেখা উচিত।

GsKi টেক্সটের যথাযথ ব্যবহার

GsKi টেক্সট (Anchor Text) হচ্ছে HTML এর বা GsKi ট্যাগের ভেতরের শব্দগুচ্ছ যাতে ক্লিক করে অন্য কোনো পৃষ্ঠা বা সাইটে যাওয়া যায়। এই টেক্সটি গুগল এবং ব্যবহারকারীদেরকে লিঙ্ক সম্পর্কে পূর্ব ধারণা দেয়। এই লিঙ্কটি একই সাইটের অন্য কোনো পৃষ্ঠার সাথে হতে পারে অথবা ভিন্ন কোনো সাইটের সাথে সংযুক্ত হতে পারে। GsKi টেক্সটে ‘Click here’, ‘Page’ বা ‘Article’ এই জাতীয় সাধারণ শব্দ ব্যবহার না করে লিঙ্ক করা পৃষ্ঠার বর্ণনামূলক হওয়া উচিত। GsKi টেক্সটটি যাতে অল্প কয়েকটি শব্দের সমন্বয়ে হয় সেদিকে খেয়াল রাখা চাই। সম্পূর্ণ একটি বাক্যকে GsKi টেক্সট হিসেবে ব্যবহার করা ঠিক নয়। একটি সাধারণ লেখা থেকে লিঙ্ককে যাতে আলাদাভাবে চেনা যায় সেজন্য GsKi টেক্সটে ভিন্ন রং, আন্ডারলাইন ইত্যাদি CSS স্টাইল ব্যবহার করা যেতে পারে।

ছবির ব্যবহার

ওয়েবসাইটে ছবি বা ইমেজ যুক্ত করার সময় এইচটিএমএলের ট্যাগের মধ্যকার alt এট্রিবিউটে ছবির বর্ণনা যুক্ত করা উচিত। এর ফলে কোনো ব্রাউজারে যদি ছবিটি না আসে তাহলে এই এট্রিবিউটের লেখাটি দৃশ্যমান হবে। একটি ছবিকে লিঙ্ক হিসেবে ব্যবহার করার সময় এটি GsKi টেক্সটেরও কাজ করে। অন্যদিকে এর মাধ্যমে গুগলের ইমেজ সার্চের সাহায্যে ব্যবহারকারীরা ছবিটি খুঁজে পাবে। ছবির বর্ণনার পাশাপাশি ছবির ফাইলে নামও বর্ণনামূলক ও সংক্ষিপ্ত হওয়া প্রয়োজন। সাইটের সাইটম্যাপ ফাইলের মতো ছবির জন্যও একটি এক্সএমএল সাইটম্যাপ তৈরি করা যায়, যা গুগলকে ওয়েবসাইটের সব ছবি সম্পর্কে ভালো ধারণা দেয়।



হেডিং ট্যাগ

HTML G [h1] থেকে শুরু করে [h6] পর্যন্ত ৬টি হেডিং ট্যাগ রয়েছে, যার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শিরোনামকে [h1] ট্যাগের মধ্যে এবং কম গুরুত্বপূর্ণ তথ্যকে পর্যায়ক্রমে অন্যান্য হেডিং ট্যাগের মধ্যে লেখা হয়। হেডিং ট্যাগের লেখা যেহেতু পৃষ্ঠার অন্যান্য লেখা থেকে আকারে বড় হয়ে থাকে, তাই এটি ব্যবহারকারীদের দৃষ্টি সহজেই আকৃষ্ট করতে সক্ষম হয় এবং লেখার বিষয়বস্তু সম্পর্কে অবহিত করতে ব্যবহারকারী ও গুগলকে সহায়তা করে। তবে একটি পৃষ্ঠায় মাত্রাধিক হেডিং ট্যাগ যাতে ব্যবহার না হয় তা মাথায় রাখতে হবে।

০৪. ক্রাউলার উপযোগী এসইও robots.txt ফাইলের ব্যবহার :
ক্রাউলার (Crawler) হচ্ছে এক ধরনের কমপিউটার প্রোগ্রাম, যা স্বয়ংক্রিয়ভাবে ইন্টারনেট ব্রাউজ করে এবং নতুন নতুন তথ্য তার ডাটাবেজে সংরক্ষণ (বা ক্রাউলিং) এবং সাজিয়ে (বা ইন্ডেক্সিং) রাখে। ক্রাউলার প্রোগ্রামকে প্রায় সময় ইন্ডেক্সার, বট, ওয়েব স্পাইডার, ওয়েব রোবট ইত্যাদি নামে ডাকা হয়। গুগলের ক্রাউলারটি ‘গুগলবট’ নামে পরিচিত। গুগলবট নিরবচ্ছিন্নভাবে ইন্টারনেটে বিচরণ করে বেড়ায় এবং যখনই নতুন কোনো ওয়েবসাইট বা নতুন কোনো তথ্যের সন্ধান পায়, এটি গুগলের সার্ভারে সংরক্ষণ করে রাখে। robots.txt হচ্ছে এমন একটি ফাইল যার মাধ্যমে একটি সাইটের নির্দিষ্ট কোনো অংশকে ইন্ডেক্সিং করা থেকে সার্চ ইঞ্জিন তথা ক্রাউলারকে বিরত রাখা যায়। এই ফাইলটিকে সার্ভারের মূল ফোল্ডারের মধ্যে রাখতে হয়। একটি সাইটে এমন অনেক পৃষ্ঠা থাকতে পারে, যা ব্যবহারকারী ও সার্চ ইঞ্জিন উভয়ের কাছে অপ্রয়োজনীয়, সেক্ষেত্রে এই ফাইলটি হচ্ছে একটি কার্যকরী সমাধান। গুগলের ওয়েবমাস্টার টুলস সাইট থেকে এই ফাইল তৈরি করা যায়।

nofollow wjsK সম্পর্কে সতর্কতা

গুগলবট একটি সাইটকে যখন ক্রাউলিং করতে থাকে, তখন সে সাইটে অন্য সাইটের লিঙ্ক পেলে সেখানে ভিজিট করে এবং সেই সাইটকেও ক্রাউলিং করে। এক্ষেত্রে একটি সাইটের পেজরেঙ্ক (পিআর)-এর ওপর অন্য সাইটের পেজরেঙ্কের প্রভাব পড়ে। এইচটিএমএল ট্যাগের ট্যাগের মধ্যে ‘rel’ এট্রিবিউটে ‘nofollow’ দিয়ে রাখলে গুগল সেই লিঙ্কে ভিজিট করা থেকে বিরত থাকে। nofollow লেখার নিয়ম হচ্ছে- Site Name। এটি মূলত বিভিন্ন ব্লগিং সাইটে পাঠকদের মন্তব্যে অবস্থিত লিঙ্কে ব্যবহার হয়, যা স্প্যামার বা অনাকাঙ্ক্ষিত ভিজিটরদেরকে তাদের সাইটের পেজরেঙ্ক বাড়ানো প্রতিরোধ করে। এটি অযাচিত মন্তব্য দিতে স্প্যামারদেরকে নিরুৎসাহিত করে। তবে যেসব ক্ষেত্রে স্প্যাম প্রতিরোধের ব্যবস্থা রয়েছে, সেখানে nofollow ব্যবহার না করাই ভালো। এতে পাঠকরা মন্তব্য দিতে উৎসাহিত হবে এবং সাইটের সাথে তাদের যোগাযোগ আরও বেশি হবে।

০৫. সঠিক পদ্ধতিতে ওয়েবসাইটের প্রচারণা এবং বিশ্লেষণ :
একটি সাইটকে যখন অপর একটি সাইট লিঙ্কের মাধ্যমে সংযুক্ত করে তখন একে বলা হয় ব্যাকলিঙ্ক। একটি সাইটের ব্যাকলিঙ্ক যত বেশি হবে, গুগলের কাছে সেই সাইটের গুরুত্বও তত বাড়তে থাকবে এবং এর পেজরেঙ্কও বাড়তে থাকবে। ফলস্বরূপ সার্চের মাধ্যমে আরো বেশিসংখ্যক ব্যবহারকারী সাইটে আসবে। বেশি করে ব্যাকলিঙ্ক পাবার জন্য ওয়েবসাইটে মানসম্মত তথ্য থাকা এবং এর সঠিক প্রচারণা প্রয়োজন। একটি সাইটে ভালো তথ্য থাকলে ব্যবহারকারীরা তাদের ওয়েবসাইটে স্বেচ্ছায় ব্যাকলিঙ্ক সংযুক্ত করবে। একটি ওয়েবসাইটের প্রচারণা দুই ধরনের হতে পারে- অনলাইন এবং অফলাইন। অনলাইন প্রচারণার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ব্লগিং। ওয়েবসাইটের সাথে একটি ব্লগ সংযুক্ত থাকলে এর মাধ্যমে ওয়েবসাইটের নতুন নতুন সার্ভিস বা পণ্যের সাথে ব্যবহারকারীদেরকে সহজেই পরিচয় করিয়ে দেয়া যায়। অনলাইন প্রচারণার মধ্যে আরেকটি পদ্ধতি হচ্ছে বিভিন্ন সামাজিক নেটওয়ার্কিং ও কমিউনিটি সাইটে প্রচারণা। তবে এসব সাইটে প্রচারণার ক্ষেত্রে একটু সংযমী হওয়া প্রয়োজন। ওয়েবসাইটের প্রত্যেকটি নতুন তথ্য বা যে কোনো ছোটখাটো পরিবর্তন শেয়ার না করে বেছে বেছে ভালো তথ্যগুলো সবাইকে জানানো উচিত। অন্যথায় এটি অন্যদের বিরক্তির উদ্রেক করে। নিজের সাইটের সমজাতীয় কমিউনিটি সাইট বা বিভিন্ন ফোরামে প্রচারণা করা ভালো, তবে সেসব সাইটে অযথা পোস্ট দেয়া বা স্প্যামিং যাতে না হয়। অফলাইন প্রচারণার মধ্যে রয়েছে সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন, বিজনেস কার্ড তৈরি, পোস্টার, লিফলেট, নিউজলেটার প্রকাশ ইত্যাদি।

ফ্রি ওয়েবমাস্টার টুলের ব্যবহার

গুগলসহ অন্যান্য জনপ্রিয় সার্চ ইঞ্জিনগুলো ওয়েবমাস্টারদের জন্য এসইও সহায়ক বিভিন্ন ফ্রি টুল দেয়। গুগলের ওয়েবমাস্টার টুলস সাইটের মাধ্যমে একজন ওয়েবমাস্টার তার সাইট সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেতে পারে, যা গুগলের সার্চ রেজাল্টে আরো ভালোভাবে ওয়েবসাইটটি উপস্থিত হতে সহায়তা করে। এই সাইট থেকে যেসব সার্ভিস বিনামূল্যে পাওয়া যায় সেগুলো হলো-

* গুগলবট একটি সাইটের কোনো অংশ ক্রাউলিং করতে না পারলে তা যায়।
* গুগলে একটি XML সাইটম্যাপ সাবমিট করা যায়।
* robots.txt ফাইল তৈরি করা যায়।
* title এবং description মেটা ট্যাগে কোনো সমস্যা থাকলে তা শনাক্ত করা যায়।
* যেসব সার্চ কিওয়ার্ডের ব্যবহারকারীরা ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে সেগুলো সম্পর্কে জানা যায়।
* অন্য কোন কোন সাইট ব্যাকলিঙ্ক করেছে, তা জানা যায়।
* আরো নানা ধরনের বিশ্লেষণধর্মী টুল।

এখানে যদিও ‘সার্চ ইঞ্জিন’ সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে, তথাপি একটি ওয়েবসাইটকে অপটিমাইজ বা উন্নত করার ক্ষেত্রে সাইটের ভিজিটরদের সুবিধার কথাই প্রথমে চিন্তা করা উচিত। কারণ, ভিজিটররাই হচ্ছে একটি সাইটের মূল ভোক্তা, কোন সার্চ ইঞ্জিন নয় আর তারা সাইটকে খুঁজে পেতে সার্চ ইঞ্জিনকে একটি মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করে মাত্র। এসইও একটি সময়সাপেক্ষ ব্যাপার এবং একটি চলমান প্রক্রিয়া। রাতারাতি একটি ওয়েবসাইটকে সার্চ ইঞ্জিনের প্রথম পাতায় নিয়ে আসা যায় না। তবে নিয়মিত উন্নয়ন করতে থাকলে এর ফলাফল অনেক সুদূরপ্রসারী।

নিজেই করুন এসইও

এই ফিচারটির মূল লেখক : মো: জাকারিয়া চৌধুরী


সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন বা এসইও হচ্ছে ধারাবাহিক পরিবর্তনের মাধ্যমে একটি ওয়েবসাইটের উন্নতি সাধন করা। এই পরিবর্তনগুলো হয়ত আলাদাভাবে চোখে পড়বে না, কিন্তু সামগ্রিকভাবে এর মাধ্যমে একটি সাইটের ব্রাউজিংয়ের স্বাচ্ছন্দ্যবোধ অনেকাংশে বেড়ে যায় এবং অর্গানিক বা স্বাভাবিক সার্চ রেজাল্টে সাইটকে শীর্ষ অবস্থানের দিকে নিয়ে যায়। গত পর্বে এসইও’র বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করা হয়েছিল। এ পর্বে অন-পেজ এসইও (On-page SEO) নিয়ে আলোকপাত করা হলো। এই লেখাটি গুগলের প্রকাশিত ‘এসইও স্টার্টার গাইড’-এর ওপর ভিত্তি করে সাজানো হয়েছে।



০১. প্রাথমিক এসইও টাইটেল ট্যাগের ব্যবহার :
একটি এইচটিএমএল পৃষ্ঠার টাইটেল ট্যাগ থেকে সে পৃষ্ঠার বিষয়বস্তু সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা পাওয়া যায়। একজন ব্যবহারকারী এবং সার্চ ইঞ্জিনের কাছে তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এইচটিএমএল ডকুমেন্টের ট্যাগের মধ্যে ট্যাগ লেখা হয়। টাইটেল ট্যাগটি ওয়েব ব্রাউজারের টাইটেলবারে এবং সার্চের সময় প্রথমেই দৃশ্যমান হয়। টাইটেল ট্যাগের মধ্যে সাধারণত সাইটের নাম এবং পৃষ্ঠার বিষয়বস্ত্ত যুক্ত করা হয়। একটি সাইটের প্রতিটি পৃষ্ঠার জন্য আলাদা আলাদা টাইটেল ট্যাগ থাকা প্রয়োজন। এতে সাইটের পৃষ্ঠাগুলোকে গুগল আলাদাভাবে শনাক্ত করতে পারে। পৃষ্ঠার বিষযবস্তুর সাথে সম্পৃক্ত নয় এমন শিরোনাম না দেয়াই ভালো। টাইটেল ট্যাগে অপ্রয়োজনীয় ও অপ্রাসঙ্গিক কিওয়ার্ড যুক্ত না করাই ভালো। টাইটেল ট্যাগ হওয়া চাই বর্ণনামূলক অথচ সংক্ষিপ্ত। অনেক লম্বা টাইটেল ট্যাগ ব্যবহার করলে সার্চের ক্ষেত্রে গুগল শুধু এর অংশবিশেষ প্রদর্শন করে।<br /><br />ডেসক্রিপশন মেটা ট্যাগ

একটি এইচটিএমএল ডকুমেন্টের ডেসক্রিপশন মেটা ট্যাগের মধ্যে ওই পৃষ্ঠা সারসংক্ষেপ যুক্ত করা হয়, যা গুগল এবং অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিনকে সাইটের পৃষ্ঠাটি সম্পর্কে ভালো ধারণা দেয়। যেখানে টাইটেল ট্যাগ কয়েকটি শব্দের সমন্বয়ে গঠিত, সেখানে ডেসক্রিপশন মেটা ট্যাগের মধ্যে এক বা একাধিক লাইনের একটি প্যারাগ্রাফ দিতে হয়। টাইটেল ট্যাগের মতো এটিও ট্যাগের মধ্যে এর মাধ্যমে যুক্ত করতে হয়। সাইটের প্রত্যেকটি পৃষ্ঠায় ভিন্ন ভিন্ন এবং সঠিক ডেসক্রিপশন যুক্ত করা প্রয়োজন, কারণ সার্চের ফলাফলে প্রায় সময় এটি প্রদর্শিত হয়। শুধু কিওয়ার্ড দিয়ে ডেসক্রিপশন মেটা ট্যাগটি তৈরি করা উচিত নয়। অনেকে আবার পৃষ্ঠার মূল লেখাকে সরাসরি এই ট্যাগে লিখে ফেলেন যা মোটেও ঠিক নয়।

০২. সাইটের কাঠামো ইউআরএল পুনর্গঠন :
সহজবোধ্য ও বর্ণনামূলক ইউআরএল (URL) সার্চ ইঞ্জিন এবং ব্যবহারকারীদের কাছে সমান গুরুত্বপূর্ণ। সাইটের প্রত্যেকটি পৃষ্ঠার ইউআরএল যাতে সেই পৃষ্ঠার বিষয়বস্তুর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। আইডি বা ব্যবহারকারীদের কাছে অর্থহীন বিভিন্ন প্যারামিটার ব্যবহার না করে অর্থবোধক শব্দ ব্যবহার করা উচিত। উদাহরণস্বরূপ http:// yoursite.com?category_id=1&product_id=2-এর পরিবর্তে http://yoursite.com/books/ book-title এভাবে ইউআরএল লিখলে সার্চ ইঞ্জিন এবং ব্যবহারকারীদের কাছে পৃষ্ঠার বিষয়বস্ত্ত স্পষ্ট হয়ে যায়। ইউআরএলে যাতে অত্যধিক কিওয়ার্ড না থাকে, সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।



সহজ নেভিগেশন

সাইটের নেভিগেশন অর্থাৎ এক পৃষ্ঠা থেকে অন্য পৃষ্ঠায় যাওয়া যাতে সহজ হয়, তা বিবেচনায় রাখতে হবে। সহজ নেভিগেশন একদিকে ব্যবহারকারীদেরকে যেমন সাইটের তথ্য সহজেই খুঁজে পেতে সাহায্য করে অন্যদিকে সাইটের গুরুত্বপূর্ণ পৃষ্ঠাগুলোকে সার্চ ইঞ্জিন সহজেই খুঁজে পায়। সাইটের প্রথম পৃষ্ঠা বা হোমপেজ থেকে অন্যান্য সব পৃষ্ঠায় কিভাবে যাওয়া যাবে, তা প্রথমেই প্ল্যান করা উচিত। সাইটে অসংখ্য পৃষ্ঠা থাকলে সেগুলোকে বিভাগ এবং উপ-বিভাগে ভাগ করে রাখা প্রয়োজন। প্রত্যেকটি পৃষ্ঠায় breadcrumb লিস্ট যুক্ত করা ভালো। এর মাধ্যমে ব্যবহারকারী কত ধাপ ভেতরের পৃষ্ঠায় রয়েছে, তা জানতে পারে এবং চাইলে লিঙ্কে ক্লিক করে আগের পৃষ্ঠায় যেতে পারে। এই লিস্ট দেখতে সাধারণত এরকম হয়ে থাকে- Home > Products > Books।

সাইট ম্যাপের ব্যবহার

সাইট ম্যাপ দুই ধরনের হয়ে থাকে। প্রথমটি একটি সাধারণ এইচএমএলটি পৃষ্ঠা, যেখানে সাইটের সব পৃষ্ঠার লিঙ্ক যুক্ত করা হয়। মূলত কোনো পৃষ্ঠা খুঁজে পেতে অসুবিধা হলে ব্যবহারকারীরা এই সাইট ম্যাপের সহায়তা নেয়। সার্চ ইঞ্জিনও এই সাইট ম্যাপ থেকে সাইটের সব পৃষ্ঠার লিঙ্ক পেয়ে থাকে। দ্বিতীয় সাইটম্যাপ হচ্ছে একটি এক্সএমএল ফাইল, যা ‘গুগল ওয়েবমাস্টার টুলস’ নামে গুগলের একটি সাইটে সাবমিট করা হয়। সাইটের ঠিকানা http://www.google.com/webmasters/tools। এ ফাইলের মাধ্যমে সাইটের সব পৃষ্ঠা সম্পর্কে গুগল ভালোভাবে অবগত হতে পারে। এই সাইটম্যাপ ফাইল তৈরি করতে গুগল একটি ওপেনসোর্স স্ক্রিপ্ট দেয়, যা এই লিঙ্ক থেকে পাওয়া যাবে- http://code.google.com/p/googlesitemapgenerator

৪০৪ পেজের গুরুত্ব

ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা ব্রাউজ করার সময় প্রায় সময় ৪০৪ নামের একটি পৃষ্ঠা দেখতে পান। সাইটের লিঙ্ক ভুল থাকলে কিংবা কাঙ্ক্ষিত পৃষ্ঠাটি না পাওয়া গেলে এটি যেকোনো সাইটেই দৃশ্যমান হয় এবং এক্ষেত্রে সাধারণত ‘404 File Not Found’ লেখাটি দেখা যায়। তবে এর সাথে অন্যান্য সাহায্যকারী তথ্য বা সাইটের অন্যান্য পৃষ্ঠার লিঙ্ক যুক্ত করতে পারলে ব্যবহারকারীদের জন্য অনেক সুবিধা হয়।



০৩. কন্টেন্ট অপ্টিমাইজেশন, মানসম্মত তথ্য এবং সার্ভিস :
মানসম্মত ও স্বতন্ত্র কন্টেন্ট বা তথ্য হচ্ছে একটি ওয়েবসাইট জনপ্রিয় করার মূল হাতিয়ার। এটি একদিকে যেমন ব্যবহারকারীদেরকে সাইটে নিয়মিত আসতে প্রভাবিত করে, তেমনি গুগলের কাছেও সাইটের গুরুত্ব বেড়ে যায়। ওয়েবসাইটে লেখা সংযোজন করার আগে কিওয়ার্ড নিয়ে গবেষণা এবং লেখায় এর প্রতিফলন থাকা প্রয়োজন। গুগলের ‘অ্যাডওয়ার্ডস’ সাইটে এজন্য একটি টুল রয়েছে, যা একটি কিওয়ার্ড কতটা জনপ্রিয় তা যাচাই করতে সাহায্য করে। পাশাপাশি এই টুলের মাধ্যমে নতুন নতুন কিওয়ার্ড সম্পর্কে জানা যায়। সাইটটির ঠিকানা হচ্ছে- https://adwords.google.com/select/KeywordToolExternal। তাছাড়া গুগলের ‘ওয়েবমাস্টার টুলস’ সাইটে শীর্ষ কিওয়ার্ডের একটি লিস্ট পাওয়া যায়। এ থেকে ব্যবহারকারীরা সাইটে ভিজিট করার আগে গুগলে কোন কিওয়ার্ড ব্যবহার করে আসে, তা জানা যায়। ওয়েবসাইটের কন্টেন্ট তৈরি করার সময় বানান এবং ব্যাকরণের দিকে খেয়াল রাখা উচিত। লেখায় একাধিক বিষয়বস্তু থাকলে সেটিকে কয়েকটি প্যারাগ্রাফে ভাগ করে এবং শিরোনাম সহকারে লেখা উচিত।

GsKi টেক্সটের যথাযথ ব্যবহার

GsKi টেক্সট (Anchor Text) হচ্ছে HTML এর বা GsKi ট্যাগের ভেতরের শব্দগুচ্ছ যাতে ক্লিক করে অন্য কোনো পৃষ্ঠা বা সাইটে যাওয়া যায়। এই টেক্সটি গুগল এবং ব্যবহারকারীদেরকে লিঙ্ক সম্পর্কে পূর্ব ধারণা দেয়। এই লিঙ্কটি একই সাইটের অন্য কোনো পৃষ্ঠার সাথে হতে পারে অথবা ভিন্ন কোনো সাইটের সাথে সংযুক্ত হতে পারে। GsKi টেক্সটে ‘Click here’, ‘Page’ বা ‘Article’ এই জাতীয় সাধারণ শব্দ ব্যবহার না করে লিঙ্ক করা পৃষ্ঠার বর্ণনামূলক হওয়া উচিত। GsKi টেক্সটটি যাতে অল্প কয়েকটি শব্দের সমন্বয়ে হয় সেদিকে খেয়াল রাখা চাই। সম্পূর্ণ একটি বাক্যকে GsKi টেক্সট হিসেবে ব্যবহার করা ঠিক নয়। একটি সাধারণ লেখা থেকে লিঙ্ককে যাতে আলাদাভাবে চেনা যায় সেজন্য GsKi টেক্সটে ভিন্ন রং, আন্ডারলাইন ইত্যাদি CSS স্টাইল ব্যবহার করা যেতে পারে।

ছবির ব্যবহার

ওয়েবসাইটে ছবি বা ইমেজ যুক্ত করার সময় এইচটিএমএলের ট্যাগের মধ্যকার alt এট্রিবিউটে ছবির বর্ণনা যুক্ত করা উচিত। এর ফলে কোনো ব্রাউজারে যদি ছবিটি না আসে তাহলে এই এট্রিবিউটের লেখাটি দৃশ্যমান হবে। একটি ছবিকে লিঙ্ক হিসেবে ব্যবহার করার সময় এটি GsKi টেক্সটেরও কাজ করে। অন্যদিকে এর মাধ্যমে গুগলের ইমেজ সার্চের সাহায্যে ব্যবহারকারীরা ছবিটি খুঁজে পাবে। ছবির বর্ণনার পাশাপাশি ছবির ফাইলে নামও বর্ণনামূলক ও সংক্ষিপ্ত হওয়া প্রয়োজন। সাইটের সাইটম্যাপ ফাইলের মতো ছবির জন্যও একটি এক্সএমএল সাইটম্যাপ তৈরি করা যায়, যা গুগলকে ওয়েবসাইটের সব ছবি সম্পর্কে ভালো ধারণা দেয়।



হেডিং ট্যাগ

HTML G [h1] থেকে শুরু করে [h6] পর্যন্ত ৬টি হেডিং ট্যাগ রয়েছে, যার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শিরোনামকে [h1] ট্যাগের মধ্যে এবং কম গুরুত্বপূর্ণ তথ্যকে পর্যায়ক্রমে অন্যান্য হেডিং ট্যাগের মধ্যে লেখা হয়। হেডিং ট্যাগের লেখা যেহেতু পৃষ্ঠার অন্যান্য লেখা থেকে আকারে বড় হয়ে থাকে, তাই এটি ব্যবহারকারীদের দৃষ্টি সহজেই আকৃষ্ট করতে সক্ষম হয় এবং লেখার বিষয়বস্তু সম্পর্কে অবহিত করতে ব্যবহারকারী ও গুগলকে সহায়তা করে। তবে একটি পৃষ্ঠায় মাত্রাধিক হেডিং ট্যাগ যাতে ব্যবহার না হয় তা মাথায় রাখতে হবে।

০৪. ক্রাউলার উপযোগী এসইও robots.txt ফাইলের ব্যবহার :
ক্রাউলার (Crawler) হচ্ছে এক ধরনের কমপিউটার প্রোগ্রাম, যা স্বয়ংক্রিয়ভাবে ইন্টারনেট ব্রাউজ করে এবং নতুন নতুন তথ্য তার ডাটাবেজে সংরক্ষণ (বা ক্রাউলিং) এবং সাজিয়ে (বা ইন্ডেক্সিং) রাখে। ক্রাউলার প্রোগ্রামকে প্রায় সময় ইন্ডেক্সার, বট, ওয়েব স্পাইডার, ওয়েব রোবট ইত্যাদি নামে ডাকা হয়। গুগলের ক্রাউলারটি ‘গুগলবট’ নামে পরিচিত। গুগলবট নিরবচ্ছিন্নভাবে ইন্টারনেটে বিচরণ করে বেড়ায় এবং যখনই নতুন কোনো ওয়েবসাইট বা নতুন কোনো তথ্যের সন্ধান পায়, এটি গুগলের সার্ভারে সংরক্ষণ করে রাখে। robots.txt হচ্ছে এমন একটি ফাইল যার মাধ্যমে একটি সাইটের নির্দিষ্ট কোনো অংশকে ইন্ডেক্সিং করা থেকে সার্চ ইঞ্জিন তথা ক্রাউলারকে বিরত রাখা যায়। এই ফাইলটিকে সার্ভারের মূল ফোল্ডারের মধ্যে রাখতে হয়। একটি সাইটে এমন অনেক পৃষ্ঠা থাকতে পারে, যা ব্যবহারকারী ও সার্চ ইঞ্জিন উভয়ের কাছে অপ্রয়োজনীয়, সেক্ষেত্রে এই ফাইলটি হচ্ছে একটি কার্যকরী সমাধান। গুগলের ওয়েবমাস্টার টুলস সাইট থেকে এই ফাইল তৈরি করা যায়।

nofollow wjsK সম্পর্কে সতর্কতা

গুগলবট একটি সাইটকে যখন ক্রাউলিং করতে থাকে, তখন সে সাইটে অন্য সাইটের লিঙ্ক পেলে সেখানে ভিজিট করে এবং সেই সাইটকেও ক্রাউলিং করে। এক্ষেত্রে একটি সাইটের পেজরেঙ্ক (পিআর)-এর ওপর অন্য সাইটের পেজরেঙ্কের প্রভাব পড়ে। এইচটিএমএল ট্যাগের ট্যাগের মধ্যে ‘rel’ এট্রিবিউটে ‘nofollow’ দিয়ে রাখলে গুগল সেই লিঙ্কে ভিজিট করা থেকে বিরত থাকে। nofollow লেখার নিয়ম হচ্ছে- Site Name। এটি মূলত বিভিন্ন ব্লগিং সাইটে পাঠকদের মন্তব্যে অবস্থিত লিঙ্কে ব্যবহার হয়, যা স্প্যামার বা অনাকাঙ্ক্ষিত ভিজিটরদেরকে তাদের সাইটের পেজরেঙ্ক বাড়ানো প্রতিরোধ করে। এটি অযাচিত মন্তব্য দিতে স্প্যামারদেরকে নিরুৎসাহিত করে। তবে যেসব ক্ষেত্রে স্প্যাম প্রতিরোধের ব্যবস্থা রয়েছে, সেখানে nofollow ব্যবহার না করাই ভালো। এতে পাঠকরা মন্তব্য দিতে উৎসাহিত হবে এবং সাইটের সাথে তাদের যোগাযোগ আরও বেশি হবে।

০৫. সঠিক পদ্ধতিতে ওয়েবসাইটের প্রচারণা এবং বিশ্লেষণ :
একটি সাইটকে যখন অপর একটি সাইট লিঙ্কের মাধ্যমে সংযুক্ত করে তখন একে বলা হয় ব্যাকলিঙ্ক। একটি সাইটের ব্যাকলিঙ্ক যত বেশি হবে, গুগলের কাছে সেই সাইটের গুরুত্বও তত বাড়তে থাকবে এবং এর পেজরেঙ্কও বাড়তে থাকবে। ফলস্বরূপ সার্চের মাধ্যমে আরো বেশিসংখ্যক ব্যবহারকারী সাইটে আসবে। বেশি করে ব্যাকলিঙ্ক পাবার জন্য ওয়েবসাইটে মানসম্মত তথ্য থাকা এবং এর সঠিক প্রচারণা প্রয়োজন। একটি সাইটে ভালো তথ্য থাকলে ব্যবহারকারীরা তাদের ওয়েবসাইটে স্বেচ্ছায় ব্যাকলিঙ্ক সংযুক্ত করবে। একটি ওয়েবসাইটের প্রচারণা দুই ধরনের হতে পারে- অনলাইন এবং অফলাইন। অনলাইন প্রচারণার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ব্লগিং। ওয়েবসাইটের সাথে একটি ব্লগ সংযুক্ত থাকলে এর মাধ্যমে ওয়েবসাইটের নতুন নতুন সার্ভিস বা পণ্যের সাথে ব্যবহারকারীদেরকে সহজেই পরিচয় করিয়ে দেয়া যায়। অনলাইন প্রচারণার মধ্যে আরেকটি পদ্ধতি হচ্ছে বিভিন্ন সামাজিক নেটওয়ার্কিং ও কমিউনিটি সাইটে প্রচারণা। তবে এসব সাইটে প্রচারণার ক্ষেত্রে একটু সংযমী হওয়া প্রয়োজন। ওয়েবসাইটের প্রত্যেকটি নতুন তথ্য বা যে কোনো ছোটখাটো পরিবর্তন শেয়ার না করে বেছে বেছে ভালো তথ্যগুলো সবাইকে জানানো উচিত। অন্যথায় এটি অন্যদের বিরক্তির উদ্রেক করে। নিজের সাইটের সমজাতীয় কমিউনিটি সাইট বা বিভিন্ন ফোরামে প্রচারণা করা ভালো, তবে সেসব সাইটে অযথা পোস্ট দেয়া বা স্প্যামিং যাতে না হয়। অফলাইন প্রচারণার মধ্যে রয়েছে সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন, বিজনেস কার্ড তৈরি, পোস্টার, লিফলেট, নিউজলেটার প্রকাশ ইত্যাদি।

ফ্রি ওয়েবমাস্টার টুলের ব্যবহার

গুগলসহ অন্যান্য জনপ্রিয় সার্চ ইঞ্জিনগুলো ওয়েবমাস্টারদের জন্য এসইও সহায়ক বিভিন্ন ফ্রি টুল দেয়। গুগলের ওয়েবমাস্টার টুলস সাইটের মাধ্যমে একজন ওয়েবমাস্টার তার সাইট সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেতে পারে, যা গুগলের সার্চ রেজাল্টে আরো ভালোভাবে ওয়েবসাইটটি উপস্থিত হতে সহায়তা করে। এই সাইট থেকে যেসব সার্ভিস বিনামূল্যে পাওয়া যায় সেগুলো হলো-

* গুগলবট একটি সাইটের কোনো অংশ ক্রাউলিং করতে না পারলে তা যায়।
* গুগলে একটি XML সাইটম্যাপ সাবমিট করা যায়।
* robots.txt ফাইল তৈরি করা যায়।
* title এবং description মেটা ট্যাগে কোনো সমস্যা থাকলে তা শনাক্ত করা যায়।
* যেসব সার্চ কিওয়ার্ডের ব্যবহারকারীরা ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে সেগুলো সম্পর্কে জানা যায়।
* অন্য কোন কোন সাইট ব্যাকলিঙ্ক করেছে, তা জানা যায়।
* আরো নানা ধরনের বিশ্লেষণধর্মী টুল।

এখানে যদিও ‘সার্চ ইঞ্জিন’ সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে, তথাপি একটি ওয়েবসাইটকে অপটিমাইজ বা উন্নত করার ক্ষেত্রে সাইটের ভিজিটরদের সুবিধার কথাই প্রথমে চিন্তা করা উচিত। কারণ, ভিজিটররাই হচ্ছে একটি সাইটের মূল ভোক্তা, কোন সার্চ ইঞ্জিন নয় আর তারা সাইটকে খুঁজে পেতে সার্চ ইঞ্জিনকে একটি মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করে মাত্র। এসইও একটি সময়সাপেক্ষ ব্যাপার এবং একটি চলমান প্রক্রিয়া। রাতারাতি একটি ওয়েবসাইটকে সার্চ ইঞ্জিনের প্রথম পাতায় নিয়ে আসা যায় না। তবে নিয়মিত উন্নয়ন করতে থাকলে এর ফলাফল অনেক সুদূরপ্রসারী।

নিজেই করুন এসইও

এই ফিচারটির মূল লেখক : মো: জাকারিয়া চৌধুরী


সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন বা এসইও হচ্ছে ধারাবাহিক পরিবর্তনের মাধ্যমে একটি ওয়েবসাইটের উন্নতি সাধন করা। এই পরিবর্তনগুলো হয়ত আলাদাভাবে চোখে পড়বে না, কিন্তু সামগ্রিকভাবে এর মাধ্যমে একটি সাইটের ব্রাউজিংয়ের স্বাচ্ছন্দ্যবোধ অনেকাংশে বেড়ে যায় এবং অর্গানিক বা স্বাভাবিক সার্চ রেজাল্টে সাইটকে শীর্ষ অবস্থানের দিকে নিয়ে যায়। গত পর্বে এসইও’র বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করা হয়েছিল। এ পর্বে অন-পেজ এসইও (On-page SEO) নিয়ে আলোকপাত করা হলো। এই লেখাটি গুগলের প্রকাশিত ‘এসইও স্টার্টার গাইড’-এর ওপর ভিত্তি করে সাজানো হয়েছে।



০১. প্রাথমিক এসইও টাইটেল ট্যাগের ব্যবহার :
একটি এইচটিএমএল পৃষ্ঠার টাইটেল ট্যাগ থেকে সে পৃষ্ঠার বিষয়বস্তু সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা পাওয়া যায়। একজন ব্যবহারকারী এবং সার্চ ইঞ্জিনের কাছে তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এইচটিএমএল ডকুমেন্টের ট্যাগের মধ্যে ট্যাগ লেখা হয়। টাইটেল ট্যাগটি ওয়েব ব্রাউজারের টাইটেলবারে এবং সার্চের সময় প্রথমেই দৃশ্যমান হয়। টাইটেল ট্যাগের মধ্যে সাধারণত সাইটের নাম এবং পৃষ্ঠার বিষয়বস্ত্ত যুক্ত করা হয়। একটি সাইটের প্রতিটি পৃষ্ঠার জন্য আলাদা আলাদা টাইটেল ট্যাগ থাকা প্রয়োজন। এতে সাইটের পৃষ্ঠাগুলোকে গুগল আলাদাভাবে শনাক্ত করতে পারে। পৃষ্ঠার বিষযবস্তুর সাথে সম্পৃক্ত নয় এমন শিরোনাম না দেয়াই ভালো। টাইটেল ট্যাগে অপ্রয়োজনীয় ও অপ্রাসঙ্গিক কিওয়ার্ড যুক্ত না করাই ভালো। টাইটেল ট্যাগ হওয়া চাই বর্ণনামূলক অথচ সংক্ষিপ্ত। অনেক লম্বা টাইটেল ট্যাগ ব্যবহার করলে সার্চের ক্ষেত্রে গুগল শুধু এর অংশবিশেষ প্রদর্শন করে।<br /><br />ডেসক্রিপশন মেটা ট্যাগ

একটি এইচটিএমএল ডকুমেন্টের ডেসক্রিপশন মেটা ট্যাগের মধ্যে ওই পৃষ্ঠা সারসংক্ষেপ যুক্ত করা হয়, যা গুগল এবং অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিনকে সাইটের পৃষ্ঠাটি সম্পর্কে ভালো ধারণা দেয়। যেখানে টাইটেল ট্যাগ কয়েকটি শব্দের সমন্বয়ে গঠিত, সেখানে ডেসক্রিপশন মেটা ট্যাগের মধ্যে এক বা একাধিক লাইনের একটি প্যারাগ্রাফ দিতে হয়। টাইটেল ট্যাগের মতো এটিও ট্যাগের মধ্যে এর মাধ্যমে যুক্ত করতে হয়। সাইটের প্রত্যেকটি পৃষ্ঠায় ভিন্ন ভিন্ন এবং সঠিক ডেসক্রিপশন যুক্ত করা প্রয়োজন, কারণ সার্চের ফলাফলে প্রায় সময় এটি প্রদর্শিত হয়। শুধু কিওয়ার্ড দিয়ে ডেসক্রিপশন মেটা ট্যাগটি তৈরি করা উচিত নয়। অনেকে আবার পৃষ্ঠার মূল লেখাকে সরাসরি এই ট্যাগে লিখে ফেলেন যা মোটেও ঠিক নয়।

০২. সাইটের কাঠামো ইউআরএল পুনর্গঠন :
সহজবোধ্য ও বর্ণনামূলক ইউআরএল (URL) সার্চ ইঞ্জিন এবং ব্যবহারকারীদের কাছে সমান গুরুত্বপূর্ণ। সাইটের প্রত্যেকটি পৃষ্ঠার ইউআরএল যাতে সেই পৃষ্ঠার বিষয়বস্তুর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। আইডি বা ব্যবহারকারীদের কাছে অর্থহীন বিভিন্ন প্যারামিটার ব্যবহার না করে অর্থবোধক শব্দ ব্যবহার করা উচিত। উদাহরণস্বরূপ http:// yoursite.com?category_id=1&product_id=2-এর পরিবর্তে http://yoursite.com/books/ book-title এভাবে ইউআরএল লিখলে সার্চ ইঞ্জিন এবং ব্যবহারকারীদের কাছে পৃষ্ঠার বিষয়বস্ত্ত স্পষ্ট হয়ে যায়। ইউআরএলে যাতে অত্যধিক কিওয়ার্ড না থাকে, সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।



সহজ নেভিগেশন

সাইটের নেভিগেশন অর্থাৎ এক পৃষ্ঠা থেকে অন্য পৃষ্ঠায় যাওয়া যাতে সহজ হয়, তা বিবেচনায় রাখতে হবে। সহজ নেভিগেশন একদিকে ব্যবহারকারীদেরকে যেমন সাইটের তথ্য সহজেই খুঁজে পেতে সাহায্য করে অন্যদিকে সাইটের গুরুত্বপূর্ণ পৃষ্ঠাগুলোকে সার্চ ইঞ্জিন সহজেই খুঁজে পায়। সাইটের প্রথম পৃষ্ঠা বা হোমপেজ থেকে অন্যান্য সব পৃষ্ঠায় কিভাবে যাওয়া যাবে, তা প্রথমেই প্ল্যান করা উচিত। সাইটে অসংখ্য পৃষ্ঠা থাকলে সেগুলোকে বিভাগ এবং উপ-বিভাগে ভাগ করে রাখা প্রয়োজন। প্রত্যেকটি পৃষ্ঠায় breadcrumb লিস্ট যুক্ত করা ভালো। এর মাধ্যমে ব্যবহারকারী কত ধাপ ভেতরের পৃষ্ঠায় রয়েছে, তা জানতে পারে এবং চাইলে লিঙ্কে ক্লিক করে আগের পৃষ্ঠায় যেতে পারে। এই লিস্ট দেখতে সাধারণত এরকম হয়ে থাকে- Home > Products > Books।

সাইট ম্যাপের ব্যবহার

সাইট ম্যাপ দুই ধরনের হয়ে থাকে। প্রথমটি একটি সাধারণ এইচএমএলটি পৃষ্ঠা, যেখানে সাইটের সব পৃষ্ঠার লিঙ্ক যুক্ত করা হয়। মূলত কোনো পৃষ্ঠা খুঁজে পেতে অসুবিধা হলে ব্যবহারকারীরা এই সাইট ম্যাপের সহায়তা নেয়। সার্চ ইঞ্জিনও এই সাইট ম্যাপ থেকে সাইটের সব পৃষ্ঠার লিঙ্ক পেয়ে থাকে। দ্বিতীয় সাইটম্যাপ হচ্ছে একটি এক্সএমএল ফাইল, যা ‘গুগল ওয়েবমাস্টার টুলস’ নামে গুগলের একটি সাইটে সাবমিট করা হয়। সাইটের ঠিকানা http://www.google.com/webmasters/tools। এ ফাইলের মাধ্যমে সাইটের সব পৃষ্ঠা সম্পর্কে গুগল ভালোভাবে অবগত হতে পারে। এই সাইটম্যাপ ফাইল তৈরি করতে গুগল একটি ওপেনসোর্স স্ক্রিপ্ট দেয়, যা এই লিঙ্ক থেকে পাওয়া যাবে- http://code.google.com/p/googlesitemapgenerator

৪০৪ পেজের গুরুত্ব

ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা ব্রাউজ করার সময় প্রায় সময় ৪০৪ নামের একটি পৃষ্ঠা দেখতে পান। সাইটের লিঙ্ক ভুল থাকলে কিংবা কাঙ্ক্ষিত পৃষ্ঠাটি না পাওয়া গেলে এটি যেকোনো সাইটেই দৃশ্যমান হয় এবং এক্ষেত্রে সাধারণত ‘404 File Not Found’ লেখাটি দেখা যায়। তবে এর সাথে অন্যান্য সাহায্যকারী তথ্য বা সাইটের অন্যান্য পৃষ্ঠার লিঙ্ক যুক্ত করতে পারলে ব্যবহারকারীদের জন্য অনেক সুবিধা হয়।



