মঙ্গলবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০১১

পেনড্রাইভের নানা ব্যবহার

 http://www.tuvie.com/wp-content/uploads/pen-flash-drive3.jpg

পেনড্রাইভ একটি পোর্টেবল ইউএসবি মেমরি ডিভাইস। এটি দিয়ে খুব দ্রুত ফাইল, অডিও, ভিডিও, সফটওয়্যার এক কমপিউটার থেকে অন্য কমপিউটারে ট্রান্সফার করা যায়। এই ডিভাইসটি এতই ছোট যে যেকেউ পকেটে বা ব্যাগে করে সহজে বহন করতে পারেন এবং মূল্যবান তথ্য সবসময় পেনড্রাইভে রেখে ব্যবহার করেন।



পেনড্রাইভ বর্তমানে অনেকেই ব্যবহার করে থাকেন। আর এই পেনড্রাইভ দৈনন্দিন জীবনে একটি বড় অংশ হিসেবে কাজ করছে, যা আমাদেরকে ছোট পোর্টেবল হার্ডডিস্কের সুবিধা দিয়ে থাকে। যারা নিয়মিত কমপিউটার ব্যবহার করে থাকেন বা যাদের দরকারী ফাইল সবসময় প্রয়োজন হয় তাদের অনেকেই পেনড্রাইভ ব্যবহার করে থাকেন। পেনড্রাইভ দিয়ে শুধু তথ্য আদানপ্রদানই নয়, এর বাইরের অনেক কাজেও ব্যবহার করা যায়। তাই এবারের লেখায় পেনড্রাইভের নানাবিধ সুবিধা ও ব্যবহার সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।



পোর্টেবল অ্যাপ্লিকেশন

অনেককেই বিভিন্ন কাজে বাইরে ভিন্ন পরিবেশের কমপিউটারে কাজ করতে হয়। সেক্ষেত্রে ভিন্ন পরিবেশের কমপিউটারের অ্যাপ্লিকেশন বা টুলগুলো অনেক অচেনা মনে হতে পারে। সেক্ষেত্রে আপনি পোর্টেবল অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করতে পারেন। বেশ কয়েক সংখ্যা আগে পোর্টেবল অ্যাপ্লিকেশনের ওপর বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছিল। এই পোর্টেবল অ্যাপ্লিকেশনের কাজ হচ্ছে এটি এমন একটি অ্যাপ্লিকেশন, যার ভেতর অনেক ধরনের টুল বিল্টেইন অবস্থায় থাকে। যেমন : এন্টিভাইরাস, ওপেন অফিস, ইনস্ট্যান্ট মেসেঞ্জার, ফায়ারফক্স, গেমস, ভিডিও-অডিও প্লেয়ারসহ বেশ কয়েক ধরনের টুল। এই টুলগুলো আপনার পেনড্রাইভে নিয়ে যেকোনো কমপিউটারে বসে পেনড্রাইভ থেকে ব্যবহার করতে পারেন। এতে আপনাকে পরিবেশ ভিন্ন হওয়ার পরও অ্যাপ্লিকেশনগুলোকে অচেনা মনে হবে না।

পেনড্রাইভ দিয়ে লগইন-লগআউট

ইউজার সিকিউরিটি বর্তমানে একটি প্রধান বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্তমানে অনেকেই কমপিউটারের লগইন পাসওয়ার্ডকে সিকিউর ভাবেন না, কারণ হ্যাকারদের কাছে কমপিউটারের পাসওয়ার্ড বের করা তেমন কষ্টকর নয়। সেক্ষেত্রে পেনড্রাইভ দিয়ে এর সিকিউরিটি দেয়া সম্ভব। বর্তমানে অনেক ফ্ল্যাশড্রাইভ বা পেনড্রাইভের সাথে সফটওয়্যার আসছে, যা দিয়ে লগইন-লগআউট অপশন সেট করা যায়। BlueMicro USB Flash Drive Logon এমন একটি থার্ড পার্টি সফটওয়্যার, যা আপনাকে ওপরের সুবিধাটি দিতে পারে। এই সফটওয়্যারের ব্যবহার দিয়ে আপনার পেনড্রাইভকে কমপিউটারের জন্য একটি চাবি হিসেবে ব্যবহার করতে পারবেন। যেমন ধরুন আপনি কমপিউটারে লগইন করতে চাচ্ছেন সেক্ষেত্রে আপনার নির্দিষ্ট পেনড্রাইভ ইউএসবি পোর্টে সংযোগ এবং কমপিউটারে পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করতে হবে। পেনড্রাইভ ছাড়া কমপিউটারে লগইন করতে পারবেন না। এই পদ্ধতি যেমনি সিকিউরিটি বাড়িয়েছে, তেমনি একটি সমস্যাও রয়েছে। কোনো কারণে পেনড্রাইভটি হারিয়ে গেলে আপনি নিজেই কমপিউটারে লগইন করতে পারবেন না।

ক্যাস বাড়াতে পেনড্রাইভ

কিছু প্লাগইন আপনার কমপিউটারের স্পিড বাড়াতে সক্ষম হবে। Windows ReadyBoost নামে একটি ফিচার রয়েছে যা উইন্ডোজ ভিসতাতে কাজ করে এবং উইন্ডোজ এক্সপির জন্য রয়েছে eBoostrer। অনেক ইউজারের কমপিউটারের র্যাসমের সাইজ কম থাকে। যার ফলে কমপিউটারের স্পিড কমে যায়। কমপিউটারের স্পিড বাড়ানোর জন্য পেনড্রাইভ ব্যবহার করতে পারেন। আপনার পেনড্রাইভটি ইউএসবি পোর্টে যুক্ত করুন। নরমাল কমপিউটারে উইন্ডোজের মেমরির পেজ ফাইল সি ড্রাইভে সেভ হয়ে থাকে। আপনি তা পরিবর্তন করে পেনড্রাইভের লোকেশন দেখিয়ে দিতে পারেন। এতে পেজ ফাইলের স্টোরের সাইজের পরিমাণ বাড়বে।

এনক্রিপ্টেড ডাটা

আপনার ব্যবহারের সব ফাইল, ফোল্ডারকে পেনড্রাইভে নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় যাচ্ছেন এবং ভিন্ন পরিবেশের কমপিউটারে ব্যবহার করছেন। অনেক সময় আপনার খুব পার্সোনাল ফাইল বা পাসওয়ার্ডসমূহের তথ্য পেনড্রাইভে থাকতে পারে। কিন্তু যদি কোনো কারণে পেনড্রাইভটি হারিয়ে যায়, তাহলে আপনার পার্সোনাল তথ্যগুলো অন্যের কাছে চলে যেতে পারে। এক্ষেত্রে আপনি আপনার পার্সোনাল ডাটাগুলোকে এনক্রিপ্টেড করে রাখতে পারেন। এনক্রিপ্টেড করার জন্য TrueCrypt, Dekart Private Disk Light টুলগুলো ব্যবহার করতে পারেন। এনক্রিপ্ট করার আগে এর ব্যবহারবিধি পড়ে নেবেন।

সিস্টেম অ্যাডমিনের ড্রাইভার

অনেক সিস্টেম অ্যাডমিন রয়েছে, যাদের কমপিউটারে নিয়মিত ড্রাইভার আপডেট বা ইনস্টল করতে হয়। সেক্ষেত্রে ড্রাইভারগুলোকে এক্সটারনাল হার্ডডিস্কে সেভ করে নিয়ে কাজ করে থাকেন অথবা সিডি বা ডিভিডিতে রাইট করে নিয়ে ব্যবহার করে থাকেন। কিন্তু ড্রাইভারগুলোকে পেনড্রাইভের একটি নির্দিষ্ট ফোল্ডারে রেখে ব্যবহার করা হয় তাহলে অনেক সুবিধা পাওয়া যাবে। যেমন : পেনড্রাইভ ওজনে হালকা হওয়াতে সবসময় এটি বহন করা যাবে এবং বিভিন্ন ড্রাইভের আপডেট বের হলে তা পেনড্রাইভে খুব সহজে আপডেট এবং ব্যবহার করা যাবে।

পোর্টেবল অপারেটিং সিস্টেম

বর্তমানে পোর্টেবল অ্যাপ্লিকেশনের পাশাপাশি পোর্টেবল অপারেটিং সিস্টেম বের হয়েছে। অনেকেই আছেন, যারা উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমের পাশাপাশি লিনআক্স ব্যবহার করতে চাচ্ছেন, কিন্তু পার্টিশনের ভয়ে লিনআক্স ব্যবহার করতে পারছেন না। সেক্ষেত্রে পেনড্রাইভে পোর্টেবল লিনআক্সকে নিয়ে খুব সহজে ব্যবহার করতে পারেন। আপনার কমপিউটারের প্রয়োজনীয় ফাইলগুলোকে পোর্টেবল অপারেটিং সিস্টেম দিয়ে ব্যবহার করতে পারবেন।

অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় ভিন্ন পরিবেশে কমপিউটার ব্যবহার করতে গেলে কমপিউটারের ব্যবহারবিধির ওপর অনেক রেস্ট্রিকশন থাকে। সেক্ষেত্রে পোর্টেবল অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করতে পারেন। এতে আপনাকে কোনো রেস্ট্রিকশনের ভেতর থাকতে হবে না।

কোনো বন্ধুর কমপিউটার ব্যবহার করতে চাচ্ছেন, কিন্তু তার কমপিউটারটি ভাইরাসে আক্রান্ত, সেক্ষেত্রে পোর্টেবল অপারেটিং সিস্টেম দিয়ে আপনি কমপিউটারটি ব্যবহার করতে পারবেন এবং আপনার বন্ধুর কমপিউটারের ভাইরাসগুলোকে রিমুভ করতে পারবেন। বেশ কিছু পোর্টেবল অপারেটিং সিস্টেম হচ্ছে Knoppix, DamnSmall Linux, Puppy Linux, Linux Mint ইত্যাদি।

রিকোভারি এনভায়রনমেন্ট

উইন্ডোজ এক্সপি অনেকেই ব্যবহার করেন কিন্তু ভাইরাসের কারণে অনেক সময় ফাইল মিসিং হয় এবং ফাইল বা ডিএলএল মিসিংয়ের কারণে অনেক সময় কমপিউটার অন হয় না। সেক্ষেত্রে নতুন করে উইন্ডোজ সেটআপ দিয়ে থাকেন। কিন্তু পেনড্রাইভ দিয়ে আপনি এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন। উইন্ডোজ এক্সপির রিকোভারি করার ফাইলগুলো পেনড্রাইভে নিয়ে খুব সহজে এক্সপি রিকোভারি অপশন থেকে রিকোভার করে নিতে পারেন। Bartpe এমন একটি গ্রাফিক্যাল রিকোভারি টুল।

সূত্র : কমপিউটার জগৎ

0 টি মন্তব্য:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Design by Free WordPress Themes | Bloggerized by Lasantha - Premium Blogger Themes | Best Buy Coupons