আপনি ডাটা এন্ট্রি অথবা গ্রাফিক ডিজাইন অথবা ওয়েব ডিজাইন যে ফ্রিল্যান্সিং কাজই করুন না কেন, কাজ পাওয়ার জন্য বিড করতে হয়। প্রচলিত ভাষায় টেন্ডার বলতে পারেন। কাজের বর্ননা দেখে আপনি নিজের যোগ্যতা এবং কত টাকায় কাজটি করবেন জানাবেন। ক্লায়েন্ট সন্তোষজনক মনে করলে আপনাকে কাজ দেবেন।
নতুন ফ্রিল্যান্সারের জন্য বিড করা কঠিন। যেহেতু নামের পাশে অভিজ্ঞতা নেই সেহেতু যোগ্যতা প্রকাশ করার কাজটি জটিল হয়ে দাড়ায়। যারা অভিজ্ঞ তারা অগ্রাধিকার পায়। সেইসাথে বিড করার সময় অনেকে ভুল করেন। এমনকি কত টাকায় কাজটি করবেন সেটা জানাতেও সমস্যায় পড়েন।
সব ফ্রিল্যান্সিং সাইট তাদের অভিজ্ঞতা থেকে এধরনের বিষয়ে পরামর্শ দেয়। ফ্রিল্যান্সার সাইটের বিড করার পরামর্শগুলি এখানে তুলে ধরা হচ্ছে।
. কাজের বর্ননা ভালভাবে পড়ুন। পুরোপুরি বোঝার জন্য যতবার পড়া প্রয়োজন ততবার পড়ুন এবং নিশ্চিত হন সেখানে ঠিক কি বলা হয়েছে সেটা আপনি বুঝেছেন। ক্লায়েন্ট অনেক সময় এমন কোন বাক্য জুড়ে দেন যা সেই বিশেষ কাজের জন্য খুবই গুরুত্বপুর্ন। পুরোপুরি না বুঝে সেই কাজের জন্য বিড করবেন না।
. যদি কোন বিষয় স্পষ্ট না হয় তাহলে বিড করার আগেই প্রোজেক্ট ক্লারিফিকেশন বোর্ডে প্রশ্ন করুন। কাজ সম্পর্কে সবকিছু ভালভাবে না জেনে কাজ হাতে নেয়া ভাল পদ্ধতি না।
. বিডে আপনার বক্তব্য স্পষ্ট করুন এবং সংক্ষিপ্ত রাখুন। কোন কাজের জন্য শতশত জন বিড করতে পারেন। ক্লায়েন্ট বেশি লেখা দেখলে সেটা এড়িয়ে যেতে পারেন।
. আপনার কাজের শর্তগুলি স্পষ্ট করে প্রকাশ করুন। নমনীয় মনোভাব দুর্বলতা প্রকাশ করে। কাজ পাওয়ার জন্য অনুরোধ বা এই ধরনের কোন বক্তব্য প্রকাশ করবেন না।
. বিড করার পর প্রাইভেট মেসেজে আপনার আরো তথ্য, বক্তব্য ইত্যাদি প্রকাশ করুন। বিড সংক্ষিপ্ত রাখার জন্য যাকিছু প্রকাশ করতে পারেননি সেগুলি এখানে প্রকাশ করুন। এমন তথ্য তুলে ধরুন যেন তিনি আপনার প্রতি আগ্রহ দেখান।
. প্রাইভেট মেসেজ হিসেবে আগের করা কাজের নমুনা দেয়া কাজ পাওয়া সহজ করতে পারে। আগের কোন ডিজাইন সেখানে আপলোড করলে তিনি আপনার যোগ্যতা সম্পর্কে ধারনা পাবেন। নমুনা দেখানোর সময় সবচেয়ে ভাল কাজ দেখাবেন, সংখ্যায় বেশি দেকাবেন না। আপনার কাজের মান গুরুত্বপুর্ন, কত সংখ্যায় করেছেন সেটা গুরুত্বপুর্ন না।
. নিজের করা ডিজাইন, লোগো ইত্যাদি আপলোড করার সময় ওয়াটারমার্ক (নিজের নাম বা অন্যকিছু) রাখা ভাল। একদিকে সেটা চুরি করে ব্যবহারের সুযোগ বন্ধ হয় অন্যদিকে কাজটি আপনার সেটা নিশ্চিত করা যায়।
. কাজের মুল্য ঠিক করার বিষয়ে সাবধানী হোন। সবচেয়ে কম টাকায় করতে চাইলে আপনি কাজ পাবেন এমন কথা নেই। অভিজ্ঞতা বেশি হলে বেশি টাকা চাইতে পারেন, নতুন অবস্থায় অভিজ্ঞের সমান টাকা চাইলে কাজ পাবেন না এটাই স্বাভাবিক। মাস এবং দাম দুইয়ের সামঞ্জস্য রাখুন।
. যে কোন মুল্যে কাজ করতে হবে এমন মনোভাব প্রকাশ করবেন না। নিজের ওপর আস্থা রাখুন। আপনার যোগ্যতা থাকলে এক কাজ না পেলে আরেকটি পাবেন। ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে নিজের অবস্থান ঠিক রাখুন।
. বিড করার যাকিছু লিখেছেন সেটা ভালভাবে পড়ে নিন। কোন বানান ভুল আছে কিনা (অটো স্পেল চেকিং এর ব্যবস্থা আছে কিনা, বাক্য ঠিকমত লিখেছেন কিনা যাচাই করে নিন। ভুলভাবে লেখা বিড আগ্রহের অভাব, অমনোযোগিতা, খারাপ অভ্যাস ইত্যাদি প্রকাশ করে। এগুলি কাজ পেতে সমস্যা সৃষ্টি করে।
বলা হয় প্রথম কাজ পাওয়া সবচেয়ে কঠিন। ফ্রিল্যান্সিং সাইটগুলির গড় হিসেবে এজন্য ৬ সপ্তাহ সময় লাগতে পারে। আরো নির্দিষ্টভাবে সংখ্যায় যদি প্রকাশ হরেন তাহলে হিসেবটা এমন হতে পারে, আপনি দৈনিক তিনটি কাজে বিড করছেন, শতাধিকবার বিড করার পর আপনি প্রথম কাজ পেলেন। এটা আপনার একার হিসেব না, সারা বিশ্বের সব ফ্রিল্যান্সারের জন্যই সাধারন অভিজ্ঞতা।
কাজেই একেবারে নতুন অবস্থায় বিড করে বারবার অসফল হলে হতাস হবেন না। বরং কিভাবে আরো নিখুত বিড করা যায় সেদিকে দৃষ্টি দিন।
সূত্র
0 টি মন্তব্য:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন