মঙ্গলবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০০৯

ওয়েবে শিশুর বিকাশের তথ্য


আপনার সন্তান বড় হয়ে মাদার তেরেসা, মাহাথির মোহাম্মদ নাকি ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মতো হবে−সেখানে আপনার ভুমিকা আছে। একটি শিশুর পরিপূর্ণ বিকাশে মস্তিষ্কেকর কোষের সংযোগ স্থাপনের গুরুত্ব সর্বাধিক। গবেষণা থেকে জানা যায়, একটি শিশুর জন্েনর সময় মস্তিষ্কেক ১০০ বিলিয়ন কোষ (নিউরন) থাকে। এককভাবে একটি কোষ অন্য প্রায় ১৫ হাজার কোষের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করতে পারে। শিশুর বয়স আট বছরের মধ্যে প্রায় ৯০ শতাংশ কোষের মধ্যে সংযোগ স্থাপিত হয়। কোষের সংযোগ থেকেই শিশুর শারীরিক, সামাজিক, বুদ্ধিবৃত্তিক, সৃজনশীলতা ও আবেগীয় যে বিকাশ সব কিছুই এ সময়ে সম্পন্ন হয়। আর মস্তিষ্কেকর বিকাশ শৈশবে না হলে আর কখনোই বিকশিত হওয়ার সুযোগ থাকে না। যে কারণে শিশুর শুন্য থেকে আট বছর পর্যন্ত বয়সকাল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়কালকে প্রারম্ভিক শৈশব বিকাশ বা সংক্ষেপে ইসিডি বলে। এ সময় পরিবারের পক্ষ থেকে শিশুর বিকাশে বিশেষ যত্ন নেওয়া দরকার। এ জন্য প্রতিটি শিশুর বাবা-মা ও সন্তান লালন-পালনের সঙ্গে জড়িত প্রত্যেকের ইসিডি সম্পর্কে জানা দরকার।
বাংলাদেশে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে ইসিডি কার্যক্রম চলছে। দেশে ইসিডি কার্যক্রম পরিচালনা করে, এমন সরকারি ও বেসরকারি ২০০ প্রতিষ্ঠান মিলে ২০০৫ সালে বাংলাদেশ ইসিডি নেটওয়ার্ক (বিইএন) নামে একটি নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছে। নেটওয়ার্কের ওয়েবসাইট www.ecd-bangladesh.net থেকে ইসিডি সম্পর্কে দরকারি অনেক কিছুই জানার সুযোগ রয়েছে।
ওয়েবসাইটের একটি লক্ষণীয় ভালো দিক হলো এর একটি সাইটম্যাপ রয়েছে। সেখান থেকে দেখা যায়, ওয়েবসাইটটিতে মোট ১৬টি বিষয়ে তথ্য রয়েছে। যদিও বা পাশের প্যানেলে আপনি ১৮টি বোতাম পাবেন। এখানে থাকা বেশির ভাগ তথ্য যাঁরা ইসিডি নিয়ে কাজ করছেন কিংবা ভবিষ্যতে কাজ করতে চান তাঁদের কাজে লাগবে।
তবে ব্যক্তি ও পারিবারিক পর্যায়ে উপকৃত হওয়ার মতো তথ্যও এখানে দেওয়া হয়েছে। যেমন: ইসিডি রিসোর্সেস শিরোনামের বোতামে ক্লিক করে আপনি ইসিডি-বিষয়ক প্রকাশনা রয়েছে এমন অনেকগুলো সংস্থার তালিকা পাবেন। শিশুর বিকাশ সহায়ক বইয়ের প্রচ্ছদসহ বইয়ের তালিকা এখানে পাওয়া যাবে। তবে এখান থেকে কোনো বই ডাউনলোড করা যাবে না। বাংলা ভাষায় লেখা এই বইগুলো পিডিএফ আকারে দেওয়া থাকলে ও ডাউনলোড করা গেলে সবাই উপকৃত হতে পারতেন। বইয়ের প্রকাশকের নাম পাতার শুরুতে দেওয়া থাকলেও যোগাযোগের কোনো ঠিকানা দেওয়া নেই। কিংবা বইগুলো যাঁরা সংগ্রহ করতে আগ্রহী তাঁরা কীভাবে সেটি করবেন তারও কোনো নির্দেশনা নেই।
এই ওয়েবসাইটের একটি বড় দুর্বলতা হলো এর কোনো বাংলা সংস্করণ নেই। বলা হয়, বাংলাদেশে ইসিডি কার্যক্রম বাস্তবায়নের বড় বাধা আমাদের দেশের বেশির ভাগ বাবা-মা স্বল্পশিক্ষিত এবং তাঁরা শিশু যত্নের বিষয়গুলো সঠিকভাবে জানেন না। তাঁদের জানাতে হলে সবকিছুই বাংলায় হওয়া আবশ্যক।
এর রিসার্চ হাইলাইটস বিভাগে ইসিডি নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু গবেষণা প্রবন্ধ রয়েছে। যার অনেক কিছুই তৃণমূলে কর্মরতদের কাজে লাগতে পারে। সে ক্ষেত্রেও কিছু কিছু ডকুমেন্টের বাংলা সংস্করণ এখানে থাকা দরকার। যেমন : ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শৈশব উন্নয়ন কেন্দ্র কর্তৃক প্রকাশিত শিশুর বিকাশে গণিত কার্যক্রমের কার্যকারিতা শীর্ষক গবেষণা প্রবন্ধগুলোর বাংলা সংস্করণ থাকা দরকার। ‘সাকসেস স্টোরিজ’ বোতামের অধীন একটিমাত্র সফলতার গল্প দেওয়া আছে, যা একেবারেই অপ্রতুল।
ওয়েবসাইটের ‘একাডেমি কোর্স’ বোতাম থেকে জানা যায়, ইসিডি সম্পর্কিত নানা ধরনের কোর্স ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা উন্নয়ন ইনস্টিটিউট আয়োজন করে থাকে।
এই ওয়েবসাইটের একটি শক্তিশালী দিক হলো, এতে ইসিডি বিষয়ে বিশ্বের নানা প্রান্তে কর্মরত বিশেষজ্ঞদের নাম ও যোগাযোগের ঠিকানাসহ একটি তালিকা ‘এক্সপার্টস’ বোতামের অধীন উল্লেখ করা হয়েছে। এই সাইটটি তো বটেই শিশুর বিকাশের দরকারি তথ্যসমৃদ্ধ আরও ওয়েবসাইট বাংলা ভাষায় থাকা উচিত।
ই-মেইল: gnabi1969@yahoo.com

0 টি মন্তব্য:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Design by Free WordPress Themes | Bloggerized by Lasantha - Premium Blogger Themes | Best Buy Coupons