০৩. কন্টেন্ট অপ্টিমাইজেশন, মানসম্মত তথ্য এবং সার্ভিস :
মানসম্মত ও স্বতন্ত্র কন্টেন্ট বা তথ্য হচ্ছে একটি ওয়েবসাইট জনপ্রিয় করার মূল হাতিয়ার। এটি একদিকে যেমন ব্যবহারকারীদেরকে সাইটে নিয়মিত আসতে প্রভাবিত করে, তেমনি গুগলের কাছেও সাইটের গুরুত্ব বেড়ে যায়। ওয়েবসাইটে লেখা সংযোজন করার আগে কিওয়ার্ড নিয়ে গবেষণা এবং লেখায় এর প্রতিফলন থাকা প্রয়োজন। গুগলের ‘অ্যাডওয়ার্ডস’ সাইটে এজন্য একটি টুল রয়েছে, যা একটি কিওয়ার্ড কতটা জনপ্রিয় তা যাচাই করতে সাহায্য করে। পাশাপাশি এই টুলের মাধ্যমে নতুন নতুন কিওয়ার্ড সম্পর্কে জানা যায়। সাইটটির ঠিকানা হচ্ছে- https://adwords.google.com/select/KeywordToolExternal। তাছাড়া গুগলের ‘ওয়েবমাস্টার টুলস’ সাইটে শীর্ষ কিওয়ার্ডের একটি লিস্ট পাওয়া যায়। এ থেকে ব্যবহারকারীরা সাইটে ভিজিট করার আগে গুগলে কোন কিওয়ার্ড ব্যবহার করে আসে, তা জানা যায়। ওয়েবসাইটের কন্টেন্ট তৈরি করার সময় বানান এবং ব্যাকরণের দিকে খেয়াল রাখা উচিত। লেখায় একাধিক বিষয়বস্তু থাকলে সেটিকে কয়েকটি প্যারাগ্রাফে ভাগ করে এবং শিরোনাম সহকারে লেখা উচিত।

GsKi টেক্সটের যথাযথ ব্যবহার

GsKi টেক্সট (Anchor Text) হচ্ছে HTML এর বা GsKi ট্যাগের ভেতরের শব্দগুচ্ছ যাতে ক্লিক করে অন্য কোনো পৃষ্ঠা বা সাইটে যাওয়া যায়। এই টেক্সটি গুগল এবং ব্যবহারকারীদেরকে লিঙ্ক সম্পর্কে পূর্ব ধারণা দেয়। এই লিঙ্কটি একই সাইটের অন্য কোনো পৃষ্ঠার সাথে হতে পারে অথবা ভিন্ন কোনো সাইটের সাথে সংযুক্ত হতে পারে। GsKi টেক্সটে ‘Click here’, ‘Page’ বা ‘Article’ এই জাতীয় সাধারণ শব্দ ব্যবহার না করে লিঙ্ক করা পৃষ্ঠার বর্ণনামূলক হওয়া উচিত। GsKi টেক্সটটি যাতে অল্প কয়েকটি শব্দের সমন্বয়ে হয় সেদিকে খেয়াল রাখা চাই। সম্পূর্ণ একটি বাক্যকে GsKi টেক্সট হিসেবে ব্যবহার করা ঠিক নয়। একটি সাধারণ লেখা থেকে লিঙ্ককে যাতে আলাদাভাবে চেনা যায় সেজন্য GsKi টেক্সটে ভিন্ন রং, আন্ডারলাইন ইত্যাদি CSS স্টাইল ব্যবহার করা যেতে পারে।

ছবির ব্যবহার

ওয়েবসাইটে ছবি বা ইমেজ যুক্ত করার সময় এইচটিএমএলের ট্যাগের মধ্যকার alt এট্রিবিউটে ছবির বর্ণনা যুক্ত করা উচিত। এর ফলে কোনো ব্রাউজারে যদি ছবিটি না আসে তাহলে এই এট্রিবিউটের লেখাটি দৃশ্যমান হবে। একটি ছবিকে লিঙ্ক হিসেবে ব্যবহার করার সময় এটি GsKi টেক্সটেরও কাজ করে। অন্যদিকে এর মাধ্যমে গুগলের ইমেজ সার্চের সাহায্যে ব্যবহারকারীরা ছবিটি খুঁজে পাবে। ছবির বর্ণনার পাশাপাশি ছবির ফাইলে নামও বর্ণনামূলক ও সংক্ষিপ্ত হওয়া প্রয়োজন। সাইটের সাইটম্যাপ ফাইলের মতো ছবির জন্যও একটি এক্সএমএল সাইটম্যাপ তৈরি করা যায়, যা গুগলকে ওয়েবসাইটের সব ছবি সম্পর্কে ভালো ধারণা দেয়।



হেডিং ট্যাগ

HTML G [h1] থেকে শুরু করে [h6] পর্যন্ত ৬টি হেডিং ট্যাগ রয়েছে, যার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শিরোনামকে [h1] ট্যাগের মধ্যে এবং কম গুরুত্বপূর্ণ তথ্যকে পর্যায়ক্রমে অন্যান্য হেডিং ট্যাগের মধ্যে লেখা হয়। হেডিং ট্যাগের লেখা যেহেতু পৃষ্ঠার অন্যান্য লেখা থেকে আকারে বড় হয়ে থাকে, তাই এটি ব্যবহারকারীদের দৃষ্টি সহজেই আকৃষ্ট করতে সক্ষম হয় এবং লেখার বিষয়বস্তু সম্পর্কে অবহিত করতে ব্যবহারকারী ও গুগলকে সহায়তা করে। তবে একটি পৃষ্ঠায় মাত্রাধিক হেডিং ট্যাগ যাতে ব্যবহার না হয় তা মাথায় রাখতে হবে।

০৪. ক্রাউলার উপযোগী এসইও robots.txt ফাইলের ব্যবহার :
ক্রাউলার (Crawler) হচ্ছে এক ধরনের কমপিউটার প্রোগ্রাম, যা স্বয়ংক্রিয়ভাবে ইন্টারনেট ব্রাউজ করে এবং নতুন নতুন তথ্য তার ডাটাবেজে সংরক্ষণ (বা ক্রাউলিং) এবং সাজিয়ে (বা ইন্ডেক্সিং) রাখে। ক্রাউলার প্রোগ্রামকে প্রায় সময় ইন্ডেক্সার, বট, ওয়েব স্পাইডার, ওয়েব রোবট ইত্যাদি নামে ডাকা হয়। গুগলের ক্রাউলারটি ‘গুগলবট’ নামে পরিচিত। গুগলবট নিরবচ্ছিন্নভাবে ইন্টারনেটে বিচরণ করে বেড়ায় এবং যখনই নতুন কোনো ওয়েবসাইট বা নতুন কোনো তথ্যের সন্ধান পায়, এটি গুগলের সার্ভারে সংরক্ষণ করে রাখে। robots.txt হচ্ছে এমন একটি ফাইল যার মাধ্যমে একটি সাইটের নির্দিষ্ট কোনো অংশকে ইন্ডেক্সিং করা থেকে সার্চ ইঞ্জিন তথা ক্রাউলারকে বিরত রাখা যায়। এই ফাইলটিকে সার্ভারের মূল ফোল্ডারের মধ্যে রাখতে হয়। একটি সাইটে এমন অনেক পৃষ্ঠা থাকতে পারে, যা ব্যবহারকারী ও সার্চ ইঞ্জিন উভয়ের কাছে অপ্রয়োজনীয়, সেক্ষেত্রে এই ফাইলটি হচ্ছে একটি কার্যকরী সমাধান। গুগলের ওয়েবমাস্টার টুলস সাইট থেকে এই ফাইল তৈরি করা যায়।

nofollow wjsK সম্পর্কে সতর্কতা

গুগলবট একটি সাইটকে যখন ক্রাউলিং করতে থাকে, তখন সে সাইটে অন্য সাইটের লিঙ্ক পেলে সেখানে ভিজিট করে এবং সেই সাইটকেও ক্রাউলিং করে। এক্ষেত্রে একটি সাইটের পেজরেঙ্ক (পিআর)-এর ওপর অন্য সাইটের পেজরেঙ্কের প্রভাব পড়ে। এইচটিএমএল ট্যাগের ট্যাগের মধ্যে ‘rel’ এট্রিবিউটে ‘nofollow’ দিয়ে রাখলে গুগল সেই লিঙ্কে ভিজিট করা থেকে বিরত থাকে। nofollow লেখার নিয়ম হচ্ছে- Site Name। এটি মূলত বিভিন্ন ব্লগিং সাইটে পাঠকদের মন্তব্যে অবস্থিত লিঙ্কে ব্যবহার হয়, যা স্প্যামার বা অনাকাঙ্ক্ষিত ভিজিটরদেরকে তাদের সাইটের পেজরেঙ্ক বাড়ানো প্রতিরোধ করে। এটি অযাচিত মন্তব্য দিতে স্প্যামারদেরকে নিরুৎসাহিত করে। তবে যেসব ক্ষেত্রে স্প্যাম প্রতিরোধের ব্যবস্থা রয়েছে, সেখানে nofollow ব্যবহার না করাই ভালো। এতে পাঠকরা মন্তব্য দিতে উৎসাহিত হবে এবং সাইটের সাথে তাদের যোগাযোগ আরও বেশি হবে।

০৫. সঠিক পদ্ধতিতে ওয়েবসাইটের প্রচারণা এবং বিশ্লেষণ :
একটি সাইটকে যখন অপর একটি সাইট লিঙ্কের মাধ্যমে সংযুক্ত করে তখন একে বলা হয় ব্যাকলিঙ্ক। একটি সাইটের ব্যাকলিঙ্ক যত বেশি হবে, গুগলের কাছে সেই সাইটের গুরুত্বও তত বাড়তে থাকবে এবং এর পেজরেঙ্কও বাড়তে থাকবে। ফলস্বরূপ সার্চের মাধ্যমে আরো বেশিসংখ্যক ব্যবহারকারী সাইটে আসবে। বেশি করে ব্যাকলিঙ্ক পাবার জন্য ওয়েবসাইটে মানসম্মত তথ্য থাকা এবং এর সঠিক প্রচারণা প্রয়োজন। একটি সাইটে ভালো তথ্য থাকলে ব্যবহারকারীরা তাদের ওয়েবসাইটে স্বেচ্ছায় ব্যাকলিঙ্ক সংযুক্ত করবে। একটি ওয়েবসাইটের প্রচারণা দুই ধরনের হতে পারে- অনলাইন এবং অফলাইন। অনলাইন প্রচারণার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ব্লগিং। ওয়েবসাইটের সাথে একটি ব্লগ সংযুক্ত থাকলে এর মাধ্যমে ওয়েবসাইটের নতুন নতুন সার্ভিস বা পণ্যের সাথে ব্যবহারকারীদেরকে সহজেই পরিচয় করিয়ে দেয়া যায়। অনলাইন প্রচারণার মধ্যে আরেকটি পদ্ধতি হচ্ছে বিভিন্ন সামাজিক নেটওয়ার্কিং ও কমিউনিটি সাইটে প্রচারণা। তবে এসব সাইটে প্রচারণার ক্ষেত্রে একটু সংযমী হওয়া প্রয়োজন। ওয়েবসাইটের প্রত্যেকটি নতুন তথ্য বা যে কোনো ছোটখাটো পরিবর্তন শেয়ার না করে বেছে বেছে ভালো তথ্যগুলো সবাইকে জানানো উচিত। অন্যথায় এটি অন্যদের বিরক্তির উদ্রেক করে। নিজের সাইটের সমজাতীয় কমিউনিটি সাইট বা বিভিন্ন ফোরামে প্রচারণা করা ভালো, তবে সেসব সাইটে অযথা পোস্ট দেয়া বা স্প্যামিং যাতে না হয়। অফলাইন প্রচারণার মধ্যে রয়েছে সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন, বিজনেস কার্ড তৈরি, পোস্টার, লিফলেট, নিউজলেটার প্রকাশ ইত্যাদি।

ফ্রি ওয়েবমাস্টার টুলের ব্যবহার

গুগলসহ অন্যান্য জনপ্রিয় সার্চ ইঞ্জিনগুলো ওয়েবমাস্টারদের জন্য এসইও সহায়ক বিভিন্ন ফ্রি টুল দেয়। গুগলের ওয়েবমাস্টার টুলস সাইটের মাধ্যমে একজন ওয়েবমাস্টার তার সাইট সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেতে পারে, যা গুগলের সার্চ রেজাল্টে আরো ভালোভাবে ওয়েবসাইটটি উপস্থিত হতে সহায়তা করে। এই সাইট থেকে যেসব সার্ভিস বিনামূল্যে পাওয়া যায় সেগুলো হলো-

* গুগলবট একটি সাইটের কোনো অংশ ক্রাউলিং করতে না পারলে তা যায়।
* গুগলে একটি XML সাইটম্যাপ সাবমিট করা যায়।
* robots.txt ফাইল তৈরি করা যায়।
* title এবং description মেটা ট্যাগে কোনো সমস্যা থাকলে তা শনাক্ত করা যায়।
* যেসব সার্চ কিওয়ার্ডের ব্যবহারকারীরা ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে সেগুলো সম্পর্কে জানা যায়।
* অন্য কোন কোন সাইট ব্যাকলিঙ্ক করেছে, তা জানা যায়।
* আরো নানা ধরনের বিশ্লেষণধর্মী টুল।

এখানে যদিও ‘সার্চ ইঞ্জিন’ সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে, তথাপি একটি ওয়েবসাইটকে অপটিমাইজ বা উন্নত করার ক্ষেত্রে সাইটের ভিজিটরদের সুবিধার কথাই প্রথমে চিন্তা করা উচিত। কারণ, ভিজিটররাই হচ্ছে একটি সাইটের মূল ভোক্তা, কোন সার্চ ইঞ্জিন নয় আর তারা সাইটকে খুঁজে পেতে সার্চ ইঞ্জিনকে একটি মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করে মাত্র। এসইও একটি সময়সাপেক্ষ ব্যাপার এবং একটি চলমান প্রক্রিয়া। রাতারাতি একটি ওয়েবসাইটকে সার্চ ইঞ্জিনের প্রথম পাতায় নিয়ে আসা যায় না। তবে নিয়মিত উন্নয়ন করতে থাকলে এর ফলাফল অনেক সুদূরপ্রসারী।

 
Design by Free WordPress Themes | Bloggerized by Lasantha - Premium Blogger Themes | Best Buy Coupons